নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ মাকসুদুর রহমান

মোঃ মাকসুদুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্ষককে ক্ষমা করাও একধরনের অপরাধ !!

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫১


যৌন নিপীরণে ভুক্তভোগীরা বেশিরভাগ সময়ই আইনের আশ্রয় নিতে কুন্ঠাবোধ করেন, বিশেষ করে বাংলাদেশের মত দেশে বিচারবিমুখদের সংখ্যা অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় আশাংকাজনকভাবে বেশি।বিচারবিমুখতার প্রধান কারণ হচ্ছে আদালতে বিচারকার্য শুরু হলে দুই পক্ষের বিজ্ঞ আইনজীবীরা স্ব স্ব পক্ষে যুক্তিতর্ক তুলে ধরতে গিয়ে বেশ কিছু অবাঞ্চিত শব্দের প্রয়োগ করতে পারেন যা ভিকটিমকে নতুন করে ভরা মজলিশে নিপীরণের সম্মুখীণ করে।এ থেকে পরিত্রাণ পেতে গরীব ও গ্রামাঞ্চলে অনেক সময় অপরাধীর শাস্তিস্বরূপ ভিকটিমের বিবাহ দিয়ে পুরো বিষয়টিকে সমাধান করার চেষ্টা করা হয়। অনৈতিক হলেও এতে করে ভিকটিম আদালতের বিব্রতকর পরিস্থিতি হতে নিজেকে রক্ষা করতে সক্ষম হন।যদিও এ ধরনের সমাধান কোনো ক্রমেই সমর্থনযোগ্য নয়।এতে বরং ধর্ষিতা নতুন কোনো কাউকে ধর্ষক হতে সহায়তা করার দোষে দুষ্ট হয়ে থাকেন।তাই যৌন নিপীরণের আইনগত শাস্তি আমাদের সকলেরই কাম্য।

অনেকেই হয়ত ভাবতে পারেন এত ইস্যু থাকতে হঠাৎ করে 'যৌন নিপীরণ ইস্যু' কেন আমাকে উৎসাহিত করেছে। মূলতঃ প্রখ্যাত সাংবাদিক ডেইলি স্টার পত্রিকার তারকাখচিত সম্পাদক মাহফুজ আনামের সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে সরকারের চুনোপুটিদের মামলা করার বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা দেখে এবং তখনি বাস্তবিক অর্থে আমার ধর্ষিতা গ্রামের সেই অসহায় মেয়েটির কথা মনে পড়ে গিয়েছে।যে কিনা উত্তরপাড়ার বড়মিয়ার ধর্ষক ছেলের হাতে সম্ভ্রম হারিয়ে একদিন ছিলো দিশাহারা। সমাজের কারো কাছে আশ্রয়, প্রশ্রয় পাচ্ছে না। সবাই তার দিকে বাঁকা নজরে তাকায়। এমতাবস্থায় সে নিজেই একদিন এই লজ্জা থেকে নিজেকে , নিজের পরিবারকে মুক্তি দেয়ার অভিপ্রায়ে ঘোষণা করে ,
'' আমি বড় মিয়ার ছেলের হাতে ধর্ষিত হইনি, আমার সাথে দীর্ঘদিন তার প্রেমের সম্পর্ক আছে, মাঝে মাঝে আমরা শারীরীকভাবে মিলিত হয়েছি। সেই ধারাবাহিকতায় সেদিন উত্তরপাড়ার বড়মিয়ার ছেলে আমার ঘরে এসেছিল। তার কোনো দোষ নেই , আমিই তাকে ডেকে পাঠিয়েছি। তাছাড়া সে কথা দিয়েছে সে আমাকে বিয়ে করবে। তাই আপনাদের সবার সামনে আমি ঘোষণা দিচ্ছি বড় মিয়ার ছেলেকে কখনোই আমি আইনের সম্মুখীণ করব না।'' সে নিস্পাপ, নিরাপরাধ।

এরপর বহুদিন সবকিছু ঠিকঠাক মতই চলছিল। বড় মিয়ার ছেলের সাথে ভালোভাবেই মেয়েটির সংসার চলছিল। ইতিমধ্যে তাদের দুটি সন্তান জন্ম নিয়েছে।কিন্তু হঠাৎ একদিন ধর্ষনের ঘটনা জানার পরেও বড় মিয়ার ছেলের ভয়ে কারো নিকট স্বীকার করেনি তাদেরই একজন বিবেকের তাড়ণায় সবার সামনে স্বীকার করে ফেলে , আমি সেদিন ভয়ে ধর্ষনের ঘটনা জানার পরেও কাউকে কিছু বলিনি।'' এতে করে বড়মিয়ার ছেলের সাঙ্গপাঙ্গরা ব্যাপকভাবে ক্ষেপে যায় এবং তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা করতে শুরু করে ।
বোকা বড় মিয়ার ছেলের সাঙ্গপাঙ্গরা জানে না , যত মামলা করা হবে এর প্রতিটি মামলার বিচারকালে ''বড় মিয়ার ছেলেকে ধর্ষিত মেয়েটির ক্ষমা ঘোষণার কথাটি বারবার জনসম্মুখে চলে আসবে।''যা মেয়েটিকে নতুন করে বিব্রতকর অবস্থার মাঝে ফেলে দিবে।
সারা দেশে যে হারে মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে মামলা দেয়ার বহর দেখে অনেক দিন পর ''ধর্ষিতা কতৃক ধর্ষককে ক্ষমা করার কাহিনী''টা আবার মনে পড়ে গেল। এবং চিন্তিত হচ্ছি ধর্ষককে ক্ষমা করার অপরাধবোধে কিভাবে ধর্ষিতা মেয়েটি লজ্জায় তার মুখ লুকাতে না কষ্ট হয়েছে।
(পূণশ্চঃ ধর্ষককে ক্ষমা করা কি অপরাধ । যদি সেটা অপরাধ হয় তবে ক্ষমা করার অপরাধে যিনি ক্ষমা করেছেন তাকেও কাঠগড়ায় ওঠানো উচিৎ কিনা তা ভাবার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.