নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপর নাই.............
লেখাটা অনেক আগের, ড্রাফট করা ছিল ... প্রকাশ করতে পারি নাই বিভিন্ন কারনে ।
২৩-১১-১৩ ইং
অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম মাঝ নদীতে বসে জোৎস্না দেখব , পূর্ণিমার আলো গায়ে মাখব । তা আর হয়ে উঠছিল না, সাথী হিসাবে বন্ধুরা ও তাদের সিডিউল মেলাতে পারছিল না , সাথে আবার পূর্নিমা ও দেশের হরতাল পরিস্থিতি ! অবশেষে সব জল্পনা কল্পনা রেখে ১৮-১১-১৩ ইং তারিখে ৩ ঘন্টার নোটিশে আমরা চার বন্ধু রওনা দিলাম বরিশাল এর উদ্দেশ্যে । তার আগে সামু তে হেল্প চেয়ে পোস্ট দিয়েছিলাম, হেল্প ও পেয়েছিলাম ।
সন্ধ্যা ৭.৩৫
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল পৌছালাম , প্রবেশ এর জন্য জন প্রতি ৪.০০ টাকা টিকিট নিয়ে প্রবেশ করলাম । দেখলাম কীর্তনখোলা-০২ , সুন্দরবন -০৭ ও পারাবত তিনটি বিশাল লঞ্চ ঘাটে দাড়িয়ে আছে বরিশাল যাবার জন্য । জানিয়ে রাখা ভাল প্রতিদিন তিনটি থেকে চারটি লঞ্চ বরিশাল যায়। আমরা প্রথমে কীর্তনখোলা-০২ গেলাম কেবিন এর জন্য, জানা গেলো সব টিকিট শেষ ! স্টাফ কেবিন আছে , স্টাফ কেবিন এর যে অবস্থা তাতে মন সায় দিল না । কি আর করা তারপর গেলাম সুন্দরবন -০৭ । এখানে সিঙ্গেল , ডাবল, সোফা , ভিআইপি ও ডেক আছে। সবার সুবিধার জন্য রেট গুলো দিয়ে দিলাম ।
সিঙ্গেল কেবিন- ৮৫০ , টাকা
(একটি সিঙ্গেল বেড এসিসহ ফ্যান আছে সাথে টিভি)
ডাবল কেবিন -১৭০০ টাকা
(দুইটি সিঙ্গেল বেড এসিসহ ফ্যান আছে সাথে টিভি)
সোফা- ৫০০ টাকা
(সোফা না বলে কাউচই বলা যায় আরামে শুয়ে আসতে পারবেন)
ভিআইপি কেবিন - ৪০০০ টাকা
(একটি বড় বেড চারজন থাকতে পারবে,ফ্রিজ, সোফা ,ডেসিং টেবিল,এটাস্ বাথরুম ,এসিসহ ফ্যান আছে সাথে টিভি ৫-৮ জন থাকতে পারবে)
ডেক- ১৫০ টাকা
(চাদর বিছিয়ে শুয়ে পড়তে হবে )
আর একটা আছে, "সৌখিন" বা ফ্যামিলি কেবিন বলে ৩০০০ টাকা আমরা ঐ টায় গেছিলাম ৪ জন কেবিন নং ৩৪০ । একটি ডাবল খাট ও একটি সেমি ডাবল খাট সাথে ফ্যান ও টিভি ।
(কেবিন এর বাইরের করিডর)
যারা আমাদের মতো এনজয় করতে যাবেন চেস্টা করবেন কেবিন নেওয়ার কারন রাত ১২.০০ পর ডেক পর্যন্ত ডোর গুলো লক করে দেওয়া হয় । আরও ভালভাবে বলতে গেলে ডেকএর অবস্থান সবার নিচতলায়, তারপর দোতলা থেকে কেবিন । দোতলা তিনতলা অনায়েসে যাতায়ত করতে পারবেন সারারাত কিন্তু নিচের ডেকে যেতে পারবেন না । আর মাস্টার এর রুম হচ্ছে তিনতলায় তার সামনে খোলা ডেক যেখান থেকে পূর্নিমা ও জোৎস্না পুরোটাই দেখতে পারবেন সারারাত ।
রাত ৮.৪৫
বিশাল সাইরেন বাজিয়ে লঞ্চ বরিশাল এর দিকে রওনা দিল । আমরা ঘুরে দেখা শুরু করলাম নিচ থেকে উপর , ও ভাল কথা চা খোর ভাইরা বোনেরা সাথে ফ্লাক্স নিতে ভুলবেন না । আমি একটা লিস্ট দিছি নিলে সময় ভালই কাটবে ।
১. রাতের খাবার ওয়ান টাইম প্লেট সহ
২. হালকা খাবার চিপস , চানাচুর যার যা পছন্দ
৩. ফ্লাক্স সাথে ওয়ান টাইম কাপ
৪. মোবাইল ও ক্যামেরার চার্জার
৫. প্লেইং কার্ড। বিড়ি কথা কইলাম না ওইটা যাগো দরকার
১ নাম্বারটা বাদে সবই নিছি হেরলাইগা খেসারত ও দিছি।
যাক এর পর গেলাম মাস্টার এর রুম এর সমানে ঢাকার বুড়িগঙ্গা দিয়ে লঞ্চ যচ্ছে । যখন পোস্তাগোলার ব্রিজ এর নিচ দিয়ে গেল মনে হল ব্রিজ এর মাথায় লঞ্চ ঠেকে যাবে এরপর আস্তে আস্তে মেঘনায় যখন আসলো তখন চাঁদ টাকে যে কিরকম লাগছিল তা বলে বুঝাতে পারব না মনে হয়চ্ছিল পৃথিবী থেকে স্বর্গের আকাশ দেখতে পাচ্ছি। যার এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন তারাই বুঝবেন এর মাঝে ডেকে দাড়িয়ে চা এর কাপ এ চুমুক সে অন্যরকম অনুভূতি ।
রাত ১০.৩০
পেট বাবা জানান দিল খালি জোৎস্না গায়ে মাখলেই চলবে আমার দিকে একটু নজর দাও । তো খাবার !! ওটা তো আনিনি ক্যান্টিন আছে তিনটা নিলাম খোজ । দ্বিতীয় তলায় যেটা আছে সেটা কেবিনে বয় দিয়ে খাবার পৌছায়ে দিবে যা খাবেন ১২০ টাকা সাথে সাভিস চার্জ। দুর আমার স্টুডেন্ট মানুষ এইটা পোষাইব না গেলাম তিনতলায় এইখানে বইয়া খাওন যাইব তয় আইটেম দুইটা আইড় মাছ ও মুরগি এইটাও ১২০। এরপর গেলাম নিচতলায় মানে ডেকে বড়সড় ক্যান্টিন একই অবস্থা ১২০ ও লগে আবার ভর্তা ডাল। কি আর করা পেট বাবাকে তো ঠান্ডা করতে হবে ।
মেন্যু
ভাত -২০ টাকা
চিংড়ি ভর্তা -২০ টাকা
ডাল ভুনা -২০ টাকা
মুরগি ১২০ টাকা (দেইখা মনে হইব মুরগির পোলিও হইছে )
বিল হইল ৭২০ টাকা ৪ বলদের । কিন্তু অভিজ্ঞতা(সেন্টমার্টিন) কয় দেখি কাম হয় কিনা দিলাম ৬০০ টাকা কাম হইল না এরপর আর ৫০ তাতে ও মানে না আর ২০ দিয়া কইলাম আর দিমু না
লগে লগে মাইনা নিল।
রাত ১১.৪৫
আবার জোৎস্না দেখা সাথে মুগ্ধ হওয়া । সুন্দরবন -০৭ এর স্পীড টা সেইরকম । এরপর রুমে গেলাম শুরু হলো কার্ড খেলা । কার্ড খেলতে খেলতে রাত ১.৩০ । মাঝে আবার চা চিপস তো আছেই ।
দুই বন্ধু বলল ঘুমাবে শুয়ে পড়ল ।
রাত ১.৫০
আমি আর আমার আরেক বন্ধূ ওয়াসিম আবার ও গেলাম ডেকে, ডেকে ছিল প্রচুর ঠান্ড বাতাস এরমধ্যে মাস্টার কেবিন কে পিছনে রেখে হেলান দিয়ে ডেকে বসে পড়লাম । আকাশ এত পরিস্কার যে বলে বোঝানো যাবে না আর পূর্নিমার আলো যে এত তীব্র মনে হয় বই পড়া যাবে । চারিদিকে শুধু পানি আর পানি , সেইসাথে মাঝে মাঝে লঞ্চ এর সার্চ লাইট এর আলো অনেকদূর দেখা। ছোট ছোট নৌকায় জেলেদের মাঝ ধরা দেখতে বড়ই অদ্ভুদ লাগছিল ।
কারন চারিদিকে পানি আর পানি এই পূর্নিমার আলো তে জীবন ধারনের জন্য জেলে গুলো মাছ ধরছিল , তখন মনে হয়চ্ছিল আমার কাছে এই পূর্নিমা শুধূ আন্দদের আর ওদের জন্য এর সৌন্দর্য সম্পূর্ন অর্থহীন। আবার মাঝে মাঝে কোন কোন ছোট ছোট জেলে নৌকা লঞ্চ এর লাইনে চলে আসলে , লঞ্চ এর মাস্টার লাউডস্পীকার দিয়ে তাদের চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করছিল । যা এই রাতের নিস্তবদ্ধাতা কে খান খান করে আমাকে উপহাস করছিল ।
রাত ৩.২৫
হঠাৎ লঞ্চ জোরে ধাক্কা খেয়ে পিছিয়ে গেল , আমরা দুই বন্ধুই শুধু ডেকে ছিলাম ভয় ও পেলাম এবং বুঝলাম লঞ্চ থেমে গেছে । চরে আটকে গেছে পুরো লঞ্চের সবাই ঘুমে ছিল কেউ কেউ উঠে এল। একজন লোক বলও ভয় পাবার কিছু নাই । একটু পরেই চলা শুরু করবে, সাথে বাশ দিয়ে মাপা শুরু করল....
এক বাও মেলে না!
এক বাও মেলে না!
এক বাও মেলে না!
১০ মিনিট পরে লঞ্চ আবার যাত্রা শুরু করল।
ভোর ৪.২০
ভালই ঠান্ডা লাগছিল ... তাই এবার রুমে গেলাম ৩০ মিনিট একটা ঘুম ।
সকাল ৫.২০
আমাদের লঞ্চ বরিশাল লঞ্চ ঘাটে সাথে দেখলাম সবাই লঞ্চ ছাড়ছে আমরা একটু পরে ছাড়ব সেই ডিসিশন নিলাম ।
সকাল ৬.০০
নাস্তা পর্ব শেষ করলাম । এরপর ডিসিশন কেথায় যাব আমাদের কুয়াকাটা যাওয়ার ইচ্ছা থাকলে ও তা বাদ দিলাম । তাই বরিশাল শহরে ফলপটি এস যাস্ট ফ্রেস ও ব্যাগ রাখার জন্য একটা রুম নিলাম হোটেল কুয়াকাটা সেইরকম হাহা ৩০০ টাকা ভাড়া ।
সকাল ৯.৩০
রেস্ট নিয়ে বের হলাম বরিশাল কে দেখতে, প্রথমে বলে নিই বরিশাল শহরে দেখার তেমন কিছু নেই তারপর ও আমরা কিছুই বাদ দেই নাই ।
এপিফানী গির্জা/ অক্সফোর্ড মিশন ।
কোর্ট অফিস ।
শহীদ মিনার ।
বিবির পুকুর ।
মুক্তিযুদ্ধ পার্ক ।
বঙ্গবন্ধু উদ্দ্যান ।
প্লানেট পার্ক ।
কীর্তখোলা নদীর পাড় ।
ব্রজমোহন কলেজ বা বি. এল কলেজ
মাছ পট্ঠি ইলিশ মাছ এর আড়ত ।
দূর্গা সাগর দিঘী ।
গুটিয়া মসজিদ ।
তবে সবথেকে দূর্গা সাগর দিঘী ও গুটিয়া মসজিদ ই দেখার মতো যা বরিশাল শহর থেকে ১০-১৫ কি:মি: দূরে , ইজিবাইক এ যেতে ১-১.৩০ ঘন্টা লাগে । প্রথমে দূর্গা সাগর দিঘী পড়ে তারপর গুটিয়া মসজিদ । আমরা ইজিবাইক নিয়ে গেছিলাম যাওয়া আসা সহ ৪৫০ টাকা নিছে । তবে আমি বলব যদি একবারে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নেনে ৭০০-৮০০ তে পেয়ে যাবেন এতে আপনার খরচ বাচবে । কারন পুরো শহরটা ঘুরে দেখতে পারবেন বারবার জন প্রতি ১০ টাকা ভাড়া দেওয়া লাগবে না।
এবার ছবি ........ সাথে কিছু কথা ........
০১ ঢাকা ছেড়ে যাওয়া
০২ ভরা পূর্নিমা
০৩ মাঝ রাতে কেবিন এর বারান্দায়
০৪ আমাদের কেবিন
০৫ লঞ্চ এর ভিতরে...
০৬ লঞ্চ এর ভিতরে করিডর
০৭ তিনতলা থেকে দোতলা নামার সিড়ি
০৮ তিনতলা থেকে দোতলা নামার সিড়ি
৯ তিনতলা ডেকে পুরো লঞ্চ এর মডেল
১০ ঘুমে আছন্ন্ ইউসুফ
১১ মাঝের করিডর
১২ লঞ্চের ভিতরে ভিআইপি কেবিন এর সামনে দোকান
১৩ সব থেকে উপরের ডেকে হাওয়া খাওয়া
১৪ ইঞ্জিন রুম
১৫ নিচের ডেক
১৬ লঞ্চ এর টিকিট
১৭ ঢাকা ছেড়ে যাওয়া
১৮ নিচের ডেক
১৯ লঞ্চএ উপরের পিছন এর দিক
২০ নিচের ডেক থেকে উপরের উঠার সিঁড়ি
২১ লঞ্চএ খাবার এর হোটেল
২২ লঞ্চএ খাবার মেন্যু শুধু এই আর কিছু নাই
২৩ হোটেল এর পরিবেশ
২৪ হোটেল এর পরিবেশ
২৫ তিনতলা ডেকে সকাল এ বরিশাল শহরে
২৬ ভিআইপি জোন ঢুকতে পারি নাই তাই ফটকের সামনে ফোটো
২৭ ভোরের চাঁদ বরিশাল
২৮ ভোরের আলো বরিশাল এর
২৯ এপিফানী গির্জা/ অক্সফোর্ড মিশন ।
৩০ এপিফানী গির্জা
৩১ এপিফানী গির্জা যিশুর সাথে মোলাকাত ব্লগার রাকিব এর
৩২ এপিফানী গির্জা যিশুর সাথে মোলাকাত
৩৩ এপিফানী গির্জা/ অক্সফোর্ড মিশন ।
৩৪ বরিশাল শহরে ইজিবাইক চালানো
৩৫ বরিশাল শহরে অটোতে ঘুরা
৩৬ শহরের রাস্তা
৩৭ বিবির পুকুর ।
৩৮ জেলা পরিষদ
৩৯ দূর্গা সাগর দিঘী
৪০ দূর্গা সাগর দিঘীর সামনে
৪১ দূর্গা সাগর দিঘী
৪২ দূর্গা সাগর দিঘী
৪৩ দূর্গা সাগর দিঘীর পাড়
৪৪ দূর্গ সাগর দীঘি র সিড়ি তে ব্লগার রাকিব
৪৫ দূর্গ সাগর দীঘি র সিড়ি তে ওরা তিনজন
৪৬ দূর্গা সাগর দিঘীর পাড়
৪৭ দূর্গা সাগর দিঘী
৪৮ কাইজা
৪৯ র্কীতনখোলা নদীর পাড়ে
৫০ র্কীতনখোলা নদীতে পুলিশের নৌকা
৫১ মুক্তিযোদ্ধা পার্ক
৫২ র্কীতনখোলা নদীর পাড়
৫৩ র্কীতনখোলা নদীর পাড়
৫৪ র্কীতনখোলা নদীর পাড়ে
৫৫ র্কীতনখোলা নদীর পাড়ে দুইটি শিশু
৫৬ গুটিয়া মসজিদ
৫৭ গ্রামের রাস্তা
৫৮ গুটিয়া মসজিদ
৫৯ গুটিয়া মসজিদ এর তিতির পাখি
৬০ গুটিয়া মসজিদ এর পুকুর পাড়
৬১ গ্রামের রাস্তা
৬২ গুটিয়া মসজিদ নোটিশ বোর্ড
৬৩ গুটিয়া মসজিদ
৬৪ বিকালের নাস্তা
২৪ শে মে, ২০১৪ রাত ৩:৩০
মিঠুন_বিশ্বাস_রানা বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ২৪ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১২:০২
লিপইষ্টিক বলেছেন: বরিশাল আমার শহর, আমার প্রানের শহর।
৩| ২৪ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১২:০২
লিপইষ্টিক বলেছেন: বরিশাল আমার শহর, আমার প্রানের শহর।
২৫ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১:১৭
মিঠুন_বিশ্বাস_রানা বলেছেন: ধন্যবাদ।
৪| ২৪ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:৩৪
সুমন কর বলেছেন: শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। গুড পোস্ট।
২৫ শে মে, ২০১৪ রাত ১:৫৬
মিঠুন_বিশ্বাস_রানা বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে মে, ২০১৪ রাত ৮:৩৮
আকরাম বলেছেন: খুব ভালো হয়েছে।
আমাকে টানে এই বরিশাল!
ধন্যবাদ।