নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

*----------একজন সাধারণ মানুয----------*

মোহামমদ ইকবাল হোসেন

শূন্য হাতে এলাম আমি/শূন্যে বসবাস/জলের মাঝে জন্ম আমার/জলে সর্বনাশ।

মোহামমদ ইকবাল হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

রম্য অনু: মানবের মিথ্যা বলার কারণসমুহ

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:৪৭

ডক্টর গোমেজ, একজন হিউম্যান বিশেষজ্ঞ। বহুদিন ধরে তিনি মানুষের উপর গবেষনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার গবেষনার ফলাফল সর্বজন স্বীকৃত। এবার তিনি নতুন একটা গবেষনার কাজে হাত দিয়েছেন। যার বিষয় হল, “ মানব কেন মিথ্যা বলে?”



তিনি কিছুদিন ধরে খুব সকালে ঘুম থেকে উঠেই ঘর থেকে বের হন। উদ্দেশ্য- তার পরিচিত কিছু মিথ্যাবাদী মানুষের মুখের ভিতরের লালা সংগ্রহ করা। ঘুম থেকে উঠার পর পরই তিনি এটা সংগ্রহ করছেন। কারণ ব্রাশ করা হয়ে গেলে তার উদ্দেশ্যের ব্যাঘাত ঘটবে। তাঁর আরো একটি আলামত লাগবে, সেটা হচ্ছে মাথার মগজ। কিন্তু এটা নেয়া তার পক্ষে অসম্ভব। জীবিত মানুষের কাছে এটা চাইলে মার খাবার সম্ভাবনা খুব বেশী। সেজন্য তিনি প্রাথমিক ভাবে অন্য একটি পন্থা অবলম্বন করেছেন। যেটি হল মাথার চুল টেনে উঠানোর পর চুলের গোড়ায় অল্প পরিমান যে বস্তুটি উঠে আসে সেটাই এখন স্যাম্পল হিসেবে ব্যবহার করা।

ডক্টর গোমেজ, তার চেনা জানা ১০ জন বয়স ভিত্তিক মিথ্যাবাদীর কাছ থেকে এসব আলামত গুলো সংগ্রহ শেষ করেছেন। এবার ল্যাবে রিসার্চ এর কার্যক্রম শুরু হবে।

আজ ভোরে ঘুম থেকে উঠেই ডক্টর গোমেজ নাস্তা সেরে নিলেন। তিনি নাস্তায় চায়ের সাথে একটা চেলি বিস্কিট খেতে পছন্দ করেন। চেলি বিস্কিট নাম টি স্থানীয় ভাবে বলা হয়। দেখতে কাঠের টুকরার মত। চেলি বিস্কিট চায়ের কাপে ডুবিয়ে নরম করে মুখে তুলে নিচ্ছেন। ব্যস্ততা নেই, শান্ত ভাবে নরম বিস্কিট খাছেন। চেলি এবং চা শেষ হয়ে গেছে। ডক্টর গোমেজ, ল্যব এর উদ্দেশ্যে বের হচ্ছেন।

ল্যব এ পরীক্ষা শুরু করেছেন। তার পরীক্ষার দৃশ্যটি কিছুটা অসাভাবিক। তিনি পরীক্ষা করার সময় বিস্মিত হলে তার মাথার মাঝখানের চুলগুলো সোজা হয়ে দাড়িয়ে যায়। প্রথমে ৫টি টিউব নিয়েছেন, প্রত্যেকটিতে নাম লিখে নিয়েছেন। তারপর আলামত গুলো খুব ঠাণ্ডা মাথায় ঢেলে নিচ্ছেন। নাড়াচ্ছেন টিউব গুলো একটা একটা করে, ধীরে ধীরে তিনি অস্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছেন। মনে হচ্ছে তিনি বস্মিত হবার মত কিছু দেখছেন।

ডক্টর গোমেজ, সব গুলো আলামতের উপর পরীক্ষা চালিয়েছেন। এবার সিদ্ধান্তের পালা। মানব যে সব কারণে মিথ্যা বলে তা বের হয়েছে ঠিক এই ভাবে।

 প্রথমত মানব অভ্যাস বশত অথবা অযথা মিথ্যা বলে ।

 মানব বিপদে পড়ে মিথ্যা বলে নিজেকে বাঁচাতে চায়।

 নারীর প্রেমে পড়েও মানব মিথ্যা বলা শুরু করে, এই প্রবনতা তরুনদের মাঝে বেশি দেখা যাচ্ছে বলে তিনি বিস্মিত হয়ে গেলেন।

 নিজেকে উপরে উঠাতেও মানব মিথ্যা বলে। এই ধরনের মিথ্যা ইদানিং কালের যুবকদের আলামতে বেশি পরীলক্ষিত হয়েছে তিনি আবারো বিস্মিত হলেন।

 বৃদ্ধরা মিথ্যা কম বললেও, পুরনো দিনের কথা বলতে গিয়ে বাড়িয়ে বলার অভ্যাসটাও তিনি দেখেছেন। যা মিথ্যা বলার মধ্যে পড়ে। তিনি দুঃখ বোধ করলেন।

প্রধানত এসব কারণগুলো ডক্টর গোমেজ খুঁজে পেয়েছেন। আগামীকাল কিছু দৈনিক পত্রিকায় এটা নিয়ে বিশেষ রিপোর্ট ছাপা হবে। সত্যবাদি মানুষ গুলো পড়ে নিজেকে আরো সত্যবাদি বানানোর চেস্টা করবে। কিন্তু এই রিপোর্ট মিথ্যাবাদীদের চোখে পড়বেনা অথবা তারা এড়িয়ে যাবে। দুইএকজন মিথ্যাবাদী এটা আগ্রহ নিয়ে পড়লেও তার মিথ্যা কর্মগুলো চালিয়ে যাবে।

কিন্তু ডক্টর গোমেজ তার পথ থেকে সরে দাড়াবেন না। কারণ তিনি রিপোর্টের মন্তব্যে লিখেছেন:



"আমি মানবের মিথ্যা বলার কারণগুলো দেখে বিস্মিত হলেও বিচলিত নই। আমি বিশ্বাস করি মানবের মধ্যে এখনও সত্যবাদীর সংখ্যা বেশি। যারা মিথ্যা বলে পৃথিবী জয় করার চেষ্টা করছে তারা যেন ঐ পথ ছেড়ে আসে। কারণ মিথ্যার জয় ক্ষনস্থায়ী এবং সত্যের জয় চিরস্থায়ী।"

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.