নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাঝে মধ্যে লিখি

এম এম করিম

মাঝে মধ্যে লিখি

এম এম করিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাতুলের মা (ছোটগল্প)

০১ লা মে, ২০১৫ রাত ১২:৩৮

আমাল নাম লাতুল। লাতুল মানে লাআআআআআতুল। মা বলে ‘তোতলা বাবা’। আমি নাকি ‘র’ কে ‘ল’ বলি, আবাল ‘ল’-কেও ‘ল’ বলি। ‘ট’ কে ‘ত’ বলি আবাল ‘ত’-কেও ‘ত’ বলি। এই লকম নাকি আলো অনেক আসে। আমি বলি, ‘কই!’ আমলা তাকাতুলিতে একতা ছোত বাসায় থাকি – আমি আল মা। আমাল বাবা বিদেসে থাকে। ইতালি একতা দেস্‌ আসে না! অইখানে। আমি বাবাকে কনোদিন দেখি নাই। বাবা তো আসেই নাই, দেখবো কি কলে! মা বলে বাবাল অনেক কাজ, তাই সময় পায় না। আমি যখন ঘুমিয়ে থাকি, লাতের বেলা, বাবা তখন ফুন দেয়। আমি কতদিন মা’কে বললাম বাবা ফুন দিলে আমাকে দেকে দিতে, মা কনোদিন দাকে না। আমাল খুব লাগ হয়। আমি লাগ কললে অবস্য মা অনেক মন খালাপ কলে। আমাকে হাসানোর জন্য অনেক কিসু কলে। মজাল মজাল কথা বলে, সুলসুলি দেয়, আল উল্‌তাপাল্‌তা অনেক নামে দাকে।

‘আমাল কত্তগুলা নাম, মা?’ জানতে চাইলে মা বলে,

‘আমার বাপুনির কোটি কোটি নাম’

‘কি কি?’

মা বলতে থাকে এক্‌তা এক্‌তা কলে। মা’ল নাম বলা আল সেস্‌ হয় না। খালি নতুন নতুন নাম বানায়। আমি বলি, ‘এইটা কনো নাম হল, অথ্‌থো কি?’ মা আমাল গালে চুমু খেয়ে বলে, ‘কোন অর্থ নেই। আমার প্রাইসলেস জানটার মিনিংলেস নাম’

মা এখন সালাদিন বাসায়ই থাকে। আগে এক্‌তা চাকলি কলতো, ছেলে দিয়েসে। চাকলি কললে আমাকে সময় দিতে পালে না, আমাল অনেক কস্‌তো লাগে, মা’লও অনেক কস্‌তো লাগে – এজন্য চাকলি ছেলে দিয়েসে। বিস্‌সাস হয়না! মাকে জিগ্‌গাস্‌ কলো, মা-ইতো বল্‌সে আমাকে!

সকালবেলা মা আমাকে ইস্‌কুলে নিয়ে যায়, অখানেই বসে থাকে, তারপর ছুতি হলে বাসায় নিয়ে আসে। এখন তো হত্তাল। অই যে তিভি তে দ্যাখো না! হত্তালে মানুস্‌ ঘল থেকে বেল হলে পুলিয়ে মেলে ফেলে। এই জন্ন ইস্‌কুল মোবাইলে মেসেজ দিসে – হত্তালে ইস্‌কুল নাই। সুক্‌লোবাল আল স্‌নিবালে ক্লাস্‌ হয়। মিস্‌-লা সালা সপ্তাল পলা দিয়ে দেয়। মা আমাকে বসে বসে হোমওয়াক কলায়। আমাল একদম ভাল লাগেনা।

বাসায় আমাদেল এক্‌তা খালা আসে। লান্না, কাপল ধোয়া – সব কাজ খালাই কলে। আমি আল মা পলি, খেলি আল কাতুন দেখি। কাল থেকে খালা নেই, বালি গেসে। এখন সব কাজ মা’ল কত্তে হস্‌সে।

কয়েকদিন ধলে আমাল জল, কেমন জানি লাগে। এলকম আগে কখনো হয়নি। মা বলে, ‘কিচ্ছু হবে না, আমার গুলটুলটা ঠিক হয়ে যাবে। কালই ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবো।’ আজ বিকালে বালিওয়ালা এসেছিলো। বলে, ‘মাসের অর্ধেক হয়ে গেলো আপনি ভাড়া দিচ্ছেন না কেন?’ মা’ল মুখ শুকিয়ে কালো হয়ে গেলো। বললো, ‘কালই দিয়ে দিবো। ওর বাবার টাকা পাঠাতে একটু দেরি হচ্ছে তো, সেজন্য দিতে পারিনি।’ মা ওকে চা খেতে বসতে বলসিলো, বসেনি। লোক্‌তা ভাল না। মা’ল খুব মন খালাপ হল। মা ফুন কত্তে লাগল এত্তাল পল এত্তা।

মা যখন এলকম ফুন কলে তখন আমাল একদম ভাল্লাগেনা। ফুন কলে কলে মা বাইলে চলে যায় – লাতের বেলা যায়, আবাল দিনেল বেলায়ও যায়। আমি আল খালা ঘলে থাকি, মা-কে ছালা থাকতে আমাল ভাল্লাগেনা।

লাত হয়ে গেসে, আমি জল নিয়ে শুয়ে আসি। আজকে মনে হয় মা আল বাইলে যাবেনা। লাতে খাবাল পল মা এত্তা এইস দিসে আমাকে, কিন্তু জল তেমন কমসে না। মা এত্তু পল পল জলপত্তি উলতিয়ে দিস্‌সে। আমাল অসুখ হলে মা’ল অনেক কষ্‌তো লাগে, এত্তু এত্তু কান্না কলে আল আমাকে আদল কলে।

হথাত্‌ ফুনতা বেজে উথলো। মা মোবাইল নিয়ে অন্ন ঘলে চলে গেলো। আমি সব কথা সুনতে পাসসিলাম না, কিসু কিছু কানে আসসিলো। মা বলসে, ‘এতো রাতে......ছেলেটার......কিভাবে......’ তালপল আল কিসু সুনতে পাইনি, মা দলোজা বন্ধ কলে দিসে।

দস্‌ মিনিত পল মা আমাল ঘলে আসলো। চেহারাতা এত্তু বদলে গেসে, মুখতা কালচে হয়ে গেসে। আমাকে দুহাতে ধলে তুলতে তুলতে বলল, ‘একটু উঠতো জান্টুশ, আমাদের বাইরে যেতে হবে’।

‘কোথায় মা?’

‘লালমাটিয়া। আমার এক খালা আছে না, ঐ যে আরেকদিন তোকে রেখে গিয়েছিলাম! খালার অনেক অসুখ, আজকে আমরা ঐখানে থাকবো।’

‘আমাল ইসসে কসসে না, কালকে যাই?’

‘না বাবা, মা’র যেতে হবে, অনেক দরকার।’

মা আমাকে ধোয়া জামা কাপল পলাতে লাগল, সেদিন কেনা নতুন জুতোতাও পল্লাম। মা-ও খুব তালাতালি তৈলি হয়ে গেলো। মা দলোজায় তালা লাগাতেই পাসেল বাসাল আন্তি বেলিয়ে এল। মা’ল সব্দ পেলেই কথা বলতে আসে আন্তি।

‘আপা বাইরে যাচ্ছেন?’

‘হ্যা আপা’

‘রাত তো অনেক, রাস্তাঘাটের যা অবস্থা’

‘হম্‌ম্‌, কি করবো বলেন? খালা ফোন দিয়েছে, শরীর খারাপ। ওনার আবার ছেলেমেয়ে সব দেশের বাইরে।’

‘হ্যা, বিপদ-আপদ তো আর সময় ধরে আসেনা। আমারো চাচী অসুস্থ, একটু আগে মিটফোর্ড থেকে আসলাম’

‘ও’

‘আপা আপনার হাজব্যান্ড জানি কই থাকে?’

‘ইতালী’

‘ইতালী তো জানি। আমার চাচাতো বোনের দেবর, আজকে দেখা হলো, রোমে থাকে, এক মাসের জন্য এসেছে। ওর সাথে কথা হচ্ছিলো। আপনার হাজব্যান্ডওতো রোমে থাকে’

‘না না না, ও রোমে ছিলো, এখন নেপল্‌স্‌-এ’

‘ও, রোম থেকে অনেক দূরে?’

‘তা তো জানিনা আপা’

‘সে যাই হোক, ইতালীতেই তো! আপনি কিছু পাঠাতে চাইলে ওর কাছে দিয়ে দিতে পারেন, পৌঁছে দেবে’

‘ঠিক আছে আপা, আমি আপনাকে জানাবো’

‘আচ্ছা আপনি যান। অনেকদূর যেতে হবে, রাত তো কম হলোনা!’

‘আল্লাহ ভরসা, সমস্যা হবেনা। হরতালে তো সবই চলছে’

আন্তির কাস্‌ থেকে বিদায় নিয়ে মা আমাকে কোলে নিয়ে নিচে নামলো। লিক্সাল জন্ন বেসিক্‌খন দালাতে হলোনা। লিক্সায়ও মা আমাকে কোলে নিয়ে বসে থাকলো। মতিঝিল এসে আমলা এক্‌তা বাসে উথলাম। মহিলা আল সিসুদের জন্ন সিতগুলোর পথমতাতে বসলাম। বাসেল লোকতা মোহাম্মদপুল বলে চেঁচাসসে আল বলসে এতাই লাস্‌ত তিপ। লোকজন তেমন উথসেনা, আমলাসহ নয়জন যাতলি, আমি গুণে দেখেসি। না না দস্‌জন, এইযে একজন এখন উথলো। দেলি দেখে মা দাইভালকে বললো, ‘ভাই ছাড়েন না, রাস্তায় তো লোক পাবেন’। দাইভাল এত্তু বিলক্ত, ‘আপা এইহানেই যদি না পাই, রাস্তায় পামু? এই গাড়ি লয়া গেলে তো তেলের খরচাও উঠ্‌তো না’। মা আল কিসু বল্লোনা। আলো কতক্‌খন বাস্‌তা দালিয়ে থাকলো। হেল্‌পাল্‌তা বাসে বালি দিসসে আল চেঁচাসসে। মাত্‌লো দুজন যাতলি উথলো। দাইভাল বাস স্তাত কল্লো। খালি লাস্তা, থান্ডা বাতাস আসসে। অনেক থান্ডা না, এত্তু থান্ডা। আমলা সিসু পাক চলে এলাম। এই জায়গা আমি চিনি। মা এখানে আমাকে কয়েকবাল নিয়ে আসসিলো, আমলা অনেক মজা কসসিলাম।

মা’ল মোবাইলতা বেজে উথলো। মুখেল সামনে হাত দিয়ে আমাল উল্‌তা দিকে মুখ ঘুলিয়ে মা কথা বলতে লাগলো। আমি সব সুনতে পাইনি, কিসু কিসু সুনেসি, ‘......আধা ঘন্টা......হ্যা......খুব শান্ত.........করবেনা......’ কথা বলা সেস কলে মা আমাল দিকে তাকিয়ে এত্তু হাসলো, মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো, তালপল কোলে নিয়ে জলিয়ে ধলে বসে লইলো।

বাস এক্‌তা জায়গায় আস্‌লে মা হেল্‌পাল্‌কে বল্লো নামিয়ে দিতে। দাইভাল বাস থামিয়ে আমাদেল নামিয়ে দিলো। লাস্তাল মোলে কয়েকতা লিক্সা দালিয়ে সিলো। দস্‌ মিনিতেল মধ্যে আমলা অনেক সুন্দল এক্‌তা বাসাল সামনে পৌঁস্‌লাম। আমাকে দাল কলিয়ে লেখে মা দালোয়ানেল সাথে কি কথা বল্লো। ইন্তালকমে কথা বলে সে আমাদেল ভেতলে দুকতে দিলো। লিফ্‌তে উথে আমলা পাঁচ তলায় গেলাম। বেল দিতেই অনেক লম্বা, বিসাল এক্‌তা লোক দলোজা খুল্লো।

‘স্লামালেকুম খালু’

‘আসো’

‘খালাম্মা......?’

‘ভেতরের ঘরে শুয়ে আছে’

‘রাতুল, বাবা এখানে বসো’ মা সোফা দেখিয়ে আমাকে বসতে বল্লো।

লোক্‌তা তিভি সেড়ে দিলো, ‘তুমি বসে টিভি দেখো। কোন চ্যানেল দেখো?’

‘কার্টুন পেলে আর কিছু লাগেনা ওর’ মা বলে।

‘ওকে’ কাতুন চ্যানেলে দিয়ে লোকটা বলে, ‘এই যে কার্টুন চ্যানেল। এখানে চুপচাপ বসে দেখো। কিছু দরকার হলে ডাক দেবে, এখান থেকে নড়বে না একদম, বুঝেছো?’ আমি একপাসে মাথা নাল্লাম।

‘ঠিক আছে বাবা, চুপ করে বসে কার্টুন দেখো। ঘুম আসলে জুতো খুলে, কুশনটা মাথার নিচে দিয়ে এখানে শুয়ে পড়ো। আর টয়লেট ওইটা। আমি একটু পরপর এসে দেখে যাবো। খারাপ লাগলে আমাকে ডেকো। ভেতরে যেয়োনা, এখান থেকে ডেকো। খালার অনেক অসুখ তো, ভেতরে গেলে রাগ করবে’ মা বল্লো, আমাল মাথায় হাত লেখে। আমি আবালো মাথা কাত কলে জানালাম যে থিক আসে।

মা আল লোক্‌তা ভেতলে চলে গেসে অনেক্‌খন। আমি চুপচাপ বসে কাতুন দেখ্‌সি। আমাল ভাল্লাগসেনা, জলতা মনে হয় বালসে, থাম্মোমিতালতা আনলে বুজা যেত জল কত। মাথাতা এত্তু এত্তু বেথা কসসে। আমি পা দুতা সামনেল কাঁচেল তেবিলেল উপলে তুলে দিলাম। মা আসে না কেন? মা’ল খালাল কি অসুখ? সে কি মালা যাবে?

তেবিলে এক্‌তা সুন্দল সোপিস্‌ লাখা আসে – এক্‌তা মেয়ে নীল জামা পলে সুয়ে আসে, অনেক সুন্দল। আমি দেখসি আল পা দিয়ে ছুঁসসি। হতাত্‌ কলে কিভাবে জানি ওতা পলে গেলো। সব্দ হলো জোলে, একেবালে ভেঙে গেসে। দলোজা খোলার সব্দ, সাথে এক্‌তা ভালি গলা সুনতে পেলাম। ‘এই কি পড়েছে?’

ঘলে এসে সামনে দালালো লোক্‌তা, খালি গা, লুঙ্গি পলা। তুকলা হয়ে যাওয়া সোপিসের দিকে তাকিয়ে থাকলো কিছুক্‌খন। আমি আস্তে আস্তে উথে দালালাম। ‘এটা ভাঙ্গলে কেনো’ চেঁচিয়ে বল্লো সে। তালপল আমাল বাম গালে থাস কলে এক্‌তা চল মাল্লো। কাঁধ ধলে ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে আলেক্‌তা চল মাল্লো। আমাল মাথাতা ঝিমঝিম কলে ঘুসসে। ‘এটা ধরলি কেন তুই......চুপ করে বসে থাকতে বলিনি?......জানিস এটার দাম কতো?’

ভেতল থেকে মা সুতে আসলো, সালি থিক কত্তে কত্তে, চুলগুলো খোলা।

‘কি হয়েছে?’

‘দেখো প্যারিস থেকে আনা এতো দামী শো পিসটা ভেঙ্গে ফেলেছে’

আমি কাঁদতে কাঁদতে বললাম, ‘আমি ইসসে কলে ভাঙিনি মা, পা লেগে পলে গেসে......ও আমাকে মেলেসে...দুইতা থাপ্পল মেলেসে, অনেক জোলে’

‘আপনি ওকে মেরেছেন?’ মা চোখ বলো বলো কলে জিজ্ঞাস কল্লো।

‘এতো দামী একটা জিনিস ভেঙ্গেছে, মারবো না?’

‘বাচ্চা মানুষ, ভেঙ্গে ফেলেছে। তাই বলে আপনি ওর গায়ে হাত তুলবেন?’

‘তুমি জানো এটার দাম কতো? আগেই বলেছিলাম ব্যাগেজ সাথে না আনার জন্য’

‘দাম যা-ই হোক, আপনি ওর গায়ে হাত তুলবেন কেনো।’ লোক্‌তাল খুব কাসে গিয়ে আঙুল তুলে বলে মা। ‘আর ব্যাগেজ বলছেন কাকে? ও আমার ছেলে। আপনি আমাকে বলতে পারতেন, ওকে মারলেন কেনো?’

‘গলা নামিয়ে কথা বলো। আমার সাথে বেয়াদবি করবেনা’

‘বেয়াদবি কাকে বলছেন! আমার ছেলেকে মারবেন আর কিছু বলা যাবেনা আপনাকে!’

‘ঠিক আছে, তুমি তোমার ছেলেকে নিয়ে যাও। বাট রিমেম্বার, আমি আর ডাকছিনা তোমাকে’

‘আপনি ডাকলেও আর আসবোনা। মানুষ মনে হয়না আমাদের?’

‘অত বেশি কথা বলোনা’ বলে লোক্‌তা ভেতরে চলে যায়। মা আমাকে জুতো পলাতে থাকে। লোক্‌তা ভেতল থেকে ফিলে আসে, কতগুলো তাকা মা কে দিতে চায়। ‘এই নাও তোমার টাকা’

‘রেখে দিন ওগুলো, আপনার শোপিসের দাম দিয়ে গেলাম’ মা চুল থিক কত্তে কত্তে বলে।

‘তোমার দাম ওটার চেয়ে অনেক কম’

‘দাম কত বলুন, টাকা পাঠিয়ে দিবো’

‘তুমি কিন্তু বাড়াবাড়ি করছো। তোমার মতো মেয়েদের এত দেমাগ কিসের?’

‘আমার মতো মেয়েদের মানে? নিজেকে ভালো করে চিনতে শিখুন। মানুষ হিসেবে আপনি আমার লেভেলে নেই। অনেক নিচে, অনেক।’

‘হোল্ড ইয়োর টাং, ব্লাডি হোর’

‘একটা বাজে কথা বলবেন না। কমপ্লেক্সের সবার ঘুম ভাঙ্গিয়ে আপনার ভালো মানুষি জানিয়ে যাবো। বউ-ছেলেমেয়েকে বেড়াতে পাঠিয়ে অন্য মেয়েকে বাসায় আনেন, লজ্জা করেনা আপনার! আমার লজ্জা নেই কারণ এটা আমার পেশা, কাউকে ঠকাইনা আমি। কিন্তু আপনি আপনার পরিবারের সাথে প্রতারণা করছেন। ভন্ড কোথাকার!’ বলে মা দলোজা খুলে আমাকে নিয়ে বেলিয়ে আসে। লোক্‌তা দলোজা লাগিয়ে দিলো, অনেক জোলে। লিফ্‌ত এলে নিচে নেমে গেতের বাইলে এসে দালালাম আমলা। দালোয়ানতা কিভাবে যেন তাকাসসে। মা চুপ কলে দালিয়ে আসে, আমি মা’ল পাসে। মা’ল মুখতা একদম কালো হয়ে গেসে। মা কে এমন কখনো দেখিনি আমি। মাথাতা এত্তু নিচু, মাঝে মধ্যে তুলে দেখসে কনো লিক্সা যাসসে কিনা, তালপল আবাল নিচে, কি যেন ভাবসে। আমি অনেক্‌খন মা’ল দিকে তাকিয়ে আসি, মা একবালও আমাল দিকে তাকায়নি। কি হয়েসে মা’ল? আমি মা’ল কাস ঘেঁষে দালিয়ে ডাকলাম, ‘মা’।

মা আমাল দিকে তাকালো। আমি সক্ত কলে মা’ল এক্‌তা হাত ধল্লাম। মা এত্তু হাসলো, তালপল লাস্তাল দিকে তাকালো। আমিও তাকালাম। লম্বা, সোজা লাস্তাতা একদম ফাঁকা, তেমন আলোও নেই। মা আমাল হাত ধলে হাত্তে সুলু কল্লো।

ঢাকা, মার্চ-এপ্রিল ২০১৫।

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা মে, ২০১৫ রাত ৯:৩৮

দীপংকর চন্দ বলেছেন: সমাজের কিছু চিত্র বড়ো করুণ!!

মন ছুঁয়ে গেলো ভাই!

ভালো থাক মানুষ।

শুভকামনা জানবেন। অনিঃশেষ।

ভালো থাকবেন। সবসময়। অনেক।

০১ লা মে, ২০১৫ রাত ১১:২৫

এম এম করিম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ দাদা, পাঠ ও মন্তব্যের জন্য।

ভালো থাকবেন।

শুভকামনা সতত।

২| ০২ রা মে, ২০১৫ রাত ১:১২

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: মন ছোঁয়া গল্পে কিছু বলার নাই। নীরব দুঃখের নদী বয়ে চলে আমাদের চারিপাশে, টের পায় শুধু তারাই যারা পা ভিজিয়েছে সেই নদীতে। :( :'(

০২ রা মে, ২০১৫ দুপুর ১২:২৯

এম এম করিম বলেছেন: "নীরব দুঃখের নদী বয়ে চলে আমাদের চারিপাশে, টের পায় শুধু তারাই যারা পা ভিজিয়েছে সেই নদীতে।"

খুব সুন্দর বলেছেন।

ভাল থাকবেন সবসময়।

৩| ০২ রা মে, ২০১৫ দুপুর ১:১৬

হাসান মাহবুব বলেছেন: পড়তে খুব কষ্ট হৈসে। বাচ্চাদের ভাষা এত কঠিন!

০২ রা মে, ২০১৫ রাত ১১:০৮

এম এম করিম বলেছেন: বাচ্চাটাকে তোতলা বানিয়ে খুব বিপদে পড়ে গিয়েছিলাম।
কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন সর্বদা।

৪| ০২ রা মে, ২০১৫ দুপুর ২:৩৪

আরাফাত নিলয় বলেছেন: গল্পের ঢঙ একেবারেই আলাদা। কি বলবো বুঝছিনা, আপনার লিখনিতে আপনি সমাজের অন্য অনেকদের চেয়ে এগিয়ে, যেটা সমাজ আরো না এগোলে বুঝতে পারবে না।

০৩ রা মে, ২০১৫ রাত ১২:২৫

এম এম করিম বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ এমন অনুপ্রেরণাদায়ী মন্তব্যের জন্য।

ভালো থাকবেন।

শুভকামনা সতত।

৫| ২২ শে মে, ২০১৫ রাত ১২:১০

আরজু পনি বলেছেন:
লেখাটা পড়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল ।

মেয়ে, বাচ্চা দু'জনের জন্যেই খারাপ লাগছে...মেয়েরা মাঝে মাঝে বড্ড অসহায় হয়ে যায়...তারপরও এইধরনের পেশাকে সাপোর্ট করতে পারিনা। মেয়েরা চাইলে নিজের সম্মান নিয়ে বাঁচতে পারে...নিজেকে চাইতে হবে ।
লেখায় ভালো লাগা রইল, করিম ।

১৪ ই জুন, ২০১৫ রাত ৯:২০

এম এম করিম বলেছেন: 'মেয়েরা চাইলে নিজের সম্মান নিয়ে বাঁচতে পারে ...নিজেকে চাইতে হবে ।'

অনেক ধন্যবাদ আপু সাথে থাকার জন্য।

আশা করি ভালো আছেন।

শুভকামনা সতত।

৬| ২৩ শে মে, ২০১৫ সকাল ৭:১১

পেন আর্নার বলেছেন: সন্তানের দৃষ্টিকোণ থেকে তুলে আনা জীবনের একটি পরিচিত প্রেক্ষাপট, ভালো লেগেছে।

শুভকামনা।

১৪ ই জুন, ২০১৫ রাত ১০:৩১

এম এম করিম বলেছেন: ধন্যবাদ পাঠ ও মন্তব্যের জন্য।

ভালো থাকুন নিরন্তর।

৭| ২৬ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১:৩৩

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: বাচ্চার মুখে অনেক বড় গল্প , বাচ্চাটা কি তা জানে ?
অন্যরকম বিন্যাসের কারণে গল্পটা ভালো লাগলো করিম ভাই ।
ভালো থাকবেন ।

১৪ ই জুন, ২০১৫ রাত ১১:০৯

এম এম করিম বলেছেন:
আপনার ভালো লাগা অনুপ্রেরণা হয়ে রইলো মাহমুদ ভাই।
শুভকামনা সবসময়।

৮| ১১ ই জুন, ২০১৫ সকাল ১১:২৯

এহসান সাবির বলেছেন: তিন নং ভালো লাগাটা আমার।

১৫ ই জুন, ২০১৫ রাত ১২:০৪

এম এম করিম বলেছেন: ভাল লাগার এই আকালের দিনে বুঝতেই পারছেন এর গুরুত্ব কতটা!

ভালো থাকুন সর্বদা।

৯| ০৩ রা জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৬

মারুফা নাসরীন মিলি বলেছেন: গল্প ভাল, তবে পড়তে কষ্ট হয়েছে।

১৩ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:৫৮

এম এম করিম বলেছেন: কষ্ট করে পড়বার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

শুভকামনা সতত।

১০| ০৭ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৫

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: অনেক ভাল লিখেছেন। পড়ার কষ্ট সার্থক।

১৯ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১:১৫

এম এম করিম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ প্রোফেসর কষ্ট করে পড়ার জন্য।
আপনার ভালো লাগা সব সময়ই বিশেষ কিছু।
ভালো থাকবেন। ঈদের শুভেচ্ছা রইল।

১১| ১৮ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১০:৫৭

এহসান সাবির বলেছেন: ঈদের শুভেচ্ছা রইল। ভালো থাকুন সব সময়।

শুভ কামনা।

১৯ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:০০

এম এম করিম বলেছেন: ঈদ মোবারক।
ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
শুভকামনা সতত।

১২| ১৯ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:৩২

প্রামানিক বলেছেন: গল্প অনেক ভাল লাগল। ধন্যবাদ

১৯ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:১০

এম এম করিম বলেছেন: ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই।
ভালো থাকবেন।

১৩| ২৬ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:০৬

ডি মুন বলেছেন: পঞ্চম ভালোলাগা
++

গল্পের বিষয়বস্তুতে নতুনত্ব না থাকলেও বর্ননার ভিন্নতা গল্পটিকে অনন্যতা দিয়েছে।
ভালো থাকুন।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

২৬ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:৪২

এম এম করিম বলেছেন: পঞ্চম ভালোলাগায় পঞ্চানন্দ পেলাম।

আশা করি ভালো আছেন।

শুভকামনা সতত।

১৪| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৪৯

এহসান সাবির বলেছেন: ঈদের শুভেচ্ছা।
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
শুভ কামনা রইল।

১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০০

এম এম করিম বলেছেন: এত দেরীতে আর ঈদের শুভেচ্ছা জানানো যায় না।
আপনি ভালো থাকুন সর্বদা।
এই কামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.