নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সৃষ্টিসুখের উল্লাসে

মোঃ ইয়াসির ইরফান

পৃথিবীর সব রাজনীতিবিদ যদি কবিতা ভালোবাসতেন অথবা সব কবি যদি রাজনীতিবিদ হতেন তাহলে পৃথিবীটা আরো সুন্দর ও বাসযোগ্য হয়ে উঠতে পারত। -জন এফ কেনেডী

মোঃ ইয়াসির ইরফান › বিস্তারিত পোস্টঃ

তামিম কেন দলে !!!

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:১৩

'তামিম চাচার জোর না থাকলে কোনমতেই টিমে থাকে না' ! কথাটা অনেকবার শুনেছি । লাস্ট সিরিজের সফল ব্যাটসম্যানদের একজন হওয়ার পরও তামিমের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠে ! কেন উঠে ! হয়তো তামিমের চাচা নির্বাচক ছিলেন বলে ! হয়তো বোর্ডে আছেন বলে !



বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অনেক স্মরণীয় অর্জনের অন্যতম যোগানদার সে । ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রান তাড়ায় তামিমের ১৫৪ এখনো বাংলাদেশের পক্ষে একক সর্বোচ্চ ইনিংস । এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের আসরে তাঁর টানা ফিফটি স্মরণীয় সাফল্য পেতে আমাদের সাহায্য করেছিল । লর্ডস, ওল্ড ট্রাফোর্ডে ইংলিশ আক্রমণকে ফালা ফালা করে তাঁর দুঃসাহসিক ইনিংস আমাদের নিয়ে গিয়েছিল অন্য চূড়ায় । উইজডেনের সেরা ক্রিকেটার কিংবা অনারারী বোর্ডে তাঁর নাম আমাদের করেছিল গর্বিত ।



বাংলাদেশের ক্রিকেটের পালাবদলের অন্যতম রুপকারকে শুনতে হয়, সে কেন দলে ! দলের জন্য নিবেদিত কি না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠে ।

অথচ তাঁর স্বভাব বিরুদ্ধ ব্যাটিংয়ের সেঞ্চুরী আমাদের দীর্ঘ চার বছর পর দ্বিতীয় টেস্ট জয়ে ভুমিকা রেখেছিল । স্বভাবের বিরুদ্ধে গিয়ে তাঁর ঐ কচ্ছপ গতির ব্যাটিং তো ছিল দলের জন্যেই !



শুরুর দিকে স্পিন ভাল খেলতে পারত না । শর্ট বলে ছিল ভয়াবহ দুর্বলতা । নেটে ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়েছে সে অক্ষমতা দূর করতে । পাজরে অনেক ব্যাথা পাওয়া সত্বেও শর্ট বলের প্রাকটিস চালিয়ে গিয়েছিল ।



খেলোয়াড়দের বাজে ফর্ম খেলারই অংশ । এবং কিছুটা রহস্যময়ও । দুর্দান্ত ব্যাটিং করা প্লেয়ারটির হঠাৎ কি জানি হয়, সে ব্যাটে বলই লাগাতে পারে না । অদ্ভুত সব আউট হয় । যেন কোনকালে সে ব্যাট ধরে নাই । বিচ্ছিরি এক অবস্হার মধ্য দিয়ে যেতে হয় ।

সাম্প্রতিক সময়ে মিসবাহ, কোহলী, ক্লার্ক এর ফর্ম নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে । কোহলী-মিসবাহ অন ট্রাকে ফিরলেও ক্লার্ক এখনো ধুঁকছেন ।



খেলোয়ারদের বাজে ফর্মের সময় তার কিছু বৈশিষ্ট্য দেখা হয় । যেমন, সে প্রতিভাবান কি না ! তার রেকর্ড কি বলে ! সে পরিশ্রমী কি না ! নেটে ঘাম ঝরাচ্ছে কি না ! খেলায় মনযোগী কি না !

ইত্যাদি কিছু বৈশিষ্ট্য খেলোয়াড়ের পক্ষে গেলে তখন তার সাথে থাকা, প্রক্ত ম্যানেজমেন্টের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে । ম্যানেজমেন্ট পাশে না থাকা মানে খেলোয়াড়টির প্রতি অবিচার করা !



এখন, তামিমের কথায় আসি । সে প্রতিভাবান, ক্রিকেটবোদ্ধা মাত্রই স্বীকার করবেন । রেকর্ডও মোটামুটি খারাপ না । নেটে ঘাম ঝরানো, মনযোগ, নিবেদন, পরিশ্রম ... এসবও তার বিপক্ষে না । তাহলে কিসের ভিত্তিতে তাকে নিয়ে প্রশ্ন !



গত বছর পর্যন্ত সব ঠিকঠাক চলছিল । বাংলাদেশ দূরন্ত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল । আর সেই এগিয়ে যাওয়ায় তামিম অগ্রপথিকের ভূমিকাও ভালমতই পালন করছিল । কিন্তু হঠাৎ ঘটল ছন্দপতন । খেই হারিয়ে ফেলল, বাংলাদেশের ক্রিকেট । আর তামিমেরও বাজে ফর্মের শুরু ।



খুব যে খারাপ খেলেছে, ব্যাপারটা তেমন না ! তবে তামিমের চিরচেনা রুপ দেখা যায় নাই । তামিম একটা স্ট্যান্ডার্ড দাড় করেছে, ওপেনারদের সামনে । কোন ওপেনারটা সেই মান দেখাতে পেরেছে, শুনি !

জুনায়েদ, কায়েস, নাফিস, আনামুল, শামসুর ... চেষ্টা তো আর কম হলো না ! কই, তামিমের বিকল্প ! নাই ।



এই যে আজকে নিজের স্বভাব বিরুদ্ধ ২৪৯ বলে করল ৭৪ রান । ছয়টি চার, শূণ্য ছয় । না, চমকানোর কারন নাই । জাভেদ ওমর না, তামিমই খেলছে । তিনটি সেশন চূড়ান্ত ধৈর্য্যের পরীক্ষা দেয়ার পরও তাঁর নিবেদন, একাগ্রতা, একনিষ্ঠতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে ! উঠবে । কারন, নিন্দুকেরা কত কথাই তো বলে !

লারা-টেন্ডুলকাররা পর্যন্ত নিন্দুক থেকে রেহাই পাননি । সেখানে তামিম তো কোন ছার !



আজকের ইনিংসটাতেও অগ্রাধিকার পেয়েছিল দলের চাওয়া । দল চাইছিল, একটা ভাল শুরু । তামিমের দীর্ঘক্ষন ক্রিজে থাকা । আর সেই চাহিদা মেটাতে গিয়ে খোলস বন্দী তামিম । লেগ স্পিনারের প্রলোভন, পেসারের বাইরের বলে স্ট্রোক খেলার লোভ সামলে এত সংযম তো দলের জন্যেই । তবু তামিম কেন দলে, প্রশ্ন উঠবে !



সেরা সময়ে এখনো সে আসে নাই, সত্য । তবে শীঘ্রই ফিরবে । বাজে সময়ে ক্রিজ আঁকড়ে থাকা, খারাপ না । আস্তে-ধীরে তামিম তামিমের রুপে ফিরবেই । গ্যালারী আবার উত্তাল হবে তামিমের রাজসিক স্ট্রোকছটায় । সময়টা অতি সন্নিকটে । হয়তো বা পরের ম্যাচেই ।

______###____

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.