নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সৃষ্টিসুখের উল্লাসে

মোঃ ইয়াসির ইরফান

পৃথিবীর সব রাজনীতিবিদ যদি কবিতা ভালোবাসতেন অথবা সব কবি যদি রাজনীতিবিদ হতেন তাহলে পৃথিবীটা আরো সুন্দর ও বাসযোগ্য হয়ে উঠতে পারত। -জন এফ কেনেডী

মোঃ ইয়াসির ইরফান › বিস্তারিত পোস্টঃ

\'‘বিপ্রদাস\' মুগ্ধতা

২৫ শে জুন, ২০১৬ রাত ১০:৫৮



এমনই এক রোযার মাসে পুরনো বইয়ের দোকান থেকে কিনে এনেছিলাম ‘শরৎ রচনা সমগ্র ১’ । মাত্র একশ টাকায় ইয়া মোটা বইটি কিনতে পেরে কি পরিমাণ যে পুলক অনুভূত হয়েছিল, তা প্রকাশ করার চেষ্টা করাও হয়তো বাতুলতা ।
সেবার পল্লীসমাজ পড়েছিলাম মনে আছে, কিন্তু সেই রোযাতেই বিপ্রদাস পড়া হয়েছিল কি না ঠিক মনে নেই । ঈদের সময় গ্রামের বাড়ি গিয়ে, শরৎচন্দ্রের পল্লীসমাজের সাথে নিজের পল্লীসমাজেরও আশ্চর্য্য মিল খুঁজে পেয়ে বেশ চমকিতও হয়েছিলাম । ঈদের পর সেই ইয়া মোটা বই পুরো শেষ করেছিলাম । পরে শরৎ রচনা সমগ্র ২ টাও পড়েছিলাম, বড় আন্টির বাসা থেকে এনে ।

শরৎ-সাহিত্য অনেকেই পড়তে চান না, কঠিন মনে করে । অথচ পড়া শুরু করলে বোঝা যায়, শরৎ-সাহিত্য কি জিনিস ! তাই শরৎচন্দ্র আমার প্রচন্ড ফেভারিট সেই তখন থেকে । শরৎচন্দ্রের সব লেখাই ভাল লাগে । কিন্তু কি জন্য জানি না, বিপ্রদাসটা আর সব থেকে একটু বেশীই ভাল লাগে ।

শরৎচন্দ্রের অমর-সৃষ্টি দেবদাস আছে, গৃহদাহ, বিরাজ বৌ, পথের দাবী কিংবা শ্রীকান্ত... এসবও আছে । এবং এই উপন্যাসগুলোর কথা যেভাবে শোনা যায়, বিপ্রদাস ঠিক সেভাবে আসে না । ‘দত্তা’ও খুব ভাল লাগে । তবে দত্তার কথাও শুনেছি অনেকের কাছে । এই দত্তা উপন্যাস থেকে ‘বিজয়া’ নাটকও অবশ্য হয়েছে । কিন্তু বিপ্রদাস যেন এসব থেকে অনেক দূরে । অথচ, এই বিপ্রদাসটাই আমার ভীষণ ভাল লাগে । তর্কসাপেক্ষে এটাকে আমার মতে, শরৎ বাবু’র ‘অন্যতম সেরা রচনা’ বলতেও হয়তো বাঁধবে না । বিপ্রদাসে কি খুঁজে পেয়েছি, আমি নিজেও ঠিক জানি না !
চন্দ্রনাথও খুব খুব ভাল লাগে । এবং বিপ্রদাসের মতো এটাও বেশ কয়েকবার পড়া হয়েছে, খুব ভালোলাগা থেকেই ।

গল্প হিসেবে বৈকুন্ঠের উইল ও পরিণীতা অসাধারণ । দুটো গল্প নিয়েই সিনেমা হয়েছে । পরিণীতা নিয়ে তো বলিউডেও তৈরী হয়েছে সিনেমা । বৈকুন্ঠের উইলের থিম নিয়ে বাংলাদশের সিনেমাটার নাম মনে নেই, তবে নায়করাজ আব্দুর রাজ্জাক ও বাপ্পারাজ-ফেরদৌস অভিনীত সিনেমাটি দুর্দান্ত হয়েছিল । বিশেষত বাপ্পারাজের অভিনয় ছিল অসাধারণ ।
কিন্তু এখানেও শরৎচন্দ্রের অন্য সব গল্পের চেয়ে ‘নিস্কৃতি’ নামক গল্পটি ভাল লেগেছে বেশী । অথচ নিস্কৃতি গল্পটিও মনে হয় বিপ্রদাসের মতোই প্রচার পেয়েছে কম ।
একেকজনের ভাললাগা একেক রকম বলেই হয়তো ।

হঠাৎ করে বিপ্রদাস নিয়ে পড়লাম কেন, এই প্রশ্ন তুলতে পারেন অনেকেই । আসলে শরৎ রচনা সমগ্রটার দিকে চোখ পড়তে, টেনে নিয়ে সেদিন বিপ্রদাস টা আবার পড়লাম । প্রচন্ড মুগ্ধ হলাম আবার । সেই মুগ্ধতার রেশ থেকেই হয়তো এই লেখার অবতারণা ।
বিপ্রদাস, তাঁর ভাই দ্বিজুদাস, বিপ্রদাসের ‘মা’ বলরামপুরের সর্বময় কত্রী দয়াময়ী, বিপ্রদাসের স্ত্রী সতী, সতীর কাকাতো বোন বন্দনা, বিপ্রদাসের ছেলে বাসু, অন্নদা, মৈত্রেয়ী... কতবার মনে হয়েছে, ইশ, চরিত্রগুলো কে যদি জীবন্ত করে দেখা যেতো ! কথোপকোথনগুলো এত্ত ভালো লাগে... ।

‘বিপ্রদাস’ প্রথম যেবার পড়েছিলাম, সেবার তো কেমন যেন হাহাকার লেগেছিল । শেষ হয়ে গেল যে ! কিছু ব্যপার থাকে ব্যখ্যার অতীত । বিপ্রদাস উপন্যাসটার প্রতি অতিমাত্রার মুগ্ধতাও হয়তো সেরকমই কিছু । কি জানি... !

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.