নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সৃষ্টিসুখের উল্লাসে

মোঃ ইয়াসির ইরফান

পৃথিবীর সব রাজনীতিবিদ যদি কবিতা ভালোবাসতেন অথবা সব কবি যদি রাজনীতিবিদ হতেন তাহলে পৃথিবীটা আরো সুন্দর ও বাসযোগ্য হয়ে উঠতে পারত। -জন এফ কেনেডী

মোঃ ইয়াসির ইরফান › বিস্তারিত পোস্টঃ

সেই সব সোনার মানুষেরা : ০১

৩১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:৩৭

আসুন আজ একটা জিনিস ভেবে দেখি । আরবের লোকগুলো প্রকৃতিগত কারণেই রুক্ষ-খটখটে, মায়া-দয়াহীন ছিল । সেই তাঁরা হঠাৎ অপর মুসলমান ভাইয়ের জন্য এত দরদ অনুভব শুরু করেছিল কেন ? অসভ্য, বর্বর জাতিটা হঠাৎ এত সভ্যতা-ভব্যতা কোন জাদুবলে শিখে নিয়েছিল ? বলতে পারেন ?
প্রাক-ইসলাম যুগে, হযরত উমর (রাঃ) ও আবু জেহেলের মধ্যে কোন পার্থক্যই ছিল না । অথচ কি আশ্চর্য্য দেখুন, ইসলাম গ্রহনের পর একজন সোনার মানুষ হয়ে গেলেন আর অন্যজন সেই অসভ্য-বর্বরই রয়ে গেলেন । কিন্তু কেন ?

একবার কি হলো, পারস্যের মহা শক্তিধর সম্রাট খসরুর কাছে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) একজন দূত পাঠালেন । সাথে একটা পত্র । সেই দূত যখন, সম্রাটকে ইসলামের দাওয়াত দিলেন । তা সম্রাটের ‘ইগো’ তে লাগল । বুঝতেই পারছেন, অতবড় সাম্রাজ্যের একচ্ছত্র অধিপতির দেমাগ, ভাব-সাব ঠাঁট-বাঁট তো অন্য লেভেলের হবেই । তিনি বলে উঠলেন, ‘তোমাদের এত্ত বড় স্পর্ধা ! তোমরা সম্রাট খসরুর দরবারে ধর্ম নিয়ে কথা বলতে এসেছো ? তোমরা তো অত্যন্ত নীচু, মূর্খ, নির্বোধ প্রজাতির লোক ।’
আল্লাহর রাসূলের দূত কি এই কথায় রেগে গেলেন ? মোটেই না । বরং সহাস্য বলে উঠেন, ‘হ্যাঁ, আমরা অত্যন্ত নীচ ছিলাম, নির্বোধ-অজ্ঞ ছিলাম । অতঃপর আমাদের মাঝে একজন মহামানব, একজন মহানবী এলেন । তিনি আমাদের সত্যের সন্ধান দিলেন । আমরা উন্নত হয়ে উঠলাম ।’
লক্ষ্য করেন, কি বিনয় ! অকপটে সত্যকে কিভাবেই না মেনে নিলেন ! অন্ধকার অতীত কে অস্বীকারের কোন চেষ্টাই নেই, আবার উন্নত চিত্তের কি নিঃসংকোচ প্রকাশ ! ভাবা যায় !

পরশ পাথরের স্পর্শে যেমন সব সোনা হয়ে যেত । ঠিক তেমনি আল্লাহর রাসূল (সাঃ) যেন ছিলেন ‘পরশ মানব’ । যার স্পর্শে অসভ্য, বর্বর, নীচ, বদ, পাষন্ড, অমানুষ, যুদ্ধবাজ, জুয়াড়ী, ফূর্তিবাজ, নারীবাজ, মাতাল, ভোগী... সব মানুষেরা হয়ে উঠলেন এক-একজন সোনার মানুষ । দুনিয়ার শ্রেষ্ঠতম মানুষ ।
তাই খলিফা আবু বকর (রাঃ) দৃঢ়চিত্তে ঘোষণা দিতে পারেন, “আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের (সাঃ) হুকুমের সকল অবাধ্য লোককে অবনত করতে, আমি একা হলেও যুদ্ধ করে যাব ।” আহা, কি আনুগত্য !
সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী হযরত উমর (রাঃ) খলীফা অবস্থায়, একজন রাজা আর ভৃত্যের মধ্যে বিচার করতে গিয়ে অনায়াসে বলে উঠেন, ‘তোমরা দু’জনেই মুসলমান এবং আল্লাহর চোখে দুজনেই সমান ।’ অর্ধ-বিশ্বের শাসনভার যার হাতে তিনি ছেলেকে একটা কাপড় কিনে দিতে পারেন না । বরং ছেলেকে বিদ্যালয়ে পাঠানোর সময় বলে উঠেন, ‘যাও বাবা, যা আছে তা পরেই বিদ্যালয়ে যাও । আমাদের তো আর অনেক টাকা-পয়সা নাই । আমি খলীফা হলেও ধন-সম্পদ তো সব জনসাধারণের !’ আহা, রাষ্ট্রনায়ক ! আহা, শাসক !

এই জন্যেই বুঝি, সেই ইন্টারনেট-মোবাইল, স্যাটেলাইট বিহীন যুগেও মরুর আরব থেকে আফ্রিকা, এশিয়া, ইউরোপ জুড়ে ইসলাম ছড়িয়ে পড়েছিল অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে । এইসব সোনার মানুষরা ছিলেন বলেই হয়তো, অর্ধ-বিশ্ব অধীনস্ত হতে তেমন সময়-ই লাগেনি ।
আহা, কি সব সোনার মানুষ ছিলেন তাঁরা ! যুদ্ধের ময়দানে ভীষণ তৃষ্ণার্ত হয়েও পানির পেয়ালা এগিয়ে দেন, আরেক ভাইয়ের দিকে । অবলীলায় মেনে নেন, সেনাপ্রধান থেকে সিপাহীর কাতারে নিজের অবনমন । রাজপ্রাসাদের জাঁকজমক, সুন্দরী ললনা, হাজার হাজার দিনার নিমিষেই পায়ে ঠেলেন । রাতের আঁধারে আল্লাহর ভয়ে যেন চোখে বসিয়ে দেন অবিরাম ঝর্ণাধারা !
আহা, কি সব মানুষ ! যেন সোনায় মোড়ানো এক-একটি চরিত্র, এক-একজনের জীবন !

উম্মাহর নক্ষত্ররাজি
Know Your Heroes

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:৩০

চাঁদগাজী বলেছেন:




রূপকথা

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৮

মোঃ ইয়াসির ইরফান বলেছেন: কঠিন দুর্দিন !

২| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:৪০

সুলতানা সালমা বলেছেন: আহা, কি সব সোনার মানুষ ছিলেন তাঁরা ! যুদ্ধের ময়দানে ভীষণ তৃষ্ণার্ত হয়েও পানির পেয়ালা এগিয়ে দেন, আরেক ভাইয়ের দিকে । অবলীলায় মেনে নেন, সেনাপ্রধান থেকে সিপাহীর কাতারে নিজের অবনমন । রাজপ্রাসাদের জাঁকজমক, সুন্দরী ললনা, হাজার হাজার দিনার নিমিষেই পায়ে ঠেলেন । রাতের আঁধারে আল্লাহর ভয়ে যেন চোখে বসিয়ে দেন অবিরাম ঝর্ণাধারা !

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২০

মোঃ ইয়াসির ইরফান বলেছেন: আহা !

৩| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:১৭

শামছুল ইসলাম বলেছেন: আপনার লেখার সূত্র ধরেঃ
//আহা, কি সব সোনার মানুষ ছিলেন তাঁরা ! যুদ্ধের ময়দানে ভীষণ তৃষ্ণার্ত হয়েও পানির পেয়ালা এগিয়ে দেন, আরেক ভাইয়ের দিকে ।// মনে পড়ে গেল পাঠ্যসূচীর সেই সত্য গল্পটার শিরোনাম পরশ পাথর

আমার খুব প্রিয় ছিল গল্পটা, গল্পটার পিছনের মানুষটার (মহানবী) জন্য একটা দরদ তখন থেকেই অনুভব করি।

চলুক লেখা।

ভাল থাকুন। সবসময়।




০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২১

মোঃ ইয়াসির ইরফান বলেছেন: আপনিও ভাল থাকুন । দোয়া রাখুন ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.