নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সৃষ্টিসুখের উল্লাসে

মোঃ ইয়াসির ইরফান

পৃথিবীর সব রাজনীতিবিদ যদি কবিতা ভালোবাসতেন অথবা সব কবি যদি রাজনীতিবিদ হতেন তাহলে পৃথিবীটা আরো সুন্দর ও বাসযোগ্য হয়ে উঠতে পারত। -জন এফ কেনেডী

মোঃ ইয়াসির ইরফান › বিস্তারিত পোস্টঃ

সেই সব সোনার মানুষেরা : ০২

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:১৭

তিনি ছিলেন এক মহান সেনাপতি । দিগ্বিজয়ী মুসলিম সেনাবাহিনীর অবিসংবাদিত সেনানায়ক । সমর বিজ্ঞানের নানান শাখা-প্রশাখায় বিচরণ ছিল তাঁর, রীতিমতো ঈর্ষণীয় । নিত্য নতুন যুদ্ধকৌশল খেলা করত তাঁর মগজে । মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের জন্য যিনি জীবন দিতে পারতেন অবলীলায়, নিঃসংকোচে, নির্ভাবনায় ।
বলছিলাম অকুতোভয়, মহাবীর হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) এর কথা ।

তো সেই খালিদ (রাঃ) কে হঠাৎ পদচ্যুত করে বসলেন, সমগ্র মুসলিম জাহানের একচ্ছত্র শাসক, আমীরুল মুমিনীন হযরত ওমর বিন খাত্তাব (রাঃ) । বুঝতে পারছেন, অবস্হা ! এক মহান দিগ্বীজয়ী বীরকে ধুম করে সাধারণ সেনাপতি বানিয়ে দেয়া হলো !
একবার ভাবুন তো, আমাদের বর্তমান সেনাপ্রধানকে ডিমোশন দিয়ে যদি হঠাৎ সাধারণ সৈনিক করে দেয়া হয়, কি অবস্হা হবে ? কেলেংকারী ঘটে যাবে না !

আরে আমাদের এরা তো কোন বিশ্বজয়ী বীরও নন । তবুও কি অবস্হা ঘটে যাবে কল্পনা করতে পারেন ! অন্যদিকে খালিদ (রাঃ) ছিলেন অসামান্য এক সেনাপতি । অবিশ্বাস্য সব রণকৌশলে জয় করেছেন, প্রান্তরের পর প্রান্তর । দেশের পর দেশ । ধূলোয় মিশিয়ে দিয়েছেন নাক উঁচু, অহংকারী, রক্তচোষা, শোষক-শাসকদের সিংহাসন । সেই তাকে আচমকা সাধারণ সৈনিক বানিয়ে দেয়া কী চাট্টিখানি কথা ! আমার-আপনার আমাদের মতো সাধারণের জন্য হয়তো ব্যাপারটা কঠিন । কিন্তু উমর (রাঃ) এর মতো খলীফার জন্য, এই সিদ্ধান্তটা কঠিন ছিল না । কারণ, তিনি যে কেবলমাত্র আল্লাহর জন্য, আল্লাহকে সন্তুষ্ট রাখতেই একাজ করেছিলেন ।

ঘটনা এখানেই শেষ নয়, আরো আছে । খালিদ (রাঃ) এর ব্যাপারে একটা আমানত খেয়ানতের অভিযোগও উঠেছিল । আমীরুল মুমিনীন তাকে তাঁর দরবারে ডেকে পাঠালেন । খলীফার অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসল, অভিযোগ সত্য নয় । আমানত খেয়ানতের অভিযোগ থেকে খালিদ (রাঃ) এর মুক্তি ঘটল ।

অতঃপর নিঃসংকোচে, মুসলিম বিশ্বের অবিসংবাদিত রাষ্ট্রনায়ক হযরত উমর (রাঃ) বলে উঠলেন, "আল্লাহর কসম, খালিদ ! তুমি আমার খুব প্রিয়জন এবং আমি অন্তর থেকে তোমাকে স্নেহ করি" ।
এজাড়াও খলীফা চারদিকে এই ঘোষণা ছড়িয়ে দিলেন যে, "খালিদকে পদচ্যুত করা হয়েছে কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য । কেননা, মানুষের ধারণা সৃষ্টি হয়েছিল, মুসলিমরা বিজয় সাধন করছে খালিদের জন্য । খালিদের রণকৌশলেই অর্জিত হচ্ছে বিজয় । আসল বিজয়দাতা যে আল্লাহ, মানুষ তাকেই ভুলে যাচ্ছে "।

ভাবা যায় ! চিন্তাশক্তির কী গভীরতা ! স্রষ্টার প্রতি সে কী নিবেদন ! চতুর্দিকে রাষ্ট্রনায়কের কী তীক্ষদৃষ্টি ! পাবলিক পাল্স বোঝার কী অসাধারণ ক্ষমতা ! সবকিছু কেমন অবিশ্বাস্য লাগছে না ?
স্বর্ণযুগের রাষ্ট্রনায়ক বলে কথা ! স্রষ্টার প্রতি, তাঁর মালিকের প্রতি, বিশ্বজাহানের একচ্ছত্র অধিপতির প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে হবে তাকে সর্বাগ্রে ! এক্ষেত্রে কোন কম্প্রোমাইজ চলবে না । স্রষ্টার হক আদায়ে, মানুষকে স্রষ্টার দিকে ফেরাতে, বিশ্বজয়ী সেনাপতিকেও কি অবলীলায় সাধারণ সৈনিকের কাতারে ঠেলে দিলেন তিনি ! হোক সে সেনাপতি তাঁর খুবই আপনজন !
আর খালিদ (রাঃ) কি করলেন ? না, তিনি কোন আর্মি ক্যু এর চেষ্টা করেননি । আমীরুল মুমিনীনের আদেশ মাথা পেতে নিয়ে, অবনমিত হলেন সাধারণ সিপাহীর কাতারে !

সুবহানআল্লাহ আপনাতেই বেরিয়ে আসছে না, মুখ দিয়ে ! আসবেই তো । এরা যে সোনার মানুষ । এদের কথা পড়লে, শুনলে, ভাবলে, লিখলে... চোখ দিয়ে ঝরঝরিয়ে পানি গড়াতে চায় । গড়াবেই না কেন, বলুন তো ?
পানি গড়ানোর মতোই উত্তম চরিত্র যে তাঁরা ধারণ করেছিলেন । 'রাসূলুল্লাহ' (সাঃ) নামক এক পরশ মানবের ছোঁয়া যে তাঁরা পেয়েছিলেন ।

উম্মাহর নক্ষত্ররাজি
Know Your Heros
UmarRA
KhalidRA


প্রথম পর্ব

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.