নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পেশা ব্যবসা ও চাকরি। জ্ঞানভিত্তিক জীবনদর্শনে বিশ্বাসী। নির্জনে ও নীরবে প্রকৃতির নৈসর্গিক রূপ উপভোগ করতে ভালোবাসি। বই পড়তে, ভ্রমণ করতে, একলা চলতে এবং জটিল চরিত্রের মানুষ থেকে দূরে থাকতে পছন্দ করি। –এম. জেড. ফারুক

এমজেডএফ

কথায় নয় কাজে বিশ্বাসী

এমজেডএফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

দ্রুত বিচার আইন (২০০২ - ∞) : বিএনপি ↔ আওয়ামী লীগ

১২ ই জুলাই, ২০১৯ ভোর ৫:৩৩


আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন, ২০০২ আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী কতিপয় অপরাধের দ্রুত বিচারের উদ্দেশ্যে বিশেষ বিধান প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন৷ ২০০২ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলে দ্রুত বিচার আইন জারি করে দুই বছরের জন্য তা কার্যকর করা হয়। পরে ছয় বারে এর মেয়াদ বাড়ানো হয় মোট ১৫ বছর। ২০১৪ সালে এর মেয়াদ ৫ বছর বাড়ানো হয়, যা গত ৯ এপ্রিল শেষ হয়েছে। আওয়ামী লীগ সম্প্রতি আইনটির মেয়াদ আরো বাড়ানোর জন্য সংসদে বিল উপস্থাপন করে। বিলটি পাস হওয়ায় এখন আইনটি ২০২৪ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আইন প্রণয়ন ও তার ব্যবহারের প্রবণতার এক উল্লেখযোগ্য উদাহরণ এই দ্রুত বিচার আইনটি।

চাঁদাবাজি, যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি, যানবাহনের ক্ষতি সাধন, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিনষ্ট, ছিনতাই, দস্যুতা, ত্রাস ও সন্ত্রাস সৃষ্টি, অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি, দরপত্র কেনায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ বিভিন্ন অপরাধে যথা সম্ভব দ্রুত বিচারের লক্ষ্যে এই আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। এ আইনের অধীনে দোষী প্রমাণিত হলে দুই থেকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করার নিয়ম করা হয়েছিল। বর্তমানে দেশের প্রতিটি জেলায় এক বা একাধিক দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে এ আইনের অধীনে মামলার বিচার কাজ চলছে।
এ আইনের গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় এখানে তুলে ধরলাম:

আদালতের এখতিয়ার
অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ কেবলমাত্র দ্রুত বিচার আদালতে বিচারযোগ্য হইবে৷ সাব-ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার নিম্নে নহে এমন কোন পুলিশ কমকতা বা এতদুদ্দেশ্যে সরকারের নিকট হইতে সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্য কোন ব্যক্তির লিখিত রিপোর্ট বা অভিযোগের ভিত্তিতে, বা অপরাধ সংঘটনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কিংবা অপরাধ সংঘটন সম্পর্কে অবহিত আছেন এমন কোন ব্যক্তির লিখিত অভিযোগে আদালত কোন অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ করিতে পারিবে৷ এই আইনের অধীন কোন অপরাধের সহিত অন্য আইনের অধীন কোন অপরাধ যুক্তভাবে সংঘটিত হইলে এই আইনের অধীন বিচার্য অপরাধের বিচার দ্রুত বিচার আদালতে অনুষ্ঠিত হইবে এবং অন্য আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের বিচার এখতিয়ারসম্পন্ন অন্য আদালত কিংবা ট্রাইব্যুনালে অনুষ্ঠিত হইবে৷

বিচার পদ্ধতি
এই আইনের অধীন কোন অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি হাতেনাতে পুলিশ কর্তৃক ধৃত হইলে বা অন্য কোন ব্যক্তি কর্তৃক ধৃত হইয়া পুলিশের নিকট সোপর্দ করা হইলে, পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের প্রাথমিক রিপোর্টসহ তাহাকে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করিবে এবং উহার পরবর্তী সাত কার্যদিবসের মধ্যে অপরাধ সম্পর্কে আদালতে রিপোর্ট বা অভিযোগ পেশ করিবে এবং আদালত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান করিয়া উক্তরূপ রিপোর্ট বা অভিযোগ প্রাপ্তির তারিখ হইতে ত্রিশ কার্যদিবসের মধ্যে বিচার কার্য সম্পন্ন করিবে৷ এই আইনে ভিন্নরূপ কিছু না থাকিলে কোন অপরাধের অভিযোগ দায়ের বা প্রাথমিক তথ্য সরবরাহ, তদন্ত, বিচার পূর্ববর্তী কার্যক্রম, বিচার ও আপীল নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যবিধির বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে৷
দ্রুত বিচার আইনে সর্বোচ্চ ১২০ দিনের মধ্যে বিচারকাজ নিষ্পত্তি করার বিধান রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করা না গেলে আরও ৬০ দিন সময় পাওয়া যায়। অবশ্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়া থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ওই সময়ে বিচার শেষ করা সম্ভব হয় না বলে বিচারপ্রার্থীদের অভিযোগ রয়েছে। তখন প্রচলিত আদালতে ফেরত যায় মামলাগুলো।

জামিন সংক্রান্ত বিধান
ফৌজদারী কার্যবিধিতে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, রাষ্ট্রকে শুনানীর যুক্তিসংগত সুযোগ দিয়া এবং সংশ্লিষ্ট নথি পর্যালোচনা করিয়া আদালত কিংবা আপীল আদালত যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, এই আইনের অধীন অপরাধ সংঘটনের জন্য অভিযুক্ত কিংবা, ক্ষেত্রমত, দণ্ডপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তিকে জামিন দেওয়া ন্যায়সংগত হইবে তাহা হইলে তদ্‌মর্মে কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া আদালত কিংবা, ক্ষেত্রমত, আপীল আদালত উক্ত ব্যক্তিকে জামিনে মুক্তির আদেশ দিতে পারিবে৷

বিশেষ সাক্ষ্যমূল্য
কোন পুলিশ বা আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর সদস্য বা অন্য কোন ব্যক্তি এই আইনে বর্ণিত কোন অপরাধ সংঘটন বা সংঘটনের প্রস্তুতি গ্রহণ বা উহা সংঘটনে সহায়তা সংক্রান্ত কোন ঘটনার চলচ্চিত্র বা স্থিরচিত্র ধারণ বা গ্রহণ করিলে বা কোন কথাবার্তা বা আলাপ আলোচনা টেপ রেকর্ড বা ডিস্কে ধারণ করিলে উক্ত চলচ্চিত্র বা স্থিরচিত্র বা টেপ বা ডিস্ক উক্ত অপরাধের বিচারে সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণযোগ্য হইবে৷

অপরাধের শাস্তি
কোন ব্যক্তি কোন আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ করিলে তিনি অন্যুন দুই বৎসর এবং অনধিক সাত বৎসর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং তদুপরি অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন৷ দণ্ডপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি অপরাধ সংঘটনকালে সরকার কিংবা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা কোন প্রতিষ্ঠান বা কোন ব্যক্তির আর্থিক ক্ষতিসাধন করিলে তদ্‌জন্য আদালত তদ্‌বিবেচনায় উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ক্ষতিগ্রস্ত সরকার বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির অনুকূলে প্রদান করিবার জন্য উক্ত দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে আদেশ দিতে পারিবে এবং এই ক্ষতিপূরণের অর্থ সরকারী দাবী হিসাবে আদায়যোগ্য হইবে৷ যদি কোন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তির ক্ষতিসাধনের অভিপ্রায়ে উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ সংঘটনের কোন ন্যায্য বা আইনানুগ কারণ নাই জানিয়াও তাহার বিরুদ্ধে কোন মামলা বা অভিযোগ দায়ের করেন বা করান, তাহা হইলে প্রথমোক্ত ব্যক্তি অন্যুন দুই বত্সর এবং অনধিক পাঁচ বত্সর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং তদুপরি অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন৷

আমরা স্মরণ করতে পারি
২০০২ সালে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার যখন দ্রুত বিচার আইন জারি করে, তখন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ এর প্রবল বিরোধিতা করেছিল; তারা এই আইনকে আওয়ামী লীগ দমন আইন বলে অভিহিত করেছিল। আর উল্টো দিকে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থেই আইনটি জারি করা হয়েছে। ২০০৪ সালেই আইনটি আপনাআপনি বিলুপ্ত হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তা হতে দেওয়া হয়নি, আইনটির কার্যকারিতার মেয়াদ তারা বাড়িয়েছে। তারপর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে আইনটি বাতিল করার পরিবর্তে উল্টো মেয়াদ বাড়ায়। এভাবে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমনের হাতিয়ার হিসেবে আইনটিকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। সর্বশেষ এটির সর্বোচ্চ সাজার মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে সাত বছর করে সংশোধনীর প্রস্তাব সংসদে পাস হয়েছে। মহাজোট সরকার এই আইনটি ২০১৪ সালে বিএনপিহীন সংসদে আবার ৫ বছর বাড়িয়েছিল।

সংসদে পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের মধ্যে আবারো বাড়ল দ্রুত বিচার আইনের মেয়াদ ২০১৯ - ২০২৪
বিএনপির হারুনুর রশীদ বলেন, “যেসব উদ্দেশ্যে এই আইনটি হয়েছে, তার সবগুলো অপরাধের সঙ্গে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা সম্পৃক্ত। কিন্তু গত ১০ বছরে তাদের নামে এই আইনে একটি মামলা হয়েছে, এমন কোনো নজির নেই। উল্টো এ সময় বিএনপির হাজার হাজার নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে এই আইনের অধীনে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নতুন করে এই আইন পাস হলে সেটাও তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ হবে।”
বিএনপির রুমিন ফারহানা বলেন, “সরকার এই আইনটিতে মজা পেয়ে ২০১৪ সালে একবার বাড়িয়েছে। এখন আবার বাড়াচ্ছে। সরকার আইনটিকে স্থায়ী না করে যতদিন তারা ক্ষমতায় থাকবে ততদিনের জন্য এর মেয়াদ বাড়াচ্ছে। ক্ষমতায় থেকে তারা বিরোধী দলকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যেই তারা এটা করছে।”
গণফোরামের মোকাব্বির খান বলেন, “আইনটি প্রণয়নের পর থেকে এটি প্রয়োগের চেয়ে অপপ্রয়োগ বেশি হয়েছে। বিরোধী দল ও জোটকে দমনে এটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। সাধারণ মানুষ কখনো এই আইনের সুফল পায়নি। ২০০২ সালে এই আইনটি যখন প্রথমে পাস হয় তখন বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে ছিল। তারা আইনটিকে কালো আইন আখ্যায়িত করে এর বিরোধিতা করে বলেছিল, এটি আওয়ামী লীগ নিধনের আইন। কিন্তু এখন তাদের দেখছি ভিন্ন সুর।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, “এই আইনটি ২০০২ সালে প্রণীত হয়েছিল এবং ওই সময় আমাদের (আওয়ামী লীগ) নামে শত শত মামলা করেছিল। তাদের নেতাকর্মীরা আমাদের বাড়িঘর লুট করেছিল। সেই সময় তাদের নামে এ আইনে কোন মামলা হয়নি। উনারা কথাগুলো মনে করিয়ে দিয়েছেন বলেই আজ এটা আমি বললাম।”

ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি দুটি ঘটনা ও দ্রুত বিচার আইন
রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমনের হাতিয়ার হিসেবে আইনটিকে কীভাবে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ ব্যবহার করেছে ২০০৪ ও ২০১২ সালের দুটি ঘটনা দিয়ে উদাহরণ:
২০১২ সালে ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ আর বিরোধী দলে বিএনপি। ।বিরোধী দলের ১২ মার্চের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সমগ্র দেশ প্রায় অচল হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বিরোধী দলের কর্মসূচি ছিল ‘চলো চলো ঢাকা চলো’। আর সরকার কর্মসূচি নিয়েছে ‘রুখো রুখো ঢাকা রুখো’। অর্থাৎ, ঢাকায় কাউকে আসতে দেওয়া হবে না। ঘোষিত ও অঘোষিতভাবে সরকার ঢাকামুখী অধিকাংশ রুটের বাস ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। সব প্রবেশপথে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। প্রথম আলো গতকাল প্রধান শিরোনাম করেছে ‘ঢাকায় ঢুকতে মানা’। সরকারের পুলিশ বাহিনী ইতিমধ্যে শত শত লোককে গ্রেপ্তার করেছে, যাদের একাংশ বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মী হলেও সিংহভাগ নিরীহ ও সাধারণ মানুষ। গরিব মানুষ। খেটে খাওয়া মানুষ।

এই ঘটনার সঙ্গে আট বছর আগে ২০০৪ সালের এপ্রিল মাসের ঘটনাবলি মিলিয়ে নেওয়া যায়। তখন ক্ষমতায় ছিল বিএনপি। আর বিরোধী দলে ছিল আওয়ামী লীগ। ২১ এপ্রিল আওয়ামী লীগ হাওয়া ভবন ঘেরাওয়ের কর্মসূচি নিয়েছিল। এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ৩২ ঘণ্টায় দুই হাজার ৫০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল বিএনপি সরকার। আগের দিন বিকেল চারটা থেকে রাজধানীতে আগত প্রায় প্রত্যেক যাত্রীকে প্রতিটি স্টেশনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরদিন ২২ এপ্রিলের পত্রিকার খবরে বলা হয়, ‘বনানী ও গুলিস্তান এলাকায় অঘোষিত কার্ফু, চলাচল বন্ধ, হাওয়া ভবন কর্মসূচিতে বাধা, লাঠিচার্জ, গ্রেপ্তার।’ এরপরের শিরোনামটি ছিল: ‘কঠোর নিরাপত্তার ঘেরাটোপে উৎসবমুখর হাওয়া ভবন’। আর সেই হাওয়া ভবনের পাশের মাঠে তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান ক্রিকেট খেলছিলেন, যার ছবি পরদিন সব কাগজে ফলাও করে ছাপা হয়েছে। ২৩ এপ্রিল প্রথম আলোয় দ্বিতীয় প্রধান শিরোনাম ছিল ‘রাজধানীতে ছিল অভিযান, চার দিনে পাঁচ হাজার আটক, গ্রেপ্তারকৃতদের বেশির ভাগ গরিব, আদালতে উপচে পড়া ভিড়’। ২৪ এপ্রিল থেকে আওয়ামী লীগ তিন দিনের গণ-অনাস্থা কর্মসূচি পালন করে। ঢাকায় লাগাতার অবস্থানের উদ্যোগ। ২৪ এপ্রিলের কাগজে দেখা যায়, গণগ্রেপ্তারে সারা দেশে পাঁচ দিনে সাত হাজারের বেশি।
উপরের দুটি ঘটনায় গণগ্রেপ্তারের হাজার হাজার নিরীহ সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে এই দ্রুত বিচার আইনে পুলিশ মামলা করেছিল।

আমজনতার প্রতিক্রিয়া
বরাবরের মতো আমরা আমজনতা আবারো দেখলাম রাজনৈতিক দল ও নেতাদের চরিত্রে কোনো তফাৎ নেই। বোতলের লেভেল বদলায় - একসময় "সরকারি দল", আরেক সময় "বিরোধী দল", বোতলের পোশাক বদলায় - একবার 'মুজিব কোট' আরেক বার 'ধূসর বর্ণের সাফারি'। কিন্তু বোতলের ভিতরের মাল এবং সেই মালের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া একই। তাই আমরা আমজনতা এখন সরকারি দলেও নাই, বিরোধী দলেও নাই। সরকারি দলকে ভোট দিতে ভোটকেন্দ্রেও যাই না, বিরোধী দলের আন্দোলনের ডাকে রাজপথেও নামি না। সরকার পরিবর্তনের পরেও নীতির পরিবর্তন হয় না, দুর্নীতি কমে না ও দমন-পীড়ন আইনের পরিবর্তন হয় না। তাই আমরা এখন আর সরকার পরিবর্তনের কথা বলি না, নেতা বদলের চিন্তা করি না - নেতাদের চরিত্র পরিবর্তনের কথা বলি, দেশের উন্নয়নের কথা বলি।

তথ্য সূত্র:
আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন, ২০০২
সংসদে পাল্টাপাল্টির মধ্যে বাড়ল দ্রুত বিচার আইনের মেয়াদ - Published: 09 Jul 2019, বিডিনিউজ২৪

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ৭:১৭

বলেছেন: আমজনতার প্রতিক্রিয়াটা একটা বিরাট মেসেজ --

সরকার পরিবর্তন জরুরী নয় নেতানেত্রীদের ও তাদের পুত্রকন্যাদের চরিত্র বদলানোটাই মুখ্য চাওয়া।।


পোস্টে প্লাস।।।

১২ ই জুলাই, ২০১৯ দুপুর ১:৩০

এমজেডএফ বলেছেন: ধন্যবাদ।
আমজনতার মেসেজ সরকার বা বিরোধী কোনো দলের রাজনৈতিক নেতারা বুঝতে চায় না!

২| ১২ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ১১:০০

রাজীব নুর বলেছেন: সব বিচার শুধু দরিদ্র লোকদের জন্য। ধনীরা অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে।

১২ ই জুলাই, ২০১৯ দুপুর ১:৫২

এমজেডএফ বলেছেন: মানুষের আদালতে বিচার পেতে হলে টাকা লাগে। দরিদ্র লোকেরা বিচারের আর্জি করবে আল্লাহর কাছে!

৩| ১২ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৩:০৮

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: বাংলাদেশই পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে অপরাধীর অপরাধ প্রমান হওয়া সত্ত্বেও বিচারক তাকে জামিন দেন।

১২ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৮:০৩

এমজেডএফ বলেছেন: জামিন পাওয়ার কিছু নিয়মকানুন আছে, তাছাড়া জামিনযোগ্য মামলায় জামিন পাওয়া নাগরিক অধিকার। কিন্তু যখন দেখা যায় যে দুর্ধর্ষ খুনীর আসামী জামিন পাচ্ছে আর কলা চুরির আসামী বিনা বিচারে বছরের পর বছর জেলে খাটছে। তখন বুঝতে হবে আইন তার সঠিক নিয়মে চলছে না, অসৎ উপায়ে জামিন দেওয়া হচ্ছে।

৪| ১২ ই জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৩:২৪

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: জামাত বিএনপি আর আওয়ামী লীগ এই তিনটি ভগ্নদল মিলে একটি পূর্ণাঙ্গ দল।
কেহ কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান। ১৯৯০ সনে এই তিনটি দল একসাথে এক থালায় আহার গ্রহণ করতো। তার পরিনাম এখন দেশ ভোগ করছে।

১২ ই জুলাই, ২০১৯ রাত ৮:২৩

এমজেডএফ বলেছেন: ১৯৯০ সালে উক্ত তিনটি দল একসাথে এক থালায় আহার গ্রহণ করেছিল ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য। আর আমরা তাদেরকে সমর্থন করেছিলাম স্বৈরাচার সরকারের পতনের জন্য। পরবর্তীতে ওরা তিন দল, ওদের লেজ ধরে অগণিত ম্যাঁওপ্যাঁও দল এবং পতিত স্বৈরাচার দলও ক্ষমতার ভাগ পেল! আর আমরা আমজনতা কী পেলাম? ওরা কেউ কথা রাখেনি। তাইতো শপথ করেছি আর কোন শালার কথায় আন্দোলনে নামবো না। আমাদের লাশের ওপর পা মাড়িয়ে ওরা ক্ষমতায় যাবে আর আমাদের মাথায় বেল ভেঙ্গে খাবে সেই সুযোগ আর দেব না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.