নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একটি মানবিক পাখি, প্রকৃতি ও প্রেমিক কর্তৃক আহূত হয়ে হঠাৎ হঠাৎ আছড়ে পড়ি ভূ-পৃষ্ঠে তবুও মানুষের জীবনে ফিরে আসার সাধ নাই আর।

চন্দ্রনিবাস

খসে পড়া নক্ষত্রের দেহে পুনঃসংযুক্ত হইবার আশায় চন্দ্রপথে একাকি খুঁজিতেছি অতীত।

চন্দ্রনিবাস › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাহাড়ীকন্যার দেহে আনন্দবিলাস- ০১

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৩



ফেইসবুকে একটা এলবাম করে এই শিরোনামটা দিয়েছিলাম। পরে সেখানে আমার অভিজ্ঞতাও সংযুক্ত করেছিলাম। শিরোনামটা দেখে আমার বন্ধুর মা নাকি তাকে বলেছিলো, "এই ছেলে কি যে লিখে, সামনে কি কি লিখবে।" উনি অবশ্য শিরোনাম ছেড়ে আরো একটু সামনে এসে আনন্দবিলাসের অভিজ্ঞতার কথাগুলোও পড়া শুরু করেছিলেন, তবে নাহ! বেশিদূর এগুতে পারেননি। পৃথিবীর অনেক বয়স হয়ে গেলেও এখনো শরীর খুবি সংবেদনশীল একটি আলোচনার বিষয়। যদিও এই সংবেদনশীলতাকে ভালবাসায় পরিণত করে সৃষ্টির শুরু থেকেই একটি প্রাকৃতিক চলমান প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই প্রজন্মের পরে প্রজন্ম হাত ধরাধরি করে এই পৃথিবীর পথ ও প্রান্তর মুখরিত করে এগিয়ে চলছে অজানার উদ্দেশ্যে। শরীরময় আনন্দবিলাস তাই আমার কাছে সৃষ্টি-সৌন্দর্যের মতো একটি চরম উপভোগ্য ও সুন্দর বিষয়। আজকের ব্লগে আমি আমার অভিজ্ঞতার কথাই শেয়ার করবো।

পাহাড়ি কন্যা রাঙ্গামাটির সাজেকে গিয়েছিলাম চৈত্র্যের দ্বিতীয় দিনে। যাত্রা শুরু করেছি রাত নয়টায় শান্তি পরিবহনে। শান্তি পরিবহনে আমাদের পরিচয় হয় ‘টো টো কোম্পানি’র সাথে। সিদ্ধান্ত হয় টো টো কোম্পানীর সাথেই টো টো করে ঘুরে বেড়াবো। যদিও তার আগে টো ট কোম্পানীর চিফ রনিদার প্রোফাইলে ঘুরে দেখি যে কতটা স্বাধীনভাবে টো টো করে ঘুরা যায়। খাগড়াছড়ি প্রবেশের সাথে সাথেই আমাকে আরো একবার হতাশ না করে দিয়ে পাহাড়ীকন্যা তার আকাশ থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি নামিয়ে অভিবাদন জানালো, শুভাগমন শুভাগমন; পাহাড়ের গা বেয়ে বেয়ে হঠাৎ করেই ঘোর লাগা এক রাঙ্গাসূর্য তার রাঙ্গা ভালবাসায় সিক্ত করেছিলো আমার চোখ।

খাগড়াছড়ি শাপলা চত্তরে নেমে সকালের নাস্তা খেয়ে চান্দের গাড়ির ছাদে, যাত্রা শুরু। পাহাড়ের শরীরের বাহারি বিন্যাসে নিজের শরীর মিশিয়ে দিয়ে বেলা দশটায় পৌছালাম বাঘাইহাটে। পাহাড়ের চোখে চোখ রেখেছি, জেনেছি তার বুকে যতটা উর্বর সজীব ভালবাসা, ততটাই দুঃখ। আমাকে কতবার যে কাছে ডেকেছে ইশারায়। ওই যে পাহাড় চূড়া, কাশবন, ঐ যে পাহাড়ি-শিল্পীর নিপূণ হাতে রঙ্গীন বৃক্ষের শরীর, কতবার যে আমাকে কাছে ডেকেছে, কেবল আমিই জানি। আমি নিজেকে হারানোর ভয়ে দূরে দূরে থেকে সুখ নিয়েছি চোখে, চোখ থেকে মাথায়। পাহাড়ের বুকের ইঞ্চি ইঞ্চি ভালবাসা নিয়ে আবার ইশারায় দূর থেকে ভালোবাসা ফিরিয়ে দিয়ে বেলা দশটায় পৌছি বাঘাইহাটে। বাঘাইহাট থেকে প্রতিদিন আর্মির প্রতিরক্ষা সহচর সকল গাড়ির সামনে পিছনে থেকে পৌছে দেয় সাজেক পর্যন্ত, প্রতিদিন দুইবেলা, বেলা ১০ টায় আর বেলা ৩টায়।

সাজেক পৌঁছেছি ভর দুপুরে। টো টো কোম্পানীর আগে থেকে বুক করা ‘গোল-ঘর’-এ ব্যাগ ট্যাগ রেখে গোসলের উদ্দেশ্যে পাহাড়ের বুকে হাটতে লাগলাম পূর্বে যারা হেটেছে এই পথে, তাদের দেখানো পথে। পথেই বাশেঁর হুক্কায় সুখটান দিয়ে হয়ে গেলাম আদিবাসী আদমl চৈত্রের দুপুরে পুরো পাহাড়ে জলের জন্য হেটেছি কমলাবাগানের পথ ধরেl নিচে ঝিরিতে চুয়ে পড়া পানি দিয়ে কোনোরকম গোসল সেরে নিয়ে দুপুরের খাবার খেলাম ডেনিয়েলের দোকানেl টোটোকোম্পানীর আয়োজনে ছিলো ভাত, ডাল, আলু ভর্তা, ডিমভাজিl খাওয়া শেষেই সবাই একটু ঘুমিয়ে নিয়ে উঠলো সূর্য ডোবার আগে আগেl

সূর্যাস্ত দেখার জন্য যাত্রা করেছি পাহাড়ের উপরের হ্যালিপেড ২ অভিমুখেl উপরে উঠতে উঠতে ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছিলামl পাহাড়ের চূড়ার সমান্তরালে চোখ আসতেই যে আদিবাসী সূর্যটা দেখেছে আমার চোখ, বর্ণমালায় প্রকাশ প্রায় অসম্ভবl পাহাড়জুড়ে চলছিলো নিস্তব্ধতার উত্সবl আমিও নিস্তব্ধতা উপভোগ করতে একপাশে বসে পড়েছিl পাহাড়ের তরঙ্গে চোখ বুলাতে বুলাতে ভুলে গিয়েছিলাম স্থান, সময়l আমার ভেতরজুড়ে শূণ্যতার এমন এক সুখী হাহাকার অনুভব করেছিl এই শূণ্যতা জুড়ে আছে এক অব্যক্ত পূর্ণতাl সূর্য ডোবার সাথে সাথে আবার সন্ধ্যা বরণের আয়োজন প্রকৃতিজুড়েl বাতাস বাড়তে শুরু করেছেl এমন শীতল বাতাসে চোখে ঘোর লাগা সন্ধ্যার আকাশে তাকিয়ে চাঁদ দেখে নির্বাক হয়ে পাহাড়ে ঘাসের উপর শুয়ে পড়িl

আহা আনন্দl

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:১৬

আহমেদ জী এস বলেছেন: চন্দ্রনিবাস ,




চন্দ্রের মতোই নরম আলোর বাক্যবিন্যাসে লেখা । ভালো লাগলো ।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:২৮

চন্দ্রনিবাস বলেছেন: যদিও লেখালেখি আমার ভালো লাগার জায়গা তবুও সময় না দিয়েই এক বসায় লিখে ফেলাটা একটা অভ্যাস হয়ে গেছে। তাই অনেক অসংগতি থাকতে পারে বাক্যবিন্যাসে কিংবা বানানেও। মেনে নিচ্ছি।

তথাপি, আপনাকে ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:২৬

গেম চেঞ্জার বলেছেন: আপনি লিখে চলুন! খুব ভাল লাগলো এটা! (+)

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৫

চন্দ্রনিবাস বলেছেন: লেখালেখির সাথে জীবন আনন্দের ঘনিষ্ট যোগাযোগ আছে বলে লিখতে চাই, জানতে চাই, জ্ঞান চাই।

সুন্দর মন্তব্যের জন্য ভালোবাসা রইলো।

৩| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:০৪

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:

পাহাড়ের চূড়ার সমান্তরালে চোখ আসতেই যে আদিবাসী সূর্যটা দেখেছে আমার চোখ, বর্ণমালায় প্রকাশ প্রায় অসম্ভবl

অনুপম লেখনশৈলী! খুব ভাল লেগেছে সাজেক বিলাস!

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৩১

চন্দ্রনিবাস বলেছেন: সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। ঘষামাজাহীন অবস্থায় ছেড়ে না দিলে হয়তো মনের মতো কিছু উপহার দেয়া যেতো।

ভালোবাসা নিবেন।

:)

৪| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:০৮

অপ্‌সরা বলেছেন: পাহাড় সব সময় সুন্দর

অনেক অনেক ভালো লাগা ভাইয়া! :)

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৭

চন্দ্রনিবাস বলেছেন: প্রকৃতির কাছাকাছি থাকাটা সব সময় আনন্দের। :)

শুভকামনা রইলো।

৫| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৪:০৮

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: চমৎকার লেখনী।

++

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৪৮

চন্দ্রনিবাস বলেছেন: বাহ বাহ এত অনুপ্রেরণামূলক কমেন্ট করে তো দায়ভার বাড়িয়ে দিচ্ছেন ভালো লিখার।

ধন্যবাদ। :)

৬| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৪০

মাদিহা মৌ বলেছেন: আরি খাইছে! লেখনশৈলীতে মুগ্ধ! চমৎকার লিখেছেন। সমরেশের ভক্ত নাকি?

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৫৮

চন্দ্রনিবাস বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ। দোয়া করবেন সামনে আরো গুছিয়ে লিখার চেষ্টা করবো। আগের লিখাগুলোই এক রকম চালিয়ে দিচ্ছি ব্লগে, ঘষামাজা ছাড়া।

দুঃখিত। সমরেশ দাদা কি আমার মতোনই লিখতেন!! :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.