নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একটি মানবিক পাখি, প্রকৃতি ও প্রেমিক কর্তৃক আহূত হয়ে হঠাৎ হঠাৎ আছড়ে পড়ি ভূ-পৃষ্ঠে তবুও মানুষের জীবনে ফিরে আসার সাধ নাই আর।

চন্দ্রনিবাস

খসে পড়া নক্ষত্রের দেহে পুনঃসংযুক্ত হইবার আশায় চন্দ্রপথে একাকি খুঁজিতেছি অতীত।

চন্দ্রনিবাস › বিস্তারিত পোস্টঃ

কুষ্টিয়ায় শুরু হতে যাচ্ছে লালন স্মরণ উৎসব ২০১৬

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৪



কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেউরিয়ায় প্রতি বছরের মতো এবারো লালন সাঁইজির ১২৬তম তিরোধাম দিবসকে কেন্দ্র করে কার্তিক মাসের প্রথম দিন (১৬ অক্টোবর) থেকে ৫ দিন ব্যাপী লালন স্মরণ উৎসব ২০১৬ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। লালন আ্যকাডেমির এই আয়োজনে বরাবরের মতোই থাকছে লালন শাহের জীবন-দর্শন নিয়ে আলোচনা ও সন্ধ্যায় বিভিন্ন জেলা থেকে আগত লালনশিল্পীদের কণ্ঠে- লালন সঙ্গীতানুষ্ঠান। প্রতিবছরই দেশ বিদেশের হাজার হাজার লালন ভক্ত-অনুরাগী ও বাউল সাধকের পদচারণায় মুখোর থাকে আখড়াবাড়ি। আ্যকাডেমির মূল আয়োজন ছাড়াও পুরো এলাকাজুড়েই দেখতে পাওয়া যায় বিভিন্ন জেলা থেকে আগত সাধু-ভক্তরা নিজেদের মতো করে গান গেয়ে, গানের ভেদ নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে স্মরণ করেন ফকির লালন সাঁইকে। লালন তার গানের মাধ্যমে মানুষ ও মানবতার জয়গান করে গেছেন। তিনি বিশ্বাস করতেন মানুষের মাঝেই বাস করে এক মনের মানুষ, অচিন মানুষ যাকে চিনতে পারলে আত্মজ্ঞানী হওয়া যায়। তার বহু গানে এই মনের মানুষের প্রসঙ্গ উল্লেখিত হয়েছে। মনের মানুষকে তিনি ধর্ম, জাত, বর্ণ, লিঙ্গ, কূল ইত্যাদি মনুষ্য উদ্ভব ভেদাভেদোর্ধ্ব জ্ঞান করেছিলেন।

লালন মুখে মুখেই গানের পদ রচনা করতেন। তাঁর মনে নতুন গান উদয় হলে তিনি শিষ্যদের ডেকে বলতেন- “পোনা মাছের ঝাঁক এসেছে”। লালন গেয়ে শোনাতেন, ফকির মানিক ও মনিরুদ্দিন শাহ্‌ সেই বাঁধা গান লিখে নিতেন। লালনের জিবদ্দশাতেই তাঁর গান বহুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো। লালনের শিষ্যদের ধারণা তাঁর গানের সংখ্যা দশ হাজারেরও বেশী। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে এতো বিপুল সংখ্যক গান পাওয়া যায়না। শোনা যায় লালনের কোন কোন শিষ্যর মৃতর পর গানের খাতা তাঁদের কবরে পুঁতে দেয়া হয়।

লালন শাহ ছেউড়িয়ায় একটি আখড়া প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং সেখানে তিনি তার শিষ্যদের নীতি ও আধ্যাত্মিক শিক্ষা দিতেন। তার জীবন-দর্শন দেশ বিদেশের অসংখ্য সাধারণ মানুষ, কবি, সাহিত্যিক ও দার্শনিকদের প্রভাবিত করেছে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লালনের দর্শনে প্রভাবিত হয়ে ১৫০টি গান রচনা করেন। লালনের শাহের মানবতাবাদী দর্শনে প্রভাবিত হয়েছেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম। আমেরিকান কবি এলেন গিন্সবার্গ লালন শাহকে নিয়ে After Lalon নামে একটি কবিতাও রচনা করেন। লালনের সংগীত ও ধর্ম-দর্শন নিয়ে দেশ-বিদেশে নানা গবেষণা হয়েছে ও হচ্ছে। ১৯৬৩ ছেউড়িয়ায় আখড়া বাড়ি ঘিরে লালন লোকসাহিত্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর লালন লোকসাহিত্য কেন্দ্রের বিলুপ্তি ঘটিয়ে ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় লালন একাডেমী। ১৮৯০ সালে লালন শাহের তিরোধানের পর থেকে এই দিনে ছেউড়িয়ার আখড়ায় স্মরণ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী স্থানসমূহঃ
লালনভক্ত ও আগ্রহীরা বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের তীর্থভূমি কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়ায় ভ্রমণের পাশাপাশি আরো ঘুরে দেখতে পারেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিলাইদহের কুঠিবাড়ি, বিষাদ সিন্ধুর রচয়িতা মীর মশাররফ হোসেনের কুমারখালীর লাহিনীপাড়া গ্রাম, হরিপুর গ্রামে গীতিকার, সুরকার ও কবি আজিজুর রহমানের বাস্ত্তভিটা ও কবর, এ জনপদে জন্মগ্রহণকারী বিশিষ্ট কবি দাদ আলী, লেখিকা মাহমুদা খাতুন সিদ্দিকা, ‘‘এই পদ্মা এই মেঘনা’’ গানের রচয়িতা আবু জাফর, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজুর রহমান, কুষ্টিয়ার সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতিষ্ঠাতা কাঙাল হরিণাথ, নীল বিদ্রোহের নেত্রী প্যারী সুন্দরী, স্বদেশী আন্দোলনের নেতা বাঘা যতিন, প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী, সঙ্গীত শিল্পী মোঃ আব্দুল জববার, ফরিদা পারভীন সহ অসংখ্য গুণীজনের পীঠস্থান কুষ্টিয়াকে সমৃদ্ধ করেছে।

পরিবহনঃ
গাবতলি কিংবা টেকনিক্যাল মোড় থেকে এসবি, শ্যামলী, হানিফ, সোহাগ, খালেক প্রভৃতি পরিবহনের সরাসরি কুষ্টিয়া যেতে পারেন। ট্রেনে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে সুন্দরবন ও ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে চিত্রা ট্রেনে যেতে পারেন। নামতে হবে পোড়াদহ রেল স্টেশনে। তারপর বাস বা সিএনজি করে কুষ্টিয়া শহরে আসতে হবে। শহর থেকে রিক্সা অথবা অটো রিক্সা করে সরাসরি মাজারে চলে যেতে পারেন।

আবাসনঃ
কুষ্টিয়া শহরে বেশ কিছু মানসম্মত হোটেলের মধ্যে পদ্মা, হোটেল রিভার ভিউ, গোল্ড ষ্টার, সানমুন অন্যতম। খাওয়ার জন্য রয়েছে অসংখ্য রেস্টুরেন্ট তার মধ্যে জাহাঙ্গীর হোটেল, শিল্পী হোটেল, শফি হোটেল, হোটেল খাওয়া-দাওয়া, মৌবন রেস্টুরেন্ট উল্লেখযোগ্য। এছাড়া ৩টি ভাল মানের চাইনিজ রেস্টুরেন্টও রয়েছে।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৮

নীলপরি বলেছেন: তথ্য মূলক পোষ্ট ভালো লাগলো ।

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৬

চন্দ্রনিবাস বলেছেন: চন্দ্রনিবাসের ব্লগে ভ্রমণের জন্য শুভেচ্ছা। শুভকামনা রইলো।

২| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০২

খায়রুল আহসান বলেছেন: ধন্যবাদ, এ তথ্যসমৃদ্ধ পোস্টটির জন্য। ঢাকা থেকে সামু ব্লগারদের একটি দল গেলে কেমন হয়?

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৮

চন্দ্রনিবাস বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ চন্দ্রনিবাসের ব্লগে ভ্রমণের জন্য। এটা একটা দারুণ কাজ হয়, যদি একসাথে যাওয়া যায়। যদিও আমি যেতে পারছি না ব্যস্ততার কারণে। তবে চেষ্টা করবো ঘুরে আসার। আপনারাও ঘুরে আসতে পারেন।

৩| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৫২

নোমান প্রধান বলেছেন: সাধু!

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৫৫

চন্দ্রনিবাস বলেছেন: জয়গুরু

৪| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:০৩

জাহাজী বলেছেন: অনেক তথ্য জানলাম, যাওয়ার ইচ্ছা আছে।

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৫৫

চন্দ্রনিবাস বলেছেন: আমারো যাবার ইচ্ছা আছে। তবে মূল অনুষ্ঠানের পরের শুক্র-শনিবার যেতে পারি। ধন্যবাদ।

৫| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:০৮

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন:
যাওয়ার ইচ্ছা আছে!
কিন্তু যাওয়া হবে না। :(

অনেক আগে থেকে অবহিত করে দেওয়ায় ভাল হল। যারা যেতে চায়, কিন্তু জানতো না - তাদের জন্য সুবিধা হবে।

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৫৭

চন্দ্রনিবাস বলেছেন: হা ভাবলাম সবার সাথে শেয়ার করি সিদ্ধান্ত নিয়ে সুবিধা হবে, ব্যস্ততায় আমিও মূল অনুষ্ঠানে যেতে পারবো না। তবে ২১-২২ অক্টোবরে মূল অনুষ্ঠান শেষ হলে যাবো ভাবছি। তখনো অনেকেই থেকে যায়। অনুষ্ঠানের মানুষের এত ভিড় থাকে না। কথা বলা যায়। সময় কাটানো যায়। চেষ্টা করেন ঘুরে আসতে পারেন কিনা।

৬| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:২১

কাবিল বলেছেন: তথ্যবহুল পোস্ট, ভাল লাগল।
এ বিষয়ে আমিও একটি পোস্ট দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সময়ের স্বল্পতার কারনে দিতে পারিনি।
আপনার পোস্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

গতবারে আমি একটি পোস্ট করেছিলাম লালন ভক্তদের আমন্ত্রন। আরও কিছু ছবি ব্লগ

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৫০

চন্দ্রনিবাস বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ চন্দ্রনিবাসের ব্লগে ভ্রমণের জন্য। আপনার ব্লগে সময় করে ঘুরে আসবো। আর আশা রাখছি নিশ্চয়ই যাচ্ছেন ছেঁউড়িয়ায়।

৭| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৩

কাবিল বলেছেন: ভাই, আমি তো পাশেই থাকি।
আপনি কবে আসছেন তাই বলেন।

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৭

চন্দ্রনিবাস বলেছেন: বাহ তাহলে খুব ভালো। আমি আসবো আশা করছি ২১-২২ অক্টোবর। যদিও মূল আয়োজন ততোদিনে শেষ হয়ে যাবে।

৮| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫০

হাসান জাকির ৭১৭১ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আগেই তথ্য দেয়ার জন্য। যাওয়ার খুব ইচ্ছা আছে, গত বছরও গিয়েছিলাম। সমস্যা হল- ওখানে গেলে আমার আর ফিরে আসতে ইচ্ছে করেনা। তবে এবার আমিও হয়ত পরের শুক্র-শনিবার যেতে পারি।
অনেক ভাললাগা রইল আপনার জন্য।

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩০

চন্দ্রনিবাস বলেছেন: ৭১, চন্দ্রনিবাসের ব্লগে স্বাগতম। আমিও পরের শুক্র-শনিবার যাবো আশা করছি। ওখানে গেলে ফিরে আসতে কার ইচ্ছে করে বলেন, তবুও পিছুটান যে সবাই উপেক্ষা করে প্রকৃত জীবন অন্বেষণে ছুটতে পারে না। গেলে আশা করছি দেখা হবে।

শুভেচ্ছা রইলো।

৯| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৯

রেজওয়ান করিম বলেছেন: জেনে ভালো লাগলো। লালনের আখড়া ভ্রমন নিয়ে আমার একটি লেখা আছে। সময় হলে পড়তে পারেন।
লালনের আখরায় একদিন

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩২

চন্দ্রনিবাস বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনার ব্লগপোস্টটি শেয়ার করার জন্য। অবশ্যই পড়ে দেখবো। দারুণ অভিজ্ঞতা হবার কথা।

চন্দ্রনিবাসের ব্লগে স্বাগতম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.