নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাবনাহীন ভাবনাগুলো

মাহের ইসলাম

মাহের ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

মারমা দুই বোন, অপপ্রচার এবং ডিজিটাল যুগের দুর্বলতা

০৩ রা মার্চ, ২০১৮ রাত ১:১২



সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে বিলাইছড়ির দুই মারমা বোনের ঘটনা সম্পর্কে আমরা অনেকেই অনেক কিছু জানতে পেরেছি। এমন কি প্রায় ৩০ টির বেশি মানবাধিকার সংগঠন মারমা দুই বোনের ওপর অত্যাচারের প্রতিবাদ জানিয়ে সমাবেশ করেছে বলে সংবাদপত্রে পড়েছি। আমিও কামনা করি, “মারমা মেয়ে দুটির ভবিষ্যৎ জীবন যেন কোনোভাবেই ছারখার না হয়।” আমি নিজেও বিশ্বাস করি, “কিছু মানুষ নির্দয় হলেও সবাই নয়।”

কিন্তু, এই প্রতিবাদ বা বিচার চাওয়ার মধ্যে যদি কাউকে মিথ্যা দোষারোপ করা হয় কিংবা মিথ্যে তথ্য দিয়ে যদি মানুষের সহানুভূতি আদায় অথবা কারো প্রতি ঘৃণা সৃস্টি করা হয় তাহলে ব্যাপারটিকে কতটুকু নৈতিক হবে ?

নিচের ছবিগুলো একটু ভালভাবে খেয়াল করুনঃ


১ম ছবিঃ মারমা দুই বোনের সমর্থনে বিদেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত এক প্রতিবাদ। বা দিক থেকে ৪ নং ছবিটি একটু খেয়াল করুন।


২য় ছবিঃ ১ম ছবি থেকে নেয়া একটি ছবিকে আলাদাভাবে দেখানো হয়েছে। যেখানে এক রক্তাক্ত মহিলার ছবি ব্যবহার করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ধর্ষণকারী বলা হচ্ছে।


৩য় ছবিঃ ব্যবহৃত ছবিটির আসল ঘটনার নিঊজ লিংক এবং সংবাদের শিরোনাম তুলে ধরা হয়েছে।

আমার বেশি কিছু ব্যাখ্যা করা বা বুঝিয়ে বলার নেই। প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে, ইচ্ছাকৃতভাবে বিদেশের মাটিতে এই যে মিথ্যাচার করা হচ্ছে, এর উদ্দেশ্য আর যাই হোক প্রতিবাদ নয়; অন্য কিছু।এর পিছনে কি মোটিভ থাকতে পারে, সেটা নিয়ে একটু চিন্তা করলেই এই জঘন্যতার কারণ বুঝতে দেরি হবে না। কারা ও কি দুরভিসন্ধি মাথায় রেখে দেশের নির্দিষ্ট একটা সংস্থাকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে হেয় করতে উঠে পড়ে লেগেছে বা যার চূড়ান্ত পরিণতিতে সরকারের সুনাম খুন্ন করে বেকায়দায় ফেলার চেস্টা করা হচ্ছে এবং এতে কার লাভ হবে, সেটা ভেবে দেখার উপযুক্ত সময় এখনই।

বিলাইছড়ির এই ঘটনাটি আমাদের সমাজের বর্তমান ডিজিটাল যুগের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। আমরা স্বীকার করি বা না করি, এই খবরটি সত্য কিনা তা নিয়ে বিভ্রান্তিই পাহাড়িদের সবচেয়ে বড় সাফল্যের সাক্ষ্য। তারা প্রমাণ করেছে যে "এই সাহসী নতুন ডিজিটাল জগতে সবকিছুই সম্ভব", এমনকি দিনকে রাতও বানানো সম্ভব। সত্যের সাথে মিথ্যে মিশিয়ে যুক্তিসংগতভাবে উপস্থাপন, আংশিক সত্য প্রকাশ বা কিছু কিছু সত্য লুকিয়ে রাখার মাধ্যমে দেশের কিছু সম্প্রদায় এবং মানুষের মনোভাবকে প্রভাবিত করে সুনির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্যের দিকে মতামত তৈরির জন্য স্বার্থান্বেষী মহল অত্যন্ত চতুরতার সাথে সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়েছে, এই ঘটনার প্রতিবাদের আড়ালে।

এই ঘটনার মাধ্যমে, এটাও প্রমানিত হয়েছে যে, "এমন অনেক লোক রয়েছে যারা বিশ্বাস করে যে ইন্টারনেটে পোস্ট করা সবকিছুই সত্য।" পাশাপাশি, এটিও সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, পাহাড়িরা তাদের অপপ্রচার কৌশলে অনেক অনেক এগিয়ে গিয়েছে। আর অত্যন্ত পুরনো একটি সত্য সামনে চলে এসেছে, সেটি হল "পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা সম্পর্কে সাধারণত যে তথ্য পাওয়া যায় তা মূলত একপেশে।"

যত যাই হোক, অন্যায়ের বিচার চাওয়ার জন্যে মিথ্যার আশ্রয় নেয়া কোনমতেই সমর্থন যোগ্য হতে পারে না। ভুলে গেলে চলবে না যে, সত্য অনেক মুল্যবান। ইন্টারনেটে কিছু দেখেই বিশ্বাস করে শেয়ার বা কমেন্ট করে আমরা অনেক ক্ষেত্রেই অপপ্রচারে সহায়তা করে ফেলি। তাই আপন অনুভূতিকে ব্ল্যাক মেইল করে অন্যের স্বার্থসিদ্ধি করতে এগিয়ে যাওয়ার আগে ঘটনার সত্য-মিথ্যা যাচাই করা আমদের প্রত্যেকেরই নিজস্ব দায়িত্ব।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:১৮

অনন্য দায়িত্বশীল আমি বলেছেন: অপপ্রচার বন্ধ হ'ক।

২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:৪২

মাহের ইসলাম বলেছেন: আমার কামনাও তাই।

২| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২০ রাত ১১:৩৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: পোস্টের শেষে মূল্যবান কথা বলেছেন। অপপ্রচারের বিরুদ্ধে একা একাই সাধ্যমত যুদ্ধ করে যাচ্ছেন, এজন্য সাধুবাদ!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.