নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাবনাহীন ভাবনাগুলো

মাহের ইসলাম

মাহের ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

এ শুধু বাংলাদেশেই সম্ভব !

২৩ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১:১৮



দিনে দুপুরে একটা জেলা শহরে দুই দল সন্ত্রাসীর মধ্যে যদি গুলি বিনিময় হয় – তাহলে ঘটনাকে কিভাবে দেখা হবে?

আমি বিশ্বাস করি না যে, আমাদের মানবিক বা সামাজিক গুনাবলী এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে, আমরা এটাকে তুচ্ছ জ্ঞান করে উপেক্ষা করতে পারি।

এরকম একটা ঘটনার পরে, কোন জাতীয় দৈনিক যদি সেটা প্রকাশে ব্যর্থ হয় - তাহলে ঐ পত্রিকার পেশাদারিত্বের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠলে তার দায় আমার মত সাধারন পাঠকের উপর কতটুকু বর্তাবে তা অবশ্য আমার জানা নেই। আমার এই অজ্ঞানতা স্বীকার করতে আমার বিন্দুমাত্র দ্বিধাও নেই।

আমি এও জানি না যে, যদি দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি কোন কারনে এমন একটি সংবাদ চেপে গিয়ে থাকেন বা প্রকাশের ব্যবস্থা গ্রহনে বিরত থকেন – তাহলে মানবিক গুণাবলীর মানদণ্ডে তার নৈতিকতা আর পেশাদারিত্বের নিক্তিতে তার সততা ও আন্তরিকতার পাল্লা হালকা বলে বিবেচিত হওয়ার সুযোগ কতটুকু আছে।

এক্ষেত্রে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ব্যর্থতার যথার্থতা কিংবা পেশাদারিত্বের মানের ঘাটতি নিয়ে আলোচনা বা সমালোচনা করা কিংবা আলোচনা/সমালোচনা করা হলে, তাও আবার খোলা মনে মেনে নেয়ার মানসিকতা কোন পর্যায়ে কতটুকু আছে – সে বিষয়ে বিস্তর সন্দেহ আমার নিজেরই আছে।

আমার উপরের কথাগুলো, দুই দল সন্ত্রাসীর মধ্যে গতকাল খাগড়াছড়ি শহরে সংঘটিত গুলি বিনিময়ের ঘটনাকে নিয়ে লেখা। স্থানীয় কয়েকটি সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে, গত ২২ মে ২০১৮ তারিখে, আনুমানিক দুপুর দেড়টার দিকে, অন্তত ৩০/৩৫ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্যে প্রায় শতাধিক রাঊন্ড গুলি ছুড়ে। ভয়ে বাজারের সকল দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায় এবং বাড়ী-ঘর ছেড়ে পালিয়েও যায় অনেকে। সাথে সাথেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পুরো এলাকায় তল্লাসী শুরু করে।

যদিও সংবাদে উল্লেখ করা ছিল - এই ঘটনায় কারা জড়িত থাকতে পারে। কিন্তু, আমি ইচ্ছে করেই তা চেপে গেলাম। কারণ, ঐ সন্ত্রাসিরা আমার লেখার প্রতিপাদ্য বিষয় নয়। আমি আপনাদের দৃস্টি আকর্ষণের চেস্টা করছি অন্য দিকে।

আমার দৃস্টিতে যারা এটা ঘটিয়েছে, তারা সন্ত্রাসী – সে যে দলেরই হোক না কেন।
তাদের পরিচয় সাধারন মানুষের জানা দরকার।
কিন্তু, তার চেয়েও বেশি দরকার এটা জানা যে, আমাদের অনেক বহুল প্রচারিত সংবাদ পত্র এই ঘটনাটি বেমালুম চেপে গেছে।

যারা দিনে দুপুরে জেলা শহরের একটা বাজারে গোলাগুলি করল, তারা অবশ্যই অপরাধী।
তাদেরকে কি বলা যায়, যারা জানা সত্ত্বেও এবং দায়িত্বের মধ্যে পড়া সত্ত্বেও এটা অন্যদের কাছ থেকে গোপন করল?

আমাদের দেশের বন্দুক যুদ্ধের ঘটনা সম্ভবত আমাদেরকে তেমন একটা নাড়া দেয় না আজকাল।
ব্যাপারটা অনেকটাই ট্র্যাফিক জ্যাম বা বর্ষাকালের রাস্তায় জলাবদ্ধতার কাছাকাছি পৌছানোর পর্যায়ে হয়ত চলে যেতে পারে একটা সময়।
আর এখন যদি দেখি যে, দুই দল সন্ত্রাসীর গোলাগুলির ঘটনা, তাও আবার আড়ালে বা লুকিয়ে নয় রীতিমত জেলা শহরে এবং প্রকাশ্য দিবালোকে ঘটছে। অথচ সংবাদ পত্রে স্থান পাচ্ছে না।

ধরুন এই ঘটনাটি সমতলের কোনো জেলায় ঘটেছে- তাহলে কী হতো? সাথে সাথে টিভি চ্যানেল, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও জাতীয় পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে ব্রেকিং চলে আসতো। টিভি চ্যানেলগুলোতে প্রচারিত লাইভ বা পরবর্তী নিউজ বুলেটিনেই খাগড়াছড়ি থেকে স্থানীয় প্রতিনিধিদের লাইভ বক্তব্য ও ফুটেজ প্রচার করা হতো। রাতের টকশোগুলোতে দেশের বিদগ্ধ আলোচকরা কথা বলতেন এ নিয়ে। তাদের সাথে লাইভ যুক্ত করা হতো স্থানীয় প্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের। কিন্তু খাগড়াছড়ির এ ঘটনায় কিছুই ঘটেনি। শুধু খাগড়াছড়ি বলে নয়, পাহাড়ে এরকম বা এর চেয়েও আলোচিত শত শত ঘটনার ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত একই প্রতিক্রিয়া দেখানো হয় গণমাধ্যমে।

কাজেই এ প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠতে পারে যে, যে গণমাধ্যম সমতলে এতো ভাইব্রান্ট, সে গণমাধ্যম পাহাড়ের ক্ষেত্রে এতোটা উদাসীন কেন? কিম্বা যেসব গণমাধ্যমের প্রতিনিধি সমতলে ব্যাপক সক্রিয় তাদেরই পাহাড়ের প্রতিনিধিরা বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে এতোটা নিস্ক্রিয় থাকে কী করে?

এর কারণ কিন্তু অনুমান করা কঠিন নয়, বরং অনেকেই তা ভালোমত জানেন।
আমাদের দেশের জাতীয় দৈনিকগুলোর পার্বত্য অঞ্চলের বেশিরভাগ প্রতিনিধিই পাহাড়ী।
তাদের অনেকেই সন্ত্রাসীর ভয়ে, কেউ কেউ আবার আর্থিক বা বৈষয়িক সুবিধার প্রেক্ষিতে আর গুটিকয়েক আবার ব্যক্তিগত বিশ্বাস ও মতাদর্শের বেড়াজালে আটকে প্রকৃত সত্য এর আগেও অনেক সময় প্রকাশে দ্বিধায় ভুগেছেন।

তাই, অবশ্যম্ভাবী ভাবে একটা কথাই শুধু বলা যেতে পারে – এ শুধু বাংলাদেশেই সম্ভব !

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১:২৪

কাইকর বলেছেন: ঠিক বলছেন। এটা বাংলাদেশেই সম্ভব। কত কি যে আর এক জীবনে দেখতে হবে।

২৩ শে মে, ২০১৮ রাত ১০:৫৮

মাহের ইসলাম বলেছেন:
সময় নিয়ে পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ।

২| ২৩ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১:৩৭

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: অনিময় আমাদের নিয়মে পরিণত হয়েছে। এসব এখন আর আমাদের ভাবায় না। আমরা এসব নোংরা পলিটিক্সের গণ্ডিতে ফেলে 'আই হেইট পলিটিক্স' বলেই প্রশান্তি অনুভব করি।

২৩ শে মে, ২০১৮ রাত ১১:০১

মাহের ইসলাম বলেছেন:
অনেক ধন্যবাদ।
দেশটা আমাদের সকলের।
একজন একজন করেও যদি অনিয়মগুলো তুলে ধরি এবং সম্ভব হলে যে ভাবে সম্ভব প্রতিবাদ করি, হয়ত একদিন নিয়মে ফিরতে পারবো।

৩| ২৩ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১:৫৮

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: এটা কিন্তু চিন্তার বিষয়।
@জুনায়েদ ভাইয়ের সাথে একমত।

২৩ শে মে, ২০১৮ রাত ১১:০২

মাহের ইসলাম বলেছেন:
আমি আপনার সাথে একমত।
এটা অবশ্যই চিন্তার বিষয়।
তবে, আমরা কি কিছুই করতে পারি না? অন্তত, সব না হলেও কিছু অনিয়মকে তো অনিয়ম বলতে পারি।

৪| ২৩ শে মে, ২০১৮ দুপুর ২:০২

মোঃ ফখরুল ইসলাম ফখরুল বলেছেন: অশান্তীর চুক্তি না আছে? =p~

২৩ শে মে, ২০১৮ রাত ১১:০৯

মাহের ইসলাম বলেছেন:
চুক্তি আছে।
চুক্তি ঐ সময়ের প্রেক্ষাপটে সর্বোত্তম সমাধান ছিল। চুক্তি কিন্তু সকল পাহাড়ি মেনে নেয় নাই।

এমনকি যারা চুক্তি করেছিল, তাদের হাতে এখন ও অস্ত্র আছে। সরকার আন্তরিক ভাবে চুক্তি বাস্তবায়নের চেস্টা করছে, কিন্তু কিছু পাহাড়ি আর তাদের দোসর আমাদের সুশীল সমাজের অংশ বিশেষ বলেই চলছে যে, চুক্তির বাস্তবায়ন চাই।

তারা কিন্তু একবারো বলে না যে পাহাড়ীরা সমস্ত অস্ত্র পরিত্যাগ করলেই কেবল চুক্তি বাস্তবায়ন করা উচিত।

পরবর্তীতে, কিছু পাহাড়ির বাংলাদেশ বিরোধী এবং ‘পূর্ণ সবায়ত্তশাসন’ এর দাবী সম্বলিত পোস্টার কিন্তু রাজু ভাস্কর্যেও দেখা গেছে। শাহবাগে মাঝে মাঝেই তাদের এই দাবী সম্বলিত ব্যানারে বাঙালি বিরোধী ও সেনা বিরোধী মিছিল চোখে পড়ে।

৫| ২৩ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৩:১৯

একাল-সেকাল বলেছেন: ”চুক্তির ৯৫ শতাংশ এখনও কার্যকরী হয়নাই “-শন্তুলারমা

২৩ শে মে, ২০১৮ রাত ১১:১৭

মাহের ইসলাম বলেছেন:
গত প্রায় ২০ বছর ধরে কি পরিমাণ সুযোগ সুবিধা সে নিজেই ভোগ করেছে ?
কত পাহাড়ী কোটায় ভারশিটি/মেডিকেল/ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হয়েছে?
কত পাহাড়ী কোটায় চাকুরি পেয়েছে?
পার্বত্য চট্রগ্রাম মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে কি পরিমাণ উন্নয়নের টাকা ঢালা হয়েছে?
কত পাহাড়িকে পুনর্বাসন করা হয়েছে?
শান্তি বাহিনীর কতজন কে চাকুরি দেয়া হয়েছে?
শান্তি বাহিনীর কতজনের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নেয়া হয়েছে?

চুক্তি যদি বাস্তবায়নই না হত, তাহলে পাহাড়ের অনেক জায়গায় এখনো লোকজন আদিম যুগের মত থাকত।
৪৭ এ ভারত এই পাহাড়িদের স্বার্থ দেখেনি।
পাকিস্তান আমলে এদের রাজাই কাপ্তাই বাঁধের পুন্রবাসনের দায়িত্বে ছিল।
৭১ এ , এরাই বাংলাদেশ বিরোধী ছিল এমন কি অনেক মুক্তিযোদ্ধা হত্যা করেছে।
এদের প্রতি বাংলাদেশের যে আচরণ আর এদের কিছু লোকের বাংলাদেশের প্রতি যে আচরণ, দুনিয়ায় কোথাও হলে তাদের অবস্থা হত ফিলিস্তিন, রোহিঙ্গা বা তামিলদের মত।

৬| ২৩ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৩:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: এই জন্য'ই বলে সব সম্ভবের দেশ- বাংলাদেশ।

২৩ শে মে, ২০১৮ রাত ১১:১৯

মাহের ইসলাম বলেছেন:
এটা তো মন খারাপ করে বলা কথা।
মন ভালো করার জন্যে অনেক কিছুই আছে এই দেশের এবং দেশের মানুষের।

৭| ২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ১:৫৯

অনল চৌধুরী বলেছেন: পার্বত্য অঞ্চলে বাঙালীরাই এখন সংখ্যাগরিষ্ঠ।কিন্ত তাদের কোন সন্ত্রাসী সংগঠন নাই।থাকলে উপজাতিরা এত সাহস পেতো না।দুই দল বাঙ্গালী সমতলে গোলমাল করে,কিন্ত পাহাড়ে তারা অনেক সভ্য।
সুলতানা কামাল মার্কা “ মানবতাবাদী’’ দের কাছে মাদকের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে পুরো জাতিকে ধ্বংস করে দেয়া বা উপজাতি সন্ত্রাসীদের পার্বত্য এলাকায় অশান্তি সৃষ্টি করা কোন অপরাধ না,অপরাধ এদের দমনে ব্যবস্থা নেয়া।
ইত্তেফাকের মতো দেশের দ্বিতীয় প্রাচীন পত্রিকাসহ দেশের দৈনিকগুলি ডায়নার ছেলের বিয়ের খবর প্রতিদিন ছাপায়,যাদের সাথে বাংলাদেশের মানুষের সম্পর্ক গোলামীর সূত্রে ,কিন্ত এসব খবর এড়িয়ে যায়।

২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ১০:৩২

মাহের ইসলাম বলেছেন:
ভাই,
আপনার মন্তব্যগুলো আমার খুবই পছন্দ হয়েছে।
আমিও আপনার মতই মনে করি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আপনার কাছ থেকে পার্বত্য চট্রগ্রাম সম্পর্কে লেখার অপেক্ষায় থাকলাম।

৮| ২৫ শে মে, ২০১৮ রাত ২:৫১

অনল চৌধুরী বলেছেন: মোটামুটি বড় কিছু লিখবো।সময় পাচ্ছি না।আপনি লেখাতে কিছুটা মন্তব্য করছি।

২৫ শে মে, ২০১৮ রাত ১০:২৩

মাহের ইসলাম বলেছেন:
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আমি আপনার লেখার অপেক্ষায় রইলাম।

৯| ২৭ শে মে, ২০১৮ রাত ১২:১৬

হবা পাগলা বলেছেন: সুন্দর পোস্টের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ব্লগে আমি নতুন। আমার ব্লগটা একটু ঘুরে আসার নিমন্ত্রণ রইলো।

৩০ শে মে, ২০১৮ রাত ১:৩৯

মাহের ইসলাম বলেছেন:
ধন্যবাদ।
শুভ ব্লগিং।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.