নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পড়তে ভালবাসি

প্রফেসর মরিয়ার্টি

পথিক, তুমি পথ হারাইয়াছ..

প্রফেসর মরিয়ার্টি › বিস্তারিত পোস্টঃ

"সরকারি ব্যাংকে চাকুরী"- এক অব্যক্ত বেদনার ইতিকথা

২০ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:০৬

বাংলাদেশে তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে বাজে চাকুরী কোনটা ?- এইটা যদি জরিপ করা হয়, তবে আমার ধারণা “সরকারী ব্যাংকে চাকুরী” প্রথম তিনটার মধ্যে থাকবে । আমি কারণগুলি একে একে বলছি-

- আমাদের দেশে বেশির ভাগ লোকের ধারণা সরকারী ব্যাংকে কোনো কাজ নাই, তারা শুধু বসে বসে সারাদিন মাছি মারে । কারণ সরকারী ব্যাংকের customer কম । আপনি বেসরকারী ব্যাংকে গেলে দেখতে পাবেন তাদের প্রত্যেকটি বিভাগে কমপক্ষে দুই থেকে তিনজন কাজ করে । নগদ গ্রহণ/প্রদান বিভাগে কমপক্ষে চারজন কাজ করে । আর সরকারী ব্যাংকে নগদ গ্রহণ/প্রদান বিভাগে বেশির ভাগ শাখায় এক জন কাজ করে এবং অন্যান্য বিভাগে দেখা যায় এক জন দুই-তিন বিভাগের কাজ করছে । গড় হিসাব করলে দেখা যাবে যে, একজন সরকারী ব্যাংকের কর্মকর্তা ও একজন বেসরকারী ব্যাংকের কর্মকর্তার দৈনিক কাজের পরিমাণের মাঝে কোনো তফাৎ নেই । কিন্তু বেতনের ক্ষেত্রে সমমর্যাদাসম্পন্ন একজন বেসরকারী কর্মকর্তার অর্ধেক বেতন পায় একজন সরকারী কর্মকর্তা ।

- বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, শিক্ষাক্ষেত্র কিংবা অন্যান্য সরকারী ক্ষেত্রকে যুগোপযোগী করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও Banking Sector- এ কোনো দৃশ্যমান পরিবর্তন আনেনি । সরকারী ব্যাংকে কর্মরতদের সামনে স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো (Separate Pay-scale) নামে একটি মূলা ঝুলিয়ে রাখলেও বিভিন্ন আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে তা এখন পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি । তা নিকট ভবিষ্যৎ-এ বাস্তবায়ন হওয়ার সম্ভাবনাও প্রায় নেই বললেই চলে ।

- একজন সরকারী ব্যাংক কর্মকর্তা সম্পর্কে বেশির ভাগ মানুষ মনে করে যে, সে যেহেতু ইসলামী ব্যাংকিং করে না, তাই সে অবশ্যই সুদ খায় । এই ভ্রান্ত ধারণাটি বেশির ভাগ সময় বিয়ের ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি করে । সরকারী অন্যান্য যে কোনো চাকুরীর মত ব্যাংকে কর্মরতরাও সরকারের কাছ থেকে বেতন নিয়ে থাকে । ব্যাংকে সুদ, কমিশন কিংবা অন্যান্য খাত থেকে বাৎসরিক যে লাভ হয় তা সরকারী কোষাগারে জমা হয় । এই সুদ থেকে প্রাপ্ত লাভ সরকারের বাজেটেরই একটি অংশ । তাহলে দেখা যাচ্ছে যে, সুদের সাথে সবাই জড়িত । আর বর্তমান মুক্তবাজার অর্থনীতির যুগে সম্পুর্ণ সুদবিহীন ব্যাংকিং অসম্ভব ব্যাপার ।

- আয়কর নেয়া কিংবা অন্যান্য নানাবিধ কারণে অনেক সময় শনিবারে ব্যাংক খোলা রাখতে হয় । বেসরকারী ব্যাংকে ছুটির দিনে অফিস করলে ৬০০-৮০০ টাকা দেয়া হয় । কিন্তু সরকারী ব্যাংকে শুধুমাত্র বিনোদন ও কল্যান ভাতা হিসেবে ২০০ টাকা প্রদান করা হয় ।

- সরকারী ব্যাংকে Staff House Loan হিসেবে যে ঋণ দেয়া হয় তা একবারে না দিয়ে ভেঙ্গে ভেঙ্গে কয়েকবারে দেয়া হয় । একসাথে সম্পূর্ণ টাকা না পাওয়ার কারণে দেখা যায় এই ঋণের সিংহ ভাগ টাকা বাড়ি তৈরীর কাজে ব্যবহৃত না হয়ে অন্যান্য কাজেই ব্যয় হয়ে যায় ।

- অনেক সরকারী ব্যাংকের শাখায় সান্ধ্যকালীন ব্যাংকিং (Evening Banking) চালু থাকে । দৈনিক এই দুই ঘন্টা অতিরিক্ত শ্রম দিলে মাস শেষে পাওয়া যায় ১৫০ টাকা । এইটা মনে হয় বাংলাদেশে সর্বনিম্ন ঘন্টা প্রতি বেতন । ঘন্টা প্রতি বেতন প্রায় ৪ টাকা (এক মাসে ৪০ থেকে ৪৮ ঘন্টার জন্য ১৫০ টাকা)।

- বেসরকারী ব্যাংকে ঝুঁকি ভাতা (Risk Allowance) হিসেবে পদ অনুসারে সর্বনিম্ন ১০০০ টাকা (Cash Department) থেকে সর্বোচ্চ ১০০০০ টাকা (Manager) দেয়া হয় । কিন্তু সরকারী ব্যাংকে কোনো ঝুঁকি ভাতা প্রদান করা হয় না । ভুল করলে নিজের পকেট থেকে গচ্চা দাও !

যাই হোক, সকল সরকারী ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রতি তাদের ধৈর্যশীলতা ও সহ্যশক্তির জন্য শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন রইলো ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৭

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: হুম !


সেই রকম নিক :)

হ্যাপি ব্লগিং :)

২০ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:০৫

প্রফেসর মরিয়ার্টি বলেছেন: ধন্যবাদ, অপূর্ণ রায়হান ভাই.... :)

২| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫৮

প্রবাসী পাঠক বলেছেন: সামহোয়্যার ইন ব্লগে স্বাগতম।

৩| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৫৭

প্রফেসর মরিয়ার্টি বলেছেন: ধন্যবাদ প্রবাসী পাঠক।
দেখি ব্লগ রাজ্যের অনেক অজানা তথ্য থেকে কিছু কুড়িয়ে নিতে পারি কিনা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.