নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ফিল্মমেকার/নাট্যকার, গল্পকার। বাংলাদেশ টেলিভিশন মিডিয়া। ।এক পৃথিবী লিখতে চাই।Facebook/Abdullah AL Mamun(কাইকর)
সময়টা পুরোদস্তুর সূর্য না উঠা ভোরবেলা।মিহি বাতাসের সঙ্গে ভোর পাখিদের কুহু কুহু শব্দ। কিছু রাত জাগা পাখি ঘুমঘরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সাদা কাপুর ও টুপিওয়ালা মসজিদের ইমাম ঘুম থেকে উঠে আযানের জন্য অজু করে প্রস্তুত হয়। অপ্সরা ইচ্ছেমতো আমাকে আদর করে কেবল একটু আধটু নাক ডাকা শুরু করেছে। আমি তার বুকের মাঝ বরাবর মাথা রেখে ছোট্ট শিশুর মত আধ-ঘুমে ঘুমিয়ে অপ্সরার ভালবাসাবাসিটুকুনের কথা ভাবছি।
বিয়ের দেড়মাসেক আগে পরিচয় হয়েছিল শাহবাগের একটা ফুলের দোকানে। জীবানন্দের একটা বই হাতে নিয়ে এসেছিল ফুল কিনতে। মেয়ে রমণী দেখেছি অনেক তবে মাছ দুপুরে কৃষ্ণচূড়া ফুলের মতো দেখতে রমণী দেখিনি যুবক জীবনে। আহা... যে মেয়ের হাতে জীবনানন্দের কবিতার বই থাকে তার কাছ থেকে না জানি কতো আঙ্গিকে ভালোবাসা পাওয়া যাবে। ভাবতেই ভালো লাগে। সেদিন অপ্সরার শাড়ির ভাজ গুনতে গুনতে তার বাসার সামান্য দূর থেকে বিদায় নেয়। তার বাসার কুকুরের নেজটা মাত্রাতিরিক্ত বড়।পুরো একটা পোলের মত। ভাবতে ভাবতে হাসতে হাসতে এক বিয়েবয়সী যুবক ছেলে মায়ের আঁচলের নিচে গিয়ে মুখ লাল করে বলে, মা বিয়া করুম। শেষ বিকেলের রোদের মতো দেখতে একখানা লাল টকটকে মাইয়ারে বিয়া করুম। তুমি এট্রু দেহনা। মনে হয় যেন ৫ বছরের নাবালক বাচ্চা তার মায়ের কাছে লজেন্সের আবদার করছে। মা হাসি-মুখে নরম গলায় বলে, তোর বাবা আহুক। কথা বলি।
মা -বাবা আমার বিয়ে নিয়ে খুব টেনশনে ছিল। আমি কখনোই বিয়ে-টিয়েতে রাজি ছিলাম না। কিন্তু মনগড়া এক দুপুর বেলায় সূর্য মামা শাহবাগে ফুল দোকানে ভুল করে এক অপ্সরাকে রেখে চলে গিয়েছিল। যার ভাগীদার এখন আমি।
বাবা প্রস্তাব দেওয়াতেই তারা বিয়েতে সম্মতি দেয়। একটা বড় সাইজের দিনে আমাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। সূর্যমামা সেদিন শত্রুতা করে আমাদের লাল- নীল বাসর রাতে গরম ঢেলে দেয়। গরম সহ্য না করতে পেরে পাঞ্জাবি খুলতেই ঘসেটি বেগমের মতো ব্যবহার শুরু করে দেয় অপ্সরা। পঞ্চাশবার আমাকে কানে ধরে উঠ- বস করাই সেদিন। আমার মতন মদন দিয়ে নাকি ঘর সংসার হবে না। আমাকে দেওয়া তার প্রথম আশীর্বাদ ছিল এই কথাটা।
সংসারের নিয়ম হচ্ছে, একবেলা সে রান্না করবে অন্য বেলা আমি। একদিন তরকারিতে লবণ বেশি দিয়েছিলাম বলে অপ্সরা আমাকে যা ইচ্ছে তাই বলেছিলো। আমিও খোঁচা দিয়ে কথা বলতে জানি। মাঝে মাঝে অমন কিছু বলে ফেললে সে রাগ সামলাতে না পেরে ভেউ ভেউ করে কেঁদে ফেলে। ট্রেনের গতিতে আমার সামনে থেকে চলে যায়। তারপর সেদিন রাতে আদর পর্বের সময় ঠোঁটে হিংস্র কামড় বসিয়ে বলে, আই হেট টু খরগোশ মানব।
অপ্সরার রুচি ভালো। সাহিত্য নিয়ে বিস্তর পড়াশোনা করেছে। আমাকে অদ্ভুত সব লেখকের গল্প, কবিতা আবৃত্তি করে শোনায়। আমি কৃতজ্ঞ চোখে তার দিকে তাকিয়ে থাকি। সে আমার সুখে জল ঢেলে দিয়ে বলে, তোমার মতো অশিক্ষিত মানবের পাশে বইসা সুনীলের কবিতা পইড়া মজা নাই। আমাদের বেবি হলে সে যদি তোমার মত বেকুব গোছের হয় তাহলে কি উপায় হবে বলতো!!
আমি মনখারাপ গলায় উত্তর দেই, নিজের বরের সাথে কেউ এমন করে? সে মুখ ঝাপটা মেরে বলে, আমার বরের সাথে আমি যা ইচ্ছে তাই করব। শীতের মধ্যে বরফ পানিতে চুবাইয়া মারবো। তাতে তোমার কি?আমি শুনে মন খারাপ গলায় ফিক করে হেসে দেই।
আমার মাঝে মাঝে গভীর রাতে অযথাই কান্না আসে! অপ্সরার ঘুমন্ত মুখের দিকে চোখ দিয়ে তাকিয়ে থাকি। এই মহারাগী বদমেজাজি মেয়েটাকে এতো ভালোবাসি কেন? এই রাগী বদখত নারীকে কতটা ভালোবাসি তা কখনো আয়োজন করে বলা হয়নি।
হঠাৎ করে জানালার ফাক দিয়ে চিরযৌবনা সূর্যের আলো এসে তার চোখের উপরে উঁকি দেয়। অশিক্ষিত রোদের কারণে আমার নাদুস-নুদুস বউয়ের ঘুমসকাল নষ্ট হয়ে যায়। ঘুম চোখে আমাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেয়ে বলে, চারাল মানব এখনো ঘুমাওনি কেন? তোমার মত বেকুব টাইপের স্বামী নিয়ে আমি কি করব! ইতর, বদমাশ, চারাল,ঘারাল, দারাল,মারাল,জারাল,ফারাল বউ দেখে বুঝি মন ভরে না?? আমি শুনে মিটিমিটি হাসি। জড়িয়ে ধরে বলি, মন ভরবে কি করে গো বউ। তোমার মতন শিক্ষিত বৌরে দেখে কি আর চোখ জুড়ানো যাই।শুধু আদর সোহাগ দিয়ে ভুরিয়ে রাখতে মনডাই চাই। সে গরম গলায় বলে, এই যে ভাই থামেন। এখন বিছানা থেকে উইঠা বাজার থাইকা একখানা বিশাল সাইজের বোকাসোকা বোয়াল মাছ কিনে নিয়ে আসেন। দুপুরবেলা বাবা মায়ের সাথে বইসা চাকুম-চুকুম কইরা খামু। তোমারে দিমু বড় মাছের ছোট টুকরা। আমি হাসিমুখে বলি, আইচ্ছ্যা।
এভাবেই চলুক, চলতে থাকুক বোকাসোকা সংসার নিরলস মধুর সব ভালোবাসাবাসির মাঝে। ভুলে যাক ভন্ড পৃথিবী সকাল-সন্ধ্যার ভালোবাসাবাসির মাঝে দুপুরের হিংসে, বিদ্বেষ।
১৩ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:৫০
কাইকর বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। প্রথম মন্তব্য করার জন্য আবারো ধন্যবাদ ভাই।
২| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৯:৪৯
রাজীব নুর বলেছেন: খুব বেশি কমন।
আর একটু যত্নবান হোন লেখা লেখিতে।
১৪ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:১৮
কাইকর বলেছেন: আইছ্যা ভাই।
৩| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:০০
নীল আকাশ বলেছেন: আপনার ভাষা ব্যবহার কিছুটা অসংল্গন । পুরা লেখায় একই ধরনের টোন ব্যবহার করবেন। যেই মেয়ে বিস্তর সাহিত্য ঘাটাঘাটি করে তার মুখে কথ্য ভাষা মানায় না । ব্লগে অনেক ভালো ভালো লেখক আছেন যাদের লেখা পড়লে আপনি আরো ভালো ভাবে লিখতে পারবেন আশাকরি। ধন্যবাদ।
১৫ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১:২৮
কাইকর বলেছেন: সুন্দর বলেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে
৪| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:১৪
নীল আকাশ বলেছেন: যদি কিছু মনে না করেন, তাহলে আপনাকে প্রেমের গল্প লেখার আগে অপু তানভীর & অহরিত (সাদ ভাই) ভায়ের লেখার পড়ার অনুরোধ করবো । কিছুটা আন্দাজ পাবেন আশা করি।
২০ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪০
কাইকর বলেছেন: আচ্ছা।
৫| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:১৬
নীল আকাশ বলেছেন: অহরিত (সাদ ভাই) ভাই বেষ্ট। এত ভালো লেখার হাত আমি আজ পর্যন্ত এই ব্লগে আর পাইনি ।
২০ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪০
কাইকর বলেছেন: হুম।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:৪৮
ল বলেছেন: দারুন অনুভুতি