নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সংযুক্ত সম্পাদক, ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি

মণীশ রায় চৌধুরী

সংযুক্ত সম্পাদক, ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি

মণীশ রায় চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাংস খাওয়ার জন্যে পশুহত্যা আর ধর্মীয় অন্ধবিশ্বাস অনুযায়ী পশুহত্যার ভিতর পার্থক্য

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১১:৩৭

প্রতিবছর পশুবলি বা কোরবানির সময় পশুহত্যা সংক্রান্ত বিতর্ক শুরু হয়।
অনেক নাস্তিক বন্ধুও খাদ্যের প্রয়োজনে পশুহত্যা এবং ধর্মীয় রীতি অনুসারে পশুহত্যার
পার্থক্য বোঝেননা দেখে বিস্মিত হচ্ছি।

একথা ঠিক যে, প্রতিদিন সারা পৃথিবীতে মাংসের জন্য যত পশু-পাখি হত্যা করা হয় তার
তুলনায় ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পশুহত্যার পরিমাণ নগন্য।
কিন্তু, এখানে হত্যার পরিবেশ ও সমাজে তার প্রভাব বিচার্য।
আপনি দোকানের লাইনে দাঁড়ালেন, ঘচাঘচ কেটে পিস করে আপনাকে দিয়ে দিল।
আপনি ব্যাগে ভরে বাড়ি গেলেন।

এবার বলির দৃশ্য ভাবুন।
চারদিকে "জয় মা" রব।
একের পর এক মাথা কাটা পড়ছে।
রক্তের সাথে ধুলোবালি মিশে থকথকে কর্দমাক্ত পরিবেশ।
অনেক ভক্ত কাটা মাথা থেকেই প্রকাশ্যে রক্তপান করছে।
এই নৃশংস দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেও সেকি জান্তব উল্লাস।
স্পষ্টত, আমাদের ভিতর স্যাডিস্ট চরিত্রের জন্ম দেয়।

এবারের কোরবানিতেও সেই এক দৃশ্য।
বাচ্চা ছেলেমেয়েরাও গলা কাটা গরুর সাথে সেলফি তুলতে ব্যস্ত।
বড়রা জবাই করা গরুর ছবি পোস্ট করে লিখছে, "মালাউনের মাকে শুইয়ে দিলাম"।

একথা ঠিক, যে হত্যা তো হত্যাই হল।
কিন্তু, জীব জগতের নিয়মে প্রাণী হত্যা ছাড়া প্রাণ ধারণ সম্ভব নয়।
আমরা নিরামিষাশী হলেও উদ্ভিদকে আমাদের হত্যা করতেই হবে।
শুধু, মানুষ নয়। সমগ্র জীবজগতই এই খাদ্য-খাদকের সম্পর্কে জড়িত।
কিন্তু, কোন কাল্পনিক ঈশ্বর-আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে বর্বর ভাবে প্রাণী হত্যা কতদূর
সমর্থনযোগ্য তা নাস্তিক বন্ধুদের অন্তত ভেবে দেখার অনুরোধ করব।

"জয় কালী" বা "আল্লাহু আকবর" বলে চালান প্রতিটা খাঁড়ার ঘা বা ছুরির আঘাত কি
ঈশ্বরবিশ্বাসহীন সুস্থ সমাজ ব্যবস্থার গলাতেই চালান হচ্ছেনা?
আমার দিদিমা বলতেন, কচু কাটতে কাটতেই ডাকাত তৈরি হয়।
নিচের ছবিগুলি দেখুন।
আপনার কি এগুলো সুস্থ স্বাভাবিক বলে মনে হচ্ছে???
ছোটবেলা থেকেই যে সকল শিশু তার আরাধ্যের উদ্দেশ্যে নির্বিকার ভাবে হত্যা করা
শিখছে তারা যে সুকোমল বৃত্তি হারিয়ে বড় হয়ে জিহাদি বা ধর্মযোদ্ধা হয়ে উঠবে তাতে সন্দেহ কী?


ছোটবেলায় GK তে পড়েছিলাম যে, শিকাগো শহরকে বিশ্বের কসাইখানা বলা হয়।
বর্তমানে, ভারত সারা পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি বিফ এক্সপোর্ট করে।
খোঁজ নিয়ে দেখুন, এই সব স্লটার হাউসের সাথে বহু বছর ধরে যুক্ত কসাইরা কিন্তু কেউ মানসিক রোগের শিকার হননি।
বেশি দূর যাওয়ার দরকার নেই।
প্রতিদিন, পাড়ার যে মুরগিওয়ালা বঁটিতে ঘ্যাঁচ করে মুরগির মুণ্ডু কেটে ফেলে সেও কোনদিন মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়না।
কারণ, এটা তার ব্যবসা।
এর সাথে কোন অলৌকিক শক্তিকে খুশি করার প্রশ্ন নেই।
কোন সম্প্রদায়কে ঘৃণা করার কোন প্রশ্নও তার মাথায় আসেনা।

আপনার নিজের মনেও একটাই খুশি থাকে, যে আজ সন্তানকে ভালমন্দ খাওয়াতে পারব।
ঈশ্বর, আল্লাহর প্রতি অন্ধবিশ্বাস বা এই সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ কি মাংসের দোকানে গেলে আপনার মনে তৈরি হয়???

এককথায়, দুজন পরিণত বয়স্ক মানুষের সম্মতিতে হওয়া যৌনতা আর ধর্ষণের ভিতর যে পার্থক্য,
মাংস খাওয়ার জন্যে পশুহত্যা আর ধর্মীয় অন্ধবিশ্বাস অনুযায়ী পশুহত্যার ভিতর একই পার্থক্য।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.