নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আপনার জীবনের যে সত্য কথাগুলো কেউ জানে না কিংবা কেউ মানে না সেগুলোই আপনার সম্পদ

মানবানল

Do not Dismiss Your Dreams, to be without dreams is to be without hope To be without hope is to be, without Purpose...

মানবানল › বিস্তারিত পোস্টঃ

রূপকথার লেখা একুশের চিঠিটি…

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:৫৬

কেমন আছো তুমি? নিশ্চয় সপ্তম আসমানে গোমরামুখী হয়ে বসে থাকো; নিশ্চয় আগের মতোই এখনও চুপটি করে বসে থাকো; খাবারের থালা সামনে নিয়ে। আমি জানি-তালতলায় বসে বলা কথাগুলো কেবল তোমার মুখের কথা ছিলো না,ওগুলো ছিলো এক একটি আগুনের ফুলকি, যা তোমার বুকের রক্ত হয়ে ’৫২ এর ২১ তারিখে লেপ্টে ছিলো। আমি কাঁদিনি, তোমাকে ছোঁয়ার সাহসও করিনি। কেননা আমার খোঁপায় শিউলি ফুলের মালা গুঁজবারকালে তুমি বহুবার বলেছো "আমার ভাষাকে আমি মরতে দেবো না, তুমি শুধু আমার পাশে থেকো, সাহস দিও"। তারপরেও ৫২ এর মিছিলে যেতে আমি তোমায় নিষেধ করেছিলাম,স্পষ্ট মনে আছে সেই দিনটার কথা, দরজায় কড়া নাড়লে, শাড়ির আঁচল ঠিক করতে করতেই ছুটে এলাম। হাতে লম্বা চিঠিটা দিয়ে চোখে চকচক করা অশ্রু ফোটাগুলো নিয়ে তুমি নীরবে চলে যাচ্ছিলে, আমি পথ রোধ করলাম। মিছিলে যাবার কথা শুনেই আমি তোমার ঠোঁট চেপে ধরলাম। তুমি বাঁধা না মেনেই চলে গেলে।গেলে যে গেলেই আর একবারও পারুল বলে ডাকলে না। আর কোনোদিন-ই হয়তো ডাকবে না। কিন্তু আমি যে এখনও শুনতে পাই, ঝাপসা চোখে মনে হয়-তুমি হেঁটে বেড়াচ্ছো আমার উঠোনে। চিঠির লিখাগুলো মলিন হয়ে গেছে, বোঝা যায় না। কিন্তু এতো, এতো এতোবার পড়েছি যে, এখন চোখের সামনে ধরলেই বুঝতে পারি-চিঠিটার ঘ্রান কথার বুনন আমার ইন্দ্রিয়ে মেখে থাকে।
তুমি লিখেছিলে-যেনো বাংলা ভাষাকে সন্তানের মতো লালন করি, তুমি লিখেছিলে বাংলা ভাষাকে পেয়ে যেনো তুমি ফিরলে ভিন্নরূপে তাই ভাবি। তুমি আরও লিখেছিলে-প্রতিদিনের চোখের জলে যেনো আমি তার গা ধুইয়ে দিই। তুমি এ-ও লিখেছিলে, হায়েনারা যেনো তাকে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে রক্তাক্ত করতে না পারে। তুমি লিখেছিলে, আমার স্বত্তায় যেনো আমি তাকে মিশিয়ে দিই। আর যদি তা না পারি তবে যেনো তোমায় ভুলে অন্যত্র সংসারে ব্যস্ত হই...
বাংলা ভাষাকে বিভিন্ন রং মাখিয়ে যেনো হলুদ সেরে বিয়ের আলোতে অন্যের হয়ে যাই। আর কোনোদিন যেনো তোমার কথা মনে না আনি।
আমি পারিনি। আর পারিনি বলেই আজও সংসার না পেতে তোমার ফিরে আসা রূপটাকে নিয়েই বেঁচে থাকি। হাসি আর কাঁদি। আমার কলমের কালিতে তোমার দেয়া রক্তগুলো সাদা কাগজে উগলে পড়ে। আমি জানি-তুমিই ফিরে এসেছো পুরুষ নও বাংলা ভাষা হয়ে। তাই আজ আবারও ও আমার খোঁপায় ফুল গুঁজে দেবার অধিকার আবার তোমায় দিলাম। তোমার জমাট বাঁধা রক্ত, আমার এতোদিনের ভালোবাসা মিলে একুশের দুপুর বেলাটা বরং কালো থেকে অন্য একটি রং নিয়ে আসুক।
পুনশ্চ ১: তুমি ভালো থেকো গো।
পুনশ্চ ২: আমি ভালো আছি।
পুনশ্চ ৩: ২১ এর জন্য আমি গোটা বছর প্রতিক্ষায় থাকি। ওইদিন যে তুমি আমার খুব কাছে থাকো।
পুনশ্চ ৪: পরের বার আর একা ছাড়বো না, মিছিলে আমিও যাবো।
পুনশ্চ ৫: ওরা জানে না তোমারও খুউব সুন্দর একটা নাম আছে।
ইতি
তোমার রূপকথা

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৩:৫০

রিপি বলেছেন: কষ্টের তবে অনেক সুন্দর একটা চিঠি...। :)

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:১৬

মানবানল বলেছেন: অনুধাবণ এবং মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ

২| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৪:৫১

রুদ্র জাহেদ বলেছেন: অসাধারন লিখেছেন...

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:১৬

মানবানল বলেছেন: প্রীত হলাম। ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.