নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আপনার জীবনের যে সত্য কথাগুলো কেউ জানে না কিংবা কেউ মানে না সেগুলোই আপনার সম্পদ

মানবানল

Do not Dismiss Your Dreams, to be without dreams is to be without hope To be without hope is to be, without Purpose...

মানবানল › বিস্তারিত পোস্টঃ

১৫৬টি জলজ্যান্ত মানুষ লাশ হয়ে যাবার পরও আমরা তেমন একটা বেদনাবোধ করি না!

১৮ ই জুন, ২০১৭ রাত ১২:৫৯

কি আশ্চর্য! ১৫৬টি জলজ্যান্ত মানুষ লাশ হয়ে যাবার পরও আমরা তেমন একটা বেদনাবোধ করি না। রাষ্ট্র, সরকার প্রধান, সরকারের হোমড়াচোমড়া, বিরোধী রাজনীতিক কারও আচরণেই বেদনার কোনো প্রতিফলন পাওয়া যায় না। কারও মধ্যেই কোনো অনুতাপ নেই, ভবিষ্যতের প্রাণহানি ঠেকানোর ব্যাপারে রাষ্ট্রের কোনো প্রতিশ্রুতির কোথাও শুনি না আমরা।
কি আশ্চর্য! ১৫৬টি লাশ আমাদের শিল্পীদের বেদনার কোনো গান গাইতে উৎসাহ দেয় না, আমাদের কবিদের কেউ লিখেন না বেদনার কোনো কাব্যগাঁথা। যেনো পার্বত্য এলাকার ১৫৬টি লাশ আমাদের কোনো স্বজনের নয়, যেনো এরা কেউই কোনো কালে আমাদের কেউ ছিলেন না। এরা যে মানুষ ছিলেন-সেটা আমরা স্বীকার করি তো? আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থা, রাজনীতি মানুষ-সবই কি মানবিকতাবিমুখ হয়ে গেছে তাহলে? পাহাড়ে ১৫৬টি মৃত্যু নিয়ে যে রাজনীতিকরা ‘নির্লজ্জ ব্লেমগেম’ এ মেতে থাকে তারা কি সত্যিই মানুষ? ছি: !
পাহাড়ে রাজনীতি নিয়ে চমৎকার একটি সংবাদ প্রকাশ করেছে লোকসমাজ। নিচে সেটি তুলে ধরা হলো-
অবৈধভাবে পাহাড়ে বসতি গড়ে নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে ভাড়া দিচ্ছেন প্রভাবশালী একটি চক্র। ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে ঘর বানানো থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের সংযোগও দিচ্ছেন তারা। পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদেরও নিয়ন্ত্রণ করছেন তারা। বলতে গেলে পাহাড়েরই নিয়ন্ত্রণ এই চক্রের হাতে। প্রশাসনের নাকে ঢগায় দিনের পর দিন পাহাড়ে এভাবে রাম-রাজত্ব কায়েম করলেও তাদের উৎখাতে কোনও পদক্ষেপ নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। বরং প্রভাবশালী চক্রের পেছনে রাজনৈতিক আশীর্বাদ থাকার কারণে পাহাড় দখলমুক্ত করতে অপারগ খোদ স্থানীয় প্রশাসন।
অভিযোগ রয়েছে, রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় পাহাড়ে রাজত্ব চালিয়ে আসছে প্রভাবশালী এসব চক্র। সরকারি দল-বেসরকারি দলের প্রভাব-প্রতিপত্তি নয়, পাহাড়ে আধিপত্য বিস্তারই তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। ফলে ক্ষমতার পালাবদল হলেও পাহাড়ে তাদের রাজত্বের কোনও পরিবর্তন হয় না। যুগের পর যুগ টিকে থাকে তাদের আধিপত্য। শুধু প্রভাবশালী এসব চক্র নয়, বাস্তুহারা সংগঠনের নামেও চট্টগ্রামে দখল করা হচ্ছে পাহাড়। শক্তির মহড়া দেখিয়ে এ ধরনের সংগঠনগুলো পাহাড় ও সরকারি জমি দখলে নিচ্ছে। অভিযোগ আছে, পর্দার আড়ালে থেকে এসব সংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতারা।
মতিঝরনা পাহাড়ে বসবাসকারী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রিকশাচালক বলেন, ‘প্রভাবশালী একটি চক্র রয়েছে, যারা পাহাড়ে জায়গা দখল করে ঘর-বাড়ি নির্মাণ করে। স্থানীয় কাউন্সিলরসহ রাজনৈতিক নেতারা এই চক্রের সঙ্গে জড়িত। টাকা দিলে তারা এখানে ঘর তোলার অনুমতি দেয়।’ দুই রুমের একটি ঘর তোলার অনুমতি নিতে এক থেকে দেড় লাখ টাকা এই চক্রকে দিতে হয় বলে জানান তিনি।
একই পাহাড়ের আরেক বাসিন্দা কুমিল্লার আক্তার হোসেন বলেন, ‘টাকা দিয়ে ঘর তোলার অনুমতি নিলেও অনেক সময় সেই ঘরে থাকতেও দেওয়া হয় না। ঘর তোলার পর তা জোর করে দখল করে সেখানে অন্যদের ভাড়া দেয় ওই প্রভাবশালী চক্রটি।’ তিনি আরও বলেন, ‘পাহাড়ে ঘর তোলার জন্য রাজনৈতিক প্রভাব থাকতে হয়। স্থানীয় প্রভাবশালীদের অনুমতি ছাড়া এখানে কিছুই করা যায় না।’
রাঙামাটিতে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি
রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় পাহাড় দখলের বিষয়টি স্বীকার করেছেন পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আব্দুল জলিল। তিনি বলেন, ‘পাহাড়গুলো দখল করে কারা সেখানে ঘর-বাড়ি নির্মাণ করছেন, তা আপনারাও ভালো করে জানেন। দখলকারীরা রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় থাকায় আমরা চাইলেও তাদের উচ্ছেদ করতে পারছি না।’ এ কে খান পাহাড় ও মতিঝরনা এলাকায় বসবাসকারী একাধিক বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মতিঝরনা এলাকায় একটি রুমে থাকার খরচ দেড় থেকে দুই হাজার টাকা। আর দুই রুমের খর তিন থেকে চার হাজার টাকা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীতে সরকারি ছয়টি সংস্থার মালিকানাধীন পাহাড় রয়েছে সাতটি। অবৈধ দখলে রেখে সংঘবদ্ধ কয়েকটি চক্র এসব পাহাড় থেকে ভাড়ার নামে প্রতি মাসে আয় করছে ৫০ লাখ টাকারও বেশি। অবৈধ দখলে থাকা সাতটি পাহাড়ের মধ্যে গণপূর্ত অধিদফতরের মালিকানায় রয়েছে আমবাগান এলাকার বাটালি হিল, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মালিকানায় রয়েছে টাইগার পাসের মোড়ে ইন্ট্রাকো সিএনজির পেছনের পাহাড়, লেকসিটি আবাসিক এলাকার পাহাড়, বিশ্ব কলোনি বড় পানির ট্যাংকির পাহাড় ও ওয়াসার মতিঝরনা পাহাড়। বাকি পাহাড়গুলোর মালিকানা রেলওয়ের।
অভিযোগ রয়েছে, এসব পাহাড়ের তত্ত্বাবধানকারী সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তবে সরকারি সংস্থাগুলোর দাবি, রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা থাকার কারণেই অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব আব্দুল জলিল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পাহাড়গুলো যেসব সংস্থার মালিকানায় রয়েছে, তাদের কোনও তৎপরতা না থাকায় দখলদারিত্ব বাড়ছে। মালিকরা উদ্যোগ না নিলে সেখানে আমাদের করার কিছু থাকে না। এরপরও পাহাড় ধসে জান-মালের ক্ষতি এড়াতে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়।’ পাহাড়ের দখলদারদের উচ্ছেদে সরকার, রাজনৈতিক দলের নেতা, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন বলে তিনি জানান।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামাল হোসাইন তার গবেষণায় দেখিয়েছেন, গত তিন দশকে চট্টগ্রাম নগরীতে শতাধিক পাহাড় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এসব পাহাড় কেটে নির্মাণ করা হয়েছে আবাসন। নগরীতে বর্তমানে টিকে রয়েছে মাত্র ৮৬টি পাহাড়। তবে এগুলোর অস্তিত্বও বিপন্ন। এই ৮৬টি পাহাড়ের মধ্যে অক্ষত রয়েছে মাত্র ১৩টি। অবশিষ্ট ৭৩টি পাহাড় কেটে আবাসনসহ বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের পাঁয়তারা চলছে। এই ৭৩টি পাহাড়ের মধ্যে কিছু পাহাড়ের এক-তৃতীয়াংশ ও কিছু পাহাড়ের দুই-তৃতীয়াংশ এরই মধ্যে কেটে ফেলা হয়েছে। প্রায় ৫০টি পাহাড়ের ওপরে-নিচে ও আশপাশে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণভাবে গড়ে তোলা হয়েছে ৯০৭টি বস্তি। অধ্যাপক কামাল হোসাইন বলেন, ‘প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় পাহাড় ব্যবস্থাপনায় যে ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার ছিল, প্রশাসন তা করতে পারেনি। এ কারণেই পাহাড়ে মৃত্যুর ঝুঁকি ক্রমাগত বাড়ছে। পাহাড়কে মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে অপব্যবহার করেছি, করছি আমরা। তাই প্রকৃতি আমাদের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছে।’

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জুন, ২০১৭ রাত ১:১৭

গেম চেঞ্জার বলেছেন: পোস্টটা ভাল ছিল। তবে হেডলাইনের সাথে মুল বিষয়বস্তু প্রাসংগিক নয়।

প্রাকৃতিক ভারসাম্য নিয়ে আমরা সতর্ক হব যেদিন সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে আমাদের বাড়ির কাছে পানি চলে আসবে তখনই!

১৯ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৪:৪৬

মানবানল বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মতামতের জন্যে। হয়তো বা সেদিন-ই আমরা সতর্ক হবো!

২| ১৮ ই জুন, ২০১৭ রাত ১:৪৯

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: ভাল লাগলো।। তবে নিয়ন্ত্রন নিয়ে কিছু না বলে, বলবো প্রকৃতির প্রতিশোধ।।

১৯ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৪:৪৭

মানবানল বলেছেন: ধন্যবাদ ভালোলাগায়। আমরা আমজনতার আর কি-ই বা করার থাকে!

৩| ১৮ ই জুন, ২০১৭ সকাল ১০:৩১

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আমাদের অনুভুতি ভোতা হয়ে গেছে।

১৯ শে জুন, ২০১৭ ভোর ৪:৪৮

মানবানল বলেছেন: কেননা। আমরা এখন আর এসবের কোনো কিছুতেই অনুভূতি দেখাই না! দেখাই অন্যকিছুতে...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.