নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গত সপ্তাহের ঘটনা...
শ্যামলী থেকে সাইন্সল্যাব যাচ্ছিলাম।। অনেক কষ্টে দৌড়ে,ঠেলে-ঠুলে সাত নম্বর বাসে উঠলাম...
কিছুক্ষণ পর কন্টাক্টর ছেলেটা ভাঁড়া চাইতে এগিয়ে আসল...
-মামা ভাড়াটা দ্যান...
-এই নে...
-এইডা কি দিলেন?
- ট্যাঁকা দিসি...
-তাই বইলা তিন টাকা... শ্যামলী থেইকা সাইন্সল্যাব তো আট টাকা ভাঁড়া...
-আমি স্টুডেন্ট... যা ভাগ... বেশী কথা কইলে কইলাম কানের নিচে দিমু...
আমার পাশে দাড়িয়ে থাকা স্টুডেন্ট এই কাজ করেছেন... আমার কাছে ভাঁড়া চাইলে পাচ টাকার একটা নোট দিলাম...
-এই নেন মামা, দুইটাকা...
-ক্যানরে? আমি তো তোরে পাঁচ টাকাই ভাঁড়া দিলাম...
-না মামা, লাগবনা। আপনেও তো স্টুডেন্ট।
কথাটা ঠাস করে চড় হয়ে গালে লাগল। অগত্যা নির্লজ্জের মত দুইটাকা পকেটে রাখলাম।
.............................................
সাইন্সল্যাব নেমেছি... আমার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সেই ছাত্র মহাদয়ও নেমেছেন...
তিনি তখন সিগারেট কিনছেন...
-ওই মামা, একটা বেঞ্চন দাও তো।
শালা, টুটির ভাই... নয় টাকা দিয়া বেঞ্চন এর পাছায় টান দিতে পারস আর বাসে উঠলে ছাত্র হইয়া যাস... আমার জানা নাই আরও অনেক দামী দামী সিগারেট আছে কিনা, হয়ত ২০-২৫ টাকা দামের সিগারেটও আছে... মানুষও তা কিনে খাচ্ছে... খেয়ে তো কোন কাজ হচ্ছে না... ওর চেয়ে দুইটা কলা কিনে খেলেও তো শরীরে কাজে লাগে... এইসব ছাত্ররা কখনও কখনও তো কন্টাক্টরদের চড়-থাপ্পড় দেয়... এইগুলো কি মানা যায়...? আবার এই ইস্যু নিয়ে যখন বাস ভাঙচুর করে,আগুন লাগায়... সত্যি হাসি লাগে... এঁরা নাকি আবার দেশের ভবিষ্যৎ!!!
ভাইরে,তোদের বলি সিগারেট যখন খাস(ওর থেকে গু খা), তখন তো ১০টাকায় কিছু যায় আসে না। কিন্তু যখন ২-৩জন মানুষ ৫০-৬০ জন মানুষের জীবনের দায়িত্ব নিয়ে দিন-রাত তাদের বাসস্থান,কর্মসংস্থানে পৌঁছে দেয়,তাদের প্রতি কি তোদের একটুও দায়িত্ব নেই?
একটু অন্য কথা বলি... ধরেন, আপনার ভালো ব্র্যান্ডের একটি শার্ট পছন্দ হল বসুন্ধারার কোন দোকানে... দাম দেয়ার সময় বলবেন, আমি স্টুডেন্ট... দাম অর্ধেক রাখো... দোকানি যদি ভালো হয় তো ভালো, নাহলে মাদারটোস্ট গালির সাথে পিছে একখান লাত্থি জুটব... আবার ভালো চাইনিজ Restaurant এ খেয়ে দেয়ে, বিল দেয়ার সময় বলবেন, “বিল অর্ধেক,আমি স্টুডেন্ট...” মালিক যেমনই হোক না কেন, থাপ্রাইয়া আপনার কানপট্টি গরম করে ফেলবে... CNG অটোরিক্সাওয়ালার সাথে এই কাণ্ড করে দেখান, মাইর একটাও নিছে পড়ব না...
কিন্তু বাসে উঠলেই না আমরা সব ছাত্র হয়ে যাই... ঢাকা শহরের প্রতিটা গাড়ির ড্রাইভার,কন্ট্রাক্টরা যে পরিমাণ গালি খায়, সেই পরিমাণ গালি যদি আপনি,আমি খাই... সুইসাইড করা ছাড়া উপায় থাকবে না... ওরাও মানুষ... আপনিও মানুষ... ওদের সাথে না হয় একটু মানুষের মত আচরণ করলেন...
খুব বেশি কি ক্ষতি হবে...???
Curious মনের প্রশ্ন থাকল...
০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:১২
ব্যোমকেশের ডায়েরী বলেছেন: যারা কষ্ট করে পড়াশুনা করে, তারা আলাদা ভাই।
কিন্তু কিছু অমানুষ থাকে। এদেরকেই মুলত বলার জন্য লেখাটি লিখেছি।
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৫১
বালক বন্ধু বলেছেন: চমৎকার একটি লিখা! এই কথাগুলো আমি প্রতিনিয়ত বাসে বসে চিন্তা করি।
আমার প্রধান রুট হল আজিমপুর টু মিরপুর রোড। এখানে ঢাকা কলেজ, মিরপুর বাংলা কলেজের ছেলে মেয়েদের যে আচরণ করতে দেখি তা দেখলে সত্যিই লজ্জা লাগে এবং চিন্তা করি যারা আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে তাদের একি হাল?
যারা মোবাইলে শত শত টাকা শেষ করতে পারে, যারা প্রেমিকার পেছনে হাজার হাজার টাকা ঢালতে পারে তারাই আবার দুই টাকার জন্য বাসের মধ্যে থাপ্পা-থাপরি করে।
অনেকেই আছে যারা সত্যিই খুব লড়াই করে পড়ালেখা করেন। তাদের কথা আলাদা। তারা বাসে খারাপ আচরণ করে এমনটা আমি বিশ্বাস করি না।