নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মেহবুব । সামহোয়্যারইন ব্লগের সকল ব্লগারপাঠকভাইবোনদের আমার পক্ষ থেকে সালাম ও শুভেচ্ছা । আশা করি আপনাদের আমি আবহমান বাংলার সব সুন্দর রচনা উপহার দিতে পারবো ।।

সৈয়দ মেহবুব রহমান

আমি মেহবুব । সামহোয়্যারইন ব্লগের সকল ব্লগার ভাইবোনদের আমার পক্ষ থেকে সালাম ও শুভেচ্ছা । আশা করি আপনাদের আমি আবহমান বাংলার সব সুন্দর রচনা উপহার দিতে পারবো ।।

সৈয়দ মেহবুব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ট্রাজিক ড্রিম অফ লাইফ - না পড়লে চরম মিসড

২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ২:০৯

আপনি হয়তো জীবনে স্বপ্ন দেখেন অনেক বড় কিছু হবেন , হয়তো কেউ হতে চান ডাক্তার , কেউ ইন্জিনিয়ার হতে চান , কেউ হতে চান বড় ব্যবসায়ী , কেউ কবি হতে চান , কেউ সাহিত্যিক , কেউ হতে চান সিনেমা হিরো , কেউ হয়তো মুস্তাফিজের মত ক্রিকেটার হতে চান , কারো কারো আর্নল্ড বা রনি কোলম্যানের মত বডিবিল্ডার হবার শখ থাকে , কেউ কেউ আবার ঘরে বসে আউটসোর্সিং করে লাখ লাখ টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখেন । আচ্ছা জীবন তো একটাই তাইনা ?

আপনি আপনার জীবনের স্বপ্ন পুরনের জন্য তো সারাজীবন সময় পাবেননা । জীবনে কোন কিছুর শখ মাথায় চাপবার পর থেকে কয়েকটা বছর মাত্র সময় পাবেন ।

ধরুন আপনি একজন ক্রিকেটার হতে চান , তাহলে আপনাকে অন্তত ১৪ বছর বয়স থকে চেষ্টা করতে হবে । এ জন্য যে ৯৫% ক্রিকেটার বা ফুটবলারদের বা শাটলারদের ক্যারিয়ার ১৮ থেকে শুরু হয়ে ৩০ বা তার পরবর্তী কয়েকটা বছর এ এসে শেষ হয়ে যায় । আর খেলোয়াড় হতে গেলে আছে রোদে পোড়া , ঘর্মাক্ত হওয়া ও ক্লান্তিহীন পরিশ্রম করার মত মানসিকতা । আর দিনের পর দিন বিনা অর্থে নিঃসার্থ কঠোর পরিশ্রম । তারপরেও প্লেয়ার হতে পারবেন কিনা ঠিক নাই । একটু বোলিং বা ব্যাটিং শিখেই যদি ভাবেন আপনাকে নিদেনপক্ষে কোন ক্লাব মাত্র ৫০,০০০/= টাকাতে কেনেনা কেন ? কষ্ট না পেয়ে ভাবুন তো এই দেশে ১৬ কোটি মানুষ , জাতীয় দলে খেলোয়াড় ১৬ কোটিতে ১৬ জন হলে কোটিতে একজন । বাকি হাজার হাজার খেলোয়াড়ের খেলার আর্থিক মূল্য নেই । তাহলে এই স্বপ্ন দেখতে হলে আপনাকে আগে কতটুকু বাস্তবতাবাদী হতে হবে নিজর ক্ষমতা নিয়ে ?

ধরুন আর্নল্ড বা রনি কোলম্যান এর মত বডি বিল্ডার হতে চান , তাহলে আগে ভাবুন এটা ইয়ার্কি নয় , ইটস নট জোকিং । আমার যত বন্ধু বান্ধব দেখেছি , খেয়াল করলে আপনার বন্ধুদের ও দেখবেন , কিছু সিনেমায় হয়তো মাসকুলার কোন হিরোকে দেখে ইন্সপায়ার্ড হয়ে গেলো । কিন্তু ও রকম একটা মাসকুলার বডি তৈরিতে কত সাধনা থাকে জানেন ? ০৩ থেকে ০৬ মাস যখন জিমে গিয়ে শুধু দু ঘন্টা করে কান উঠ বস করতে হবে , বুক ডন দিতে হবে , তখন আপনার ধৈর্য্য থাকবে কি ? এর পর যখন হার্ডি মেশিন ব্যায়াম পার ডে ০৪ থেকে ০৫ ঘন্টা করতে হবে , তখন আপনার দরকার হবে প্রচুর এনার্জেটিক খাদ্য , দামি কিছু স্টেরয়েড তখন আপনি কি এ কাজে সফল হবেন ? বডি বিল্ডিং আবেগ নয় , কঠিন এক সাধনা ও পাগলামির আরেক নাম । দুই দুই চারদিন জিমে গেলেন , আর কয়কবার ডাম্বেল মারলেন হয়ে গেলো সালমান বা আর্নল্ড এর মত বডি এটা ভাবলে বডি বিল্ডিং আপনার জন্য নয় । শরীর , মন , অধ্যবসায় ও টাকার জোর না থাকলে বডিবিল্ডিং এর স্বপ্ন না দেখাই ভালো ।


আপনার অভিনেতা বা অভিনেত্রী হবার খুব শখ ? সে জন্য সব সময় পরিপাটি হয়ে চলেন ? ছেলেদের সাথে বা মেয়েদের সাথে স্মার্টলি দু চারটা কথা কথা বলতে পারেন , ইটস এনাফ ফর অ্যাক্টিং , নো অ্যান্ড নেভার । অ্যাক্টিং একটা আর্ট ।
আপনি কি পরিচালকের কথায় একশো লোকের সামনে যে কোন অভিনয় করতে পারবেন ? ধনী ও প্রতিষ্ঠিত সহ শিল্পীদের পাশে অবহেলিত ভাবে থেকে শ্যুটিং স্পটে একটা শট এর জন্য অপেক্ষা করতে পারবেন ? এটা আমার কথা নয় , বাংলাদেশের অনেক প্রতিষ্ঠিত শিল্পীর জীবনের ফেলে আসা দিনের কথা , যাদের জীবনে চলচ্চিত্রের প্রথম শট দিতে না খেয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে , কিন্তু পরবর্তীতে তাদের বাসায় পরিচালকের লাইন পড়ে গেছে ।

শাহরুখ খানের জীবনের একটা গল্প বলি , কোন এক বিনোদন ম্যাগাজিনে পড়েছিলাম । ১৯৯২ এ ‘’রাজু বান গায়া জেন্টলমান’’ ছবিটি শাহরুখ অভিনীত সুপারহিট সিনেমা । সিনেমাতে জুহি চাওলা সহশিল্পী । জুহি চাওলা তখন কেয়ামত সে কেয়ামত তাক সহ মালায়লম , কন্নড়া অনেক সিনেমা দিয়ে বিখ্যাত । শাহরুখ খান তখন কেবল শুরু করছেন , আর এর আগে ফৌজি সিরিয়ালে অভিনয় করেছিলেন , সেখানে জুহি ছিলেন ততদিনে ছয় বছরের বর্ন্যাঢ্য ক্যারিয়ারের প্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রী । রাজু বান গায়া জেন্টলমান সিনেমার নায়ক হিসেবে পরিচালক শাহরুখ এর নাম জুহি চাওলাকে না জানিয়ে নিয়ে আসাতে ও শাহরুখ একেবারে নতুন হওয়াতে তাকে রাজি করানো যাচ্ছিলোনা । একে তিনি প্রথম সারির অভিনেত্রী তারপর নতুন নায়কের সাথে সিনেমা করে ফ্লপ খাবার ভয় । তবে শাহরুখ এর অভিনয় দেখে কিছুটা রাজি হলেন । পরে তো সিনেমাটি সুপারহিট হয় । আপনার সহশিল্পীর সাথে পর্দায় হাসিখুশি অভিনয় দেখা গেলো । কিন্তু এ্যাকশন কাট বলার পর আপনার সাথে কাজের বাইরে একটা কথাও বললেননা । এটা মেনে নিয়ে সম্পূর্ন প্রফেসনালিজম হতেও একজন নতুন অভিনেতা বা অভিনেত্রীর অনেকটা সময় লাগত পারে ।

আরও একটা ফ্যাকটর হলো সিনেমাতে প্রযোজকের লগ্নীকৃত অর্থ । কেন একজন প্রযোজক আপনাকে ভরসা করে কোটি কোটি টাকা খরচ করবে ? একবার ভাবুন তো যুগে যুগে উত্তম কুমার , নায়করাজ রাজ্জাক , সালমান শাহর মৃত্যুর ২০ বছর পরও জীবিত নায়কদের হারিয়ে দেবার মত জনপ্রিয়তা, মান্না , মিঠুন চক্রবর্তীর ডায়লগ , ইলিয়াস কাঞ্চনের বেদের মেয়ে জোছনা এ গুলো কিসের বদলে দর্শককে হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মত টানে জানেন । আপনি যদি মনে করেন আপনার ও সেই যোগ্যতা আছে তাহলে নায়ক হবার স্বপ্ন দেখুন । পৃথিবীতে সব থেকে কঠিন কাজ ও ভালোবাসা হলো মানুষের পকেটের পয়সা সেচ্ছায় খরচ করানো । বুঝুন কেন মানুষ আপনার অভিনয় বা কাজ দেখবার জন্য পকেটের পয়সা খরচ করে ঘন্টার পর ঘন্টা হলের বাইরে সিরিয়াল দেবে ?

আপনি কোন একটা আইটি প্রতিষ্ঠান থেকে এসইও বা ওয়েব ডিজাইন শিখেই মারজান আহমেদ বা রাসেল আহমেদের মত লাখ লাখ টাকা ঘরে বসে কামানোর স্বপ্ন দেখেন ? কিন্তু আপনি যখন ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটপ্লেসে গিয়ে বায়ারের রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী হাজার হাজার ভিজিটর বা যে কোন সাইটের মত হুবহু ডিজাইন কবার মত বিদ্যা বা নেটওয়ার্ক কি আপনি আয়ত্ব করতে পেরেছেন ?

এত বড় কঠিন বাস্তবতা গুলো না ভেবেই আমরা স্বপ্ন দেখি বলেই আরা একদিন দেখি আমাদের ঘুম ভেঙে গেছে , এখন আমরা বাস্তবে ফিরে এসেছি , আপনি এখনও একজন সাধারন যুবক বা যুবতী । আপনাকে এখন সমাজে সাধারন মানুষ হিসেবে সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকতে গেলেও দশ বছর সংগ্রাম করতে হবে ।




পরিশ্রম বা আগ্রহ থাকার পরও ভাগ্য বা তাকদীরের খেল বলে একটা জিনিস থাকে । সেটা কালেভদ্রে । মানুষের কিছু করার থাকেনা এতে ।

সব থেকে বড় কথা হলো কি জানেন মন থেকে আপনি অতিরিক্ত যে জিনিসটা ভালোবাসবেন সেটাই আপনার কাছে ধরা দেবেনা // কারন আপনি বাস্তবতাকে অস্বীকার করে ভালোবাসেন এ গুলো। এ জন্য শাহরুখ হকি খেলতে গিয়ে হয়ে গেছেন অভিনেতা , সাকিব আল হাসান ফুটবল ভালোবাসতেন হয়েছেন ক্রিকেটার । হকি আর ফুটবল তারা খেলেছিলেন হঠাত করে মনে হওয়া আবেগে । কিন্তু অভিনয় ও ক্রিকেটে ছিলো তাদের আসল প্রতিভা । তারা বুঝতে পেরেছিলেন বাস্তবতার সাথে ও তাদের গুনের সাথে কোনটির সমন্বয় তদের অসাধারন করে তুলবে । এ জন্য প্রকৃত প্রেম শিরি - ফরহাদ , লাইলি -মজনুর মত ট্রাজিক হয়ে যায় // এ জন্যই নিয়তির লিখনের খেলে দেখি মেসি মাত্র একবার ওয়ার্ল্ড কাপ বা কোপা পায়না ভিনগ্রহের খেলোয়াড় উপাধি থেকেও , একবার পেলেই তো সে লিজেন্ড ,, প্রয়াত সালমান শাহ যদি আর কটা বছর বেঁচে থাকতেন , বাংলা সিনেমার অবস্থানটা কত ভালো হতে পারতো ,, এশিয়া কাপের ফাইনালে বার বার বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম হারে , ২০১২ এর এশিয়া কাপের ফাইনালটা কি মনে পড়ে ,, জীবনে সফল হতে হলে শধুমাত্র আবেগের বশবর্তী না হয়ে দেখুন বাস্তবতা আপনার কোন কাজের পক্ষে কতটুকু আছে , কোন কাজে আপনি কতটুকু প্রফেশনাল হতে পারবেন ,, সেটা ট্রাই করুন সফল হবেনই ,, আর সব কথার শেষ কথা যা নয়ে হয়না তা নব্বই তেও হয়না ,, নিয়তি মাঝে মাঝে হিরোদের ট্রাজিক হিরো বানায় , সুন্দর একটা ভবিষ্যতের লাইফটাকে ট্রাজিক লাইফ বানায় । ব্যতিকম হিসেবে কেএফসি ও কলোনেল স্য্যান্ডার্স আছেন যিনি ৭০ বছর থেকে জীবনে সফল হয়েছিলেন ,, বাস্তবতা হলো এক্সেপশন ইজ নট এক্সাম্পল । স্বপ্নের সাথে যদি বাস্তবতা ও সাধ্যের মিল না থাকে তবে সে স্বপ্ন ব্যর্থ হওয়াটা সময়ের ব্য্যাপার ।


মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:৪২

নয়ন বিন বাহার বলেছেন: সত্যিই ভাবার মতো বিষয়।
অনেক ধন্যবাদ।

২| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:২২

সৈয়দ মেহবুব রহমান বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.