নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমাকে নিয়ে লেখার মত আপাতত কিছুই নেই। যেদিন লেখার মত কিছু অর্জন করতে পারবো সেদিন না হয় সময় করে লিখে ফেলবো।

অতঃপর হৃদয়

অতঃপর একটি কাল্পনিক চরিত্র

অতঃপর হৃদয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভয়ানক রাজবাড়ি

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৪০


আমার জন্ম গ্রামেই কিন্তু আমি ছোট বেলা থেকেই শহরে থাকি। বাসার সবাই শহরে থাকে। শহরে থাকতে থাকতে গ্রামের সব কু-সংস্কার গুলা ভুলেই গেছি প্রায়। তবুও মা একটু আকটু মনে করিয়ে দেয়। এটা কর ওটা কর। এটা করলে এই হয়। ওটা করা যায় না, বিরক্ত লাগে কথাগুলা।

আমাদের গ্রাম হরিহরপুর। এখানে বিশাল এক রাজবাড়ি আছে। রাজবাড়ির পাশেই আমাদের বাড়ি। প্রায় ৯ বছর হয় গ্রামে যাই না। গ্রামের বাড়িতে আমাদের চাকর ছাড়া আর কেউ থাকে না। চাকর দেখাশুনা করে সব।

৯ বছর পর গ্রামের মাটিতে পা রাখলাম। বাস থেকে নেমেই দেখি আমাদের বাড়ির চাকর "তোতা মিয়া" আমার জন্য গাড়ি দাড় করিয়ে রেখেছে। বাস স্ট্যান্ড থেকে ৩ কিলোঃ যেতে হয় আমাদের বাড়ি। বাড়িতে এসে দুপুরের খাওয়া করে বিশ্রাম নিতে আমার কক্ষে গেলাম। বিকেল বেলা চাকর এসে আমাকে অনেক কিছু বলল। যে রাতে নাকি এখানে কি রকম ভয়ানক আওয়াজ শোনা যায়। কখনো কান্নার আওয়াজ আবার কখনো কখনো কেমন যেন কি অদ্ভুত গান গাইছে। সবাই মনে করে রাজবাড়ি থেকেই আওয়াজ টা আসে। চাকর আরো বলে গেল রাতে কক্ষ থেকে বের না হই। জানতে পারলাম কিছুদিন আগে নাকি তিন জন মানুষ কোথায় যেন উধাও হয়ে গেছে। সবাই মনে করে ঐ রাজবাড়িতে ভুত আছে। আর ঐ ভুত উধাও করেছে তিন জনকে। আমার আবার এই সবে একদম বিশ্বাস নেই। শহুরে ছেলে আমি। তাই ভুত বলতে কিছু আছে এটা বিশ্বাস করিনা।

রাতের খাবার এনে দিয়ে চাকর চলে গেল। আর বলে গেল তাড়াতাড়ি খেয়ে ঘুমাতে। আমি রাতের খাবার শেষ করে আমার কক্ষে এসে "চাদের পাহাড়" উপন্যাস টা নিয়ে একটু বসলাম। তখন রাত ১ টা পার হয়েছে। হঠাৎ কোথা থেকে যেন অদ্ভুত আওয়াজ আসতে শুরু করল। আমি ওদিকে মন না দিয়ে বই পড়ছিলাম। কিন্তু আওয়াজ টা আমায় খুব জ্বালাতন করতে শুরু করল। ভাবলাম কিসের আওয়াজ তা জানতে হবে। এই ভেবে হাতে লাইট নিয়ে বেরিয়ে পরলাম।

দুই তলায় আমার থাকার ব্যাবস্থা হয়েছে। সেখান থেকে নিচতলায় আসলাম। এত বড় বাড়িতে আমি একা! ভেবেই বুক টা কেমন জানি করছিল। আস্তে আস্তে বাড়ির মূল দরজায় এসে দাঁড়ালাম। তখন আওয়াজ টা বন্ধ হয়ে গেল। আবার হঠাৎ কিছুক্ষন পর আওয়াজ শুরু হলো। আওয়াজ টা রাজবাড়ি থেকেই আসছিল। আমাদের বাড়ি থেকে রাজবাড়ি বেশি দূরে না। মাত্র তিন মিনিটের রাস্তা। আস্তে আস্তে এগিয়ে যাচ্ছি রাজবাড়ির দিকে। আমি তেমন একটা ভয় পাইনা না। তবুও কেন যানি আজ ভয় ভয় লাগছে। হেঁটে চলেছি লাইট হাতে আর চাকরের সেই কথাগুলো মনে পড়তেই বুক টা কেমন যেন কেপে উঠছে। তাও যেন কোন এক আকর্ষণ শক্তি আমাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে রাজবাড়ির দিকে। হাঁটতে হাটতে এসে গেলাম রাজবাড়ির মূল দরজায়। অনেক পুরোনো রাজ বাড়ি। ১০ বছর হয় এখানে কেউ থাকে না। শুনেছিলাম কোন এক কারণে রাজা এই বাড়ি ছেড়ে অন্য যায়গায় রাজ প্রাসাদ বানিয়েছে। আমি যখন মূল দরজায় দাঁড়িয়ে এইসব ভাবছিলাম, তখন কোন আওয়াজ আসছিল না।

আমি আস্তে আস্তে দরজার ভেতরে ঢুকলাম। কিছুদূর এগিয়ে যেতেই আবার সেই আওয়াজ। আওয়াজ টা ছিল কেমন যানি অদ্ভুত কান্নার আওয়াজ। আবার কখনো বা অদ্ভুত ভাবে কবিতা আবৃতি করার আওয়াজ। রাজবাড়ি তিন তলা। আমি দুই তলার উপরে উঠার জন্য সিঁড়িতে উঠলাম। খুব আস্তে আস্তে যাচ্ছি। খুব ভয় লাগতেছে তাও ফিরে আসতে পারছি না। কে যেন আমাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে এরকম মনে হচ্ছে। অর্ধেক সিঁড়িতে উঠার সাথে সাথে আমার হাতের লাইট টা মেঝেতে পড়ে ভেঙ্গে গেল। এখন কি করব বুঝতে পারছিলাম না। আমার সাথে আর কোন লাইট নেই যে ফিরে আসব। কিন্তু এতদূর এসে ফিরে যেতে কিছুতেই পারি না।

চারপাশে অন্ধকার। আমি ঝাপসা আলোতে এগিয়ে চললাম। দুই তলায় উঠার সাথে সাথে আওয়াজ টা আরো বেড়ে গেল। বুঝতে পারলাম যা অনুমান করেছিলাম ঠিক তাই। রাজবাড়ির পুরোনো এক কক্ষ থেকে আওয়াজ টা আসতেছে। আমি অন্ধকারেই এগিয়ে চললাম ঐ কক্ষের দিকে। কক্ষের দরজা খুলে ভেতরে ঢুকতেই দরজা বন্ধ হয়ে গেল। আমি চিৎকার করলাম কিন্তু মুখ থেকে একটাও আওয়াজ বের হলো না। সামনের দিকে তাকিয়ে দেখি বিশাল ছুঁড়ি নিয়ে দুজন দাঁড়িয়ে আছে। আর তাদের এক জনের মাথা নেই। গলার উপরের অংশ কাটা। আরেক জনের চোখ নেই। আমি সাথে সাথে মাটিতে পড়ে গেলাম।

যখন চোখ খুললাম তখন দেখি, আমি বিছানায় শুয়ে আছি। আর আমার মাথা দিয়ে রক্ত পরছে। মাথা ও হাতে ব্যান্ডেজ করা হয়েছে।
চাকর "তোতা মিয়া " আমাকে বলল, সাহেব আপনি রাজবাড়িতে গেলেন ক্যামনে। আমি সকালে উঠে আপনাকে খুঁজে পাই না। অনেক খোঁজার পর রাজবাড়ির মুল দরজায় সামনে পড়ে থাকতে দেখি। আপনার মাথা দিয়ে রক্ত পরছিল। আমরা কয়েকজন মিলে আপনাকে নিয়ে আসি। আমি ডাক্তার ডেকে এনেছিলাম। ডাক্তার এই ঔষধ লিখে দিয়েছে। তারপর আমি সব ঘটনা খুলে বললাম। সবাই বলল, আপনি বেঁচে ফিরে এসেছেন এটা আপনার ভাগ্য। তারপর থেকে ভয়টা খুব কাজ করে আমার ভেতরে। আমি ঐদিনই ব্যাগ গুছিয়ে শহরে চলে আসি। কিন্তু ঐ রাতে যা হয়েছিল আমার সাথে ঐ ভয়টা আমার পিছু ছাড়ছিল না।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৪৩

বাংলার ফেসবুক বলেছেন: অনেক সুন্দর পোষ্ট। পড়ে ভাল লাগলে । ভাল লাগা রেখে গেলাম সেই সঙ্গে আমার আইডিতে চায়ের নিমন্ত্রণ রইল।আপনার আসার অপেক্ষায় রইলাম কিন্ত। ধন্যবাদ।

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৪৪

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: ধন্যবাদ :) এই শীতে চা খেতে ভালই লাগবে :)

২| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৫৭

দধীচি বলেছেন: বাংলার ফেসবুক ব্লগারটারে উশটা দিয়া ডিম থেরাপি মারা লাগবে, হালায় সব পোস্টে ঘুরে ঘুরে সবাইরে ওর আইডিতে ডাকে, মানে নিজের পোস্টের পাঠক মন্তব্য বাড়ায়

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:০৪

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: হা হা হা :) বহু দিনের অভ্যাস লাইক কমেন্ট না পাইলে মন জানি কেমন করে মনে হয়। তাই ই আমন্ত্রণ জানিয়েছে তার প্রোফাইলে :) আবার তার সাথে চায়ের দাওয়াত ও দিয়েছে।

৩| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৫৬

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: অনেক দিন পরে একটা ভয়ের গল্প পড়লাম। যদিও এটা এই দুপুর ২টায় না পড়ে রাতে পড়লেই জমতো বেশী। :)

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:১৭

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: আমি আরো লিখতেছি,,, এবার রাতেই পোষ্ট করব :)

৪| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩১

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: গল্পটা পড়ে ভূত এফএম এর কথা মনে পড়ে গেলো। শেষ কবে শুনেছিলাম ঠিক মনে নেই। যাইহোক, গল্পে ভালো লাগা জানবেন। :)

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০৬

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: আমি অবশ্য ভুত এফ এম শুনি না :) আর গল্প পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

৫| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৯

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: পড়তে পড়তে আমি তো ভাবছিলাম সত্যি কাহিনী।

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:২২

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: না :) :) তবে সত্যি হলে ও হতে পারত। এই অল্প বয়সে এত সত্যির মুখোমুখি হতে পারব না :D

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.