নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমাকে নিয়ে লেখার মত আপাতত কিছুই নেই। যেদিন লেখার মত কিছু অর্জন করতে পারবো সেদিন না হয় সময় করে লিখে ফেলবো।

অতঃপর হৃদয়

অতঃপর একটি কাল্পনিক চরিত্র

অতঃপর হৃদয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

রহস্যময় হরর গল্প

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৩৬


আমার বাসা মেডিকেলের পাশে তাই একটু ভয়ে ভয়ে থাকি সব সময় কারণ মেডিকেলে বিষ খাওয়া রোগি আসে আবার কখনো মাথা ফাটা রোগি আসে আরো অনেক রকমের রোগি প্রতিদিনই।ভয় টা রোগি আসা নিয়ে না ভয় টা হচ্ছে যে রোগিরা এই মেডিকেল এ এসে মারা যায় তদের আত্মা নিয়ে।

আজ মেডিকেলে অনেক লোকজন এসেছে আর কিছু কিছু লোক কান্না করতেছে, আমি দেখতে এগিয়ে গেলাম, গিয়ে যা দেখলাম তা দেখে শরীর শিহরে উঠল, জমি নিয়ে মারামারি করতে গিয়ে এক লোক গলায় রাম দা এর কোপ খেয়েছে, তাই গলা প্রায় পড়ে যাওয়ার অবস্থা, আমি একবার শুধু দেখেছি, কি না দেখেছি ওমনি একটা চিৎকার করে মাটিতে পড়ে যাই, তারপর আশে পাশের লোকজন আমাকে বাসায় নিয়ে আসে। অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে নিয়েছি।

আমি বাসা থেকে বের হলেই আগে ঐ জায়গা সামনে পড়ে, মানে গলা কাটা(প্রায়) লাশটা যেখানে ছিল।বাবা আমাকে ঔষধ আনতে মেডিকেল মোড়ে পাঠালো।আমি বেশ ভাল মতই যাচ্ছিলাম। আমার মনেই ছিল না যে আজ দিনে মেডিকেলের ভিতরে কি হয়েছে।মেডিকেলের এক দোকান থেকে ঔষধ কিনে বাসায় আসতেছিলাম।বাসায় ফেরার পথে পেছন থেকে কে যেন আমায় ডাকল হৃদয় বলে।আমি পেছনে তাকাতেই দেখি কেউ নেই।আবার ডাকল হৃদয় কোথায় যাও আমাকে নিয়ে যাও।আবার পেছনে তাকালাম আবারো কাউ কে দেখতে পেলাম না এবার একটু ভয় পেলাম।রাস্তা ফাঁকা তেমন কেউ চলাচল করতেছে না।আমি বাসা থেকে বের হয়েছি কিন্তু দেখি নি কয়টা বাজে মোবাইলের দিকে তাকাতেই আমার বুক কেঁপে উঠল ১২.১১ বাজে।আর এলাকার লোক জনের কাছে শুনেছি ১২ টার পর নাকি রাস্তায় তেমন কেউ চলাচল করে না।আর বার বার আমাকে ডাকছে কেউ কিন্তু কাউ কে দেখতে পাচ্ছি না। আরো বেশি ভয় পেয়ে গেলাম।কেমন করে যেন আমার চোখ চলে গেল মেডিকেলের বাগানে( যেখানে আজ সকালে গলা কাটা লাশ দেখেছি) দেখতে পেলাম, একজন সাদা পোশাক পড়া লোক আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে আর আমাকে ডাকছে তার কাছে।আমি আরো মনোযোগ দিয়ে লোকটিকে দেখতে লাগলাম, আমি লোকটির মাথার দিকে তাকাতেই দেখি লোকটির গলা কেটে ফেলা হয়েছে অল্প একটু লেগে আছে গলা, আর আমি সকালে যে লোকটিকে দেখেছি সেই লোকটিই এখন এই ভাবে আমায় ডাকছে, আমি অজ্ঞান হয়ে রাস্তায় পরে যাই।তারপর যখন চোখ খুললাম তখন আমি মেডিকেলের বেডে শুয়ে আছি।মেডিকেলের বেড থেকে সেই বাগান টা খুব ভাল ভাবেই দেখা যায়, আমি না চাইতেই চোখ ওখানে চলে যায়, আমি আবার দুপুরে ঐ লোকটাকে দেখতে পেলাম।এভাবে প্রায় ৭ দিনের মত একটু পর পর ঐ গলা কাটা লোকটাকে দেখতে পেতাম আর যতবার ই দেখেছি ততবার ই চিৎকার করে মাটিতে পড়ে গিয়েছি আবার কখনো কখনো জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছি।তারপর একদিন ডাক্তার বলল আমরা আন্তরিক ভাবে দুঃখিত আমরা কোন চিকিৎসা করতে পারব না আর এ রোগের চিকিৎসা আমাদের কাছে নেই।আসলে আমার মনে ভয় ছিল এটাই হচ্ছে আমার রোগ।পরে এক কবিরাজ এনে আমাকে ভাল করা হয়।কবিরাজ তাবিজ বেধে দেয় হাতে তারপর আর ঐ গলা কাটা লাশ দেখতে পাই নি।

কিছুদিন পরের কথা, তখন গ্রীষ্মকাল বেশ গরম পড়ে।বাবা একটা প্রাইভেট ঠিক করে দিছে সেখানে দৈনিক প্রাইভেট পড়তে যেতাম, আমার সাথে একটি মেয়ে প্রাইভেট পড়ত।মেয়েটি কোন এক কারণে রাতে প্রাইভেট নিল, আর স্যার আমাকেও রাতে যেতে বলল, আসলে আমি একা পড়তাম তো তাই, আর ঐ মেয়েটিও একা পড়ত।তখন রাত ৮ টা বাজে। প্রাইভেট এ গেলাম, গণিত প্রাইভট পড়তাম, প্রথম দিন রাতে ভালই পরলাম, স্যার ও অনেক অংক করালো, অংক করা শেষে স্যারের ছেলে উৎস ভাইয়ের সাথে গল্পে মেতে উঠলাম, গল্প করতে করতে কখন যে রাত ১১ টা বেজে গেছে আমি নিজেও জানি না।তারপর আমি তো ঘড়ি দেখে অবাক, উৎস ভাই বলল হৃদয় একা একা যেতে পারবে তো নাকি এগিয়ে দিতে হবে। আমি কোন কিছু ভাবনা চিন্তা না করেই বলে ফেললাম একা যেতে পারব ভাইয়া।স্যারের বাসা থেকে বের হয়ে আস্তে আস্তে বাসার উদ্দেশ্যে যাচ্ছি, রাস্তা ফাঁকা কেউ নেই বললেই চলে, প্রতিদিন এত ফাঁকা থাকে না রাস্তা, আজ কেন যানি মনে হচ্ছে সব কিছু থেমে থেমে চলছে।কিছুদূর এগিয়ে ইমরান ভাইয়ের সাথে দেখা, ইমরান ভাই বলল হৃদয় চলো একটু কলেজ মাঠে যাই, অনেক রাত হয়ে গেছে এখন কলেজ মাঠে যাওয়া মোটেও ভাল হবে না।তাই ভাইয়াকে বললাম ভাইয়া আজ যাব না অন্যদিন।তারপর ইমরান ভাই বলল তাহলে চলো ফজিলাতুন্নেছার মাঠে যাই। এবার যেতে রাজি হলাম কারণ ফজিলাতুন্নেছা থেকে বেশিদূর না আমাদের বাসা।আমি আর ইমরান ভাই গেলাম ফজিলাতুন্নেছার মাঠে সেখানে গিয়ে দেখি উৎস ভাই বিঁড়ি খাচ্ছে। আমি তো অবাক উৎস ভাই আবার এখানে আসল ক্যামনে, যাই হোক অসম্ভব কিছু না কারণ উৎস ভাইয়ের বাসা ফজিলাতুন্নেছার পিছন পাশে। ইমরান ভাই আর উৎস ভাই বিঁড়ি খাচ্ছে আর গল্প করতেছে আমি বসে বসে তাদের গল্প শুনতেছি।হঠাৎ আমার চোখে পড়ল, বিঁড়ির আগুন গুলো কেমন জানি মায়াবি আগুন, তারপর ভাবলাম হয়তো কিরন মালা দেখতে দেখতে মায়া শক্তি সব সময় চোখে ভেশে বেড়ায়।অনেক গল্প জল্প হলো রাত তখন প্রায় ১২ টা পার হয়েছে, বাসা থেকে আমাকে ফোন করেছিল অনেক আগেই আমি বলে দিয়েছিলাম আজ বাসায় ফিরতে দেরি হবে আজ প্রাইভেট বেশি করে পড়ব।আমি ইমরান ভাই কে বললাম ভাই আর থাকতে পারব না আমি আজ চলে যাই বাসায়, আরেকদিন সময় দিব বেশি করে।ইমরান ভাই হাত টেনে ধরল, আর বলল এতো তাড়াতাড়ি চলে যাবে, আর আমরা তো বিড়ি খেলাম তুমি তো আবার এগুলা খাও না, খালি মুখে এভাবে এতক্ষণ আমাদের সাথে থেকে এখন খালি মুখে চলে যাবে তা তো হয় না।ইমরান ভাই তার পকেট থেকে কি যেন বের করল আমি অন্ধকারে ভাল করে দেখতে পাই নি।পরে দেখলাম যে নারকেলের নাড়ু। আমি ইমরান ভাইকে বললাম ভাই কোথায় পাইছেন নাড়ু। ভাই আমাকে বলল তোমার উৎস ভাইয়ের বন্ধু নিখিল দিছে। আমি যতদূর জানতাম এই দিনে পুজো হয় না হিন্দুদের, তাহলে নাড়ু কই পাইল, যাইহোক কোথায় পাইছে পাইছে সেটা দেখার বিষয় না। আমাকে খেতে দেওয়া হয়েছে আমি খাই তারপর কি হয় হবে।আমার হাতে প্রথমে ৫ টা নাড়ু দিল আমি খেতে লাগলাম আবার আরো ৫ টা দিন ওগুলাও খাইলাম আবার ৫ টা দিল ওগুলাও খাইলাম তবে নাড়ু গুলোর কোন মজা পাচ্ছিলাম না। কেমন জানি মায়া শক্তি দিয়ে বানানো নাড়ুর মত, আবার মনে হলো কিরন মালা দেখতে দেখতে মনে হয় সব জায়গায় মায়া শক্তি দেখতে পাই।তারপর উৎস ভাই আর ইমরান ভাইকে বাসায় যাওয়ার কথা বলে চলে এলাম বাসায়।

পরের দিনের কথা। প্রাইভেট পড়ার জন্য স্যারের বাসায় গেলাম, তারপর উৎস ভাইকে বললাম ভাইয়া কালকের নাড়ু টা কিন্তু দারুণ ছিল।উৎস ভাই অবাক হয়ে বলল কিসের নাড়ু। আমি বললাম ক্যান আপনার মনে নাই। নাকি না বোঝার ভান করতেছেন, কাল কে যে ইমরান ভাই আর আপনি ফজিলাতুন্নেছার মাঠে বিঁড়ি খাইলেন আর আমাকে নাড়ু খেতে দিলেন আবার বললেন নাড়ু নাকি নিখিল ভাইয়া দিছে। এবার উৎস ভাই রেগে গিয়ে বলল ভাল করে বলবা কি হইছে, আর কখন নাড়ু খাইছ, আর আমি তো কাল কে বাসা থেকে বের হই নাই।আমি একটু অবাক হলাম, তারপর সব ঘটনা খুলে বললাম, উৎস ভাই আমার কথা শুনে হাঁসতে লাগল, এমন ভাবে হাসতেছিল যেন আমি তাকে কোন ভূতের গল্প শোনাচ্ছি।তারপর উৎস ভাই তার ফেসবুকের মেসেজ দেখালো আর বলল দেখ গতকাল আমি সোহেলের সাথে রাত ২ টা পর্যন্ত চ্যাট করছি।আমি এবার সত্যি সত্যি ভয় পেয়ে গেলাম। তারপর গেলাম ইমরান ভাইয়ের বাসায়। ইমরান ভাই বলে সে নাকি কাল রাতে বাসায় ই ছিল না। আমি এবার ভয়ে কথা বলতে পারছিলাম না।বার বার গতকালের রাতের কথা মনে হচ্ছিল।আমি মনে মনে যা ভেবেছিলাম ঠিক তাই, বিড়ীর আগুন আসলেই মায়াবী আগুন ছিল আর নারকেলের নাড়ু গুলাও মায়ার তৈরি ছিল।ভুত সব কিছুই করতে পারে আমি জানতাম তবে বিশ্বাস করতাম না।আজ এই কাহিনির পর বিশ্বাস না করে উপায় নাই।আমি ঐদিন প্রাইভেট না পড়েই বাসায় চলে আসি, বাসায় এসে বিছানায় ঘুমিয়ে পড়ি রাতে আমি বুজতে পারি আমার ভীষণ জ্বর এসেছে, বাবা ডাক্তার ডেকে আনে ডাক্তার অনেক গুলো ঔষধ লিখে দিল। এত ঔষধ খেলাম তাও জ্বর কমে না। প্রায় ১ মাস আমার জ্বর ছিল। তারপর আস্তে আস্তে জ্বর কমে যায়।আবার প্রাইভেট যাওয়া শুরু করি।

কয়েকমাস পরে,

শনিবার, সারাদিন বাসায় বসে টিভি দেখলাম, আর আমাদের বাসায় সনি আট কেউ দেখে না কারণ সবাই ভয় পায়,আমি সাহস করেই আজ সারাদিন হরর দেখলাম,তবে দিনের বেলা তাই বেশি ভয় পাই নি।রাতে আবার যখন ভূত আসে দেখার কথা আছে কিন্তু বাসার কেউ যদি জানে তাহলে দেখতে দেবে না।বিকেল ৪ টার পর টিভির রুম থেকে বের হলাম।চোখে শুধু হররের কাহিনী গুলো ভেশে বেড়াচ্ছে।সন্ধ্যা হয়ে এলো প্রায়।প্রতিদিনের মত আজও পড়তে বসলাম,অনেক বেশি ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম অল্প একটু পড়তেই।আমি পড়তেছিলাম, এমন সময় বিল্লাহ এসে আমাকে ডাকল, আমি বললাম কি হইছে এতো রাতে, বিল্লাহ আমাদের পাশের বাসায় থাকে,আর আমার চেয়ে এক বছরের বড় কিন্তু আমি নাম ধরেই ডাকি।বিল্লাহ আমাকে বলল সে নাকি আমার বাসায় আসার কথা বলে এসেছে তার বাসা থেকে, আমি পরে জানতে পারলাম যে সে নাকি গার্ল ফ্রেন্ড এর সাথে কথা বলবে।বেশ ভাল কথা। আমাদের বাসার সাথে লাগানো মেডিকেল। আর মেডিকেল এখন রাতে ফাঁকা কেউ যাওয়া আসা করে না। তাই বিল্লাহ বলল মেডিকেলের ভিতরে গিয়ে কথা বললে কেউ দেখবে না আর সন্দেহ করবে না।আমি কিছু না ভেবেই বললাম চলো।তো মেডিকেলের ভিতরে গেলাম। বিল্লাহ, আমাকে বলল তুমি এখানে থাকো আমি কথা বলি গার্ল ফ্রেন্ড এর সাথে।আমি ৫ হাত দূরে ছিলাম।তারা কথা বলতেছে আর আমি মোবাইলে গেম খেলতেছি।যেখানে কেউ দিনে ও আসার সাহস পায় না আজ যেন সব ভুলে গেছি, বিল্লাহ আর আমি সেখানে বসে আছি।আমি কিসের যেন একটা আওয়াজ শুনতে পেলাম তাই বিল্লাহ কে বললাম যে কিসের আওয়াজ হতে পারে সে আমাকে বলল গাছ থেকে হয়তো ডাল ভেঙ্গে পড়েছে। তারপর আমি আবার গেম খেলা শুরু করলাম।আমি মনোযোগ দিয়ে গেম খেলতেছিলাম। আমার ফোনে একটা কল আসল, আমি ফোনের ডিসপ্লে টে নাম টা দেখে চমকে গেলাম, বিল্লাহ ফোন দিছে, আমি মনে করছিলাম, আমার পাশে থেকেই শয়তানি করে আমাকে ভয় পাওয়ানোর জন্য ফোন দিছে, আমি বিল্লার দিকে তাকালাম, দেখতেছি বিল্লাহ মন দিয়ে প্রেমিকার সাথে কথা বলেই যাচ্ছে আর আমার ফোন এদিকে বেজেই যাচ্ছে।আমি আমতা আমতা করে ফোন টা রিসিভ করলাম, ওদিক থেকে বিল্লার কন্ঠ ভেশে আসল। আমাকে বলতেছে তার বাসায় যেতে কিসের যেন অনলাইনে কাজ আছে, আমি ভাল ভাবেই বিল্লার সাথে কথা বলতেছি আর এদিকে আমার বুক ভয়ে বার বার কাঁপছে। আমি ফোন কেটে দিলাম।এদিকে বিল্লাহ ও তার প্রেমিকার সাথে কথা বলা শেষ করল, আমার কাছে বিল্লাহ আসতেই আমি তাকে বললাম ভাই আমাকে ভয় দেখাইলা কেন?? আমি তো ভয় পাইছিলাম। বিল্লাহ আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যেন সে কিছুই জানে না। আমি তাকে বললাম তুমি আমাকে ফোন করে এভাবে ভয় দেখাইলা এটার কোন মানে হয়। বিল্লাহ আমাকে একটু ধমকের সুরেই বলল তোমার কি মাথা খারাপ হয়েছে নাকি আবোল তাবোল এগুলা কি বলতেছ।আমি তাকে আমার ফোন দেখালাম রিসিভ কলে তার নাম্বার, আর কতক্ষন তার সাথে কথা বললাম তাও দেখালাম। এবার বিল্লার মুখ যেন ফ্যাঁকাসে হয়ে গেল, আমার দিকে তাকিয়ে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে বলল ক্যান আমাকে কি তোমার ভুত মনে হয়। আমার মুখ ফোঁসকে বের হয়ে গেল হ্যা, আর একই সময়ে একজন ২ টা নাম্বারে কথা বলবে কি করে, আমি লক্ষ করেছি তুমি মন দিয়ে তোমার লাভার এর সাথে কথা বলতেছিলে। এবার বিল্লার মুখ থেকে বের হয়ে আসল হ্যা আমি ই ভুত তোমার সাথে বিল্লার রূপ ধরে অভিনয় করে এখানে নিয়ে এসেছি। আর আমি সাথে সাথে একটা দৌড় দিলাম, কিন্তু আমার পা একটুকু সামনের দিকে গেল না, এমন মনে হচ্ছিল যেন কেউ আমাকে বেধে রেখেছে।আমি বিল্লার দিকে তাকাতেই দেখি এ বিল্লাহ না, রূপ পরিবর্তন হয়ে গেছে, কিন্তু রূপ পরিবর্তন হয়ে গেছে বলে ভাল করে না তাকিয়েই চোখ বন্ধ করে দোয়া পড়তেছিলাম, আর সে বার বার আমাকে বলছে দোয়া পড়ে কিছুই হবে না। আমার বার বার দোয়া ভুল হচ্ছিল, আসলে ভয় পেলে যা হয় আর কি।আমি এবার সাহস করে চোখ খুললাম, চোখ খুলে যা দেখলাম তা দেখে আমার প্রান টা যায় যায় অবস্থা।সেই গলা কাটা লাশ( যে লাশ টি আমি বেশ কয়েক মাস আগে দেখেছিলাম, মেডিকেলের বাগানে) আর আমি আমার হাতের দিকে তাকালাম দেখি কবিরাজের দেয়া তাবিজ আমার হাতে নেই।পরে আমি বুজতে পারলাম তাবিজ হাতে নেই তাই আজ সুযোগ বুজে কোপ মেরেছে। একটা বড় রাম দা হাতে নিয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসতেছিল, আমি এবার মনে সাহস নিয়েই চোখ খুললাম, চোখ খোলার সাথে সাথে দেখি, , এ কি লোকটির ঝুলে থাকা গলা মাটিতে পড়ে গেল, আমি অনেক জোরে জোরে চিৎকার করলাম, কিন্তু কেউ আমার চিৎকার শুনতে পেল না, আর আমার মুখের আওয়াজ বের হয় নি তাই কেউ শুনতে পায় নি। আমি চিৎকার করতে করতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।আমার যখন জ্ঞান ফিরে তখন আমি মেডিকেলের বেডে শুয়ে আছি, পরে জানতে পারলাম, রাতের প্রহরী আমাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে মেডিকেলে ভর্তি করিয়েছে। আমার বাসা থেকে সবাই এসেছে, আর সেই কবিরাজ ও এসেছে, বাবা কবিরাজের কাছে জানতে চাইল যে, আমার সাথে এমন কেন হলো তাবিজ দেওয়ার পরও। কবিরাজ বলল, আমি এবার ভাল তাবিজ দিয়ে দিব আর হবে না পরের বার। আমি কবিরাজ কে বললাম, যে আমার তো বেঁচে ফেরার কথা ছিল না তাহলে বাঁচলাম কেমনে, কবিরাজ জানালো ভুত জ্ঞান হারানো মানুষ কে মারে না আর তোমার তখন জ্ঞান ছিল না। এত কষ্টের মধ্যেও হাঁসি পাইলো, আমার মনে পড়ে গেল, সেই গল্পের কথা ভাল্লুক নাকি মরা মানুষ খায় না তাই এক বন্ধু মরার অভিনয় করে বেঁচেছিল তেমনি আমিও অজ্ঞান হয়ে বেঁচে গেছি।আমার বাসা মেডিকেলের পাশে তাই একটু ভয়ে ভয়ে থাকি সব সময় কারণ মেডিকেলে বিষ খাওয়া রোগি আসে আবার কখনো মাথা ফাটা রোগি আসে আরো অনেক রকমের রোগি প্রতিদিনই।ভয় টা রোগি আসা নিয়ে না ভয় টা হচ্ছে যে রোগিরা এই মেডিকেল এ এসে মারা যায় তদের আত্মা নিয়ে।

আজ মেডিকেলে অনেক লোকজন এসেছে আর কিছু কিছু লোক কান্না করতেছে, আমি দেখতে এগিয়ে গেলাম, গিয়ে যা দেখলাম তা দেখে শরীর শিহরে উঠল, জমি নিয়ে মারামারি করতে গিয়ে এক লোক গলায় রাম দা এর কোপ খেয়েছে, তাই গলা প্রায় পড়ে যাওয়ার অবস্থা, আমি একবার শুধু দেখেছি, কি না দেখেছি ওমনি একটা চিৎকার করে মাটিতে পড়ে যাই, তারপর আশে পাশের লোকজন আমাকে বাসায় নিয়ে আসে। অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে নিয়েছি।

আমি বাসা থেকে বের হলেই আগে ঐ জায়গা সামনে পড়ে, মানে গলা কাটা(প্রায়) লাশটা যেখানে ছিল।বাবা আমাকে ঔষধ আনতে মেডিকেল মোড়ে পাঠালো।আমি বেশ ভাল মতই যাচ্ছিলাম। আমার মনেই ছিল না যে আজ দিনে মেডিকেলের ভিতরে কি হয়েছে।মেডিকেলের এক দোকান থেকে ঔষধ কিনে বাসায় আসতেছিলাম।বাসায় ফেরার পথে পেছন থেকে কে যেন আমায় ডাকল হৃদয় বলে।আমি পেছনে তাকাতেই দেখি কেউ নেই।আবার ডাকল হৃদয় কোথায় যাও আমাকে নিয়ে যাও।আবার পেছনে তাকালাম আবারো কাউ কে দেখতে পেলাম না এবার একটু ভয় পেলাম।রাস্তা ফাঁকা তেমন কেউ চলাচল করতেছে না।আমি বাসা থেকে বের হয়েছি কিন্তু দেখি নি কয়টা বাজে মোবাইলের দিকে তাকাতেই আমার বুক কেঁপে উঠল ১২.১১ বাজে।আর এলাকার লোক জনের কাছে শুনেছি ১২ টার পর নাকি রাস্তায় তেমন কেউ চলাচল করে না।আর বার বার আমাকে ডাকছে কেউ কিন্তু কাউ কে দেখতে পাচ্ছি না। আরো বেশি ভয় পেয়ে গেলাম।কেমন করে যেন আমার চোখ চলে গেল মেডিকেলের বাগানে( যেখানে আজ সকালে গলা কাটা লাশ দেখেছি) দেখতে পেলাম, একজন সাদা পোশাক পড়া লোক আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে আর আমাকে ডাকছে তার কাছে।আমি আরো মনোযোগ দিয়ে লোকটিকে দেখতে লাগলাম, আমি লোকটির মাথার দিকে তাকাতেই দেখি লোকটির গলা কেটে ফেলা হয়েছে অল্প একটু লেগে আছে গলা, আর আমি সকালে যে লোকটিকে দেখেছি সেই লোকটিই এখন এই ভাবে আমায় ডাকছে, আমি অজ্ঞান হয়ে রাস্তায় পরে যাই।তারপর যখন চোখ খুললাম তখন আমি মেডিকেলের বেডে শুয়ে আছি।মেডিকেলের বেড থেকে সেই বাগান টা খুব ভাল ভাবেই দেখা যায়, আমি না চাইতেই চোখ ওখানে চলে যায়, আমি আবার দুপুরে ঐ লোকটাকে দেখতে পেলাম।এভাবে প্রায় ৭ দিনের মত একটু পর পর ঐ গলা কাটা লোকটাকে দেখতে পেতাম আর যতবার ই দেখেছি ততবার ই চিৎকার করে মাটিতে পড়ে গিয়েছি আবার কখনো কখনো জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছি।তারপর একদিন ডাক্তার বলল আমরা আন্তরিক ভাবে দুঃখিত আমরা কোন চিকিৎসা করতে পারব না আর এ রোগের চিকিৎসা আমাদের কাছে নেই।আসলে আমার মনে ভয় ছিল এটাই হচ্ছে আমার রোগ।পরে এক কবিরাজ এনে আমাকে ভাল করা হয়।কবিরাজ তাবিজ বেধে দেয় হাতে তারপর আর ঐ গলা কাটা লাশ দেখতে পাই নি।

কিছুদিন পরের কথা, তখন গ্রীষ্মকাল বেশ গরম পড়ে।বাবা একটা প্রাইভেট ঠিক করে দিছে সেখানে দৈনিক প্রাইভেট পড়তে যেতাম, আমার সাথে একটি মেয়ে প্রাইভেট পড়ত।মেয়েটি কোন এক কারণে রাতে প্রাইভেট নিল, আর স্যার আমাকেও রাতে যেতে বলল, আসলে আমি একা পড়তাম তো তাই, আর ঐ মেয়েটিও একা পড়ত।তখন রাত ৮ টা বাজে। প্রাইভেট এ গেলাম, গণিত প্রাইভট পড়তাম, প্রথম দিন রাতে ভালই পরলাম, স্যার ও অনেক অংক করালো, অংক করা শেষে স্যারের ছেলে উৎস ভাইয়ের সাথে গল্পে মেতে উঠলাম, গল্প করতে করতে কখন যে রাত ১১ টা বেজে গেছে আমি নিজেও জানি না।তারপর আমি তো ঘড়ি দেখে অবাক, উৎস ভাই বলল হৃদয় একা একা যেতে পারবে তো নাকি এগিয়ে দিতে হবে। আমি কোন কিছু ভাবনা চিন্তা না করেই বলে ফেললাম একা যেতে পারব ভাইয়া।স্যারের বাসা থেকে বের হয়ে আস্তে আস্তে বাসার উদ্দেশ্যে যাচ্ছি, রাস্তা ফাঁকা কেউ নেই বললেই চলে, প্রতিদিন এত ফাঁকা থাকে না রাস্তা, আজ কেন যানি মনে হচ্ছে সব কিছু থেমে থেমে চলছে।কিছুদূর এগিয়ে ইমরান ভাইয়ের সাথে দেখা, ইমরান ভাই বলল হৃদয় চলো একটু কলেজ মাঠে যাই, অনেক রাত হয়ে গেছে এখন কলেজ মাঠে যাওয়া মোটেও ভাল হবে না।তাই ভাইয়াকে বললাম ভাইয়া আজ যাব না অন্যদিন।তারপর ইমরান ভাই বলল তাহলে চলো ফজিলাতুন্নেছার মাঠে যাই। এবার যেতে রাজি হলাম কারণ ফজিলাতুন্নেছা থেকে বেশিদূর না আমাদের বাসা।আমি আর ইমরান ভাই গেলাম ফজিলাতুন্নেছার মাঠে সেখানে গিয়ে দেখি উৎস ভাই বিঁড়ি খাচ্ছে। আমি তো অবাক উৎস ভাই আবার এখানে আসল ক্যামনে, যাই হোক অসম্ভব কিছু না কারণ উৎস ভাইয়ের বাসা ফজিলাতুন্নেছার পিছন পাশে। ইমরান ভাই আর উৎস ভাই বিঁড়ি খাচ্ছে আর গল্প করতেছে আমি বসে বসে তাদের গল্প শুনতেছি।হঠাৎ আমার চোখে পড়ল, বিঁড়ির আগুন গুলো কেমন জানি মায়াবি আগুন, তারপর ভাবলাম হয়তো কিরন মালা দেখতে দেখতে মায়া শক্তি সব সময় চোখে ভেশে বেড়ায়।অনেক গল্প জল্প হলো রাত তখন প্রায় ১২ টা পার হয়েছে, বাসা থেকে আমাকে ফোন করেছিল অনেক আগেই আমি বলে দিয়েছিলাম আজ বাসায় ফিরতে দেরি হবে আজ প্রাইভেট বেশি করে পড়ব।আমি ইমরান ভাই কে বললাম ভাই আর থাকতে পারব না আমি আজ চলে যাই বাসায়, আরেকদিন সময় দিব বেশি করে।ইমরান ভাই হাত টেনে ধরল, আর বলল এতো তাড়াতাড়ি চলে যাবে, আর আমরা তো বিড়ি খেলাম তুমি তো আবার এগুলা খাও না, খালি মুখে এভাবে এতক্ষণ আমাদের সাথে থেকে এখন খালি মুখে চলে যাবে তা তো হয় না।ইমরান ভাই তার পকেট থেকে কি যেন বের করল আমি অন্ধকারে ভাল করে দেখতে পাই নি।পরে দেখলাম যে নারকেলের নাড়ু। আমি ইমরান ভাইকে বললাম ভাই কোথায় পাইছেন নাড়ু। ভাই আমাকে বলল তোমার উৎস ভাইয়ের বন্ধু নিখিল দিছে। আমি যতদূর জানতাম এই দিনে পুজো হয় না হিন্দুদের, তাহলে নাড়ু কই পাইল, যাইহোক কোথায় পাইছে পাইছে সেটা দেখার বিষয় না। আমাকে খেতে দেওয়া হয়েছে আমি খাই তারপর কি হয় হবে।আমার হাতে প্রথমে ৫ টা নাড়ু দিল আমি খেতে লাগলাম আবার আরো ৫ টা দিন ওগুলাও খাইলাম আবার ৫ টা দিল ওগুলাও খাইলাম তবে নাড়ু গুলোর কোন মজা পাচ্ছিলাম না। কেমন জানি মায়া শক্তি দিয়ে বানানো নাড়ুর মত, আবার মনে হলো কিরন মালা দেখতে দেখতে মনে হয় সব জায়গায় মায়া শক্তি দেখতে পাই।তারপর উৎস ভাই আর ইমরান ভাইকে বাসায় যাওয়ার কথা বলে চলে এলাম বাসায়।

পরের দিনের কথা। প্রাইভেট পড়ার জন্য স্যারের বাসায় গেলাম, তারপর উৎস ভাইকে বললাম ভাইয়া কালকের নাড়ু টা কিন্তু দারুণ ছিল।উৎস ভাই অবাক হয়ে বলল কিসের নাড়ু। আমি বললাম ক্যান আপনার মনে নাই। নাকি না বোঝার ভান করতেছেন, কাল কে যে ইমরান ভাই আর আপনি ফজিলাতুন্নেছার মাঠে বিঁড়ি খাইলেন আর আমাকে নাড়ু খেতে দিলেন আবার বললেন নাড়ু নাকি নিখিল ভাইয়া দিছে। এবার উৎস ভাই রেগে গিয়ে বলল ভাল করে বলবা কি হইছে, আর কখন নাড়ু খাইছ, আর আমি তো কাল কে বাসা থেকে বের হই নাই।আমি একটু অবাক হলাম, তারপর সব ঘটনা খুলে বললাম, উৎস ভাই আমার কথা শুনে হাঁসতে লাগল, এমন ভাবে হাসতেছিল যেন আমি তাকে কোন ভূতের গল্প শোনাচ্ছি।তারপর উৎস ভাই তার ফেসবুকের মেসেজ দেখালো আর বলল দেখ গতকাল আমি সোহেলের সাথে রাত ২ টা পর্যন্ত চ্যাট করছি।আমি এবার সত্যি সত্যি ভয় পেয়ে গেলাম। তারপর গেলাম ইমরান ভাইয়ের বাসায়। ইমরান ভাই বলে সে নাকি কাল রাতে বাসায় ই ছিল না। আমি এবার ভয়ে কথা বলতে পারছিলাম না।বার বার গতকালের রাতের কথা মনে হচ্ছিল।আমি মনে মনে যা ভেবেছিলাম ঠিক তাই, বিড়ীর আগুন আসলেই মায়াবী আগুন ছিল আর নারকেলের নাড়ু গুলাও মায়ার তৈরি ছিল।ভুত সব কিছুই করতে পারে আমি জানতাম তবে বিশ্বাস করতাম না।আজ এই কাহিনির পর বিশ্বাস না করে উপায় নাই।আমি ঐদিন প্রাইভেট না পড়েই বাসায় চলে আসি, বাসায় এসে বিছানায় ঘুমিয়ে পড়ি রাতে আমি বুজতে পারি আমার ভীষণ জ্বর এসেছে, বাবা ডাক্তার ডেকে আনে ডাক্তার অনেক গুলো ঔষধ লিখে দিল। এত ঔষধ খেলাম তাও জ্বর কমে না। প্রায় ১ মাস আমার জ্বর ছিল। তারপর আস্তে আস্তে জ্বর কমে যায়।আবার প্রাইভেট যাওয়া শুরু করি।

কয়েকমাস পরে,

শনিবার, সারাদিন বাসায় বসে টিভি দেখলাম, আর আমাদের বাসায় সনি আট কেউ দেখে না কারণ সবাই ভয় পায়,আমি সাহস করেই আজ সারাদিন হরর দেখলাম,তবে দিনের বেলা তাই বেশি ভয় পাই নি।রাতে আবার যখন ভূত আসে দেখার কথা আছে কিন্তু বাসার কেউ যদি জানে তাহলে দেখতে দেবে না।বিকেল ৪ টার পর টিভির রুম থেকে বের হলাম।চোখে শুধু হররের কাহিনী গুলো ভেশে বেড়াচ্ছে।সন্ধ্যা হয়ে এলো প্রায়।প্রতিদিনের মত আজও পড়তে বসলাম,অনেক বেশি ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম অল্প একটু পড়তেই।আমি পড়তেছিলাম, এমন সময় বিল্লাহ এসে আমাকে ডাকল, আমি বললাম কি হইছে এতো রাতে, বিল্লাহ আমাদের পাশের বাসায় থাকে,আর আমার চেয়ে এক বছরের বড় কিন্তু আমি নাম ধরেই ডাকি।বিল্লাহ আমাকে বলল সে নাকি আমার বাসায় আসার কথা বলে এসেছে তার বাসা থেকে, আমি পরে জানতে পারলাম যে সে নাকি গার্ল ফ্রেন্ড এর সাথে কথা বলবে।বেশ ভাল কথা। আমাদের বাসার সাথে লাগানো মেডিকেল। আর মেডিকেল এখন রাতে ফাঁকা কেউ যাওয়া আসা করে না। তাই বিল্লাহ বলল মেডিকেলের ভিতরে গিয়ে কথা বললে কেউ দেখবে না আর সন্দেহ করবে না।আমি কিছু না ভেবেই বললাম চলো।তো মেডিকেলের ভিতরে গেলাম। বিল্লাহ, আমাকে বলল তুমি এখানে থাকো আমি কথা বলি গার্ল ফ্রেন্ড এর সাথে।আমি ৫ হাত দূরে ছিলাম।তারা কথা বলতেছে আর আমি মোবাইলে গেম খেলতেছি।যেখানে কেউ দিনে ও আসার সাহস পায় না আজ যেন সব ভুলে গেছি, বিল্লাহ আর আমি সেখানে বসে আছি।আমি কিসের যেন একটা আওয়াজ শুনতে পেলাম তাই বিল্লাহ কে বললাম যে কিসের আওয়াজ হতে পারে সে আমাকে বলল গাছ থেকে হয়তো ডাল ভেঙ্গে পড়েছে। তারপর আমি আবার গেম খেলা শুরু করলাম।আমি মনোযোগ দিয়ে গেম খেলতেছিলাম। আমার ফোনে একটা কল আসল, আমি ফোনের ডিসপ্লে টে নাম টা দেখে চমকে গেলাম, বিল্লাহ ফোন দিছে, আমি মনে করছিলাম, আমার পাশে থেকেই শয়তানি করে আমাকে ভয় পাওয়ানোর জন্য ফোন দিছে, আমি বিল্লার দিকে তাকালাম, দেখতেছি বিল্লাহ মন দিয়ে প্রেমিকার সাথে কথা বলেই যাচ্ছে আর আমার ফোন এদিকে বেজেই যাচ্ছে।আমি আমতা আমতা করে ফোন টা রিসিভ করলাম, ওদিক থেকে বিল্লার কন্ঠ ভেশে আসল। আমাকে বলতেছে তার বাসায় যেতে কিসের যেন অনলাইনে কাজ আছে, আমি ভাল ভাবেই বিল্লার সাথে কথা বলতেছি আর এদিকে আমার বুক ভয়ে বার বার কাঁপছে। আমি ফোন কেটে দিলাম।এদিকে বিল্লাহ ও তার প্রেমিকার সাথে কথা বলা শেষ করল, আমার কাছে বিল্লাহ আসতেই আমি তাকে বললাম ভাই আমাকে ভয় দেখাইলা কেন?? আমি তো ভয় পাইছিলাম। বিল্লাহ আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যেন সে কিছুই জানে না। আমি তাকে বললাম তুমি আমাকে ফোন করে এভাবে ভয় দেখাইলা এটার কোন মানে হয়। বিল্লাহ আমাকে একটু ধমকের সুরেই বলল তোমার কি মাথা খারাপ হয়েছে নাকি আবোল তাবোল এগুলা কি বলতেছ।আমি তাকে আমার ফোন দেখালাম রিসিভ কলে তার নাম্বার, আর কতক্ষন তার সাথে কথা বললাম তাও দেখালাম। এবার বিল্লার মুখ যেন ফ্যাঁকাসে হয়ে গেল, আমার দিকে তাকিয়ে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে বলল ক্যান আমাকে কি তোমার ভুত মনে হয়। আমার মুখ ফোঁসকে বের হয়ে গেল হ্যা, আর একই সময়ে একজন ২ টা নাম্বারে কথা বলবে কি করে, আমি লক্ষ করেছি তুমি মন দিয়ে তোমার লাভার এর সাথে কথা বলতেছিলে। এবার বিল্লার মুখ থেকে বের হয়ে আসল হ্যা আমি ই ভুত তোমার সাথে বিল্লার রূপ ধরে অভিনয় করে এখানে নিয়ে এসেছি। আর আমি সাথে সাথে একটা দৌড় দিলাম, কিন্তু আমার পা একটুকু সামনের দিকে গেল না, এমন মনে হচ্ছিল যেন কেউ আমাকে বেধে রেখেছে।আমি বিল্লার দিকে তাকাতেই দেখি এ বিল্লাহ না, রূপ পরিবর্তন হয়ে গেছে, কিন্তু রূপ পরিবর্তন হয়ে গেছে বলে ভাল করে না তাকিয়েই চোখ বন্ধ করে দোয়া পড়তেছিলাম, আর সে বার বার আমাকে বলছে দোয়া পড়ে কিছুই হবে না। আমার বার বার দোয়া ভুল হচ্ছিল, আসলে ভয় পেলে যা হয় আর কি।আমি এবার সাহস করে চোখ খুললাম, চোখ খুলে যা দেখলাম তা দেখে আমার প্রান টা যায় যায় অবস্থা।সেই গলা কাটা লাশ( যে লাশ টি আমি বেশ কয়েক মাস আগে দেখেছিলাম, মেডিকেলের বাগানে) আর আমি আমার হাতের দিকে তাকালাম দেখি কবিরাজের দেয়া তাবিজ আমার হাতে নেই।পরে আমি বুজতে পারলাম তাবিজ হাতে নেই তাই আজ সুযোগ বুজে কোপ মেরেছে। একটা বড় রাম দা হাতে নিয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসতেছিল, আমি এবার মনে সাহস নিয়েই চোখ খুললাম, চোখ খোলার সাথে সাথে দেখি, , এ কি লোকটির ঝুলে থাকা গলা মাটিতে পড়ে গেল, আমি অনেক জোরে জোরে চিৎকার করলাম, কিন্তু কেউ আমার চিৎকার শুনতে পেল না, আর আমার মুখের আওয়াজ বের হয় নি তাই কেউ শুনতে পায় নি। আমি চিৎকার করতে করতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।আমার যখন জ্ঞান ফিরে তখন আমি মেডিকেলের বেডে শুয়ে আছি, পরে জানতে পারলাম, রাতের প্রহরী আমাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে মেডিকেলে ভর্তি করিয়েছে। আমার বাসা থেকে সবাই এসেছে, আর সেই কবিরাজ ও এসেছে, বাবা কবিরাজের কাছে জানতে চাইল যে, আমার সাথে এমন কেন হলো তাবিজ দেওয়ার পরও। কবিরাজ বলল, আমি এবার ভাল তাবিজ দিয়ে দিব আর হবে না পরের বার। আমি কবিরাজ কে বললাম, যে আমার তো বেঁচে ফেরার কথা ছিল না তাহলে বাঁচলাম কেমনে, কবিরাজ জানালো ভুত জ্ঞান হারানো মানুষ কে মারে না আর তোমার তখন জ্ঞান ছিল না। এত কষ্টের মধ্যেও হাঁসি পাইলো, আমার মনে পড়ে গেল, সেই গল্পের কথা ভাল্লুক নাকি মরা মানুষ খায় না তাই এক বন্ধু মরার অভিনয় করে বেঁচেছিল তেমনি আমিও অজ্ঞান হয়ে বেঁচে গেছি।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:০৫

উদীয়মান সূর্য় বলেছেন: আমার বাড়ির পাশেও সরকারী হাসপাতাল এবং তার পিছনেই একটা শশ্মান অাছে। রাত বিরাত নাই, যে কোন টাইমেই ঘুরি। বাট উনাদের খপ্পরে পড়ি নি এখনো। তাই একটু সন্দেহ আছে ব্যাপারটাই

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:০৯

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: আপনার সাথে আমার মিল টা হচ্ছে, আপনার বাসার পাশে সরকারী হাসপাতাল আর আমার বাসার পাশেও সরকারী হাসপাতাল। তবে হ্যা যেহেতু হাসপাতাল আছে সেহেতু সাবধান।
কখন কার সাথে কি হবে কিছুই বলা যায় না, হয়তো আপনার সাথেও এমন হতে পারে। আর হ্যা মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

২| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:০৮

বোকা যুয়ান বলেছেন: ভালো লাগলো! আমার মনে হয় আপনি আরও রস-কষ লাগাতে পারবেন!

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:১১

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: আমি লেখা লেখি করার বেশি দিন হয় না ৩ মাসের মত হবে লেখা লেখি করি। মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

৩| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৩৪

মাকড়সাঁ বলেছেন: অসাধারণ ।
বেশ সুন্দর হয়েছে ॥
jodeo TABIJER boidhota daoer proyesh aseee

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৩৯

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ পাঠক।

৪| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:১১

অভ্রনীল হৃদয় বলেছেন: ভূত, কবিরাজ, তাবিজ এসবে বিশ্বাস করিনা বললেই চলে। তবে জীন এ বিশ্বাস করি। রাতের এই সময় পড়ছি বলেই বোধহয় ভয় ভয় লাগছে। তবে "কবিরাজ জানালো ভুত জ্ঞান হারানো মানুষ কে মারে না আর তোমার তখন জ্ঞান ছিল না" পড়ে মজা পাইছি।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:১৫

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: ধন্যবাদ পাঠক ভাই.!! পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

৫| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৩৩

সুমন কর বলেছেন: গল্পে বেশী ড্রামা হয়ে গেছে..... :(

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৪৩

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: হুম বুজলাম :( মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

৬| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ২:১৩

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: প্রথম দিকে হররের গন্ধ পেলেও পরে আসলে স্বাভাবিকই লেগেছে। এটা আসলে হ্যালুসিনেশন ও ইমাজিনেশনের সাথে ভয়ের কারণে হয়েছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই ঐ গলাকাটা লাশটা একটা আতঙ্ক তৈরি করে দিয়েছে মনে। যেটার জন্য ভয় লাগতো। ইমরান আর উৎসের ব্যাপারটাও একই। সাথে কেউ থাকলে ভরসা থাকতো সেইটার চিন্তায় একটা ভিজুয়ালাইশেন তৈরি হয়েছিল। নাড়ু খাওয়াটা ইমাজিনেশন - কিন্তু মস্তিষ্কে ছাপ রয়ে যায় একটা ওটার। তাই নাড়ুর স্বাদটাও মনে ছিল।

সাধারণ যুক্তি।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৫২

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। আসলে আমি নিজে ও জানি আমি ভাল লিখতে পারি নি। কষ্ট করে পড়ার জন্য এবং মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

৭| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৫১

নীল কপোট্রন বলেছেন: দারুণ একটা গল্প।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৫৮

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।

৮| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:৪১

ভূত গোয়েন্দা বলেছেন: ভালো ছিলো গল্পটা। কেউ যদি এমন আরো ভৌতিক গল্প আর হরর গল্প পছন্দ করেন তো ঘুরে আসঅতে পারেন Bhootgoyenda ব্লগ থেকে http://bhootgoyenda.blogspot.com

২৪ শে জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৬

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: ধন্যবাদ।

৯| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪০

মোঃ রেদওয়ান বলেছেন: আমি কিছুদিন মিটফোর্ড হসপিটালে ছিলাম। অনেকক্ষন যাবৎ হসপিটালের উপরে-নীচে ঘুরোঘুরি করছিলাম, তেমন কিছু নজড়ে পরেনি তবে দেখেছিলাম ফ্রোরে ফ্লোরে সাদা/কালো বিড়াল।

২৮ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৪০

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: বিড়াল! বাহ দারুণ ব্যাপার তো। গল্পটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.