নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমাকে নিয়ে লেখার মত আপাতত কিছুই নেই। যেদিন লেখার মত কিছু অর্জন করতে পারবো সেদিন না হয় সময় করে লিখে ফেলবো।

অতঃপর হৃদয়

অতঃপর একটি কাল্পনিক চরিত্র

অতঃপর হৃদয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

অদ্ভুত ভালোবাসা

২৮ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ২:৩৫


ফোনে কি আর আদর করা যায় বলো, আচ্ছা তুমি এখন তোমার কাছে আসতে বললে আমি যাবো। যাবো কি? নীলা ফোন টা কেটে দিল। হয়তো আমার পুরো কথা সে শুনতেই পায়নি। ছোট থেকে ভেবেছি কখনো প্রেম করবো না, কিন্তু আস্তে আস্তে সব কিছু যেন গুলিয়ে গেল। তখন ৮ম শ্রেণীতে পড়ি, ক্লাসের এক মেয়ের প্রতি ক্রাস খেয়ে গেলাম। যাইহোক কাহিনী কইছে গিয়া, মেয়েটার কণ্ঠ কোকিলের মত। প্রেমে পড়লাম তার কণ্ঠের। কি মজার ব্যাপার তাই না। মজা তো কিচ্ছু না শুধু প্যারা আর প্যারা। কোকিলরে একদিন কইলাম, আই আন্নের কন্ঠরে সেইরাম ভালুবাসি হেতে আম্রে কয়, আই কুনু দিন পেরেম করুম না। হেতের কথা শুইনা পুরাই টাস্কি খাইলাম আর কইলাম আমিও কুনুদিন পেরেম করুম না।

নীলার সাথে পরিচয় বেশি দিনের না। দুজন দুজনের প্রতি আগেই ক্রাস খেয়ে ছিলাম কিন্তু কেউ কাউকে বলিনি। একদিন সব ভাবনা বাদ দিয়ে বলে দিলাম যে "আমি তোমাকে ভালোবাসি" সে আমায় বলে আমার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে। আমার পক্ষে এটা সম্ভব না যদি বিয়ে ঠিক না হত তাহলে ভেবে দেখতাম। মন ভেঙে গেল। তবুও হাল কি করে ছাড়ি, আমি যে তাকে সত্যি সত্যি ভালোবাসি। সত্যি ভালোবাসা কাকে বলে? কথা না বললে খুব কষ্ট হয়, বুকের ভেতর যন্ত্রণা হয়, নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। এগুলা দেখা দিলেই কি এটাই সত্যি ভালোবাসা? হয়তো হ্যাঁ।

রসায়ন বই পড়তে পড়তে চোখ আটকে গেল একটি পাতায়। যেখানে ১ টি মেয়ের হাত ২ টি ছেলে ধরে আছে। এই কাহিনী দেখে মাথায় সুন্দর সুন্দর বুদ্ধির উদয় হলো। সাথে সাথেই নীলা কে ফোন করে বললাম, তুমি আমায় ভালোবাসো। ও বলল এটা possible না। অনেক কষ্ট করে বোঝালাম তারপর এক পর্যায়ে বললাম। তুমি আমায় আর হবু স্বামী দুজনকেই ভালোবাসো তবে বিয়ে কার সাথে হবে এটা আল্লাহ ঠিক করে দেবে। অবশেষে নীলা রাজি।

ভালোবাসার ১৯ তম দিন চলছে। বুকের ভেতরটা যেন কেমন করে উঠছে। বার বার নীলাকে কাছে পেতে ইচ্ছে হচ্ছে। নীলাকে বললাম একবার জড়িয়ে ধরবে আমায়? সে উত্তরে বলল না। আবার বললাম খুব যন্ত্রণা হচ্ছে, একবার জড়িয়ে ধরবে? বলল আচ্ছা শুধু জড়িয়ে ধরবো আর কিছু না। আমি চলে গেলাম তার সামনে। গিয়েই জড়িয়ে ধরে বুকে টেনে নিলাম। নীলা বলছে, এবার ছাড়ো কেউ এসে পড়বে। কার কথা কে শোনে প্রায় ৩ মিনিট বুকে জড়িয়ে রাখলাম। এতক্ষনে নিশ্চয় বুকের যন্ত্রণা নিভে গেছে, এবার ছাড়ো প্লিজ। আচ্ছা ছাড়লাম, তবে যখন বুকের ভেতর যন্ত্রণা হবে, তখন আবার জড়িয়ে ধরবো। না আর কখনো না, তবে খুব যন্ত্রণা হলে তখন।

-ফোনে একটু ফিল করে জড়িয়ে ধরে আদর করে দিবে? হার্টবিট খুব বেড়ে গেছে।
-পারবো না।
-আচ্ছা তাহলে তোমার সামনে যাচ্ছি, জড়িয়ে ধরবে?
-না। শুধুই জড়িয়ে ধরবো আর কিচ্ছু করবো না আর করতেও দিব না।
-আচ্ছা।
-এই তুমি কি করছ, তুমি না বললে শুধু জড়িয়ে ধরবে তবে চুমু খেলে কেন?
-সরি, আমি জানতাম না যে এটাকে চুমু বলে।
-শয়তান দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা, বলেই আমার গাল টেনে ব্যাথা বানিয়ে দিল।
-নীলা তুমি জানো আজ কতক্ষণ জড়িয়ে ধরেছিলাম.?
-না।
-১৫ মিনিটের বেশি হবে, তুমি বুজতে পারোনি?
-না, অনেক রোমান্টিক মোমেন্ট ছিল, সময় খেয়াল করিনি।
-হুম। সত্যি অনেক রোমান্টিক ছিল সময়টা।

বিয়ের দিন চলে এলো প্রায়। নীলা এই বিয়ে করবে না, কিন্তু তার পরিবার তাকে ইমোশনাল ব্লাকমেইল করছে। নীলার মুখে এসব শুনে আমার অবস্থা খুব খারাপ। ভুলেই গেছিলাম যে নীলার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে। বুকের ভেতরে ঢেউ আছড়ে পড়ছিল। নীলাকে বললাম, তোমার বিয়ে যদি জোর করেই দিয়ে দেয় তাহলে কি করবে?
-বাধ্য হয়েই এই বিয়ে করতে হবে, তাছাড়া কিছুই করার নেই।
-তুমি তাহলে বিয়ে করবে?
-বাধ্য হয়েই করতে হবে।
-আমি আর বাঁচব না, তোমার সাথে একবার দেখা করতে চাই।
-আচ্ছা আসো তাড়াতাড়ি।

এই নীলা তুমি এইসব কি বলছ এগুলা। তোমার বিয়ে হতেই পারে না। তুমি কিছু একটা কর, তোমাকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না।
চেষ্টা করলেই থাকতে পারবে। যদি জোর করে তাহলে আর আমার কিছু করার নেই। তবে যথা সাধ্য চেষ্টা করবো বিয়ে না করার।
ব্লেড দিয়ে হাত কেটে ফেললাম, অনেক গভীর করে। নীলাকে বললাম দেখো এই রক্তে মিশে গেছ তুমি এখান থেকে তোমাকে আলাদা করা সম্ভব না। তবুও নীলা তেমন কিছু বলল না। শুধু বলল, কি করলে এই সব, এই সব না করলেও পারতে।

নীলা বলল, আমি অনেক দূরে বেড়াতে যাবো, কিছুদিন পর আসবো। তোমার সাথে আর যোগাযোগ হবে না। বিয়েটা এখন হবে না আর এখন বিয়ে করার ইচ্ছাও আমার নেই। যদি পরিবার না ছাড়ে তাহলে কয়েক বছর পর বিয়ে করবো। তবে পরিবারের মতেই বিয়ে করবো, তুমি পারলে আমার পরিবারের সাথে কথা বলো। আর হ্যাঁ, আমিও তোমাকে অনেক ভালোবাসি, সত্যিই। আমি সব চুপ করে শুনে নিস্তব্ধ হয়ে গেলাম। তারপরেও বললাম, ভালোভাবে যেও, আর হ্যাঁ আমি যা পারি করতেছি। ভালো থেকো তুমি, আমিও চেষ্টা করবো।

নীলা বেড়াতে অনেক দূরে চলে গেল। আমি নিস্তব্ধ হয়ে রইলাম। একদিন একটা ম্যাসেজ এলো ফোনে। দেখলাম নীলা লিখেছে, আমাকে যাতে জোর করে বিয়ে দিতে না পারে তাই বেড়াতে এসেছি অনেক দূরে। তুমি সাবধানে থেকো। মনের ভেতর একটু সাহস পেলাম। এই একটু সাহস নিয়েই আস্তে আস্তে দিন চলে যেতে থাকলো। নীলা আমায় খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছিল সেই মুহুর্তটা বার বার মনের আয়নায় ভেসে আসতে থাকত। নীলা বড় হবে আমিও হবো তারপর তাকে পাবো ভেবে দিন কাটতে লাগলো।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে মার্চ, ২০১৬ ভোর ৬:৪৪

বিজন রয় বলেছেন: সুন্দর।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৯

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ২৮ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:১৫

মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: বাহ দারুণ

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৯

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.