নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগবাড়িতে সুস্বাগতম !!! যখন যা ঘটে, যা ভাবি তা নিয়ে লিখি। লেখার বিষয়বস্তু একান্তই আমার। তাই ব্লগ কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার আগে একবার ভাবুন এই লেখা আপনার নিজের মস্তিস্কপ্রসূত নয়।

মিজানুর রহমান মিলন

জয় হোক মানবতার ও মুক্তিকামী মানষের যারা নব্য উপনিবেশবাদের বলির পাঠা হতে চায় না ।

মিজানুর রহমান মিলন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আফগানিস্থানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সমঝোতা এবং জঙ্গীবাদ নিয়ে কিছু কথা।

০১ লা অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১১:৪০

অবশেষে আফগানিস্থানের দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বি আশরাফ ঘানি ও আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহর মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগির সমঝোতার মাধ্যমে আফগানিস্থান নতুন করে গৃহযুদ্ধ থেকে হাফ ছেড়ে বাঁচল ! ক্ষমতা ভাগাভাগির চুক্তি অনুসারে নির্বাচিত প্রার্থী হবেন প্রেসিডেন্ট ও অপরদিকে পরাজিত প্রার্থী হবেন সিইও বা প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা যা প্রধানমন্ত্রী পদের সমতূল্য। আফগানিস্থানের প্রথম দফায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হলে লিখেছিলাম, “আফগানিস্থানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সংকট, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক শক্তির ক্ষমতার লড়াই !” সেখানে লিখেছিলাম, “আফগানিস্থানের বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে কে হতে যাচ্ছেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট-আফগান জনগণের জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক, প্রতিবেশী ও পশ্চিমা বিশ্বের কাছেও । যুক্তরাস্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থনের দিক দিয়ে আশরাফ ঘানি এগিয়ে আছেন তাই কারচুপি করে হোক আর বৈধভাবেই হোক হয়তো তিনিই হতে যাচ্ছেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট অন্যদিকে পাকিস্থান বাদ দিয়ে আফগানিস্থানের প্রতিবেশি ও অঞ্চলিক রাস্ট্রের সমর্থন আছে আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহর উপর। সমস্যাটা জটিল হয়ে গেছে সেখানেই! এটাই আফগান প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বর্তমান সংকটের মূল কারণ।”

গত স্টাটাসে যা বলেছি আফগানিস্থানের নির্বাচনী ফলাফল শেষ পর্যন্ত তাই ঘটল-আশরাফ ঘানি আফগান্থিানের নতুন প্রেসিডেন্ট! তুলনামূলক স্বাধীন চেতা ও পাকিস্থান বিরোধী আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহর চেয়ে বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা আশরাফ ঘানিই ছিলেন পশ্চিমাদের কাছে বেশি পছন্দের। তাই তো প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেওয়ার পরের দিনই আশরাফ ঘানি আমেরিকার সাথে নিরাপত্তাগত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন । যে চুক্তিতে ২০১৪ সালেরও পরেও আমেরিকার সৈন্য আফগানিস্থানের মাটিতে থাকবে ও শুধু তাই নয় আমেরিকান সেনাদের অপরাধ থেকে দায়মুক্তিও দিয়েছেন আফগানিস্থানের নতুন প্রেসিডেন্ট ! অবশ্য আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ প্রেসিডেন্ট হলেও এর ব্যতিক্রম হত না। কারণ আফগানিস্থানের সেনাবাহিনী এখনও জঙ্গী দমনে পুরোপুরি দক্ষ হয়ে ওঠেনি ও এজন্য তাদের আরো কিছু সময় প্রয়োজন।এছাড়া অস্ত্রগত ঘাটতিও আছে।অবশ্য আল কায়েদা ও তালেবান যদি পাকিস্থানের অভ্যন্তর থেকে সমর্থন না পেত তাহলে কারজাই সরকারের বিগত ১২ বছরের মধ্যেই জঙ্গীদের নির্মূল করা সম্ভব হত।আফগানিস্থানের প্রতি বছর প্রচুর বৈদেশিক সাহায্যের প্রয়োজন হয় যার প্রায় অধিকাংশই পুরণ করে যুক্তরাস্ট্র ও তার মিত্ররাস্ট্রগুলি। তাই অর্থনৈতিক কারণেও তারা যুক্তরাস্ট্রের সাথে নিরাপত্তাগত চুক্তি করতে বাধ্য আফগানিস্থান।

যাইহোক, আফগানিস্থানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে যা হয়ে গেল আপাতত বড় ধরণের এক সংকট থেকে উতরে গেলেও সমস্যা জর্জরিত আফগানিস্থানের ভবিষ্যৎ নিয়ে মন্তব্য করার সময় এখনো আসেনি। অবশ্য এই সমঝোতাকে আমরা আফগানিস্থানের অভ্যন্তরীণসহ আঞ্চলিক ও পশ্চিমা শক্তিদের মধ্যে উইন-উইন সিচ্যুয়েশন দেখতে পাই। যাইহোক, আফগানিস্থানের মূল সমস্যা জঙ্গীবাদ ! আফগানিস্থানে একসময় জঙ্গীবাদ বলে কিছুই ছিল না। আমরা আফগানিস্থানকে যেরকমটি দেখতে অভ্যস্ত আফগানিস্থান একসময় মোটেও সেরকম ছিল না।দেশটিতে আধুনিকতার যাত্রা শুরু হয় সেই ১৯২০ এর দশকে রাজা আমানুল্লাহর শাসনকালের সময়, আফগানিস্থানে আধুনিক স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সবই ছিল। আমাদের দেশের অনেক নামকরা সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ তৎকালীন কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যপনা করেছেন কিন্তু পরবর্তীতে বিশেষ করে স্বায়ু যুদ্ধকালীন দেশটি হয়ে পড়ে দুই বিশ্বপরাশক্তির শক্তি পরীক্ষার লড়াই! এই লড়াইয়ে গৃহযুদ্ধে জর্জরিত দেশটিতে একমিলিয়নেরও বেশি আফগান নিহত হয়! যুক্তরাস্ট্র আফগানিস্থান থেকে সোভিয়েতপন্থী সরকার উৎখাতে তার তৎকালীন প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সোভিয়েত ইউনিয়নকে নাস্তানুবাদ ও পরাজিত করতে সারা বিশ্বব্যাপী মদত দিতে থাকে ইসলামিক চরমপন্থীদের। বিশ্ব থেকে কমিউনিজম নির্মূল করতে যুক্তরাস্ট্র যে নীতি অবলম্বন করে তার নাম Zbigniew Brzezinski's green belt doctrine. সেই ডকট্রিন অনুসারে আফগানিস্থানে গঠিত হয় তালেবান ও আল কায়েদা।সুদূর সৌদি থেকে ডেকে আনা হয় ওসামা বিন লাদেনকে। যুক্তরাস্ট্র, পাকিস্থান ও সৌদি, আরব রাজা বাদশাহদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় , পৃষ্ঠপোষকতায়, অর্থায়নে ওসামা বিন লাদেনের নেতৃত্বে গঠিত হয় আল কায়েদা । পশ্চিমারা সোভিয়েত উৎখাতের নামে সৃষ্টি করেছে উগ্র মৌলবাদ ও জঙ্গীবাদ যা শুধু আফগানিস্থান নয় পাকিস্থানসহ ক্রমান্বয়ে গ্রাস অপরাপর মুসলিম প্রধান দেশগুলিকে। একটি আধুন দেশ বিদেশী ষড়যন্ত্রে ও লীলাখেলায় কিভাবে দ্বংস হয় আফগানিস্থান তার একটি বড় প্রমান। পশ্চিমাদের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে ও ষড়যন্ত্রে আফ্রিকার বেশিরভাগ দেশগুলিরও একই অবস্থা ! জঙ্গীদের প্রজনননক্ষেত্র শুধু আফগানিস্থান নয় এরসঙ্গে যুক্ত হয়েছে পাকিস্থান, হাল আমলে সিরিয়া ও ইরাকও ! এখন জঙ্গীরা দৃষ্টি দিয়েছে ভারতীয় উপমহাদেশেও। আইমান আল জাওয়াহেরীর সাম্প্রতিক হুমকি একটি উল্লেখযোগ্য তৎপরতা ।অবশ্য যেসব দেশে টেকসই গণতন্ত্র, শক্তিশা্লী ও সুসংগঠিত সামরিক বাহিনী, সুশাসন এবং জনপ্রতিনিধিত্ব সরকার ব্যাবস্থা বিদ্যমান সেসব দেশে জঙ্গীবাদ বিস্তারের কোনো সম্ভবনা নেই। আমাদের বাংলাদেশে উপরে উল্লেখিত ক্রাইটেরিয়াগুলো কতটুকু মাত্রায় কার্যকরী আছে তা নিয়ে আমাদের নতুন করে ভাবা দরকার।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৪ ভোর ৬:৫০

আহসান২০২০ বলেছেন: ওরে পাগল, নজিরে পাছায় ঘা হইছে তাতে সরিষার তলে লাগাও।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.