নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার ব্লগবাড়িতে সুস্বাগতম !!! যখন যা ঘটে, যা ভাবি তা নিয়ে লিখি। লেখার বিষয়বস্তু একান্তই আমার। তাই ব্লগ কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার আগে একবার ভাবুন এই লেখা আপনার নিজের মস্তিস্কপ্রসূত নয়।

মিজানুর রহমান মিলন

জয় হোক মানবতার ও মুক্তিকামী মানষের যারা নব্য উপনিবেশবাদের বলির পাঠা হতে চায় না ।

মিজানুর রহমান মিলন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ন্যাটোর সম্প্রসারণবাদী নীতি রাশিয়ার ইউক্রেন অভিযানের মূল কারণ

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৮:১৬

আফ্রিকায় চীনের ঘাটি স্থাপনের বিরোধীতা করে মার্কিন ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল আফ্রিকাকে আমেরিকার ব্যাক ইয়ার্ড বলে উল্লেখ করেছিল। এখন কুইজ হল আফ্রিকা আমেরিকার ব্যাক ইয়ার্ড হলে ইউক্রেন রাশিয়ার কোন ইয়ার্ড? অবশ্য ১৯৯১ সালেও ইউক্রেন সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশই ছিল। আর সেই ইউক্রেনে ন্যাটোর ঘাটি স্থাপন বা ইউক্রেনের ন্যাটো বলয়ে যোগদান রাশিয়ার পক্ষে মেনে নেওয়া কি সম্ভব? রাশিয়ার ইউক্রেন অভিযানের মূল কারণই হচ্ছে ন্যাটোর সম্প্রসারণবাদী নীতি।

১৯৬২ সালে কিউবাতে সোভিয়েত ইউনিয়নের মিসাইল ঘাটি স্থাপন যেমন আমেরিকার পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব হয়নি তেমনি বর্তমানে সম্ভব নয় রাশিয়ার পক্ষেও। কিন্তু ১৯৬২ আর ২০২২ একই নয়। ২০২২ এ দাঁড়িয়ে আমেরিকা বা পশ্চিম নৈতিকভাবে পরাজিত। রাশিয়ার ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের বৈধতা পশ্চিমারাই রাশিয়াকে দিয়েছে যদিও রাশিয়া আমেরিকার মত দেশ দখলের উদ্দেশ্যে আগ্রাসন চালায়নি। বরং দোনেস্ক এবং লুহানেস্কের নেতাদের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়েছে মাত্র। অপরদিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর লাগামহীনভাবে আমেরিকার নেতৃত্বে পশ্চিমারা একের পর এক দেশ দখল করেছে। ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে একের পর একটি দেশকে। যেখানে সামরিক আগ্রাসনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারেনি সেখানে একের পর এক অর্থনৈতিক অবরোধ দিয়ে দেশগুলোকে নাজেহাল করেছে। কখনো কোথাও গৃহযুদ্ধ, সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে যুদ্ধ বাধিয়ে দিয়েছে। ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, আফগানিস্তান, কিউবা, উত্তর কোরিয়া, বলিভিয়া, নিকারাগুয়া ভেনেজুয়েলা, ইরান উল্লেখযোগ্য।

ভুখা, নাঙ্গা ও দরিদ্র ইয়েমেনে সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে আগ্রাসন চালাচ্ছে সৌদি আরব এবং আমিরাত জোট। সেই যুদ্ধের প্রধান ইন্ধন ও রসদ দাতা আমেরিকার নেতৃত্বে পশ্চিমা বিশ্বই। পশ্চিমাদের নিরুঙ্কুশ সমর্থনে সিরিয়ায় একের পর এক বিমান ও মিসাইল হামলা করেই যাচ্ছে ইসরায়েল। সিরিয়ার একটা অংশ দখল করে রেখেছে ইসরায়েল আর একটি অংশ বিনা আমন্ত্রণে ও নিমন্ত্রণে দখল করেছে স্বয়ং আমেরিকা। সেখান নিত্যদিন সিরিয়ার তেল চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে আমেরিকা। সিরিয়া বা ইয়েমেনের সার্বভৌমত্বের কোন মূল্য নাই পশ্চিমাদের কাছে, কিন্তু ইউক্রেনের ক্ষেত্রে সার্বভৌমত্ব, সার্বভৌমত্ব বলে চিৎকার চেঁচামেচি করছে। কোন লাভ নাই। কারণ রাশিয়া তো আর ইরাক, সিরিয়া বা লিবিয়া নয়।
তবে সারা বিশ্বই এখন রাশিয়ার ইউক্রেন অভিযান নিয়ে তোলপাড়। মূল কারণ পশ্চিমারাই। কারণ এদের কর্পোরেট মিডিয়া হচ্ছে যুদ্ধ ও দখলদারিত্ব এবং লুটতরাজের প্রধান সহযোগী। ঠিক এই কারণে ইউক্রেন ইস্যুতে বিশ্ব যতটা সরব ঠিক ইরাক, ইয়েমেন, আফগানিস্তান, লিবিয়া ক সিরিয়ার ক্ষেত্রে ততটাই নীরব!

যাদের কাছে নীতি, নৈতিকতার কোন বালাই নেই সেই তারাই যখন রাশিয়ার ইউক্রেন অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তুলে তখন বিশ্ববাসীর কাছে তার কোন গুরুত্ব নাই। এর কোন আবেদন নাই। ঠিক এই কারণে রাশিয়ার ইউক্রেন অভিযান বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ সমর্থন করতেছে বা নীরবে মেনে নিচ্ছে।

আমেরিকার নেতৃত্বে পশ্চিমারা দেশে দেশে হত্যা, গণহত্যা, লুটতরাজ, চুরি, ডাকাতি, নিরীহ ও নিরপরাধ মানুষ হত্যা এবং দেশগুলোকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করা তাদের স্বাভাবিক কাজ। সেখানে রাশিয়া ইউক্রেনে তেমনটা নিশ্চিৎভাবেই করবে না। কারণ রাশিয়া ও আমেরিকার নেতৃত্বে পশ্চিম এক নয়। একটা হচ্ছে সিংহ আর অপরটি হচ্ছে হায়েনার দল। হিংস্রতা দুইটার মধ্যেই আছে, কিন্তু মানুষ নিজেকে সিংহ ভেবে গর্ববোধ করে অপরদিকে হায়েনাকে ঘৃণা করে!

ইউক্রেনের বর্তমান নেতা নিরেট পশ্চিমাপন্থী এবং অদুর্দর্শী তাতে কোন সন্দেহ নাই। ঘরের মধ্যে সিংহ রেখে হায়েনার সাথে সখ্যতা করার ফল তিনি এখন হাতেনাতেই পাচ্ছেন। আমেরিকা বা ন্যাটো ইউক্রেনকে লিপ সার্ভিসের বেশি কিছু দিবে না। লুহানস্ক বা দোনেস্ককে শুধু স্বাধীনতা দেওয়াই উদ্দেশ্য নয় একই সাথে ইউক্রেনের সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস এবং দেশটিতে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনও অন্যতম উদ্দেশ্য। রাশিয়ার উপর নাম মাত্র অবরোধ আরোপ ছাড়া পশ্চিমাদের হাতে দ্বিতীয় কোন অস্ত্র নেই এবং সেটাও শাখের করাত হিসাবে আবির্ভূত হবে। রাশিয়ার এই অভিযান থেকে আরো একবার প্রমাণিত হল পশ্চিমারা কখনই কারো নির্ভরযোগ্য মিত্র হতে পারে না এবং আমেরিকার নেতৃত্বে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদ তার শেষ দিনগুলো অতিক্রম করছে।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৮:৩৬

জুন বলেছেন: পশ্চিমা বিশ্বের তথাকথিত উন্নত দেশগুলোর কোভিডের ভ্যাক্সিন বিক্রি শেষ এখন আবার তারা তাদের আসল এবং পুরনো ব্যাবসা অস্ত্র বিক্রি কর‍তে নেমেছে। আমেরিকা ভালো করেই জানে সাত সাগর পেরিয়ে তাদের গায়ে টোকা দেয়া কঠিন তাই আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য মধ্য আমেরিকার দেশগুলোতে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে গেছে নির্বিচারে। তাতে হাত মিলাচ্ছে বৃটেন। ছোট বুশ, টনি ব্লেয়ার, ইয়েলেতসিন এরা সবাই ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। আর কৌতুক অভিনেতা জেলেনেস্কি কি আর কেজিবির প্রাক্তন দুদে এজেন্ট পুতিনের সাথে পারা সম্ভব!!

২| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৮:৫০

সোবুজ বলেছেন: যুক্তিপূর্ণ বিশ্লেষণ।বাইডেন আজকে বলেই দিয়েছে, ইউক্রেনে আমাদের কোন স্বার্থ নাই।যেখানে স্বার্থ আছে সেখানে আমরা আছি।ইয়েমেনের যুদ্ধে স্বার্থ আছে।সৌদির কাছে এক টাকার অস্ত্র দশ টাকায় বিক্রয় করা যায়।

৩| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:২৮

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: গুড এনালাইসিস

৪| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:২২

অধীতি বলেছেন: সোভিয়েত ভেঙ্গে যেসব রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে চুক্তি অনুযায়ী তাদেরকে ন্যাটোর অংশ করতে পারবেনা। কিন্তু অন্যদের সঙ্গে যেমন চুক্তি নিয়ে বাটপারি করেছে তেমনিতো রাশানদের সঙ্গে চলে না।

৫| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:৪৪

বিটপি বলেছেন: আমেরিকা সবচেয়ে বেশি মজা নিচ্ছে ইয়েমেনে। বলদ সৌদী-আমিরাত জোট নিজেদের মুসলিম ভাইদের মেরে নিজেদেরই শক্তি কমাচ্ছে। মহামূল্য তেল পানির দরে আমেরিকাকে দিচ্ছে, আবার আমেরিকার এক টাকার উইপন দশ টাকায় বিক্রি করতে পারছে।

তেল শেষ হয়ে গেলে কেমন রাম লাথিটা খায়, তাই দেখার অপেক্ষায় আছি।

৬| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৫৬

রাজীব নুর বলেছেন: ন্যাটো না থাকলেই বরং সমস্যা কম হতো।

৭| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: ইমানুয়েল মাখোঁ র সামনে নির্বাচন। তিনি এখন চাইবেন নিজেকে শান্তিপ্রিয় নেতা হিসেবে মেলে ধরতে। জনপ্রিয়তা বাড়াতে। যার প্রমাণ মাঁখো পুতিন ফোনালাপ। অর্থাৎ ফ্রান্স ও ছিটকে গেলো ন্যাটো শিবির থেকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.