নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাশ্চাত্য দার্শনিকরাই ঈশ্বরের খুনি?

০৬ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:৩০

শত প্রতিকূলতার মাঝে পাশ্চাত্যের দার্শনিকগণ মতপ্রকাশ বন্ধ করেননি৷ তারা ভাববাদী, যুক্তিবাদী, অজ্ঞেয়বাদী বা বস্তুবাদী যাই হোন তাদের আঘাতটা গিয়েছে বিশ্বাসের উপর আর মানুষ পেয়েছে মুক্তির স্বাদ৷ এগিয়েছে মত প্রকাশের স্বাধীনতা, এগিয়েছে ইউরোপ৷

কোপার্নিকাস যে মত দিয়েছিলেন, গোলাকার পৃথিবীর সূর্যের চার দিকে ঘোরার সে মত বাস্তবায়ন করতে গিয়ে প্রাণ গিয়েছে ব্রুনোর কিন্তু থামানো যায়নি মতপ্রকাশ৷ গ্যালিলিওকে দিয়ে একই মত পরিবর্তনের ঘোষণা দেয়াতে পারলেও তা বন্ধ করানো যায়নি৷

দার্শনিক হবস ঘোষণা করেন, 'জগৎ হচ্ছে বস্তুর সমষ্টি৷ মানুষ বস্তুমাত্র৷ সর্বক্ষেত্রে একটিমাত্র মৌলিক বিধান কার্যকর রয়েছে তা হল- বস্তুর যান্ত্রিক গতি৷ কোণ প্রাণিরই অস্তিত্বসম্পন্ন আত্মা বলে কিছু নেই৷ ঈশ্বর মানুষের কল্পনা৷' তোলপাড় শুরু হয়ে যায়৷ মঞ্চে আসেন দার্শনিক রনে দেকার্ত৷ তিনি বলেন, 'কোন কিছুকে আমরা পরিষ্কারভাবে ইন্দ্রিয় দিয়ে প্রত্যক্ষ না করা পর্যন্ত সেটাকে সত্য বলে ধরে নিতে পারি না৷ আমি ভাবি তাই আমি আছি৷

বাঁধাও চলতে থাকে৷ দার্শনিক বারুখ স্পিনোজার কথাই ধরুন৷ তাঁর ইহুদি পূর্বপুরুষকে জোর করেই খৃস্টান বানানো হয়েছিল৷ তাঁর পিতা মাতা বহু কষ্ট করেই আবারো ফিরেন স্বধর্মে৷ অথচ বড় হয়ে তিনিই লড়াইতে নামেন ধর্মের বিরুদ্ধে৷ তিনি বলেন, 'ঈশ্বরের দেহ আছে, স্বর্গদূতদের ধারণা কল্পনাবিলাস মাত্র৷ অমরত্ব সম্পর্কে আদি বাইবেল কিছুই বলতে পারেনি৷' এসব বলার কারণে তাকে ধর্মচ্যুত করা হয়৷ তারপরেও তিনি বলেন, 'ঈশ্বরের অস্তিত্ব শুধুই দর্শনতাত্ত্বিক৷' যুক্তিবাদী দার্শনিকগণ বলতে থাকেন, 'জ্ঞানের চিন্তা চেতনা মনের সহজাত ধ্যান ধারণা থেকে আসবে৷' আবার অভিজ্ঞতাবাদীরা বলেন, 'মানুষ প্রাত্যাহিক জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে জ্ঞান লাভ করে৷' বিতর্ক চলে, সমাজ এগিয়ে যায়৷

দার্শনিক জন লক রাষ্ট্র পরিচালনায় চার্চের প্রভাবমুক্ত রাখতে ভূমিকা রাখেন৷ প্রচলিত গোঁড়া বিশ্বাসকে ছুঁড়ে ফেলেন৷ উদারতাকে স্থান দেন৷ ঈশ্বর কাউকে ক্ষমতা ভোগ করতে দিবেন আর কাউকে দাস বানিয়ে রাখবেন এটা তিনি বিশ্বাস করতেন না৷ ধর্মের ব্যাপারে রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ বন্ধের আহবান জানান৷

এরমধ্যে সোরেন কিয়ের্কেগার্ড বলেন, 'জীবন হল বেঁচে থাকার জন্য, কোন রহস্য সমাধানের জন্য নয়৷' আর্থার শোপেন হাওয়ের বলেন, 'পৃথিবী অগণিত ইচ্ছা আকাঙ্ক্ষার পারস্পরিক ক্রিয়া ছাড়া কিছুই না৷' নাস্তিকতা ও দুঃখবাদের পক্ষে মত দেন তিনি৷ ফ্রিডারিক নিৎশে প্রচার করেন 'ঈশ্বর মৃত!' দুঃখবাদ কোন হতাশার বিষয় নয়, এটা স্বাধীনতার এক নতুন মাত্রা৷

ডেবিড হিউম বলেন, 'আমাদের ইন্দ্রিয় যখন কোন বস্তুর সংস্পর্শে আসে তখন সেই বস্তুর একটি ছাপ আমাদের মনের উপর পড়ে তা থেকে এবং ধারণা থেকেই আসে জ্ঞান৷ আত্মা বা ঈশ্বর সম্পর্কে আমাদের কোন ধারণা হতে পারে না৷ কেন না এগুলো অতীন্দ্রিয় এবং এদের সম্পর্কে আমাদের কোন সংবেদন নেই৷'

একই সময়ে জঁ জাক রুসো বলেন, 'মানুষ জন্মগতভাবে স্বাধীন কিন্তু সমাজ তাকে শৃঙ্খলিত করে৷ মানুষের দুর্দশা ও দুর্বলতার কারণ আদি পাপ নয় বরং এটা হয়েছে তার আপন প্রকৃতির সাথে পরিবেশের দ্বন্দ্ব এবং অসঙ্গতির ফলে৷' রুসোর এক যুগ পরে জন্ম নেন ইমানুয়েল কান্ট৷ ধর্ম শিক্ষা দিয়ে তাঁর লেখাপড়া শুরু হলেও একসময় ধর্মের প্রতি সম্পূর্ণ বীতশ্রদ্ধ হয়ে ওঠেন৷ ধর্মের উপর যুক্তির প্রাধান্য স্থাপন করেন৷

উনিশ শতকের শুরুতে ভাববাদী দার্শনিক ফ্রেডরিক হেগেলের উত্থান ঘটে৷ তিনি বলেন, 'মানুষ হও এবং বাঁচার জন্য মরো৷ মানুষের কাছে দশ্য বা জ্ঞেয় জগৎ মানুষের বুদ্ধিকে অতিক্রম করে যেতে পারে না৷ যা কিছু জ্ঞেয় বা দৃশ্য সবই হচ্ছে ভাবের প্রকাশ ও বিকাশ৷' তিনি দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদের সূচনা করেন৷

এরপর জগৎ তোলপাড় করে চার্লস ডারউইন নিয়ে আসেন বিবর্তনবাদ৷ প্রজাতির বদলে যাওয়ার ব্যাখ্যা দেন৷ মানুষের সামনে আসে প্রাণ বিকাশের নতুন ধারণা৷ দার্শনিক ফয়েরবাখ নিয়ে আসেন বস্তুবাদী দর্শন৷ খৃষ্টধর্মের সারবস্তু এমন এক ঝাঁকি খায় যে, হেগেলপন্থীরাও এক লহমায় হয়ে যায় ফয়েরবাখ পন্থী৷ কার্ল মার্ক্স - ফ্রেডরিখ এঙ্গেলসের উত্থান ঘটে৷ বিকাশ ঘটে দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদের৷

এসবের উপর ভিত্তি করেই দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেল লিখতে পারেন, 'কেন আমি ধর্ম বিশ্বাসী নই' এর মতো গ্রন্থ৷ এ পথে আরো ফ্রয়েডসহ বহু দার্শনিক এবং ইবসেনসহ বহু লেখক, লিওনার্দো দা ভিঞ্চিসহ বহু শিল্পী, জন স্টুয়ার্ট মিলসহ বহু রাজনীতিবিদ ভূমিকা রাখেন৷ তারা সবাই মিলেই সংশয়ে ফেলে দেন ঈশ্বর বিশ্বাসকে৷

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই মে, ২০২০ দুপুর ১:৩৯

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: দার্শনিকদের হাতেই বিজ্ঞানের ফ্রেমওয়ার্ক তৈরী। বলতে পারেন ঈশ্বর বা ঐশ্বরিক যে ক্ষমতা তার সন্ধানের জন্যই বিজ্ঞানকে হৃষ্টপুষ্ট করে দিয়েছে। ঈশ্বরের ব্যাসিক ধারণাকে সর্বপ্রথম আঘাত করেন সক্রেটিস যদিও তিনি বিভিন্ন কথোপকথনে জিউস দেবতারা এসব শব্দ ব্যাবহার করেছেন। তবে সেই প্রশ্ন গুলো একটা সংঘবদ্ধ পথ দেখায়।

ঐশ্বরিক দর্শনের সৃস্টি হয়েছিলো মানুষ যখন অসহায় ছিলো কিন্তু এই ধারনাটা পুরোপুরি নিখুঁত নয় যখন আমরা দেখি আধুনিক হোমোস্যাপিয়েন্সের ফ্রন্টাল লোবের ঐ ঐশ্বরিক পয়েন্ট বেশ বড় যেটা নিয়েনডারথালদের ছিলো না। কারন হিসেবে বলা যাতে পারে এনাটোমিক্যালি তাদের কগনেটিভ সাইডের নিকটবর্তি অংশ বড় থাকায় তারা ছিলো ক্ষীপ্র, শিকারী গোছের।

যদি নিয়েনডারথাল-হোমোস্যাপিয়েন্সের যে ট্রান্জিশনাল পিরিয়ড সেই সময়ে গুহাতে মৃত দেহের রিচুয়ালের প্রমান পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে আরেকটা প্রশ্ন করা যেতে পারে কোনটা আগে ভয় না ফ্রন্টাল লোব... এটা জানতে ইচ্ছুক!

দর্শন সে হিসেবে আমাদের পঞ্চইন্দ্রিয়ের সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করিয়েছে যার জন্য আমাদের কৃতজ্ঞ প্রকাশ প্রয়োজন

২| ০৬ ই মে, ২০২০ দুপুর ২:১৫

নতুন বলেছেন: দশ`নের সাথে অযৌক্তিক বিশ্বাসের সংঘাত সব সময়েই থাকবেই। কারন যৌক্তিক ভাবনা আর অন্ধ বিশ্বাস আলো আর অন্ধকারের মতন। আলো না থাকাই অন্ধকার।

অন্ধবিশ্বাসের সাথে দশ`নের এই সম্পক ই ধমের সাথে আশা কুসংস্কারকে মানুষের সামনে তুলে এনেছে।

৩| ০৬ ই মে, ২০২০ দুপুর ২:২৫

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: @নতুন

চরমোনাই শাইয়ানের কাছে রেফারেন্স চাইছেন সেইটার ডিটেইল এইখানে ঘাদিরে খুমের অংশ

ভালো কথা জঙ্গি নুরু কেন লাদেনকে এত পেয়ার করে এইটার উত্তর পাইছেন?

৪| ০৬ ই মে, ২০২০ বিকাল ৫:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: পড়লাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.