নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাথরে কি ভাগ্য ফেরে?

১৪ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৪৩


এক বন্ধু বললেন, পাথরে আসলেই ভাগ্য ফিরে! তবে সবার না!

রঙিন-উজ্জ্বল পাথরকে আমরা শুধু সৌন্দর্যবর্ধনের জন্যই ব্যবহার করি না, মূল ব্যবহারটা আধ্যাত্মিক কারণে। হাজার হাজার বছর ধরে এই পাথরের উপর বিশ্বাস রেখে আসলে কিছু প্রতারকের প্রতারণার শিকার হয়ে মানুষ পাথর ব্যবহার করে আসছে। পাথর কোন ভাবেই ভাগ্য ফেরাতে পারে না। গ্রহ-নক্ষত্রের প্রভাব থেকে মানুষকে রক্ষা করার ক্ষমতা পাথরের নেই। গ্রহ-নক্ষত্রের ভাল-খারাপ প্রভাব বলতেও আসলে কিছু নেই। আর প্রেমে সফলতা, রোগ নিরাময়, চাকুরি লাভ, বশিকরণ, কর্মে উন্নতি, স্বাস্থ্য উন্নতি, দুঃসময় থেকে মুক্তিলাভ, লটারি লাভ, পরীক্ষায় ভাল করা, পারিবারিক কলহ দূর, মানসিক শান্তি লাভ, ব্যবসায় উন্নতি ইত্যাদি কারণে মানুষ পাথর ব্যবহার করে। বিশেষ করে রাজনৈতিক শক্তি অর্জন করে প্রতিপক্ষকে জব্দ করা ও ব্যবসায়/চাকুরিতে সাফল্য লাভের প্রত্যাশাটাই বেশি। তবে এখনো অসভ্য মানুষেরা রত্নপাথরকে শুধু সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য ব্যবহার করে আর কথিত সভ্য মানুষেরা পাথরকে আধ্যাত্মিক কারণে ব্যবহার করে।

মুক্তা ভিন্ন রকমের পাথর। ঝিনুকের ভিতরে বালুকণা ঢুকলে তার যন্ত্রণা থেকে রক্ষার জন্য কণাটির চারদিকে একটি আবরণ তৈরি হয়। এটা বাড়তে বাড়তে গোলাকার মুক্তায় পরিণত হয়। সেই মুক্তা কেন মানুষের সৌভাগ্য বয়ে আনবে? প্রবাল, পান্না, হিরা, গোমেদ, নীলা, রুবি, পোখরাজ ইত্যাদি পাথর জনপ্রিয় ও মূল্যবান। জ্যোতিষরা পাথর ব্যবহারের জন্য কিছু উদাহরণ দেন। আইনস্টাইনের ই = এমসি স্কয়ার সূত্রও গিলিয়ে দেন। কত শক্তি, কত তেজ পাথরের। সামান্য একটি বৈদ্যুতিক বালবের আলোতে যদি সারা ঘর আলোকিত হতে পারে, তবে পাথরে কেন আপনাকে আলোকিত করতে পারবে না? সত্যিই হাস্যকর যুক্তি। পান্না ব্যবহার করলে নাকি, সুনাম-যশ-খ্যাতি বেড়ে যাবে। একজন মাদকাসক্তর হাতে দিলে তার কি সুনাম বাড়বে? একজন রিক্সাচালকের হাতে দিলে তার কি যশ বাড়বে? প্রবাল থেকেইতো তৈরি হয় প্রবাল পাথর। সাধারণত গাঢ় লাল বর্ণের অস্বচ্ছ পাথর। মরা প্রবাল থেকে তৈরি প্রবাল পাথর কিভাবে মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষা করবে আর বিপদাপদ থেকে রক্ষা করবে? হিরা-পান্না-রুবি ইত্যাদি পাথর খনিতে পাওয়া যায়। হিরাতো কয়লা থেকে তৈরি হয়, রুবি হল এলুমিনিয়াম অক্সাইড। এগুলোর কোন ক্ষমতাই থাকার সুযোগ নেই মানুষের ভাগ্য ফেরানোর। প্রশ্ন উঠতে পারে, যদি পাথরের কোন ক্ষমতাই না থাকে তাহলে হাজার হাজার বছর ধরে কেন মানুষ পাথরে বিশ্বাস রাখছে? এই প্রশ্নের উত্তর জটিল নয়। সত্যিই এখনো বহু মানুষই সচেতন হয়ে উঠেনি। এখনো বহু মানুষই জানে না যে, পৃথিবী গোলাকার এবং সেটা আবার নিজ অক্ষের উপর ঘুর্ণায়মান এবং সূর্যের চারদিকে বছরে একবার ঘুরে আসে। পাথর বিশ্বাসও এরকমই এক বিশ্বাস, এক কুসংস্কার যা হাজার হাজার বছর ধরে মানুষকে ঠকিয়ে আসছে। আসলে পাথরে নয়, মানুষকে আসলে ঠকাচ্ছে মানুষই।

ওই বন্ধুর কাছে জানতে জানতে চাইলাম, কার কার ভাগ্য ফেরে?
তিনি বললেন, ‘একমাত্র রত্নপাথর ব্যবসায়ীরই ভাগ্য ফেরে। রত্নপাথর বিক্রি করেই আজ বাসের হেল্পার লিটন দেওয়ান বহু বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন’।
আমরা স্বাস্থ্য বিভাগের দুর্বৃত্ত মোহাম্মদ সাহেদের হাত ভরা আংটি দেখি। সে ভেবেছিল এই আংটিই তাকে রক্ষা করবে। তাই সে হয়ে উঠেছিল লাগামছাড়া! শেষ দর্শন আজমেরি জেমস হাউজের মালিক লিটন দেওয়ান এতো মানুষের ভাগ্য বদলে দেন। অথচ তিনিও প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হন। আমরা পদার্থবিদ ড. অরুণ কুমার বসাক স্যারের হাতেও এমন আংটি দেখি। এতে নাকি তাঁর আত্মা তৃপ্তি পায়! অথচ বিজ্ঞান আত্মাই স্বীকার করে না। আরো কিছু বিখ্যাত ব্যক্তি আংটি পরেন, রত্নপাথর ব্যবহার করেন। বিশেষ করে আমাদের নায়ক-নায়িকারা লিটন দেওয়ানসহ ভণ্ডপীরদের খুবই মান্য করেন। তারা আংটি পরেন। এতে আমাদের সমাজে একটি মতাদর্শ তৈরি হয়েছে যে, আংটি বা রত্নপাথর মানুষের ভাগ্য ফেরায়। তারা বলেন, যদি ভাগ্যই না ফেরায় তবে এতো বিখ্যাত মানুষ পাথর ব্যবহার করে কেন? আমাদের দুর্ভাগ্য যে, এদেশে এখনো প্রায় সকল মানুষই বিজ্ঞানমনস্ক নন। তারা অলৌকিকতার বিশ্বাসটা পান- পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে। সেই ভুলটা আর জীবনে অতিক্রম করতে পারেন না। বাস্তবিক রত্ন পাথর নিছকই একটি সুদৃশ্য পাথরই। কারো ভাগ্য বদলে দেয়ার কোন ক্ষমতাই তার নেই।

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৫৬

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: গাধা মানব।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৪৪

মুজিব রহমান বলেছেন: আমরা মানুষের মধ্যে বিজ্ঞানমনষ্ক ভাবাদর্শ গড়ে তুলতে পারিনি।

২| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:১০

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: পাথরে ভাগ্য না ফিরলেও পাথরের ব্যবসা করে অনেকের ভাগ্য ফেরে।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৪৪

মুজিব রহমান বলেছেন: উৎকৃষ্ট উদাহরণ লিটন দেওয়ান

৩| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: পাথর, তাবিজ আর ঝাড়ফুকে ভাগ্য ফেরে না। পরিশ্রমে ভাগ্য ফেরে।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৪৬

মুজিব রহমান বলেছেন: পরিশ্রম গুরুত্বপূর্ণ অবশ্যই। তবে নিজের মেধাকে বিকশিত করতে হবে শিক্ষা নিয়ে, মানবিক ও সামাজিক মানুষ হতে হবে।

৪| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:২৬

রাজীব নুর বলেছেন: বহু ধনী লোক পাথর ব্যবহার করে।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৫১

মুজিব রহমান বলেছেন: বহু ধনী লোকই মৌলবাদী, অন্ধবিশ্বাসী তবে তারা কেন পাথর বিশ্বাসী হবে না? আছেইতো!

৫| ১৪ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:৩৩

জাহিদ হাসান বলেছেন: =p~ =p~

৬| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ৮:১৩

জগতারন বলেছেন:

পাথরে ভাগ্য ফিরে (!)
আসলে পাথরে **ল ফিরে।

৭| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৪:০৬

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: লিটন দেওয়ান বাসের হেল্পার ছিল এটা জানলাম। মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৫৫

মুজিব রহমান বলেছেন: পাথর তার ভাগ্য ফিরেছে।

৮| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৯

নতুন বলেছেন: ওই বন্ধুর কাছে জানতে জানতে চাইলাম, কার কার ভাগ্য ফেরে?
তিনি বললেন, ‘একমাত্র রত্নপাথর ব্যবসায়ীরই ভাগ্য ফেরে।


এই জিনিসটাই তো মানুষ বোঝে না।

১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৫৮

মুজিব রহমান বলেছেন: রাষ্ট্র ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মানুষের মধ্যে বিজ্ঞানমনষ্ক ভাবাদর্শ গঠন করেনি, কিভাবে বুঝবে?

৯| ১৫ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৮:৪৬

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: রাজীব নুর বলেছেন: পাথর, তাবিজ আর ঝাড়ফুকে ভাগ্য ফেরে না। পরিশ্রমে ভাগ্য ফেরে।


১০০% সঠিক। ধন্যবাদ ভাই রাজীব নুর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.