নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আধুনিক মানুষ কিভাবে এসেছে?

১১ ই মার্চ, ২০২১ রাত ৮:৫৯


বিবর্তনের আলোয় বিচার না করলে জীববিজ্ঞানের কোন কিছুরই কোন অর্থ হয় না। এখন বিবর্তনবাদকে জীববিজ্ঞানের মূল শাখা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। এখন জেনেটিক্স, অনুজীববিদ্যা, জিনোমিক্স বিবর্তনবাদকেই বারবার নিশ্চিত প্রমাণ করছে। এখনতো গবেষণাগারেই কৃত্রিম বিবর্তনের মাধ্যমে নতুন প্রজাতির উদ্ভিদ বা প্রাণী তৈরি করছেন বিজ্ঞানীরা। অথচ কিছু পশ্চাৎপদ মানুষ বিভিন্নভাবেই বিবর্তনবাদকে বিতর্কিত করছেন, মিথ্যা প্রচার দিচ্ছেন, হাসি তামাশা করছেন কোন তথ্য ও যুক্তি ছাড়াই।

আধুনিক মানুষকে বলে হোমো স্যাপিয়েন্স। হোমো স্যাপিয়েন্স হল হোমিনিনা উপজাতির একমাত্র বিদ্যমান সদস্য যা বানর পরিবারের অন্তর্গত হোমিনিনি গোত্রের একটি শাখা। হোমিনিনিদের বেশিরভাগই আগুন ব্যবহার করতো। আগে ফসিল প্রাপ্তি সাপেক্ষে বলা হতো, প্রায় ২ লক্ষ বছর পূবে আধুনিক হোমো স্যাপিয়েন্সরা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠেছিল। সম্প্রতি মরক্কোতে পাওয়া গেছে প্রায় তিন লাখ বছর আগের হোমো সাপিয়েন্সদের নমুনা। গোড়ার দিকের হোমো স্যাপিন্সেদের মুখাবয়ব অনেকটাই ছিল বর্তমান মানুষের মতো। তবে মস্তিষ্কের গড়নে ছিল পার্থক্য। এখন পৃথিবীতে জীবিত প্রাণীদের মধ্যে প্রাচীন হোমো স্যাপিয়েন্সদের সবচেয়ে ঘণিষ্ঠ স্বজন হচ্ছে শিম্পাঞ্জি, জিনগত মিল ৯৮ ভাগ। ৬০ লাখ বছরের বেশি সময় আগে আধুনিক মানুষ ও শিম্পাঞ্জির এক অভিন্ন পূর্বপুরুষ ছিল। ওই অভিন্ন পূর্বপুরুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর আমাদের প্রাচীন পূর্বপুরুষেরা বিভিন্ন প্রজাতিতে বিকশিত হন। তাদের বলা হয় হোমিনিন। লাখলাখ বছর ধরে হোমিনিনরা অনেকটাই বানরের মতো থেকে যায়। তারা ছিল খাটো, মস্তিষ্কের আকার ছিল ছোট এবং সাধারণ পাথরের অস্ত্র-সরঞ্জাম তৈরি করতে পারতো। ৫০ হাজার বছর আগে তারা আধুনিকতার প্রমাণ প্রদর্শন করতে শুরু করেছিল এবং পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল। ওয়াজ করতে গিয়ে অনেকে ভুল ব্যাখ্যা দেন যে, বিবর্তনবাদ হল- বানর থেকে মানুষ হওয়া। মানুষ একটা ভিন্ন প্রজাতি। এক প্রজাতির সাথে অন্য প্রজাতির যৌন সম্পর্ক হয় না অর্থাৎ তাদের যৌন মিলনে সন্তান হয় না। যেমন ঘোড়া ও গাধা আলাদা প্রজাতির। কৃত্রিমভাবে এই দুই প্রজাতির সন্তান ‘খচ্চর’ উৎপন্ন করা গেলেও খচ্চর নিজেরা সন্তান উৎপাদনে সক্ষম হয় না।

তার মানে মানুষ আনুমানিকভাবে ৩ লক্ষ বছর আগে এসেছে। সে হিসাবে কিতাবী ধর্মের আবির্ভাব মাত্র ২ হাজার বছর। তবে তার আগেও মানুষ লৌকিক ধর্ম পালন করতো, পাহাড়া, সাগর, সূর্য, চন্দ্র ইত্যাদি পূজা করতো। এরপরে দেবদেবীর পূজা করতো (এখনো হিন্দু সম্প্রদায় করে)। বিজ্ঞান তথ্য অনুসন্ধানের মাধ্যমেই সিদ্ধান্তে আসে। আর ধর্মগ্রন'গুলোতে বিজ্ঞান থমকে গেছে ওই সময় পর্যন্তই। যেমন- টলেমির অনুসন্ধানেই আটকে গেছে। যদি আরো পরে আসতো তাহলে, হয়তো কোপার্নিকাস বা গ্যালিলিওর সিদ্ধান্ত থাকতো। তিন লক্ষ বছর আগের ফসিল পাওয়া মানে সম্ভাবনা রয়েছে আরো আগের ফসিল পাওয়ার। তবে সেটা অবশ্যই ৩০ লক্ষ বছর হবে না কারণ ওই সময়ের মানুষের প্রজাতির যে ফসিল পাওয়া গেছে তা হোমো স্যাপিয়েন্স নয়। আধুনিক বিজ্ঞান চলছে মাত্র ৫শ বছর। সেই বিজ্ঞানকে অস্বীকার করতে কেউ পারছে না। কিছু লোক শুধু চোখ বন্ধ করে থাকে, জানার চেষ্টা করে না, বুঝতেও চায় না। পরীক্ষা, নিরিক্ষা আর পর্যবেক্ষণে আমরা তিন লক্ষ বছরের মানুষ। আমরা এখন বিভেদের দেয়াল তুলি, চাপিয়ে দিতে চাই অজ্ঞতাকে, হাঁটতে বলি অন্ধকার পথে। মানুষের পেছনের দিকে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। এখন মানুষ দেখছে গ্যালাক্সি, সুপারনোভা, বামন গ্রহ; বুঝার চেষ্টা করছে ব্লাক হোল।

একজন মানুষ থেকে আজকের মানুষ এসেছে এমনটা বিজ্ঞান বলে না। পঞ্চাশ হাজার বছর আগে আধুনিক মানুষের দলই ছিল। তারও আগে ৩ লক্ষ বছর আগের যে মানুষের প্রজাতির ফসিল পাওয়া যায় সেও একা ছিল না। আরো আগে যাই- প্রায় ৩২ লক্ষ বছর আগে মানুষের সবচাইতে পরিচিত পূর্বপুরুষ বলে খ্যাত লুসির কথাই বলি। লুসিও একা ছিল না। সেই একই সময়ে ওই একই এলাকাতেই আদিম মানুষের আলাদা আরেকটি প্রজাতির অস্তিত্বও খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। এখন পৃথিবীতে বিভিন্ন জাতির মানুষ থাকলেও সকলেই একই প্রজাতির মানুষ। একজন মঙ্গোলিয়াড মা ও নিগ্রোয়েড বাবার সন্তানও পিতা/মাতা হতে পারছেন। কিন্তু পৃথিবীতে হোমো স্যাপিয়েন্সই একমাত্র প্রজাতি ছিল না। এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে অন্তত ছয়টি প্রজাতির মানুষের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। ধরুন নিয়ানডার্থাল প্রজাতির মানুষের কথা। যদি হোমো স্যাপিয়েন্সদের একক পিতা/মাতা থাকে তাহলে নিয়ানডার্থালদের ক্ষেত্রে কি হবে? হোমো ইরেক্টাসদের ক্ষেত্রে? হবিটদের ক্ষেত্রে কি হবে? অন্তত এটা বলতে পারি পঞ্চাশ হাজার বছর আগে যখন আজকের আধুনিক মানুষের উদ্ভব ঘটে তখন সে একজন ছিল না। তারা নিজেদের উন্নতি ঘটিয়েছে বা ঘটেছে একসাথে ধীরে ধীরে। আজকের দুনিয়ার মানুষও কেউ একা আলাদাভাবে আগাচ্ছে না- দলগতভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে। শুধু বন্য বা পশ্চাৎপদ কিছু মানুষই পিছিয়ে থাকছে।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই মার্চ, ২০২১ রাত ৯:৩৩

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: সৃষ্টির সেরা জীব প্রমান করার জন্যই ধার্মীকদের এত সব গল্প ।

১২ ই মার্চ, ২০২১ সকাল ৮:৫৮

মুজিব রহমান বলেছেন: চূড়ান্ত লক্ষ্য মানুষ ঠকানো। কিছু মানুষ ঠকায় আর কিছু ঠকে।

২| ১১ ই মার্চ, ২০২১ রাত ১০:০৯

কলাবাগান১ বলেছেন: আধুনিক মানুষ আর নিয়ানডার্থাল মাঝে যৌন প্রজননের প্রমান তো আধুনিক মানুষের ডিএনএ ই প্রমান করছে। ডিএনএ মিথ্যা বলে না/বলতে পারে না। অবশ্য কাকে কি বলবেন, যাদের বুদ্ধি এই টুকুই (এখনো কেন বানর আছে), তারা বিবর্তন বুঝবেও না বা বুঝার চেস্টা করবে না।

১২ ই মার্চ, ২০২১ সকাল ৯:০০

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
বাস্তবিক আমাদের দেশে পাঠ্য পুস্তক বা মিডিয়া কেউই প্রচলিত প্রথা/ধারণার বাইরে যেতে সাহস করে না। কিন্তু আমাদের তো দায়িত্ব রয়েছে কথা বলার। কথাই পারবে সমাজ বদলাতে।

৩| ১২ ই মার্চ, ২০২১ রাত ১২:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন: অল্প কথায় কাজ সারি-
পৃথিবীর শুরুতে- এমিবা কোষ ছিলো। সেই কোষ থেকে বিবর্তন হতে হতে আজকের মানুষ।

১২ ই মার্চ, ২০২১ সকাল ৯:০৫

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ। এককোষী প্রাণী থেকেই আজকের মানুষ- এক দীর্ঘ জার্নি টু মানুষ!

৪| ১২ ই মার্চ, ২০২১ দুপুর ২:৩৮

নিরীক্ষক৩২৭ বলেছেন: মানবদেহের ডিজাইন ফ্ল নিয়েও পোস্ট লিখেন।

১৩ ই মার্চ, ২০২১ রাত ৯:০৭

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.