নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে ভাল মানুষ হিসেবে গড়ে তোল পৃথিবী তোমার জন্য ভাল কিছু নিয়ে অপেক্ষা করছে।তবে ঠিক ততটুকুই তোমাকে সে দিবে যতটুকু তুমি নিজেকে গড়েছ।

পথিক৬৫

আমি খুব সাধারন একজন মানুষ,যে কিনা পৃথিবীর মানুষ গুলোকে হাসতে দেখলেই হাসে,আর কারো কান্না সহ্য করতে পারেন না। তবে অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে ভুল করেন না।

পথিক৬৫ › বিস্তারিত পোস্টঃ

রোমের বাতিওয়ালা।। বাংলাদেশীর গল্প।।

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৭


ইতালীর রাজধানী রোমে গিয়েছিলাম গত মাসের ১৯ তারিখ। তবে এটা খুব বড় একটি সত্য কথা যে, আমি রোমের থাকার প্রায় ৩ দিনের মধ্যে প্রথম দিন সন্ধা ব্যতীত আর বাহিরে বের হওয়া হয় নাই।
কারন টা খুব সহজ। গত ১৯ তারিখ তার্কিশ প্রধানমন্ত্রী সফর করেছিলেন বাংলাদেশে। ১৩ তারিখ সকালে ইস্তানবুল থেকে ফোন আসে, "তুমি কি আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে ওয়ারশাও থেকে ইস্তানবুল আসতে পারবা?" "কিন্তু কেন?" আমি প্রশ্ন করলাম। "প্রধানমন্ত্রী যাবেন বাংলাদেশে। তোমাকে কভারেজে সেখানে পাঠাতে চাই"
"আচ্ছা আমি একটু ভেবে জানাচ্ছি"।

ট্রিপের টিকেট আমার কেনা ছিল আরো অনেকদিন আগে। ঠিক প্রধানমন্ত্রী যেদিন যাবেন তখনই আমার আমার ট্রিপ। সব প্লান ভেস্তে যাবে আমার। যদি আমি এখন বাংলাদেশে যাই। অনেক ভেবে তাদেরকে জানালাম, "আচ্ছা আমি যদি ১/২ জন লোক দিয়ে সেখানের কাজ তুলে আনি কেমন হবে এটা। যেমন তারা আমাকে তথ্য দিলে আমি সেটা তার্কিশ করে নিউজ পাঠিয়ে দেব। সাথে ফুটেজ আর ছবি"। উনারা রাজী হলেন। আমিও বাংলাদেশে ১ জনকে কাজের দায়িত্ব দিলাম। আর এটাই ছিল আমার ইতালীতে না ঘুরতে পারার কারন।

কারন, ২ দেশের সময়ের তফাত ৫ ঘন্টা। এখানের রাত তো সেখানে দিন। সব মিলে কাজের প্রেশারে আর ২ দিনে কম্পিউটার এর সামনে থেকেই উঠা হল না।

প্রথম রাতে বের হয়েছিলাম। দুই একটা ছবি তোলা আর কি। নইলে এই মাটিতে যে আমার চরন পরিয়াছে তাহার প্রমান কি!

বিখ্যাত Colosseum এলাকায় ঘুরছিলাম। রাত তখন প্রায় ৮ টা। ৮ টা দেখে অনেকে বলবেন ভাই এটা তো সন্ধা। আসলে তা নয়। কারন সেখানে সন্ধা হয় ৩ টায়। আশে পাশে আমার চামড়ার অনেক মানুষ দেখতে পেলাম। কেউ ইন্ডিয়ান কেউ আবার বাংলাদেশী। তারা লেজার লাইট, কিংবা Colosseum এর আলোকচিত্র বিক্রি করছিল।

Colosseum মেট্রো ষ্টেশনের সামনে ৩ জন বাংলাভাষী মানুষ এর একটা জটলা দেখতে পেলাম। কাছে না যাওয়ার আগে বুঝতে পারছিলাম না তারা কি বাংলাদেশী। কারন কলকাতার অনেক মানুষও এখানে আছে।

"কিরে তোর কী একটাও গেল" তারা আঞ্চলিক ভাষায় বলছিল। আমি সেতা এভাবে বুঝলাম।

"১ টা গেছে" একজন বলল।
"আমার একটাও যায় নাই" ৩য় জন বলল।

আমি কাছে এগিয়ে গেলাম। সালাম দিলাম। কুশলাদী বিনিময় করলাম।

আপনারা বাংলাদেশের কোন এলাকার মানুষ?
আমি চাঁদপুরের। আমি বিক্রমপুর। আমি লক্ষ্মিপুর। তারা তিনজন জবাব দিল।

তাদের কাস্টমার এসেছে। ২ জন চলে গেলেন। থেকে গেলেন চাঁদপুরের ভাই। বয়স ৬৫ ছুঁই ছুঁই।

কবে এসেছেন এখানে?
আমার বাজান অনেক দিন। সেই ৯০ এর দশকে এসেছি।
বাড়ি যান কত দিন পর?
শেষ বছর পাঁচেক আগে গিয়েছিলাম।
দেশে কে আছে?
সবাই আছে। বড় ছেলেটা তোমার মত। পড়ে। আর মেয়ে আছে ৩ জন। তোমার ভাবী আছে।

সন্তানরা কি লেখা পড়া করে না?
হাঁ। সবাই পড়ে বড় ছেলে ভার্সিটিতে যায়। আর মেয়ে একটা এই বছর আই এপাশ করছে। একটা মেট্রিকে আর একটা ছোট।

আপনি এত বছর বিদেশে আছেন পরিবার ছেড়ে। এত কষ্ট করতেছেন !

কি করার বল। ছেলে গুলারে মানুষ বানাইতে হবে তো।

আবার দেশে কবে যাবেন। ঠিক নাই। দেখি কিছু টাকা জমানো যায় কিনা। এরপর যাব।

আপনার বোধায় কাস্টমার এসেছে। আমি ডিস্টার্ব না দেই।
আরে না। কিসের ডিস্টার্ব। তোমার শীত লাগবে তো মাফলার পর নাই। আমাকে বলল।
আমার ভাই অভ্যাস আছে। আমি বললাম। আমি তবে এবার যাই। দোয়া করবেন। আচ্ছা বাবা। ভাল থাক। বড় হও।

উনার সাথে আমার কথা ছিল আঞ্চলিক ভাষায়। সবার বোঝার সুবিধার জন্য আমি সেটা প্রচলিত বাংলায় লিখেছি।

আমি চলে এলাম। আর চিন্তা করছিলাম এই লাইটওয়ালা কথা। যার লাইটের আলো এত তেজস্বী যে, সেটা সেই সূদূর রোম থেকে বাংলাদেশের চাঁদপুরে ছেলেদের মানুষ করতে আলো দেয়।।

মন্তব্য ১৯ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (১৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫২

চাঁদগাজী বলেছেন:


লেখার স্টাইল খুচরা ধরণের

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৭

পথিক৬৫ বলেছেন: আমি কোন লেখক নই। সাধারন সাংবাদিক। যা আমার কাছে সুন্দর লাগে বিষয় হিসেবে সেটাই আমার লেখার বিষয় বস্তু।

২| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:৩৪

মনিরা সুলতানা বলেছেন: এমন অনেক বাতিওয়ালা পাবেন আপনি ,সিংগাপুর ,দুবাই ,আফ্রিকা , প্যারিস,সুইডেন । সমস্ত বিশ্বজুড়ে ।
চমৎকার মায়ায় ভরা লেখা !!! আমাদের দেশের গ্রামে গ্রামে এখন ও এসব লাইট ওয়ালা ,ফুল ওয়ালা রা আলো আর ফুলের সুবাস বিলিয়ে যাচ্ছেন ।


অনেক অনেক ধন্যবাদ শেয়ারের জন্য ;তাদের নিয়ে লেখার জন্য ।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৭

পথিক৬৫ বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।।

৩| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:৪৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: প্রবাসীদের অনেক কষ্ট। সেটা অনেক সময় তাদের পরিজনরা বুঝতে পারেনা।

৪| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:২৬

আহমেদ জী এস বলেছেন: পথিক৬৫ ,





চমৎকার লেখা ।

প্রবাসী বাংলাদেশীরা এভাবেই দেশের অন্ধকার ঘরে ঘরে আশার আলো জ্বালিয়ে রাখেন নিজেদেরকে গহীন অন্ধকারে রেখে ।

৫| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৩৯

শায়মা বলেছেন: বাতিওয়ালা! বাতিওয়ালাদের জন্য মন খারাপ হলো।

৬| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:১২

শামচুল হক বলেছেন: আসলেই বিদেশে গিয়ে লোকজন খুব কষ্ট করে পয়সা রোজগার করে।

৭| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ২:১৭

মলাসইলমুইনা বলেছেন: ভালো লাগলো লেখা |

৮| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৩:৪৯

জগতারন বলেছেন:
NEEDED TO READ MORE
WRITE (!) NOT YET.

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৮ ভোর ৫:১৭

পথিক৬৫ বলেছেন: ??

৯| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৮ ভোর ৫:১৫

আশিক হাসান বলেছেন: এই ধরনের বাতিওয়ালাদের এখন খুব প্রয়োজন সমাজে, কেমন জানি অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে চারিদিক । লেখাটা পড়ে ভাল লাগলো, আমারও এধরনের কিছু অভিজ্ঞতা আছে , সেই সব বাতিওয়ালাদের প্রতি আমার সালাম আর শ্রদ্ধা রইল । ভাল থাকবেন।

১০| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৭:১৮

কেএসরথি বলেছেন: আপনিতো ভাই সেইরকম কাজ করেন, প্রধানমন্ত্রীরে কাভার দেন :)

১১| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:১৩

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: এমন লেখা পড়লে মন খারাপ হয়ে যায়।
পরিবারের সুখের জন্য এমন করে কত মানুষ নিজেকে উজাড় করে দিচ্ছে।

১২| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৪২

আটলান্টিক বলেছেন: ব্লগের মহারথীরা তো আপনাকে নেগেটিভ রিভিউ দিচ্ছে :) :) :)

১৩| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট। কিন্তু বেশ কিছু ছবি দিলে আরও ভালো লাগতো।

১৪| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৩২

উচ্ছল বলেছেন: ভালো লিখা

১৫| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৫২

জুন বলেছেন: আমাদের সাথে আলাপ হয়েছিল এক ছাতা বিক্রেতার । অনেক টাকা খরচ করে জাহাজ আর পায়ে হেটে অনেক কষ্টে ইতালী পৌছেছিল তার করুন বর্ননা দিচ্ছিল । এখন কলোসিওর সামনে ট্যুরিষ্টদের কাছে ছাতা বিক্রি করে কোনদিন খেতে পায় কোনদিন না খেয়ে থাকা। তার দুঃখের কথা শুনে কলোসিওর মাঝে হাজারো উল্লসিত দর্শকের সামনে হিংস্র পশুর সাথে আমরন যুদ্ধরত গ্ল্যাডিওটারদের রক্তাক্ত দেহ টাই যেন চোখের সামনে ভেসে উঠছিলঁ। তেমনি মরনপন যুদ্ধে নেমেছে যেন আমাদের দেশের হতাশাগ্রস্ত যুবকরা বেকার জীবনের জালা ঘুচাতে গিয়ে।
আপনার লেখায় প্লাস ।
+

১৬| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:০৯

তারেক ফাহিম বলেছেন: পরিবার পরিজনদের সুখের জন্য প্রবাসিরা অনেক করে, কিন্তু কয়জন পরিবার সদস্য তা বুঝে :((

আরও দু-একটি ছবি দিলে ব্লগটি আরও ভালো দেখাতো মনে হচ্ছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.