নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে ভাল মানুষ হিসেবে গড়ে তোল পৃথিবী তোমার জন্য ভাল কিছু নিয়ে অপেক্ষা করছে।তবে ঠিক ততটুকুই তোমাকে সে দিবে যতটুকু তুমি নিজেকে গড়েছ।

পথিক৬৫

আমি খুব সাধারন একজন মানুষ,যে কিনা পৃথিবীর মানুষ গুলোকে হাসতে দেখলেই হাসে,আর কারো কান্না সহ্য করতে পারেন না। তবে অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে ভুল করেন না।

পথিক৬৫ › বিস্তারিত পোস্টঃ

-পুলিশ আংকেলটিও আজ গাড়ির চাপায় মারা গেলেন

০২ রা আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ২:২৫

এই মাত্র আব্বু বাসায় ফোন দিলেন। জানালেন, আব্বুর ব্যাচ ম্যান পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর সগির আংকেল মারা গিয়েছেন।
ছগির আংকেল-কে নিজ কর্মস্থল বান্দরবনে, গত ২ দিন আগে ডিউটি থেকে হেটে হেটে বাসার ফেরার পথে একটি মটর সাইকেল ধাক্কা দেয়। মাথায় আঘাত লেগেছিল। আজ একটু আগে ঢাকায় কোমাতে মারা গিয়েছে। গতরাতে আব্বু তার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে সান্তনা দিয়েছিলেন। কাকী বলেছিল মাত্র মাথা নেড়েছেন প্রথম বারের মত। কাকী ফোনে কাঁদছিলেন। ২ টি সন্তান তার। বেশ তরুন আর চৌকস পুলিশ অফিসার ছিলেন ছগির আংকেল। আগ্রাসী সড়কের শিকার হয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

প্রান, সেটি হোক কোন পুলিশের কিংবা ছাত্রের, সমান মূল্যমানের। আর দেশের একজন নাগরিক হিসেবে এই সড়কের নিরাপত্তা দেয়ার কাজটি দেয়া হয়েছে একটি নির্বাচিত সরকারকে। কিন্তু দেশের আরো অনেক ক্ষেত্রের মত এই ক্ষেত্রের অনেকটাই অচল তারা। (অনেক কিছুতে সচলও আছেন)। যার প্রমান গত ২ দিনে ঢাকার আন্দোলনে পুলিশের সার্জেন্ট থেকে শুরু করে মন্ত্রী অব্দি তাদের অনিয়ম চোখে আঙ্গুল তুলে দেখিয়ে দিয়েছেন ছোট ছোট ছাত্র/ছাত্রীরা।

গতকাল আমি বাসা থেকে সামান্য দূরে আমার একটি গন্তব্যে যাব। একটি বেসরকারী এপস এর মাধ্যমে বাইক ডেকে নিলাম। প্রায় ১ ঘন্টা পরে এসেছিল বাইকটি। বাইকে উঠেই বুঝতে পারলাম ড্রাইভারের হাত খুব কাপছে। পথের মাঝে বেশ কয়েক স্থানে থেমেও ছিল বাইকটি। উনাকে আমি নির্ভয় দিলাম তবে নিজের তার উপর কোন বিশ্বাস ছিল না। যদিও সে আমাকে পৌছে দিয়েছিল।
ফিরে আসার পথে আমি হেটেই আসলাম। সত্যি বলতে সাহস হচ্ছিল না নতুন করে বাইকে উঠার। বেসরকারী সেই এপস কোম্পানী অবশ্যই ড্রাইভিং লাইসেন্স রেখেই তাকে এই দায় দিয়েছেন। তাহলে এবার প্রশ্ন জাগবে যাদের থেকে এই লাইসেন্স টি সে পেয়েছে তারা কি সঠিক বিচার করে তাহলে এটি দিয়েছিল।
আর হা, আমাকে কোন হেলমেটও দেয়া হয় নাই।

বেশ অনেক বছর পরে দেশে এসেছি। এর মাঝে দেশের অনেক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়েছে। অনেক উন্নতির জয়গান। ২ জি থেকে ৪ জি। আর স্যাটেলাইট থেকে শুরু করে মেট্রোরেল, অনেক উন্নতি দেশে ঘটেছে। তবে বিমান বন্দর থেকে বের হয়ে, যেই ঢাকার রাস্তা দেখে গিয়েছিলাম আজ থেকে বেশ কিছু বছর আগে, ফিরে এসে ঠিক সেটাই, হা! একদম ঠিক সেটাই আমি পেয়েছি। কোন সিগন্যাল ছিল না। মানুষ নিজ ইচ্ছে মত রাস্তার এপার ওপার করছিল। ধুলা বালি আর চোখের সামনেই পুলিশের অনিয়ম।
তবে আমি বলছি না যে, সবখানেই এমন। অল্প বৃষ্টিতে পানি জমে যাওয়া থেকে শুরু করে নিষ্কাশনহীন সেই ড্রেন গুলো আজও দেশ ব্যাপি।

দেশের স্যাটেলাইটে যদি বেপরোয়া বাচ্চাদের দেখা যায়, তাহলে এই সব কি দেখা যায় না?

প্রতিদিন সকাল হতেই সড়ক দুর্ঘটনার খবরের সাথে ঘুম ভাঙ্গে এখন। কেউ না কেউ তার আপনজন হারিয়েছেন। আমরা শুনে সেখানে আফসোস করে দায় সেরে ফেলি। কিন্তু হায়দার সাহেবের সেই গানের কথা এখানে মনে পড়ে যায়, "যার চলে যায় সেই বোঝে হায় বিচ্ছেদের কি যন্ত্রনা" ।

ঢাকা সহ দেশের বড় বড় শহর গুলোতে চলমান গাড়ি গুলোর বড় একটা অংশ ফিটনেসহীন। সেদিন পরিচিত একজন ঢাকার রাস্তায় লুকিং গ্লাসহীন গাড়ির ছবি তুলেছিলেন। তারে দেখা গিয়েছে অসংখ্য গাড়ীতে এই অংশটি নেই।

মহাসড়কের কথা বাদই দিলাম। আমার আব্বু আজ আসামি নিয়ে একটি শহর থেকে অন্য আর একটি শহরে যাচ্ছেন এখন। আর আমরা বাসায় বসে শুধু চিন্তাই করে যাচ্ছি। নিরাপদে বাসায় কখন ফিরে আসবেন।
যে সড়ক থেকে নিত্য এই মৃত্যুর খবর আসে। ঘর থেকে বের হতে ভয় হয় সেখানে কি এটাই সাধারন না?
আমরা মানুষের মরে যাওয়ার আগে একটি মৃতুপুরীতে বসবাস করছি বলে মনে হয়। আর এই ভয় কাটানোর জন্য যখন যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া উচিত তখন আমরা পাঠশালা বন্ধ করে দিয়েছি। আমরা আন্দোলনের সৈনিকদের ভয়ও দেখাচ্ছি আর কিছু পুলিশের উলঙ্গ আচরনও সেখানে প্রতিয়মান।

আচ্ছা, আমরা তো অনেক আন্দোলনের কথা ইতিহাসে পড়েছি। সেই ৪৭ থেকে ৫২ আবার ৭১ কিংবা ৯০। ছাত্রদের ভুমিকা কি ছিল সেখানে, সেটাও আমরা জানি। আমরা কেন সেই ইতিহাসের শিক্ষাকে শুধু মাত্র পরিক্ষার পাশের জন্য মনে করি। কেন সেখানে যারা বীর ছিলেন তাদের নতুন প্রজন্মকে বীর হিসেবে মেনে না নিয়ে একটি রাজনৈতিক দলের সাথে মিলিয়ে যৌক্তিক এই আন্দোলনকে কলঙ্কিত করতে গিয়ে বারবার বিশ্বের বুকে নিজেদের ছোট করছি।
আমাদেরও সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকাতে ইচ্ছে হয়।

অফিস থেকে বার বার নক করছে। তোমাদের ঢাকাতে কি হচ্ছে? তুমি দ্রুত কভারেজ দিচ্ছ না কেন? কিন্তু আমি বসে বসে চিন্তা করি আমি কিভাবে লিখব আমার দেশে স্কুলের ছেলেদের বাসের নিজে পিষে মারা হচ্ছে। আর তার প্রতিবাদের যারা রাস্তায় আছে তাদের প্রতিও হচ্ছে অনেক নির্যাতন? আমার দেশ যে ছোট হয়ে যাবে।

ছগির আংকেল চলে গিয়েছেন। এই দিনেই অজানা অনেকের আপনজন জীবন হারিয়েছেন।আমাদের বিবেক বাবু ফিরবে কবে?

আমাদের দেশে একটি নির্বাচিত সরকার আছেন। মায়ের মত একজন প্রধানমন্ত্রী আছেন। আমরা তবুও কেন অনিরাপদ। মা কি তবে তার সৎ সন্তানদের আগলে রাখতে গিয়ে নিজ সন্তানকে কোরবানী দিচ্ছেন?
#নিরাপদসড়কচাই
#শহরঅচলহোক

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ২:৫৬

আন্নীআক্তার৭৮৬ বলেছেন: দারুন বলেছেন।

২| ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ২:৫৬

ভ্রমরের ডানা বলেছেন: শহর অচল হোক!



বাহ কি আশা! এই চিন্তা নিয়ে দেশকে বহুত কিছু দিতে পারবেন!

০২ রা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:১৫

পথিক৬৫ বলেছেন: আপনার ভাল চিন্তা গুলো আজ অব্দি দিতে পেরেছেন কি?

৩| ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ২:৫৬

রাকু হাসান বলেছেন: এভাবে সবাই ভোক্তভূগি হব আমরা ,নিরাপদ সড়ক উন্নয়নশীল বাংলাদেশের পুরোনো দাবি , এমন একটি সকাল হোক যে দিন কোন মৃত্যু সংবাদ পড়বো না ,দেখবো ..............না

৪| ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৩:০৫

আসাদুজ্জামান জুয়েল বলেছেন: রেহাই পাবে না কেউই। নিয়ন্ত্রণ এখনই করতে হবে।

৫| ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: সড়ক পরিবহণ সংক্রান্ত অনিয়ম ও দুর্নীতিগুলো দূর করতে না পারলে শুধু ছগীর আংকেল কেন, বিআরটিএ'র আংকেলদের এবং হাসির রাজা শাজাহান খান আংকেলদের পরিবারেরও কেউ না কেউ একদিন চক্রতলে পিষ্ট হয়ে এ ধরা থেকে পটল তুলতে পারেন!

৬| ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৯

চোরাবালি- বলেছেন: শুধু মাত্র সড়ক অবস্থার হাজার হাজার মানুষ মারা গেলেও সে দিকে কারো ভ্রুক্ষেপ নাই।

৭| ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৩:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: এমন কোনো মানুষ আছে যে নিরাপদ সড়ক চায় না?

৮| ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৩

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আপনার ছগির আঙ্কেলের মৃত্যুতে আমি দুঃখিত নই।

৯| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৫

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
পুলিশ হোক আর কেরানী হোক সবাই তো মানুষ। মানুষ , মানুষ, মানুষ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.