নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে ভাল মানুষ হিসেবে গড়ে তোল পৃথিবী তোমার জন্য ভাল কিছু নিয়ে অপেক্ষা করছে।তবে ঠিক ততটুকুই তোমাকে সে দিবে যতটুকু তুমি নিজেকে গড়েছ।

পথিক৬৫

আমি খুব সাধারন একজন মানুষ,যে কিনা পৃথিবীর মানুষ গুলোকে হাসতে দেখলেই হাসে,আর কারো কান্না সহ্য করতে পারেন না। তবে অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে ভুল করেন না।

পথিক৬৫ › বিস্তারিত পোস্টঃ

দেশে ফেরা- প্রথমদিনের ট্রেন যাত্রাঃ ১

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৪৮

রাশিয়া থেকে ফিরেছিলাম জুলাই মাসের ১৭ তারিখ। রাতে ইস্তানবুলে নেমে আবার পরের দিন বিকেলে বাংলাদেশের যাওয়ার জন্য বিমানে চেপে বসি। প্রায় ৪ বছর পর দেশে যাচ্ছিলাম।

এই ৪ বছরে ১৬/১৭ টি দেশে সফর হয়েছিল। তবে বাংলাদেশে যাওয়া হয় নাই।
খুব স্বাভাবিক ভাবেই দেশের প্রতি টান আর আবেগের যায়গাটি একটু বেশীই ছিল। কাতারের দোহাতে মধ্য বিরতি সহ প্রায় ১৮ ঘন্টা পরে, ১৯ তারিখ বিকেল ৫ঃ২০ মিনিটে বাংলাদেশে নেমেছিলাম।

বিমানবন্দরে এসেছিল আবু তারেক আর তার সাথে আরো ২ জন পরিচিতজন। যেহেতু আমাদের বাসা এখন চট্টগ্রামে, তাই আগেই ট্রেনের টিকেট করে রেখেছিলাম। রাত ৯ঃ৩০, বিমানবন্দর ষ্টেশন থেকে মহানগর এক্সপ্রেস এ উঠে প্রথমবারের মত আমি চট্টগ্রাম যাচ্ছি। আগেই বলে রাখি, আপনাদের অনেকের মনে থাকবে যে ১৯ জুলাই বাংলাদেশে কি পরিমান গরম ছিল। শুনেছিলাম সেদিন নাকি বাংলাদেশে বছরের সব থেকে বেশী গরম হয়েছিল।
শীতের দেশ থেকে গিয়ে হঠাৎ এত গরম মানিয়ে নেয়াটা একটু কঠিনই ছিল।

ট্রেনে একটি এসি টিকেট করেছিলাম, আরো বেশ আগে। কেবিন পাই নাই। " ঙ" বগিতে সিট ছিল আমার। ট্রেনে উঠা সেতো এক মহা যুদ্ধ। আমার হাতে ৩ টা ব্যাগ। একটি প্রায় ৪০ কেজি। অন্য দুটি ১০ আর ৭ কেজি প্রায়। আমি লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। পেছন থেকে আবু তারেক এসে বলল, "তুমি এভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে আজ যেতে পারবে না। দেখ না কিভাবে মারামারি করে উঠছে মানুষ"।
আমি পুলিশের সাহায্য চাইলাম। বেচারা সাহায্য করেছিল। অনেক কষ্টে লাগেজ গুলো উঠিয়ে নিলাম। কিন্তু এমা, এখানে তো বড় লাগেজ রাখার কোন যায়গাই নেই।
বলে রাখি আমি এর আগে ট্রেনে দূরপাল্লার যাত্রা করি নাই। যতটুকু করেছি সেই বিমান বন্দর থেকে কমলাপুর আর সেখান থেকে গেন্ডারিয়া। লাগেজ কি করব সেটা ভেবে পাচ্ছিলাম না। একজন সিটের মাঝে সরু গলি পথেই এটে দিলেন বড়টি। আর বাকিগুলো মাথার উপরে।

এসি সিট। আমার জন্য একটি সিটও বরাদ্দ থাকার কথা। কিন্তু না। ফাকা পেলাম না একটিও। সিট এবং মানুষ মিলিয়ে পুরো বগিতে আঙ্গুল ফেলার যায়গা নেই। দাঁড়ানো মানুষেরা নাকি ঢাকার আশে পাশের জেলায় নেমে যাবে। আমার গরম আর এই মানুষের ভীরে নিঃশ্বাস নিতে খুব কষ্ট হয়েছিল সেদিন। এসি বগিতে, এসি নামক কিছুর বাতাস ছিল না। মাথার উপরে কিছু ফ্যান গড-গড সব ভয়ানক আওয়াজ করে যাচ্ছিলেন। অনেক কষ্টে সিট খুজে পেলাম। কিন্তু কাউকে উঠিয়ে দিয়ে আমি বসব সেটা কেন যেন পারছিলাম না। তাই তার সামনেই দাঁড়িয়ে রইলাম। উনি পরের একটি ষ্টেশনে নেমে গেলেন। আমি কোন ভাবে চেপে বললাম।

মাথায় উপরেই ফ্যান ছিল। পেছন থেকে একজন মানুষ কাঁধে টোকা দিল। "আমার বাচ্চাটা খুব ছোট। গরমে অসুস্থ হইয়ে যাচ্ছে আপনি কি আপনার সিট আমাকে দিতে পারেন আর আপনি আমার এখানে আসেন?"
আচ্ছা আসেন।
আমার মনে আছে আমার চারপাশে সব মানুষের ভীড় ছিল। আমি সারারাত ঘেমেছিলাম। নিজেকে চিড়িয়া মনে হচ্ছিল।

কয়েক ষ্টেশন পরে কিছু ভীড় কমেছিল। রেল পুলিশ এসে বার বার আমাদের বগি থেকে লোক বের করে দিচ্ছিল। কিন্তু কে কার কথা শুনে। বিশ্বাস করেন মেজেতে লেটকে পান খাওয়া থেকে শুরু করে সারা রাত দাঁড়িয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম অব্দি যাওয়া মানুষ দেখেছি আমি সেদিন।

আমার বাবাও সেদিন আমার জন্য সারারাত চট্টগ্রাম পাহাড়তলী ষ্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বড় ছেলে আসছেন। ৪ বছর পরে। ভোর ৫ টায় ট্রেন থামল। নামতেও কষ্ট কম ছিল না। আব্বু সারা একটা হাফ হাতের গেঞ্জি আর ট্রাউজার পরে দাঁড়িয়ে ছিল। আগের থেকে অনেক শুকিয়ে গিয়েছে। রাতে ঘুমাতে পারেন নাই। চোখ দুটি লাল টকটক করছিল। দীর্ঘ ৪ বছর বাবাকে বুকে জড়িয়ে নেয়ার যে আবেগ লালন করেছিলাম সেটা পূর্ন হল।
বাপ-বেটা বাসায় চলে গেলাম।
(চলবে)

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:১০

পাঠক০০৭ বলেছেন: সুন্দর লেখা! রাশিয়ার আপনার লেখাগুলো বেশ ভালো ছিলো। দুটো প্রশ্ন!
আপনি কি চট্রগ্রামের বাসিন্দা? আর আংকেল কেন সারারাত স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিলেন? ৯ঃ৩০ এর ট্রেন সাধারনত কখন পৌঁছায়??

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৩৫

পথিক৬৫ বলেছেন: না। আমরা সেখানের স্থানীয় না। তবে আমার আব্বু সরকারী চাকুরীজীবি। তাই এখান পরিবার সেখানে থাকে। আর মুলত রেল কর্তৃপক্ষ বলেছিল রাত ২;৩০ এ গিয়ে থামবে। তাই আমিও উনাকে সেভাবে জানিয়েছিলাম।

২| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:১৪

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: বাহা! বেশ ভালো লাগলো চার বছর পরে বাড়ি ফেরার অভিজ্ঞতা। আব্বুকে বুকে জড়িয়ে যেন সমস্ত কষ্ট ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গেলো। পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।


শুভকামনা জানবেন।


৩| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:২২

সোনালী ঈগল২৭৪ বলেছেন: ট্রেনের এই ছবি অনেক দেশের নানুষের কাছে এখন বাংলাদেশের ট্রেডমার্ক হিসেবে বিবেচিত

৪| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫১

মেহেদী হাসান হাসিব বলেছেন: পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।

৫| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:০২

খায়রুল আহসান বলেছেন: এত কষ্ট করেও মেজাজ ঠিক রাখতে পেরেছিলেন, এটা জেনে প্রীত হ'লাম।

৬| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:৩৬

আতোয়ার রহমান বাংলা বলেছেন: আমি ও পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।

৭| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৪৫

বাকপ্রবাস বলেছেন: পরের পর্বের অপেক্ষায়। চট্টগ্রাম বাড়ি, রেলষ্টেশনের পাশে মাদার বাড়ি বড় বোনের শ্বশুর বাড়ি, কতোবার ষ্টেশন থেকে হেঁটেই চলে গেলাম বড় আপার বাসায়। লেখা পড়ে চোখে ভাসছে ষ্টেশনটা

৮| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৪

আল ইফরান বলেছেন: বাংলাদেশে স্বাগতম, পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ।

৯| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৩১

সনেট কবি বলেছেন: সুন্দর লেখা

১০| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন: চলুক----

১১| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৩

করুণাধারা বলেছেন: ভালো লাগলো। আশাকরি তাড়াতাড়ি পরের পর্ব দেবেন।

১২| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:২৯

কে ত ন বলেছেন: চাপাবাজি কম করেন। মহানগর এক্সপ্রেস ছাড়ে রাত ৯ টায়, সাড়ে নয়টায় না। এই ট্রেনে কখনোই এত বেশি ভীড় হয়না। সবচেয়ে বেশি ভীড় হয় প্রভাতী আর তূর্ণা ট্রেনে। মহানগরের এসি সিটে কোন ফ্যানের ব্যবস্থা নেই - নন এসি শোভনে আছে। মহানগর এক্সপ্রেস পাহাড়তলী স্টেশনে জীবনেও থামেনা। আপনার আব্বা কি সেটা জানেনা? থামলেও ভোর সাড়ে চারটার আগে কোনভাবেই পৌঁছানো সম্ভব না।

মহানগর এক্সপ্রেস একটা ভালো ট্রেন। এসি বগিতে সাধারণত ১৮ থেকে ২২ ডিগ্রি তাপমাত্রা মেন্টেন করা হয়। গরমে ঘামলে এটেন্ডদেরকে বললেই তারা ব্যবস্থা করে দেয়। আমার সাধারণত শীত শীত করলে এদের ডেকে বলি একটু কমিয়ে দিতে। মহানগর ট্রেনের এসি বগিতে কেউ গরমে ঘেমেছে - এমনটা জীবনেও শুনিনি।

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৮

পথিক৬৫ বলেছেন: ১। আমি বিমানবন্দর থেকে উঠেছিলাম। এটা বোধায় মিস করে গিয়েছেন।
২।আগে আমি এই মহানগর কেন কোন দূর পাল্লার ট্রেনেই উঠি নাই। তবে শুনেছি সেদিন বৃহস্পতিবার ছিল তাই আশে পাশের এলাকার মানুষ বেশী ছিল।
৩।আমারটা নন এসি ছিল না। আর ফ্যান ছিল এটাই সত্য। পুলিশ এসে বার বার বের করে দিচ্ছিল যারা দাঁড়িয়ে ছিল তাদের। কিন্তু পারেন নাই। আপনি এটা ভাল বলেছেন আর আমি শুনেছি এটা নাকি সব থেকে বাজে ট্রেন এই লাইনের।
৪। আমাকে বলা হইয়েছিল ২ঃ৩০ থেকে ৩ টায় পৌছে যাবে।
৫।আমি না সেদিন আরো বহু মানুষ ঘেমেছিল।
৬।আর হা, পাড়ারতলীই থেমেছিল।

শেষকথা, আপনার সাথে চাপা মারার পরে আপনি আমাকে কত টাকা দিয়েছেন?

১৩| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৫২

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: এসি কেবিনে সাধারণ যাত্রীরা উঠার কথা না। তবে অন্য বগি গুলোতে স্ট্যান্ডিং-এর নামে অনেক যাত্রী মুখের উপর ঝুলে থাকে।
সিট না থাকলেও সবাইকে ট্রেনেই যেতে হবে! বিরক্তিকর লাগে পাবলিকের এই মানসিকতাকে।
আপনি বিদেশ থেকে দেশে যাচ্ছেন। আপনাকে এই কুবুদ্ধি কে দিল ট্রেনে যাওয়ার? আপনি হয় কানেক্টিং ফ্লাইটে চট্টগ্রাম যেতে পারতেন অথবা ঢাকা থেকেই লাক্সারী কোচে আরামে চট্টগ্রাম যেতে পারতেন। ট্রেনে যাওয়ার চিন্তা করা বোকামী...

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ২:১১

পথিক৬৫ বলেছেন: শখে ধরেছিল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.