নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক এবং নাট্য পরিচালক সহ - এই বহুমুখী পেশার সাথে জড়িত থাকলেও, আমার মূল পরিচয় একজন গল্পকার।

মি. বিকেল

আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক এবং নাট্য পরিচালক সহ - এই বহুমুখী পেশার সাথে জড়িত থাকলেও, আমার মূল পরিচয় একজন গল্পকার।

মি. বিকেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পটা লেখা হয়নি

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:০৪




রাত বারোটা।
মাথা নিচু করে বসে আছে সূর্য্য।দেখে মনে হয় আজ অতীতের কোন এক খারাপ স্মৃতির সাথে ধাক্কা খেয়ে বেচারার এই অবস্থা হয়েছে।চোখটা আস্তে আস্তে নুয়ে আসছে।হয়তো কিছু ভুলভাল খেয়ে নিয়েছে।গলাটা ধরে আসছে, একটা নিকট কালো অন্ধকার যেন ওর দেহটাকে আকড়ে ধরছে আস্তে আস্তে।বেশ ভয়ংকর ভাবে কুঁকড়ে যাচ্ছে পুরো শরীরটা।মনে হয়, শেষের অধ্যায় টানছে, এই ছোট্ট জীবন গল্পের।একসময় সে উঠে দাঁড়ালো আর এরপর টলতে টলতে ব্যস্ত শহরের ওভার ব্রীজের সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে আরম্ভ করলো।অতঃপর কোনরকম ভিড় ঠেলে ফুটপাত ধরে সামনে এগিয়ে চলছে।একটা শাখা রাস্তায় এসে গেছে বলে ওর মনে হচ্ছে।হঠাৎ শরীরের ভিতর থেকে সূর্য্য কে যেন আচমকা কেউ ধাক্কা দিলো ।ধড়াম্ করে পরে গেলো ফুটপাতে।সজ্ঞান! না কি অজ্ঞান! কিছুই বোঝা যাচ্ছে না।মিনিট পাঁচেক পর নিজেকে একবার ফুটপাত থেকে উপরে তুলে ধরার চেষ্টা শুরু করলো ।বারবার চেষ্টা করেও কোন গতি করতে পারছে না।পাশের বিল্ডিঙ থেকে হালকা আলো এসে পড়েছে ঠিক যেন ওর মাথার সামনে।সেখানে একটি সাদা চিরকুট আলোতে জ্বলজ্বল করছে।লেখা আছে,

“রাস্তা নং- ২২২
বাড়ি নং- ৬৪
টেলিফোন নং- +০২৮৭৩৫৭৭৮৪৯”

এরপর সূর্য্যের হাতে একটি মুঠোফোন দেখতে পাওয়া গেলো।কাঁপা-কাঁপা হাতে নম্বরগুলি স্পর্শ করছে।একটু পরে মনে হয় মুঠোফোনে একটা আওয়াজ ভেসে আসলো।কমল নারীকন্ঠ।
“কে বলছেন?.... হ্যালো?.....হ্যালো?.....কথা বলছেন না যে!”

তিনদিন পর, সকালবেলা...
ঘুম থেকে চোখটা মেলতেই বেশ উঁচু সিলিং এর দিকে চোখ গেলো ওর।একটি ক্ষুদ্র মাকড়সা আপ্রাণ পরিশ্রম করছে তার জাল বুনতে।চারদিকে তাকাতেই গোছানো জিনিসপত্রে চোখে পড়লো।ছোট্ট একটি রুম, দামি ওয়ার ড্রপ, ফ্রিজ, সোফা আর একটি চেয়ার ও একটি টেবিল।টেবিলের উপর একটি মোটা বই।বইটিতে লেভেলিং করা P.S. I LOVE YOU নামে।সবকিছু বেশ অভিজাত টাইপের।সূর্য্য একটুখানি হড়কিয়ে গেলো।কোথায় সে? কি করছে সে এখানে? একসময় ভাবতে লাগলো রাতেরবেলা অজ্ঞান হয়ে যাবার সুফল হয়তো! কেউ করুণা করে টেনে এনে এখানে শুয়ে রেখেছ।তাতে অবশ্য সূর্য্যর কোন আপত্তি নেই বা কোন ভালোলাগাও নেই।চলছিলোই তো, যেমন-তেমন।চলে যেত.....
সেসব গল্প পরে করা যাবে।সূর্য্যের মতে আপাতত একটা সিগারেট দরকার।খুব দরকার।ওকে অবশ্য তারজন্যে বেশি হতাশ হতে হলো না।বালিশের একপাশে একটি লাইটার আর এক শলাকা সিগারেট খুঁজে পেলো।মনে হতে লাগলো, গৃহকর্তা/গৃহকর্ত্রী বেশ সমঝদার লোক।অনেক বোঝে।

“একমিনিট! একমিনিট! ঘুম থেকে উঠেই সিগারেট ধরিয়েছেন? বাহ্!..... দারুণ দারুণ।আমি কিন্তু আপনাকে একটির বেশি সিগারেট খেতে দিবো না।সত্যি বলছি! আমার কিন্তু তাতে ভীষণ আপত্তি থাকবে।অবশ্য রাগ করবোনা, সেটার অধিকার নেই আমার।আর এক কাজ করুন, অনুগ্রহ করে ফ্রেশ হয়ে নিন।সকালের নাস্তাটা রেডি করেছি।তাছাড়া একটু পরে আমাকে আবার কাজে যেতে হবে।আপনি চাইলে একসাথে খেতে পারতাম।আসুন না?”–হঠাৎ রুমে প্রবেশ করেই মৃদ হাসি মুখে কথাগুলো বলছিলো একজন অপরিচিতা।

কথাগুলো বলেই মহিলাটি চলে গেলো।যতদূর অনুমান করা যায় মহিলাটির বয়েস ত্রিশ ছুঁইছুঁই হবে।চোখে মুখে বয়সের হালকা ছাপ পড়েছে।কিন্তু সুর্য্য কেন এখানে সে নিজেও বুঝতে পারছেনা।আর মহিলাটির এমন বকবক ওর রীতিমত বিরুক্ত লাগছিলো।একসময় তো বিরুক্ত হয়ে একটা স্বগতোক্তিও করে ফেললো,

“কে হে তুমি! পারু নাকি? আমায় দেবদাস ভেবে কি সব ভুলভাল বকছো!”

কিন্তু একটা কৃতজ্ঞতাবোধ তো থাকে।তাই ভেবে সূর্য্য বিছানা থেকে উঠে বাথরুমে গেলো ফ্রেশ হতে।শরীরের বিভিন্ন জায়গার গভীর ব্যাথা অনুভব হলো।মনে হচ্ছিলো, বোঝাই করা মালগাড়ি মালের ভর সহ্য না করতে পেরে ক্যাঁচক্যাঁচ করছে।অনেক কষ্ট করে ওয়ার ড্রপ থেকে একটা শার্ট বের করে পড়লো।এরপর পাশের রুমে গেলো সকালের নাস্তা করতে।

“আরেহ্! আপনি! বসুন বসুন।শার্টটা আপনাকে বেশ মানিয়েছে।”
“ধন্যবাদ।কিন্তু এটা কার শার্ট ?”
“ওসব বাদ দিন, শরীরটা কেমন লাগছে?”
“ইয়ে মানে...আসলে...”
“যখন একা একা উঠে সব করতে পারছেন তাহলে ধরে নিচ্ছি কিছুটা উন্নতি অবশ্যই হয়েছে।আচ্ছা! আপনি কি মাঝের ঝোল পছন্দ করেন? আপনার জন্য বানিয়েছি, স্পেশ্যাল।না করবেন না, প্লিজ?”
“কিন্তু আমার কিছু জানার ছিলো? আমি এখানে কেন? কীভাবেই বা এখানে আসলাম।”
“সেসব লম্বা কাহিনী।আমার আসলে এখুনি বের হতে হবে।সন্ধ্যায় ফিরে আপনার সাথে কথা হবে, ক্যামন? আপনার অল্প কিছু ঋণ ছিলো।কি যেন ব্যাংকের নাম! মনে পড়েছে “সেফ সেভিং ব্যাংক”।কিছু মনে করবেন না, আমি ঐ টাকাটা দিয়ে দিয়েছি।”
“মানে!”
“সব রাগ ঝাড়বেন, তবে এখন নয়।সন্ধ্যায়।চললাম...”

সন্ধ্যাবেলা
একপাশে ওয়াইনের বোতল আর সাথে দামী ব্রান্ডের সিগারেট, একা একা এই সন্ধ্যায় ছাদে বসে ভালোই সময় কাটছে সূর্য্যের।একটু পরেই আবির্ভাব ঘটলো গৃহকর্ত্রীর।আসতে করে মহিলাটি সূর্য্যের পাশে বসলেন।সেই পাঁচ মিনিটের নীরবতা সেদিন সূর্য্যের কাছে কয়েক বছর বলে মনে হলো।ব্যাপারটা সত্যিই এতটাই ভারি এবং গম্ভীর ছিলো।তাই বাধ্য হয়ে কথা শুরু করলো সূর্য্য।

“অল্প কিছু ঋণ! সকাল থেকে এটা ভাবছি আর হাসছি।দশলাখ টাকা, বুঝলেন?”
“তো?”
“আপনার পরিচয় দিলেন না?”
“এত তাড়াহুড়ো কেন?.....সোমিত্রা রায়....ডিভোর্সি.....একজন ব্যাংকার।”
“এমন ভাবে বলছেন যে, ডিভোর্সি হলে ব্যাংকার হওয়া চলে না!”
(আবার খানিকখন নীরবতা চললো)
“প্রেসক্রিপশনটা দেখেছেন? আপনার নাম নীরব লিখে দিয়েছি আর বয়েসটা পঁচিশ।ঠিকঠাক তো?
"বয়েসটা ঠিক আছে কিন্তু নামটা নীরব কেন?"
“সেটা আপনার চেহারা দেখলেই বোঝা যায়।তা এখন কি করবেন ভাবছেন? অবশ্য আপনার আপত্তি না থাকলে আমাদের ব্যাংকে জয়েন করতে পারেন।আমি আমাদের ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের সাথে আজ আপনার ব্যাপারে কথা বললাম।একটা পোস্ট খালি আছে।তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন বলে আমায় আশ্বাসও দিয়েছেন।”
“বয়েস কম বলে বুঝি আমায় ঋণী করছেন? হা...হা...হা...”
“আপনি আমার কথা রাখলেন কোথায় যে, আপনাকে কোন সূত্রে ফেলে আটকাবো।ঠোঁটে তো এখনো সিগারেট! এর সাথে ওয়াইনটা যোগ হয়েছে।”
“হাসপাতালে ক’দিন ছিলাম?”
“এক্স-রে করার পর ফুসফুসে তিনটে দাগ পাওয়া গেছে।আপনি তিনদিন হাসপাতালেই ছিলেন।আর এত দুশ্চিন্তা করলে সাইকিয়াট্রিক ব্রেক-ডাউন হওয়া স্বাভাবিক ঘটনা।”

এরপর একটা চিরকুট সোমিত্রা সূর্য্যের হাতে মুড়ে দিয়ে চলে গেলেন।চিরকুটটা খুলতেই সূর্য্য দেখতে পেলো লেখা আছে,

“রাস্তা নং- ২২২
বাড়ি নং- ৬৪
টেলিফোন নং- +০২৮৭৩৫৭৭৮৪৯”

দশ বছর পর.....

“মা...মা...বাবা কি আজও সকাল-সকাল ঘুম থেকে উঠবেন না?”
“উঠবে বাবা, অবশ্যই একদিন উঠবে।আর সেদিন অনেক আনন্দ করে তোকে স্কুলেও রেখে আসবে।”
“আচ্ছা মা! বাবা এমন কেন? তুমি কত্ত ভালো।”
“আসলে জানো কি আব্বা? কিছু মানুষ অন্যর সাহায্য ছাড়া চলতে পারে না আর কিছু মানুষ অন্যকে সাহায্য করা ছাড়া চলতে পারে না।চল, আজ আমরা স্কুলে না গিয়ে পার্কে ঘুরে বেড়াবো...”
“ইয়াহু...ইয়াহু..”
“ইশশ্...আস্তে...শব্দ কোরো না।তোমার বাবার ঘুম ভেঙ্গে যাবে”

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:০০

সৈয়দ ইসলাম বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন।

প্লাস +++

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:৩০

মি. বিকেল বলেছেন: ধৈর্য্য ধরে গল্পটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আর আপনার দেয়া প্লাস গুলো হৃদয়ে জমা করে রাখলাম☺।

২| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: গল্পটা ভালো লিখেছেন।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১২

মি. বিকেল বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:২০

সুমন কর বলেছেন: ভালো লাগল।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:২৬

মি. বিকেল বলেছেন: ধন্যবাদ।

৪| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:১৭

খাঁজা বাবা বলেছেন: দুঃখিত, আমি কিছুই বুঝলাম না :(

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৫

মি. বিকেল বলেছেন: এজন্য আমিও দুঃখিত, কারণ এতে আমার কোন হাত নেই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.