নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মেহেদি হাসান, মি. বিকেল নামে পরিচিত। আমি একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ও অ্যাপ ডেভেলপার, সম্পাদক, উপস্থাপক, রক্তদাতা, এবং নাট্য পরিচালক। মাইক্রোসফটে ডেভেলপার হিসেবে কর্মরত এবং গল্প বলা আমার প্রধান পরিচয়।

মি. বিকেল

আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নাম মি. বিকেল।

মি. বিকেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

খোদা হাফেয বনাম আল্লাহ্ হাফেয(Discourse Analysis)

৩০ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:২৩



আস-সালামু আলাইকুম

"খোদা" শব্দটি কুর্দি শব্দ। এটা ফার্সি অভিবাদন "খুদা হাফিয" থেকে এসেছে যা ইরান, আফগানিস্তান, ভারতবর্ষ এর মুসলিমরা ও মাজুসিরা ব্যবহার করে থাকে। হাফিয যদিও আরবী মূল। এই অভিবাদন কিন্তু অগ্নিপূজারী পার্সিরাও ব্যবহার করে আর খুদা হলো পার্সি ধর্মাবলম্বীদের সর্বোচ্চ দেবতা আহুর মাজদার এর সংক্ষিপ্ত নাম। এমনকি বর্তমানেও মাজুসীরা (পার্সি) এটি (খুদা হাফিয) ব্যবহার করে।

এখন ইসলামে দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার হয়ে আসা এই শব্দটি বর্তমানে এসে ধাক্কা খাচ্ছে। "খোদা" মানে তো "আল্লাহ্" বুঝাই! তাহলে আবার সমস্যা কোথায়! মিটে গেলো; থাকলো না কোনো ঝঁকি বা ঝাপটা।

"দীর্ঘ পঁচিশ বছর ধরে বাংলাদেশে "খোদা হাফেজ ব্যবহৃত হচ্ছে।"
সূত্রঃ DW বাংলা

এটা DW বাংলা কেন বললেন? বা কোন উক্তিটির পৃষ্ঠে বললেন?

আসুন, দেখে নেওয়া যাক,

টিভি চ্যানেল ডিবিসির এক আলোচনা অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিয়া রহমান বলেন, "আগে আমরা 'স্লামালেকুম' বলতাম... এখন যেভাবে স্ট্রেস দিয়ে 'আসসালামু আলাইকুম' বলে এটা এই পুরো বিএনপি-জামাত মাসলার মধ্যে শেখানো হয়েছে। কিংবা 'আল্লাহ্ হাফেয'.... যে 'খোদা হাফেয' আমরা বলতাম খুব সহজে, এটা আল্লাহ্ হাফেয... এগুলো দিয়ে কিন্তু একটা ডিসকোর্স তৈরি করা হয়েছে।"

স্যার কী ভেবে এসব বলেছেন আমি জানিনা। আমি সন্মানের সাথে উনার সাথে দ্বিমত পোষণ করছি। এবং একই সাথে উনার উপর করা মামলার প্রতি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এতে বাক-স্বাধীনতা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। উনি কি মানেন বা মানেন না এটা উনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রে "আদাব" ব্যবহার করি। কারণ এটা আমি মানি। এবং এরচেয়ে ভালো ডিসকোর্স আমি দুই সম্প্রদায়ের মেলবন্ধনে আর খুঁজে পাইনি।

তবে এই ধরণের ডিসকোর্স রাতারাতি পরিবর্তন হয়নি তার জন্য লম্বা সময়ের প্রয়োজন পড়েছে বলে আমার কাছে মনে হয়।

জরুরী এই নয় যে, ২৫ বছর ধরে যে মুসলিম কমিউনিটি ভেড়া ছিলো তাঁরা আরো ২৫ বা চিরকাল ভেড়া হিসেবেই নিজেদের জানান দিবে। ধর্মীয় জ্ঞান যেটুকু আছে সেখান থেকে অকাট্য দলিল দিতে পারি যে, "খোদা" বলা শিরক(মহান আল্লাহ্'র সহিত কাউকে অংশীদার বানানো)।

আল্লাহ ছাড়াও উনার ৯৯টি গুণবাচক নাম রয়েছে। আপনি যদি ইসলাম ধর্ম মানতেই যান তাহলে এই একশত নামের মধ্যেই তাঁকে ডাকতে হবে। এর বাহিরে "গড", "ঈশ্বর" নামেও তাঁকে ডাকা যাবে না।

দলিল সমূহঃ

১. হযরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যখন তোমাদের কেউ কোনো মজলিসে পৌঁছবে তখন সালাম দিবে। যদি বসতে চায় বসে পড়বে। এরপর যখন মজলিস ত্যাগ করবে তখনও সালাম দিবে। কারণ প্রথম সালাম দ্বিতীয় সালাম অপেক্ষা অধিক গুরুত্বপূর্ণ নয়। অর্থাৎ উভয়টির গুরুত্ব সমান। -জামে তিরমিযী, হাদীস ২৭০৬; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৫২০৮

২. আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কাউকে বিদায় দিতেন তখন তার হাত ধরতেন। অতঃপর ঐ ব্যক্তি হাত টেনে না নেওয়া পর্যন্ত তিনি তার হাত ছাড়তেন না। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৪৪২; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৪/৪৯১

৩. (সুরা বনী-ইসরাঈল ১৭:১১০) - আল্লাহ্ বলে আহ্বান কর কিংবা রহমান বলে, যে নামেই আহ্বান কর না কেন, সব সুন্দর নাম তাঁরই।

আল্লাহ পবিত্র কুরআনে এই আয়াত দিয়ে ওই ৯৯ টি নাম ধরে ডাকার কথা বুঝিয়েছেন। গড, ঈশ্বর বা খোদা নয়। ধন্যবাদ।

সুতরাং বিদায়ের সময়ও ইসলামের আদর্শ এবং সুন্নত হল সালাম দেয়া। তাই সালামের স্হলে বা এর বিকল্প হিসাবে "খোদা হাফেয" বা "আল্লাহ হাফেয" বা এ জাতীয় কোন কিছু বলা যাবে না। আপনি যখন "আল্লাহ্ হাফেয" বলছেন তখনও "খোদা বা খুদা হাফেয" শব্দগুচ্ছের আলোকে বলছেন। আবার যেহেতু খোদা শব্দটির বহুবচন আছে তাই এটা সাইড করলেও "আল্লাহ্ হাফেয" ফরম্যাটও সহি শুদ্ধ হলো না। উল্টো নব্য বিদায়াতের দিকে এগুনো হলো। তাই "খোদা হাফেয" এবং "আল্লাহ্ হাফেয" শব্দগুচ্ছ বাতিল করা যায় নিঃসন্দেহে।

কিন্তু এই ডিসকোর্স এত বড় মাপকাঠি হয়তো নয়। অন্তত এটা প্রমাণ করার জন্য যে, আপনি কতবড় মুমিন?

ছোটখাটো অসংখ্য ভুল আমাদের দ্বারা প্রতিনিয়ত হচ্ছে। যদি এসব নিয়েই আমরা একে অপরের সাথে লেগে পড়ি তাহলে মনে হয় ইসলামকেই আমরা এখনো চিনতে পারিনি। ইসলাম ধর্মকে ফ্লেক্সিবল মনে করে আসা এই আমি বিপদে পড়ে যাই এসব ডিসকোর্স দেখে।

আমি বিশ্বাস করি, মীমাংসার সময় হুদাইবিয়ার ঐতিহাসিক চুক্তি যে মহানবী(সাঃ) কে চিত্রায়িত করে সেই ইসলাম কে। মীমাংসা ও সম্প্রীতি চাই , দ্বন্দ্ব নয়।

আল্লাহ্ হাফেয

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৩১

চাঁদগাজী বলেছেন:


শুভদিন, শুভসন্ধ্যা, আবার দেখা হবে; এটাই আমাদের ভাষা, এটই আমাদের সংস্কৃতি।

২| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৫৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: খোদা বা খুদার ব্যুৎপত্তিগত অন্য অর্থ থাকতে পারে, যেমন সব ভাষার সব শব্দেরই আছে। কিন্তু কালের বিবর্তনে প্রতিটা শব্দেরই অর্থ পরিবর্তিত ও বিবর্তিত হয়। তেমনি, খোদা/খুদা বলতে আমরা মহাশক্তিমান, এক ও অদ্বিতীয় 'আল্লাহ'কেই বুঝিয়ে থাকতাম, আহুর মাজদারকে নয়।

অন্যদিকে, যদি 'আল্লাহ' শব্দটির কথা বলেন, তাহলে এই শব্দটিরও অনেক পুরোনো ইতিহাস আছে। এই শব্দটা মুসলিমরা যে অর্থে ব্যবহার করেন, অন্য এমন কিছু ধর্ম বা গোত্র আছে, যারা অন্য অর্থে ব্যবহার করেন। ইসলাম-পূর্ব আরবে 'আল্লাহ'-কে সবচাইতে শক্তিশালী দেবতারূপে কল্পনা করা হতো, যে আল্লাহ একা নন, তার পুত্রকন্যা, স্ত্রী আছে। তাই বলে আমরা 'আল্লাহ' শব্দটাকে পরিত্যাগ করতে পারবো কি? পারবো না।

এটা একান্তই আমার ব্যক্তিগত অভিমত যে, যতক্ষণ পর্যন্ত আমি মহাশক্তিমান এক ও অদ্বিতীয় ব্যক্তিকে সম্বোধন করছি, তাতে খোদা সম্বোধনে আমি আল্লাহকেই মিন করছি, অন্য কাউকে না। খোদার দরবারে হাত তোলা মানে আল্লাহর দরবারে হাত তোলা।

৩| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৫৭

শাহ আজিজ বলেছেন: স্লা মুলায়কুম , সালাম , আদাব ৬০দশকে আমাদের ট্রেন্ডস ছিল । জামাত পরবর্তীতে আমাদের সকল অভ্যাস সহি করতে পুরো
উচ্চারণ শুদ্ধ করতে ভূমিকা নিলো। আমি আফ্রিকান এবং আরবীয় ও ইরানিয়দের সাথে পড়ে ছি । সালাম ভিন্ন উচ্চরণ ।

৪| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: আমি বিদায় নেওয়ার সময় বলি- একমুঠো রজনীগন্ধা হাতে দিয়ে বললাম, আমি চললাম। চললাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.