নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক এবং নাট্য পরিচালক সহ - এই বহুমুখী পেশার সাথে জড়িত থাকলেও, আমার মূল পরিচয় একজন গল্পকার।

মি. বিকেল

আমি মোঃ মেহেদি হাসান, কলম নামে মি. বিকেল। একজন লেখক, অভিনেতা, সমাজকর্মী, রেডিও জকি, ওয়েব ডেভেলপার, ওয়েব ডিজাইনার, সম্পাদক, উপস্থাপক এবং নাট্য পরিচালক সহ - এই বহুমুখী পেশার সাথে জড়িত থাকলেও, আমার মূল পরিচয় একজন গল্পকার।

মি. বিকেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

৫টি ডার্ক সাইকোলজিক্যাল হ্যাক, সাফল্যে এক ধাপ এগিয়ে থাকুন

২৩ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১:০৬




(নোট: এই প্রবন্ধটি লেখা হয়েছে রোল্‌ফ ডোবেল্লি’র লেখা ‘The Art Of Thinking Clearly (2013)’ বইয়ের আলোকে। অনুগ্রহ করে মনোবিজ্ঞানের এসব অন্ধকার দিকসমূহ ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করবেন না।)

১. Action Bias (কর্ম পক্ষপাত)

‘Action Bias (কর্ম পক্ষপাত)’ হলো আমাদের মধ্যে থাকা এমন এক ধরণের প্রবণতা যা আমাদের ভাবায় আমাদের কর্মে সফলতা আসে এবং আমাদের নিষ্ক্রিয় থাকায় ব্যর্থতা আসে। জরুরী নয় সব বিষয়ে আপনার কিছু না কিছু করার থাকবে বা বলার থাকবে। জীবনে এমন অনেক বিষয় আছে যেসব বিষয়ে চুপ থাকা/নিষ্ক্রিয় থাকা অনেক বেশি জরুরী। কিন্তু এই প্রবণতা আমাদের মধ্যে এত বেশি প্রবল যে, আমরা মনে করি খালি খালি শুধু দেখেই যাবো! কিছুই করবো না? দেখা যায় তো, ঐ পরিস্থতিতে কিছুই করার জন্য আপনার কাছে প্রয়োজনীয় কোনো যুক্তি নাই।

বেশিরভাগ লোকাল ট্রেনের প্লাটফর্মে ট্রেন দাঁড়ানো মাত্রই আমরা দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেই। মজার বিষয় হচ্ছে, অনেক দৌড়াদৌড়ি করে যে বগিতে আপনি উঠলেন উক্ত বগিতে সিট-ই নাই। কিন্তু তবুও মনে মনে নিজেকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন এই বলে যে, যদি আমি না দৌড়াতাম তাহলে অন্য বগিতে উঠতে হতো যেখানে হয়তো আমি দাঁড়িয়েও থাকতে পারতাম না।

কিন্তু যুক্তির সাথে যদি বিষয়টি লক্ষ্য করেন তাহলে দেখবেন, আপনি যেহেতু প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে আছেন সেক্ষেত্রে ট্রেন আপনার কাছেই এসে দাঁড়াবে এবং খুব স্বাভাবিক একটি দরজা আপনার সামনে এসেও পড়বে। সুতরাং খুব আরাম করে উক্ত বগিতে আপনি উঠে যেতে পারেন। এতে যারা প্রচুর দৌড়াদৌড়ি করছেন তাদের চেয়ে আপনার ভাগ্য ভালো হবার সম্ভবনা কয়েকগুন বেশি থাকবে এবং আপনি আপনার একটি সিটও খুব সহজে পেয়ে যাবেন।

২. Planning Fallacy (পরিকল্পনার ভুল)

‘Planning Fallacy (পরিকল্পনার ভুল)’ হলো, নিজ পরিকল্পনায় কিছুটা নিজেই ফেঁসে যাওয়া। শুনতেই গজব লাগছে তাই না! এমন এমন সব পরিকল্পনা মাথায় নিয়ে ঘোরাঘুরি করা যেসব পরিকল্পনা আপনি হয়তো খুব জোশ যখন ছিলো এবং মনটা অনেক উচ্ছ্বসিত বা আনন্দিত ছিলো তখন করেছিলেন। এই ধরণের পরিকল্পনায় আপনার নেট প্রোডাক্টিভিটি, সময়, মূল্য বা খরচা এবং আপনার মনের ও শরীরের অবস্থা বিবেচনায় নেওয়া হয় নাই। ফলে এই ধরণের পরিকল্পনায় নির্ঘাত আপনি ব্যর্থ হবেন।

আমাদের মধ্যে কমবেশি সবার মধ্যে ‘Wishful Thinking’ থাকে এবং তা থেকে উদ্ভূত প্রতি ক্যালেন্ডার ইয়ারের প্রথম দিনে অনেক কাজের তালিকা তৈরি করি এবং বিশ্বাস করতে শুরু করি যে, আমি এসবের সবই করতে পারবো। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই আপনি কাজটি ছেড়ে দেন, আপনার রুটিন বা তালিকাভুক্ত কাজগুলো আর করা হয়ে ওঠে না। এবং যেহেতু আপনি আপনার কাজগুলো সময়মতো করতে পারছেন না সেজন্য এক ধরণের হতাশার জন্ম নিতে পারে আপনার মনে। অন্যদিকে যিনি কম কাজের তালিকা তৈরি করেছেন, কম কম করে সামনে এগিয়ে যাবার চিন্তা করে যৌক্তিক রুটিন তৈরি করেছেন তিনি অন্তত তার কাজটি সম্পন্ম করতে পারবেন এবং তার মধ্যে আত্মবিশ্বাস আস্তে আস্তে তৈরি হতে থাকবে।

ইলন মাস্ক এই ধরণের পরিকল্পনার ফ্যালাসি কে নাম দিয়েছেন ‘Wishful Thinking’। তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলছেন, “আমরা মনে করতে চাই এটা সত্য হোক, কিন্তু এটি সত্য নয় (বাংলায় অনূদিত)।” আপনি আপনার সামর্থ্য মত কাজের পরিকল্পনা তৈয়ার করুন। কোনো টিম বা গ্রুপ যিনি পরিচালনা করছেন তার প্রোডাক্টিভিটি এবং আপনার প্রোডাক্টিভিটি যদি সমান হয় তাহলে আপনি ঐ টিমে শুধু একজন সামান্য সদস্য হতেন না, একসময় আপনার জায়গা হবে উক্ত টিমের প্রধান হিসেবে।

কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় টিম লিডার কে শুধু গালি দেবার সংস্কৃতি আপনার অলসতাকে ন্যায় ঘোষণা করলেও আপনি কিন্তু আপনার প্রোডাক্টিভিটি বাড়াচ্ছেন না। ফলাফল, আপনি সোজা গর্তে গিয়ে পড়বেন।

৩. Ellsberg Paradox

মানুষের সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং ঝুঁকি কম নেবার প্রবণতাকে ‘Ellsberg Paradox’ বলা হয়। আমরা সাধারণত ঝুঁকি এড়িয়ে জীবনে চলতে চাই। কিন্তু জীবন কোনো ফিল্ডেই ১০০% শতাংশ নিশ্চয়তা দেয় না। আপনি সরকারী চাকুরীর জন্য প্রস্তুতি নিতে পারেন কিন্তু চাকুরী মিলেই যাবো এমন নিশ্চয়তা নাই।

আপনি উদ্যেক্তা/ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ শুরু করতেই পারেন কিন্তু কাস্টমার পাবেন কিনা তার ১০০% শতাংশ নিশ্চয়তা নাই। দেখা যায় তো, আপনার বেঁচে থাকা অথবা মরে যাওয়ার ব্যাপারেও কোনরুপ নিশ্চয়তা নাই। কিন্তু আমাদের মধ্যে সবচেয়ে কম ঝুঁকি নেবার প্রবণতা খুব ভয়ানকভাবে বিদ্যমান।

একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে, দুটো বক্স ‘A’ ও ‘B’ তে যথাক্রমে কালো ও লাল বল রাখা আছে। বক্স ‘A’ তে ৫০% শতাংশ কালো বল এবং ৫০% শতাংশ লাল বল রাখা হয়েছে। অন্যদিকে বক্স ‘B’ তে ৯০% শতাংশ লাল বল রাখা হয়েছে এবং মাত্র ১০% শতাংশ কালো বল রাখা হয়েছে। এখন আপনাকে বলা হচ্ছে, এই দুই বক্স এর মধ্যে একটি বক্স থেকে আপনাকে একটি কালো বল বের করতে হবে। বের করতে পারলে আপনাকে ১০০ ডলার পুরষ্কৃত করা হবে।

আপনি কোনটা বেছে নেবেন? হলফ করে বলা যায়, আপনি ‘A’ বক্স বেছে নেবেন। কারণ আগে থেকেই আপনার এই বক্স সম্পর্কে কিছুটা নিশ্চয়তা জানা আছে। এখানে জেতার চ্যান্স ৫০% শতাংশ। কিন্তু অনেকক্ষেত্রে এই ‘ঝুঁকি কম’ ফর্মূলা কাজে নাও লাগতে পারে। বিশেষ করে স্টক মার্কেটে। এখানে যে বান্দা যত বেশি ঝুঁকি নিতে রাজী থাকে সে তত প্রফিট নিয়ে বাজার থেকে খুব কম সময়ে এক্সিট করতে পারেন। এজন্য একটি বিখ্যাত প্রবাদ আছে, “If you don't take risk, your life will be more risky.”

তারমানে আবার এই নয় যে, সুন্দর একটি চাকুরী ছেড়ে দিয়ে উদ্যেক্তা হতে রওনা দিলেন।

৪. Hindsight Bias (সংঘটনের পরে বোধোদয় পক্ষপাত)

ধরুন, আপনি কার নিয়ে আপনার প্রিয়জনের সাথে লং ড্রাইভে বের হলেন। এখন হঠাৎ করে সামনে দুটো রাস্তা দেখা গেল সামনের গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য। আপনি ভাবলেন, কোন রাস্তা বেছে নেবেন? তাই একটু আন্দাজ করে ডান দিকের রাস্তা বেছে নিলেন। কিন্তু সে রাস্তায় দিয়ে যাবার সময় দেখলেন প্রচুর জ্যাম। আপনার গাড়ি আর একপা নড়তেও নারাজ।

এখন আপনার প্রিয়জন আপনাকে সহজেই বলে দেবে, “আমি আগেই জানতাম ডান দিকের এই রাস্তায় ভীড় বেশি হয়। তুমি বাম দিকের রাস্তা নিলেও পারতে!” মজার বিষয় হলো, বাম দিকের রাস্তায় যারা গেছেন তারাও জ্যামে বন্দি। এবং হতে পারে তাদের বন্ধু বা প্রিয়জন একই কথা বলছেন।

এরকম আরো অদ্ভুত দৃশ্য দেখবেন যদি আপনি কোন উদ্যেক্তা হোন। একটু ভুল, ব্যস! টিম মেম্বার কিছু না বললেও টিমের বাইরের লোক এসব খবর জেনে বলবে, “আমি আগে থেকেই জানতাম এমন হবে।” সত্যি বলতে, “না ঐ টিমের টিম লিডার, না ঐ টিমের সদস্য এই ব্যাপারে কিছু জানে বা জানতো!” আর বাইরের লোক যে মন্তব্য করছেন তার বিন্দুবিসর্গ কোন আইডিয়া-ই নাই পুরো কাহিনী সম্পর্কে।

সুতরাং যখন অনিশ্চিত বিষয়ে কেউ স্টেটমেন্ট দেয় যে, “আমি আগে থেলেই জানতাম!” এদের ‘রেড ফ্ল্যাগ’ ট্যাগ দিয়ে সাইডে রাখুন।

৫. Inability To Close Door (দরজা বন্ধ করতে অক্ষমতা)

আমাদের হাতে এখন অনেক অপশন। খেয়াল করে দেখবেন, আপনি কিছু রিলস্, ভিডিও, পিডিএফ সেভ করে রাখছেন। কিছু ক্লাসিক সিনেমার তালিকা তৈরি করে সেসব ডাউনলোড করে কম্পিউটার ড্রাইভে পূরণ করে রাখছেন। কিছু পুরনো বই সংরক্ষণ করে রাখছেন পরে পড়বার জন্য। এভাবে ছোটখাটো লাইব্রেরি তৈরি করে ফেলেছেন।

কিন্তু ৯০% শতাংশ ক্ষেত্রে আপনি সেসব দেখার বা পড়ার সময়ই পাচ্ছেন না (পরীক্ষীত)। আপনার এত এত সংগ্রহ শুধুমাত্র ড্রাইভ এবং ফিজিক্যাল প্লেসের জায়গা দখল করে আছে কিন্তু কোনো কাজে আসছে না। কারণ আপনি ‘একটি’ অপশনে নির্ভর করতে ভয় পান। তাই বাকি দরজা খুলে রাখছেন কারণ, যদি একটা কাজ না করে তাহলে আরেকটা কাজে দেবে। কিন্তু প্রায় ক্ষেত্রেই এই ধারণা ভুল। এতে করে আপনি সামনে এগুতে দীর্ঘসূত্রতায় পড়ে যেতে পারেন। এই নিয়ে একটি সুন্দর উদাহরণ আছে আমার কাছে।

ভারতের একজন বিখ্যাত অভিনেতা নওয়াজুদ্দীন সিদ্দিকী কে জিজ্ঞেসা করা হয়েছিলো, “আপনার সাফল্যের মূলমন্ত্র কি?” তিনি উত্তরে বলেছিলেন, “আমি কাজ করি একটি চায়ের দোকানে। আমার হাতে একটাই অপশন ছিলো। হয় অভিনেতা হওয়া নতুবা চা সার্ভ করা। আমি অভিনেতা হওয়াকে বেছে নিয়েছি।”

এখানে পরিষ্কার অর্থেই অপশন আমাদেরকে অনেকক্ষেত্রে পিছিয়ে দেয়। যে বান্দার কাছে অপশন যত কম তার দুশ্চিন্তা তত কম ফলে তিনি তার কাজে যথেষ্ট ফোকাশ ধরে রাখতে পারেন এবং এরাই রিমার্কেবলি সফল!

ছবি: Bing Enterprise
Also Read It On: ৫টি ডার্ক সাইকোলজিক্যাল হ্যাক, সাফল্যে এক ধাপ এগিয়ে থাকুন

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৩১

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: এই Wishful Thinking মনে হয় আমাকে ধীরে ধীরে শেষ করে দিচ্ছে- এটা করতে হবে, ওটা দেখতে হবে, সেটা বুঝতে হবে, ওটা ধরতে হবে ইত্যাদি.. ভেবে কতকিছু যে ডাউনলোড, বুকমার্ক, সেভ, সবস্ক্রাইব বরে রাখছি তার কোন হদিস নেই যার পরিমাণ এতটাই বেশি যে তা শেষ করতে কয়েক বছর পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে, সামনে অনেক করনীয় অনেক হাতি ঘোড়া মারতে হবে তাই আজ না কাল থেকে কোমড় বেঁধে নামবো.. এই ভেবে বছরের পর বছর কেটে যাচ্ছে.. কিন্তু দেখা যাচ্ছে ওগুলা ঠিকমত ধরাই হচ্ছে না। আমার Wishful Thinking এর লিস্টে এত কিছু জমা করছি যে যা শেষ করতে হবে ভাবলেই আমি অস্থির হয়ে যাই, আর সে ভয়ে ওগুলো আর ধরাই হয় না। অনেকগুলো প্রজেক্ট অর্ধেক, আংশিক, কিছু অংশ করে ফেলে রাখছি এর কোনটাই পুরোপরি শেষ করতে পারিনি।

আমার ডেইলি রুটিন তিন দিনের বেশি কাজ করে না, তবে এখন থেকে আপনার ওই বুদ্ধিটি কাজে লাগতে হবে, প্রতিদিন খুব ছোট এবং সহজ গোল সেট করতে হবে যা খুব সহজেই শেষ করতে পারি।

তবে এত এত অলসতার মাঝেও আমি বেশকিছু গুরত্বপূর্ণ বিষয় কম্পলিট করেছি যা আমার সমসাময়িক কেউ করেনি, এবং আমি বিশ্বাস করি ধীরে হলেও আমি থেমে নেই, প্রতিদিনই আমি নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছি তবে ছাড়িয়ে যাওয়ার এই যাত্রাটা আরও দ্রুত করতে হবে, কারণ সময় খুব অল্প, তাই আজকে থিকা ব্লগিং বন্ধ, দেখি হাতি ঘোড়া কিছু মারতে পারি কি না।

ভালো থাকবেন।




২| ২৫ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: পড়লাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.