নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বলি, কিছু কথা!

মুনিরেভ সুপ্রকাশ

খুঁজে ফিরি অর্থপূর্ণ জীবন!

মুনিরেভ সুপ্রকাশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সার্ক সিডব্যাংক ও ফুড ব্যাংক: জনগণের প্রয়োজন মেটাতে এখন পর্যন্ত ব্যর্থ

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:০৩

১. দক্ষিণ এশিয়ার খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা

সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তা সূচক ২০১৪ অনুযায়ী বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। নাগরিকদের খাদ্য ক্রয় ক্ষমতা, খাদ্যের সহজলভ্যতা এবং খাদ্য মানের উপর বিশ্বের যে ১০৯টি দেশের মধ্যে জরিপটি পরিচালিত হয় তাতে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৮ তম। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর অবস্থানও তেমন আশাপ্রদ নয়। দি ইকোনমিস্ট পত্রিকা প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে ভারতের অবস্থান ৬৯, পাকিস্তান ৭৭, নেপাল ৮৫ এবং শ্রীলংকা ৬০।

দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বের সবচাইতে ঘণবসতিপূর্ণ অঞ্চল এবং এখানেই আছে বিশ্বের সবচাইতে বেশি অপুষ্টির শিকার মানুষ। দক্ষিণ এশিয়ার ৫০০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করে। বিশ্বের মোট জনগোষ্ঠীর ২৩ শতাংশের বসবাস এই অঞ্চলে হলেও এর আয় বিশ্বের মোট আয়ের মাত্র ২ শতাংশ।

দক্ষিণ এশিয়ার অধিকাংশ মানুষের জীবন এবং জীবিকার প্রধান অবলম্বন কৃষি, আর একারণেই কৃষি এবং বীজ সব সময়ই এই এলাকার জন্য দুটো খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অঞ্চলটির মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করেই এই অঞ্চলের নেতৃবৃন্দ খাদ্য, কৃষি ও বীজ বিষয়ে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছেন বিভিন্ন সময়। সার্ক সিড ব্যাংক এবং ফুড ব্যাংক এরকমই দু’টি উদ্যোগ।

২. জলবায়ু পরিবর্তন ও দক্ষিণ এশিয়ার কৃষির জন্য হুমকি

বিজ্ঞানীরা আশংকা করছেন যে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দক্ষিণ এশিয়াতে শস্যের ফলন ৩০% পর্যন্ত কমে যেতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে যে, দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে বৃষ্টি নির্ভর গমের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমে যাবে। শীতকালে মাত্র ০.৫০ সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে ভারতে গমের উৎপাদন হেক্টর প্রতি ০.৪৫ টন কমে যাবে। অাইপিসিসি’রর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়াতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা ২.৫০ সেঃ এর বেশি বৃদ্ধি পেলে সেচ বহির্ভূত গম ও ধানের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য পরিমাণ হ্রাস পাবে, এর ফলে সরকারের রাজস্ব আয় ৯-২৫% পর্যন্ত কম হতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের সর্বাপেক্ষা রক্ষণশীল দৃশ্যকল্পেও শতাব্দীর শেষ নাগাদ দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহের প্রকৃত শস্য উৎপাদন ৪-১০% পর্যন্ত কমে যেতে পারে বলে অনুমান করা হয়েছে।

এরকম একটি অবস্থায় এসব ঝুঁকি মোকাবেলায় আঞ্চলিক সহযোগিতা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। আর একারণেই সার্ক সিড ব্যাংক ও সার্ক ফুড ব্যাংক হতে পারে এ অঞ্চলের খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবেলায় অন্যতম কার্যকর হাতিয়ার।

৩. সার্ক সিড ব্যাংক: আদৌ কি কার্যকর হবে?

বীজ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ায় খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কৃষিতে আত্মনির্ভর হওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে ২০১১ সালে সার্ক সিড ব্যাংক গঠিত হওয়ার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সার্ক সদস্য রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীগণ এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর প্রায় ৩ বছর পার হয়ে গেলেও এখনও আলোর মুখ দেখতে পারেনি সার্ক সিড ব্যাংক। চুক্তি অনুযায়ী সকল সদস্য রাষ্ট্র কর্তৃক অনুসমর্থিত হলেই কেবল চুক্তিটি কার্যকর হবে। আট সদস্যের মধ্যে এখন পর্যন্ত পাঁচটি দেশ অনুস্বাক্ষর করেছে। বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলংকা এবং ভুটান আগেই এটি অনুসমর্থন করে আর নেপাল সেটা করেছে মাত্র কয়েকদিন আগে।

৪. বীজের ব্যাংক নাকি বীজ ব্যাবসার পাঁয়তারা?

সার্ক সিড ব্যাংক সংক্রান্ত চুক্তিটি পর্যালোচনা করে অনেকেই ্একে আঞ্চলিক পর্যায়ে বীজ সংক্রান্ত ব্যবসা সম্প্রসারণের একটি কৌশল হিসেবে অভিহিত করছেন। অনেকেই মনে করছেন এটি আসলে বীজ কোম্পানিগুলোর জন্য নানা ধরনের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কৌশল। সিড ব্যাংকের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ উঠার অন্যতম কারণ চুক্তিতে বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে এই অঞ্চলের সাধারণ কৃষকদের হাজার বছরের ঐতিহ্যকে অবহেলা করা, কৃষকদের ক্ষমতায়ন, তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির কথা না বলে ‘উন্নত জাতের’ বীজের উপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া। সিড ব্যাংকের তিনটি মূল উদ্দেশ্যের মধ্যে একটি হলো ক্রমান্বয়ে এবং দ্রুত চাষাবাদের ক্ষেত্রে সাধারণ বীজের ব্যবহার কমিয়ে উন্নত জাতের বীজের ব্যবহার বাড়ানো। এই উন্নত বীজ ব্যবস্থাপনায় কৃষকদেরকে কিভাবে সম্পৃক্ত করা হবে সে ব্যাপারে চুক্তিতে কিছু নেই। তাছাড়া এই অঞ্চলের হাজারো কৃষক যুগ যুগ ধরে অনেক উন্নত জাতের বীজ নিজেরাই উৎপাদন, সংরক্ষণ এবং বিনিময় করে আসছে, অথচ এই বিষয়টিকে এই ক্ষেত্রে অবহেলা করা হয়েছে।

সিড ব্যাংক যে বিভিন্ন বীজ কোম্পানিকে বেশ গুরুত্বই দিচ্ছে তার একটি বড় প্রমাণ এর পরিচালনা বোর্ডের সদস্য তালিকা। ব্যাংকের গভর্নিং বডি গঠিত হবে প্রতি সদস্য দেশ থেকে একজন করে প্রতিনিধি নিয়ে, সঙ্গে থাকবেন বেসরকারি বীজ কোম্পানির দুই জন এবং একজন কৃষক প্রতিনিধি। বীজ কোম্পানি থেকে দৃইজন থাকলেও কৃষক থাকবেন একজন! তাও আবার এই একজন বিভিন্ন দেশ থেকে ক্রমান্বয়ে দায়িত্ব পালন করবেন। বোঝাই যায় কৃষকের অংশগ্রহণ রাখা হয়েছে নামে মাত্র।

৫. স্থানীয় বীজের সংরক্ষণ এবং কৃষকের দক্ষতা বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে হবে

সিড ব্যাংক সংক্রান্ত চুক্তিতে স্থানীয় বীজের গুরুত্বের কথা স্বীকার করা হলেও, এর উন্নয়নে ব্যাংক কী ধরনের ভূমিকা রাখবে সে ব্যাপারে কোনও কিছু উল্লেখ নেই। উন্নত জাতের বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে নিজেদের অংশগ্রহণ ও নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার জন্য কৃষকের দক্ষতা বাড়ানোর বিষয়ে চুক্তিতে কিছু খুঁজে পাওয়া যায় না। এই দুটো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও সিড ব্যাংকের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

৬. সার্ক ফুড ব্যাংক: অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা কি নিয়েছেন আমাদের নেতৃবৃন্দ?

খাদ্য নিরাপত্তার ক্রমবর্ধমান নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার লক্ষ্যে এবং এসব চ্যালেঞ্জ ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করার উদ্দেশ্য নিয়ে সার্ক আঞ্চলিক খাদ্য ব্যাংক বা সার্ক ফুড ব্যাংক গঠিত হয় ২০০৭ সালের এপ্রিলে। এই ব্যাংকটিকে ১৯৮৮ সালে গঠিত সার্ক ফুড রিজার্ভ-এর একটি উন্নত সংস্করণ বলে অনেকে অভিহিত করেন। অনেক গবেষকই মনে করেন আঞ্চলিক রাজনীতির টানাপোড়েনের কারণে সেই রিজার্ভ কখনই কাজ করতে পারেনি। এছাড়াও সেটি পরিচালনাগত নানা ত্রুটি বিচ্যুতি ছিল বলে মনে করা হয়। স্বাভাবিকভাবেই ফুড ব্যাংক নামের নতুন আরেকটি মজুদ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পূর্বেকার ত্রুটি বা সীমাবদ্ধতাটা থাকবে না সেটাই আশা করা হয়। কিন্তু ফুড ব্যাংকের পরিচালনা সংক্রান্ত নানা দিক বিচার বিশ্লেষণ করলে এর নানা সীমাবদ্ধতার চিত্র খুঁজে পাওয়া যায়। এটিকে কার্যকর করার রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবটাও বেশ প্রকট হয়ে উঠে। সুতরাং অতীতের ভুল থেকে আমাদের নেতৃবৃন্দ কোনও শিক্ষা নেননি বলেই প্রতীয়মান হয়, আর এ কারণেই এর কার্যকারিতা বা সাফল্যের আশা হয়ে উঠে প্রশ্নবিদ্ধ।

৭. প্রয়োজনের সময় অকার্যকর: বিপদগ্রস্ত দেশগুলোর পাশে দাঁড়ায়নি ফুড ব্যাংক

খাদ্য নিরাপত্তার ক্রমবর্ধমান নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার লক্ষ্যে এবং জাতীয় ও আঞ্চলিক সংকট যৌথভাবে মেকাবেলার লক্ষ্যে যে ফুড ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয় সেই ব্যাংক বিগত কয়েকটি দুর্যোগে ছিল একেবারেই অকার্যকর, নির্জিব। ২০০৭ সালে ফুড ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ২০০৮ ও ২০০৯ সালে বাংলাদেশ সিডর ও আইলা আক্রান্ত হয়, পাকিস্তানও ২০১০ সালে বড় আকারের বন্যার কবলে পড়ে। এই সময়গুলোতে খাদ্য সংকট দেখা দিলেও সার্ক ফুড ব্যাংক কোনও ভূমিকা রাখতে পারেনি।

সার্ক ফুড ব্যাংক থেকে জরুরি খাদ্য সহায়তা পাওয়ার জন্য আবেদন করার কিছু বিশেষ শর্ত আছে। যেমন, কোনও দেশে যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে খাদ্য সংকট দেখা দেয়, কিংবা খাদ্য উৎপাদন যদি তিন বছরের গড় উৎপাদনের তুলনায় ৮ শতাংশ কমে যায়, তবে সেই দেশ ব্যাংক থেকে খাদ্য নেওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবে। অথচ আন্তর্জাতিক বাাজারে ঘাটতি দেখা দিলে বা সরবরাহ কমে গেলে বা মূল্য খুব বেশি বেড়ে গেলেও খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ সে ধরনের অভিজ্ঞতা পেয়েছে। কিন্তু এই দু’টি জুরুরি সময় খাদ্য সাহায্য পাওয়ার জন্য আবেদন করারই নিয়ম নেই! এই ধরনের দুর্যোগের সময় পাশে দাঁড়ানো দূরের কথা, ভারত সেসময় চাল রপ্তানিই বন্ধ করে দিয়েছিল।

৮. সংকট মোকাবেলায় অপর্যাপ্ত মজুদ: আছে পরিচালনাগত ত্রুটি

সার্ক ফুড ব্যাংকের প্রারম্ভিক মোট মজুদ মাত্র ২৪১.৫৮ হাজার মেট্রিক টন। বাংলাদেশের অংশ ৪০ হাজার মেট্রিক টন, যা দেশটির গড় বাৎসরিক আমদানির মাত্র ৪ শতাংশের মতো। ব্যাংকের মজুদ দ্বিগুণ করে ৪৮৬ হাজার টন করার প্রস্তাবটি এখনও বাস্তবায়নের অপেক্ষায় আছে। খাদ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে খাদ্যের গুণগত মান নির্ধারণেও সমস্যা রয়ে গেছে। গুণগত মান নিয়ন্ত্রণ বা নির্ধারণের মানদ- একেক দেশে একেক রকম। ফলে খাদ্য বিনিময় বা খাদ্য সাহায্যের ক্ষেত্রে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সবার জন্য একই ধরনের খাদ্য মান নির্ধারণ করা জরুরি।

৯. রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া খাদ্য নিরাপত্তার আঞ্চলিক সংকট মোকাবেলা করা অসম্ভব

সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আঞ্চলিক সহযোগিতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সার্ক কার্যত ব্যর্থ একটি সংস্থা হিসেবেই পরিগণিত হয়। সংস্থাটি কার্যকর করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব এবং আঞ্চলিক রাজনীতির নেতিবাচক গতি প্রকৃতির কারণেই সংস্থাটির সাফল্য নানা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। সদস্য দেশগুলোর মানুষে মানুষে যোগাযোগ-সম্পর্ক যথেষ্ট ভাল থাকলেও সরকারগুলোর পারষ্পরিক সহযোগিতার অভাবের কারণেই সার্ক বর্তমানের অবস্থায় আছে। এই অঞ্চলের খাদ্য নিরাপত্তার সংকটগুলো মোকাবেলার ক্ষেত্রে সার্ক সিড ব্যাংক ও ফুড ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। প্রয়োজন জনগণের স্বার্থটাকে সবার উপরে রেখে সরকার-নেতাদের রাজনৈতিক অবস্থান গ্রহণ।



(বেসরকারি সংস্থা ইক্যুইটিবিডি’র সেমিনারে পঠিত)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:১৩

জাফরুল মবীন বলেছেন: তথ্যবহুল খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি ব্লগে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:১১

মুনিরেভ সুপ্রকাশ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ অাপনাকে!

২| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৩

পার্সিয়াস রিবর্ণ বলেছেন: অসাধারণ তথ্যবহুল পোস্ট । ভালো লাগলো জেনে ।

++

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:১২

মুনিরেভ সুপ্রকাশ বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.