নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বলি, কিছু কথা!

মুনিরেভ সুপ্রকাশ

খুঁজে ফিরি অর্থপূর্ণ জীবন!

মুনিরেভ সুপ্রকাশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভর দুপুরে ব্যাংককে!

১৪ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ৯:৫৫



জুন ৩, ২০১৬ : উচিৎ জবাব!
মুদ্রা বিনিময় করতে এখানকার সিয়াম ব্যাংকে গিয়েছিলাম আজ। গ্রাহক সেবার ধরন অসাধারণ। বিপত্তিটা হলো আমার বেলায়। বাংলাদেশী পাসপোর্ট দেখেই কিনা, আমার দেয়া ডলারের নোটটা বার বার পরীক্ষা করে দেখছিলেন নারী কর্মকর্তা। মেশিনে পরীক্ষা করেও তিনি ঠিক ভরসা পাচ্ছিলেন না, দুইজন সহকর্মীকে দেখালেন, ওদের দুইজনই শুনলাম বলছেন , ফু ফু! ইংরেজিতে যার আনুবাদ হয় OK. বেশ দোলাচল নিয়ে আমাকে যখন থাই বাথ দিলেন, সবচেয়ে নতুন দেখতে একটা ১০০ বাথের নোট দেখিয়ে বললাম, আমাকে এইটা একটু বদলে দিন প্লিজ! ঐ কর্মকর্তা অবাক হয়ে জানতে চাইলেন, কেন, এইটা তো একটা নতুন নোট?! আমি বললাম, কিন্তু আমার মনে হচ্ছে এই নোটে কিছু ঝামেলা আছে, এটা বদলে দিতেই হবে! তোমার কাছে যদি না থাকে আমি ১০০ বাথ ছাড়াই চলে যেতে রাজি আছি, কিন্তু এটা নিব না!!

মে ৩১, ২০১৬
আজ সারাদিন বেশ অনেকক্ষণ ট্যাক্সিতে ঘুরতে হল। এতক্ষণের মধ্যে একবারও হর্ন বাজাতে শুনলাম না কাউকে! ট্যাক্সি চালক একটু জ্যামে আটকা পরলেই আমার দিকে তাকিয়ে বলছে, ইন্দিয়া?!! যখন বলি না, বাংলাদেশ, প্রায় সবাই হেসে বলে, বাংক্লাদেত!! Google ট্রান্সলেট দিয়ে জিজ্ঞেস করি, চেন বাংলাদেশ? উত্তর না আসে। মোবাইলে থাকা সাম্প্রতিক G7 meeting এর ছবি দেখিয়ে বলি, এই যে এইটা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট, এইটা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী, আর এইটা আমার দেশের প্রধানমন্ত্রী! ট্যাক্সি চালক অবাক হয়ে বলে, ও রিচ কান্ট্রি বাঙ্কলাদেত! এবার ওর ভুল উচ্চারণেও আমি গর্বিত হই, বিল ৮৯ বাথ হলে ১০০ বাথের নোট দিয়ে বলি, কিপ ইট!! খাপ্তুন খাপ খাপ্তুন খাপ (থাই ধন্যবাদ) বলতে বলতে চলে যায় চালক। আমি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দেই। ছবিটা মোবাইলে রেখে দিয়েছি, আমার দেশ সম্বন্ধে কেউ জানতে চাইলে আগে এইটা দেখাবো!!

ব্যাংককের মানুষের চলাচলের জন্য সাধারণ পরিবহনের পাশাপাশি আছে স্কাই ট্রেইন, পাতাল রেল। চিকন একটা খাল আছে ব্যাংককে, এটাকেও দারুণভাবে ব্যাবহার করছে কতর্ৃপক্ষ৤ আছে ইঞ্জিন চালিত দ্রুতগামী নৌকা!। খালটা চিকন বলে নৌকাগুলো চিকনi কিন্তু অনেক লম্বা করে বানানো, একটা নৌকায় প্রচুর মানুষ উঠতে পারে। আজ হাঁটতে হাঁটতে চলে গিয়েছিলাম একটা ল্যান্ডিং স্ট্যাশনে। স্থানীয়রা এই খালকে মনে হয় বলে খলং।

মে ৩০, ২০১৬
ব্যাংকক বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে ট্যাক্সি খুঁজছি। এর আগের প্রায় সব সময় আমি বাইরে এসে একটা টিকেট কেটে দেখিয়ে দেয়া ট্যাক্সিতে উঠে গেছি। এইবার সেরকম কাউকে দেখলাম না। তাদের বদলে কাজ করছে মেশিন! একটা ATM মেশিনে চাপ দিলে চালকের নাম, গাড়িটা কোন লাইনে দাঁড়িয়ে আছে এরকম তথ্য সহ একটা কাগজ বেরিয়ে আসে। সেই কাগজ নিয়ে চালকের কাছে গিয়ে শুধু দেখালাম, উনি আমাকে উঠতে বললেন। ট্যাক্সি চলে মিটারে, যাব না বলার সুযোগ নেই! একই রকম অভিজ্ঞতা হলো, থাই ইমিগ্রাশন অফিসে। ওখানে প্রচুর মানুষ, কিন্তু কোন বিশৃঙ্খলা নেই। মেশিন সিরিয়াল দিচ্ছে, মেশিনেই সব কাজ হচ্ছে! কর্মকর্তাদের ব্যাবহার দারুণ আন্তরিক। যন্ত্র আর আন্তরিকতা এখানে এমনভাবে কাজ করে যে দুর্নীতির সুযোগ নেই!

দুর্ধর্ষ কয়েকটা ঘণ্টা কাটালাম ব্যাংককে! গতরাত প্রায় ৩ টার দিকে হোটেলে এসে পৌঁছেছি, সকাল ৮টায় বের হয়ে গেলাম এখানকার লাওস দূতাবাসের উদ্দেশ্যে, ভিসার আবেদন করবো। বাংলাদেশে দেশটির কোনও দূতাবাস না থাকায় ব্যাংককে বা দিল্লিতে গিয়ে আবেদন করতে হয়। আর্ন্তজাতিক অঙ্গনে বেশ নামকরা এক ব্যক্তিত্ব এখানে আমাকে সহযোগিতা করছেন। তাঁর প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই । তার এক সহকর্মী ঠিক আটটায় এসে হাজির, তিনিই আমাকে নিয়ে গেলেন ব্যাংককের মোটর সাইকেলে। ব্যাংককে অধিকাংশ মোটর সাইকেল হোন্ডা কোম্পানির বিশেষ এক ধরনের ছোট মোটর সাইকেল, চলে বুলেট গতিতে! দূতাবাসের মহিলা কর্মকর্তা বললেন, আপনার থাইল্যান্ড ভিসা সিঙ্গেল এনট্রি, এটা মাল্টিপল এনট্রি না হলে ভিসা হবে না। যাব লাওস, ওখান থেকে বাংলাদেশের ফেরার টিকেট দেখালেও লাভ হলো না। ঐটা লাগবেই! ভেবেছিলাম ঢাকায় ফিরে যেতে হবে, লাওসের সভাটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ঐ মহিলাই জানালেন, থাই ইমিগ্রেশন বিভাগে যোগাযোগ করে দেখতে। সঙ্গে থাকা ভদ্রলোক আমাকে প্রায় ৫ ০কিলোমিটার দূরে নিয়ে গেলেন সম্ভবত ২০ মিনিটে। তার রকেট গতির মোটর সাইকেল চালনাদেখে আমার তাই মনে হলো। অভাবনীয় সহজে একটা মাল্টিপল এনট্রির অনুমোদন পেলাম। আবার রকেট আমাকে নিয়ে ফিরে এলো লাওস দুতাবাসে। এত দ্রুত চলে এসেছি দেখে কর্মকর্তা বেশ অবাকই হলেন মনে হলো। একটু আগে হাতে পেলাম লাওসের ভিসা!

ব্যাংককে আজ সারাদিন যিনি আমার সঙ্গে থেকে সহযোগিতা করেছেন তিনি ইংরেজি জানেন না, আমি জানিনা থাই ভাষা! উনিই প্রথম এই সমস্যার সমাধান করলেন Google Translator ব্যাবহার করে। নিজের মোবাইলে ট্রান্সলেট করে আমাকে দেখান, আমিও আমার প্রয়োজনীয় কথা থাই ভাষায় তাকে দেখিয়েছি আমার মোবাইলে। এই প্রথম Google translator এবং Google Map এর দারুণ কার্যকারিতা পেলেম। বিমান বন্দর থেকে হোটেলে আসছিলাম অনেক রাতে, একটু ভয় পাচ্ছিলাম। সারাক্ষণ আমার চোখ ছিল Google Map এ। সেখান থেকেই বুঝতে পারছিলাম চালক ঠিক পথ ধরেই এগুচ্ছে! বিমান বন্দর থেকে বের হওয়ার আগেই মোবাইল এ ইন্টারনেট নিশ্চিত করার সুফলটা পেলাম দারুণ!


মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:১৩

জুন বলেছেন: ওরা ছেলেদের বেলায় বলে খাপুন খাপ আর মেয়েদের বেলায় খাপুন খা।
সুন্দর লিখেছেন।
খাপুন খা :)

১৪ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:৪০

মুনিরেভ সুপ্রকাশ বলেছেন: ধন্যবাদ!

২| ১৪ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:২৮

আহলান বলেছেন: খাপুন খাপ!

১৪ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:৪১

মুনিরেভ সুপ্রকাশ বলেছেন: খাপ্তুন খাপ!

৩| ১৪ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:৩৯

পবন সরকার বলেছেন: চমৎকার বর্ননা। ধন্যবাদ

১৪ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:৪১

মুনিরেভ সুপ্রকাশ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.