নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বলি, কিছু কথা!

মুনিরেভ সুপ্রকাশ

খুঁজে ফিরি অর্থপূর্ণ জীবন!

মুনিরেভ সুপ্রকাশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রতিদান

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৫

আব্বা একটা বেসরকারি হাই স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন প্রায় ২০-২৪ বছর! এর বড় একটা অংশ তিনি ছিলেন সহকারী প্রধান শিক্ষক, মাঝখানে কিছুদিন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক থাকাকালেই ওই স্কুলের ইতিহাসে প্রথম কেউ অষ্টম শ্রেণিতে টেলেন্টফুলে বৃত্তি পায়, এস এস সি (মেট্রিক নামেই তখন বেশি পরিচিত) পরীক্ষায় তাঁর সময়েই ওই স্কুল থেকে একজন প্রথম বিভাগে পাশ করেন। কিন্তু আব্বাকে ওই স্কুলের পূর্ণ প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় নি, বেশ কিছু শিক্ষক তাঁকে পছন্দ করতেন না। তিনি নাকি খুব ডিস্টার্ব করতেন তাঁদের, ফাকি দিতে পারতেন না! ক্লাস চলাকালে কেউ কমন রুমে বসে থাকলে তিনি ধমকাতেন, হঠাৎ ক্লাসে গিয়ে হাজির হয়ে কোন স্যার কি করছেন দেখতেন। এইগুলো অনেকের পছন্দ ছিল না। তাঁদের মারপ্যাঁচে অতিষ্ট আব্বা এক পর্যায়ে সেই স্কুল ছেড়ে অন্যত্র যোগ দেন। আব্বাকে যিনি একদমই সহ্য করতে পারতেন না, আব্বাকে উত্যক্তকারিদের যিনি ছিলেন সর্দার, তিনি কিন্তু আবার আব্বার আত্মীয়! বেকার ওই যুবক আত্মীয়কে আব্বাই ওই স্কুলে চাকরি দিয়েছিলেন! আব্বাকে ওই স্কুল থেকে চলে গিয়ে তাঁর প্রায়শ্চিত্য করতে হয়েছিল ।

ক্লাস ফোরে থাকতে এইচ এস সি পড়ুয়া বড় আপার কাছ থেকে নিয়ে সিরাজ উদ্দৌলা নাটক পড়েছি। ক্লাইভ থেকেও আমার রাগ হয়েছিল মুহম্মদি বেগের উপর। আমার ধারণা নবাব যুদ্ধে হাড়ের চেয়েও তাঁর হত্যাকারীকে দেখে দুঃখ পেয়েছিলেন বেশি!

আপন মানুষের কাছেই সবচেয়ে ধারালো অস্ত্রটা থাকে!

যার কারণে আব্বাকে পুরনো স্কুল ছাড়তে হয়েছিল, তাঁর কাছে আমার একটা বিশেষ কৃতজ্ঞতা আছে! পরবর্তী প্রায় ১৫ বছর আব্বা অন্য হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেই অবসরে গিয়েছেন। আমাদের ওই আত্মীয় আব্বাকে বিরক্ত না করলে হয়ত আব্বা সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবেই অবসর নিতেন। তাঁর কারণেই আমি গর্ব করে বলি, আমার আব্বা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। ইনশাল্লাহ আমার ছেলেও একদিন গর্ব করে বলবে, আমার দাদা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন।

এখনও অবাক হয়ে দেখি, আমার ক্ষতি করতে এসে অনেকে অজান্তে আমার উপকারই করে ফেলেন! আমাকে যারা কষ্ট দিতে আসেন, আমার সঙ্গে যারা বেয়াদবি করতে আসেন, আমি তাই তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকি, তাঁদের দিকে করুণার দৃষ্টিতে তাকাই!

সবাই সুখে থাকুক!

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৪১

ফারহানা শারমিন বলেছেন: ভাল বলেছেন।আমার জীবনেও এমন কিছু পাবলিকের অবদান আছে।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৪১

মুনিরেভ সুপ্রকাশ বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৪

অলিউর রহমান খান বলেছেন: একটি শিক্ষনীয় পোষ্ট পড়লাম। জীবনে চলার পথে নানান সমস্যার সম্মুখীন হই আমরা।
কিন্তু অনেক সময় এ সমস্যা গুলোই আমাদের জন্য আশীর্বাদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তবে তা আমরা ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর বুঝি। এ জন্যই বিপদে ধর্য্য ধারণ এবং আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা রাখার কথা বলা হয়েছে।

আপনার গল্প থেকে নতুন করে কিছু শিখলাম।
-শিখলাম, যারা আমার ঘর ভাঙ্গে, আমি তাদের ঘর তৈরী করতে সাহায্যে করা উচিত।
-যারা আমাকে ঘৃণা করে, তাদেরকে আমার ভালোবাসা উচিত।
তাদের দিকে করুণার দৃষ্টিতে থাকানো উচিত।

সুন্দর পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৪১

মুনিরেভ সুপ্রকাশ বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:০৪

নূর-ই-হাফসা বলেছেন: দারুন বলেছেন । অন‍্যদের ঈর্ষা অনেক সময় আশীর্বাদ বটে ।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৪২

মুনিরেভ সুপ্রকাশ বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:২০

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: সহমত। কারো জন্য গর্ত খুঁড়লে নিজেকেই সেই গর্তে পড়তে হয় - পুরোনো কথা...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.