নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বলি, কিছু কথা!

মুনিরেভ সুপ্রকাশ

খুঁজে ফিরি অর্থপূর্ণ জীবন!

মুনিরেভ সুপ্রকাশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মন ছুঁয়ে যায় ম্যানিলা

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:৫১



ক. ফিলিপাইনের সঙ্গে আমার পরিচয় আমি যখন ক্লাস ফোরে পড়ি, তখন। আমার এক ’দূর’ সম্পর্কের মামা ইউএনডিবি’র চাকরি নিয়ে ফিলিপাইন গিয়েছিলেন, সে উপলক্ষ্যেই শোনা দেশটির নাম। এখানে এর আগে আমি এসেছি দুইবার, একবার ইলুইলু নামের প্রদেশে ৫দিন থেকেই ঢাকায় ফিরে এসেছিলাম। সেবার, এবং পরের বারও, রাজধানী ম্যানিলাটা আসলে আমার সেভাবে দেখা হয়নি। এবার বেশ খানিকটা সময় পেয়ে, এক ঝলক ম্যানিলা দেখে বেশ ভাল লেগে গেল শহরটাকে! বিমান বন্দর থেকে অনেকটা পথ ফ্লাই ওভার দিয়ে গিয়ে শহরে নেমেছে, ফলে শহরের ট্রাফিক জ্যামের সঙ্গে আগত ভিনদেশীদের পরিচিত হতে বেশ সময় লাগে!, আমাদের এখানে লাগে মিনিট কয়েক!

পুরো শহরে বেশ কিছু জায়গায়, বিশেষ করে কুইজন সিটিতে ঘুরে প্রিয় ঢাকার জন্য বেশ আপসোস হলো! পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন চারপাশ, প্রশস্ত ফুটপাত, বড় রাস্তার দু’ধারে অনেকটা জায়গা খালি অথবা ফুলের বাগান! কোথাও কোথাও সাইকেলের জন্য আলাদা লেন। ক্লান্ত এক দুপুরে ফুটপাতে বসে আইস্ক্রিম খেয়ে টিস্যুটা অনেকক্ষণ পকেটেই রাখতে হলো! আশপাশ এত পরিষ্কার, যে যেখানে সেখানে ময়লা ফেলতে বেশ দ্বিধায় পড়ে গেলাম! ময়লাটা ফেলতে ইচ্ছাই হলো না। অনেক পরে একটা ডাস্টবিন পেয়ে, সেখানেই ফেলতে হলো অর্ধ ভেজা আর ঠাÐা সেই টিস্যু! এই দিক দিয়ে ঢাকায় কিন্তু অনেক সুবিধা! ময়লা ফেলার সময় এতকিছু ভাবার সময়ই আমাদের নেই।

কুইজন সিটিতে অনেক ঘুরে মোটামুটি নিশ্চিত হলাম, এখানকার মানুষ রাজনীতি বুঝে না, অথবা করে না। রাস্তায় কোথাও কোনও নেতার ছেলের সুন্নতে খৎনা উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে, বা কোনও নেতার শালীর নাতনীর আকদ উপলক্ষে কোনও তোরণ দেখলাম না! চোখে পড়লো না কারো জন্ম বা মৃত্যু দিবসে জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়ে দেওয়ালে সাঁটানো কোনও পোস্টার। এরা রাজনীতি করে কিভাবে?

খ. দুটো বিষয় দেখে সত্যিকার অর্থেই অবাক হতে হলো। ফিলিপাইনের রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক অবস্থাটা কী, ঠিক জানি না। কিন্তু মনে হলো কিছু কিছু ক্ষেত্রে এখানকার মানুষ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের ভালো সুযোগই পায়! যেমন:

১. ফিলিপাইনে গোল্ডেন রাইস যারা অনুমতি দিয়েছেন, সেসব সরকারি কর্মকর্তা একদিকে, এবং টেবিলের অন্যদিকে যারা মনে করেন এই ধান অনুমোদন দেওয়া ঠিক হচ্ছে না-তারা আজ যোগ দিয়েছিলেন এক সংলাপে। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে সেখানে ছিলাম আমিও। বিতর্ক হয়েছে বেশ জোরালো, শেষ পর্যন্ত সরকারি দফতরগুলো বললো, জনগণের স্বার্থে আমরা এটা আবার পরীক্ষা করে দেখবো! বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে এধরণের উন্মুক্ত সংলাপ কিন্তু খুব কার্যকর হতে পারে।
২. আজ এখানকার কৃষি মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভ করছে কৃষক, মূল গেট ধরে তারা ধাক্কাধাক্কি করেছে, কিন্তু কোন পুলিশ এলো না লাঠি হাতে! কেউ কোন হুমকি ধামকি পর্যন্ত দেয়নি, বাঁশি বাজিয়ে আতংকও তৈরি করেনি! কেউ একজন এসে স্মারক লিপিটা হাসিমুখে নিয়ে চলে গেলেন! গেটে থাকা নিরাপত্তা কর্মীদের একজন এগিয়ে এসে লিফলেট চেয়ে নিলেন!!

গ. আমরা আছি মেডিসন ১০১ নামের একটি হোটেলে। এর নিচতলায়জঈইঈ ব্যাংক! এটাই সেই ব্যাংক যেখানে বাংলাদেশের টাকা চুরি হয়ে এসে জমা হয়! ভাবছি, একবার ভিতরে ঢুকে এর কর্মকর্তাতের সঙ্গে পরিচিত হয়ে আসবো!

ঘ. বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ আসলেই হচ্ছে কি না, নাকি এটা নিছক রাজনৈতিক ইস্যু- এই নিয়ে দেশের ভিতরে বিতর্ক করাই যা। দেশের বাইরে এসে সবসময়ই বলে এসেছি, বাংলাদেশ একটি গরিব দেশ। সুযোগ পেয়ে এই প্রথমবার বললাম ভিন্ন কিছু! বিদেশের একটা অনুষ্ঠানে যখন বললাম, প্রাথমিক স্বীকৃতি আমরা পেয়ে গেছি, আশা করি ২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে চূড়ান্ত স্বীকৃতি পাবে, যখন এই উপলক্ষে আয়োজিত আনন্দ শোভাযাত্রার ছবি দেখাচ্ছিলাম- কেমন যেন নিজের ছোট এই শরীরের উচ্চতা বেড়ে যাওয়া অনুভব করি, সবার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে ইচ্ছে করে, সত্যিকার অর্থেই গর্বিত অনুভব করি! এক ধরনের আফসোসও হয়, ইস! একদিন যদি এই দেশটা শুধু জিডিপি’র হিসাবে না হয়ে, সত্যিই উন্নয়নশীল দেশ হয়ে যেতো!

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:১৬

শাহিন বিন রফিক বলেছেন: লেখাটিতে অনেক বাস্তব কথা উঠে এসেছে। আসলে শুধু মাথাপিছু আয় দিয়ে উন্নয়নশীল তকমা নেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে বির্তক হতে পারে। যে দেশে একজন লাখপতির যদি জ্বর হয় সে চিকিৎসার জন্য মিনিমাম ভারত যায়। আর কোটিপতি হলেতো কথা নাই, এম,পি, মন্ত্রী বাদই দিলাম। চিকিৎসার এই ভগ্নদশা, আবার শিক্ষার মান দিনে দিনে নিম্নমূখী। প্রযুক্তি সব অন্য দেশ থেকে ক্রয়কৃত। কোনকিছুতেই আমরা এখনো স্থিতিশীল হয়নি বা সক্ষমতা অর্জন করতে পারিনি, শুধুমাত্র চোরা মখাদের টাকা দিয়ে আমার আয়ের গড় বের করে উন্নয়নশীল তকমা নিলে তা বেশিদূর এগুবে না।

সুন্দর এই লেখাটির জন্য আমার আন্তরিক ধন্যবাদ।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৮:০০

মুনিরেভ সুপ্রকাশ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ

২| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:৪৪

সোহাগ তানভীর সাকিব বলেছেন: লেখাটি পড়ে ম্যানিলা সম্পর্কে অনেক কিছু জানায়। অনেক তথ্য বহুল ভ্রমণকাহিনী রচনার জন্য লেখককে আন্তরিক ধন্যবাদ।

৩| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৮:০১

মুনিরেভ সুপ্রকাশ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ

৪| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:২৬

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: লেখাটি অনেক ভাল লাগল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.