নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বলি, কিছু কথা!

মুনিরেভ সুপ্রকাশ

খুঁজে ফিরি অর্থপূর্ণ জীবন!

মুনিরেভ সুপ্রকাশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

রোহিঙ্গা সংকটে জাতিসংঘের হাত নেই তো!

১৬ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ৯:৫৫

রুয়ান্ডা গণহত্যার আগে বার বার সাবধান করা হলে জাতিসংঘ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি, গণহত্যাটি ঘটে যাওয়ার পর সক্রিয় হয়। জাতিসংঘ রুয়ান্ডা অফিসে এই নিয়ে সেসময় কথা বলা ছিল বারণ, কেউ কথা কললে তার উপর চালানো হতো নানা নির্যাতন। ঠিক একই অবস্থা দেখি কঙ্গোতে, বসনিয়ায়। এমনকি মায়ানমারেও! রাখাইনে যে গণহত্যা চালানো হবে সেটা বার বার জানালো হলেও জাতিসংঘ ছিল চুপ! আর এখন সংস্থাটি গণহত্যা-অত্যাচার বন্ধ করতে কার্যত নিরব-ব্যর্থ, কিন্তু মারাত্মক সক্রিয় রোহিঙ্গাদের জন্য পরিচালিত ত্রাণ কার্যক্রমে! এই ত্রাণ কার্যক্রমে শত-হাজার কোটি টাকার লাভালাভের হিসাব নেই তো?! প্রত্যেকটা সংকট কিছু মানুষের জন্য সুযোগ তৈরি করে দেয়! ইতিহাস স্বাক্ষী, এই পৃথিবীতে এমন অনেকেই আছে যারা এক দিকে সমস্যা তৈরি করে, আবার সেই সমস্যার দাওয়াই বিক্রি করে আখের গোছায়! এন্টি ভাইরাস কোম্পানি যেমন বাজারে ভাইরাস ছাড়ে, পুরে আবার তার এন্টি ভাইরাস বিক্রি করে ঠিক এই রকম! ইরাকের জন্য পরিচালিত জাতিসঙ্ঘের ওয়েল ফর ফুড প্রোগ্রামের লাখ কোটি টাকার দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে এই কর্মসূচি তৈরি করা দেশ, এমনকি খোদ তৎকালীন মহাসচিবের নাম!

বেকস্ট্যাবিং ফর বিগিনার নামের একটা সিনেমা দেখলাম কাল। ওয়েল ফর ফুড কর্মসূচিটির দুর্নীতির উপর নির্মিত ছবিটি থেকে এবং পরে গুগল থেকে যা জানা গেল:
১. ইরাকের তেল বিক্রির উপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা থাকায় ইরাকের সাধারণ মানুষ খাদ্য চিকিৎসার মতো প্রয়োজনীয় বিষয়ে মারাত্মকভাবে সংকটে পড়েছিল। এই সংকট থেকে সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে জাতিসংঘ ১৫ বিলিয়ন ডলারের (বর্তমানে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার) একটি প্রকল্প নেয়। এর মূল কথা ছিল, ইরাকের তেল সীমিত পর্যায়ে বিক্রি হবে, সেই অর্থ সাধারণ মানুষের প্রয়োজনে ব্যয় করা হবে।
২. দেখা গেলো, যে সব দেশ ইরাকের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে, তারাই এই কর্মসূচি অনুমোদনের ব্যাপারে সক্রিয় বেশি এবং পরে প্রমাণিত হলো এসব দেশের প্রায় ২০০০ কোম্পানি, প্রায় ১২০০ কূটনৈতিক-কর্মকর্তা ব্যবসা এবং ঘুষের ফলে এই কর্মসূচি থেকে লাভবান হয়েছে!
৩. একদিকে তারা সাদ্দামের উপর নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে, অন্যদিকে কাজ বা সস্তায় তেল পেতে সেই সাদ্দামকে ঘুষ দিচ্ছে, বা তাঁর কাছ থেকে ঘুষ নিচ্ছে!
৪. খাদ্য-ওষুধ ইত্যাতদ সরবরাহের কাজ পেতে রীতিমতো বিশাল সিন্ডিকেট তৈরি হয়। মেয়াদোত্তীর্ণ ওষধ সরবরাহ, নিম্নমানের খাবার সরবরাহ, কাজ না করেই বিল নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি ছিল প্রকাশ্যে। কাজ পেতে তদবির হয়েছে খোদ সেই সময়ের মহাসচির আনানের সঙ্গে। এসব দুর্নীতির ব্যাপারে যারাই সরব হয়েছে, তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করেছে হয়েছে, তাদেরকেই সরিয়ে দেয়া হয়েছে, হত্যাও করা হয়েছে! এই তালিকায় আছেন সেই সময় ইরাকে জাতিসংঘ অফিসের প্রধানও! তিনি এই কর্মসূচির দুর্নীতির উপর একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছিলেন, কিন্তু সেটা পাঠানোর আগেই তিনি তাঁর বাসায় রহস্যজনক ভাবে মারা যান!
৫. যুক্তরাষ্ট্রের ভাষায় সাদ্দাম ছিলো বিশ্বের শত্রু, অথচ এরকম একজন মানুষকেই কিনা তেল বিক্রি করে অবৈধ অর্থ কামানোর সুযোগ করে দেয় খোদ জাতিসংঘ! ওয়েল ফর ফুড কর্মসূচির আওতায় সাদ্দাম কিছুটা কম দামে তেল বিক্রি করতেন। আসলে তিনি কম দামে বিক্রি করতেন কাগজে কলমে! তিনি ঠিকই বেশি দামে বিক্রি করতেন, বাকি টাকা জাতিসংঘ বা ইরাক পেতো না, চলে যেত সাদ্দামের পকেটে।
৬. ওয়েল ফর ফুড কর্মসূচির নানা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিতেন খোদ এর প্রধান, পাশা! তিনি নিজে বিভিন্ন কোম্পানিকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য ঘুষ নিতেন। তার ব্যক্তিগত সহকারী মাইকেল সুলিভান পরে সেটা ফাঁস করে দেয়।
৭. বিভিন্ন দেশ বা দেশের কোম্পানি কিভাবে এই কর্মসূচি থেকে সুবিধা নেয় তার একটি উদাহরণঃ এই কর্মসূচিটির অর্থ ব্যবস্থাপনার মূল দায়িত্ব ছিল ফরাসি ব্যাংক বিএনপি পারিবাসের। এর মাধ্যমে ব্যাংকটি পায় ৭০০ মিলিয়ন ডলার! বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা।

যখনই এই কর্মসূচির দুর্নীতির কথা তোলা হতো, এর প্রধান তখনই বলতেন, মানবতার কারণে এই কর্মসূচি দরকার!
বলছিলাম, রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সংকট তৈরি করে, কেউ সেই সংকটকে পুঁজি করে সুবিধা নিচ্ছে না তো!?

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:০৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


ভাবনায় সমস্যা আছে, টাইপিং'এ সমস্যা নেই

২| ১৬ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: আমি জানতাম, মানুষের কী করা উচিত। আমি জানতাম না, মানুষ কী করে। মানুষের কী করা উচিত, তা বলা সহজ—এর জন্য শুধু নীতিজ্ঞান থাকলেই হয়।

৩| ১৬ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ১১:২২

মিঠু পারভেজ বলেছেন: কিসের ভিতর কি??

৪| ১৬ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ১১:৪৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: নাথিং ইম্পসিবল !!!

স্বাধীন সার্বভৌম ইরাক ধ্বংস করল স্রেফ মিথ্যার উপর ভিত্তি করে!
বার বছর পর বলল - সরি! রিপোর্ট সঠিক ছিল না (মিথ্যা ছিল)!

৫| ১৬ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ৮:১৭

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: থাকলেও থাকতে পারে। তবে মুসলিম হওয়াতে অনেকেে গুরুত্ব দেয়নি। হিন্দু হলে ভারতের সামনে মায়ানমার এমন কাজ করতে পারত না...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.