নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মামুন ইসলাম

মামুন ইসলাম

মামুন ইসলাম

হ্যাপী নিউইয়ার

মামুন ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস ৫ম পর্ব

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:০৫


বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস প্রথম পর্ব
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস ২য় পর্ব
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস ৩য় পর্ব
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস ৪র্থ পর্ব
১৯৭১ বাংলাদেশী বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড এবং অপারেশন সার্চলাইট
ঢাকার রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে নির্মিত স্মৃতিসৌধ ২০০৯
বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধকালীন বধ্যভূমি খোজার জন্য ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ডিসেম্বর থেকে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি । এখন পযন্ত দেশে প্রায় ৯৪২টি বধ্যভূমি শনাক্ত করতে পেরেছে তারা । স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন প্রকাশিত পত্রিকা এই বিষয়ক বিভিন্ন প্রবন্ধ নিবন্ধন গ্রন্থ, এবং মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার এবং স্থানীয় লোকজনদের সঙ্গে কথা বলে এসব বধ্যভূমি খুঁজে বের করা সম্ভব হয়েছে । প্রত্যেক বধ্যভূমিতে ফলক স্থাপনের পরিকল্পনা হচ্ছে । অধিকাংশ জেলাতেই মুক্তিযুদ্ধের বধ্যভূমিগুলো হয় রেলের নয়তো সড়ক এবং জনপথের আওতাভুক্ত জায়গায় ।

অপারেশন সার্চলাইট যাকে ইংরেজীতে বলা হয় Operation Searchlight এটি ১৯৭১সালে ২৫শে মার্চ থেকে শুরু হওয়া পাকিস্তানী সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত পরিকল্পিত গণহত্যা যার মধ্যমে তারা ১৯৭১ এর মার্চ এবং এর পূর্ববর্তী সময়ে সংঘটিত বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে দমন করতে চেয়েছিল । এই গণহত্যা ছিল পশ্চিম পাকিস্তানী শাষকদের আদেশে পরিচালিত যা ১৯৭০ সালের নভেম্বরে সংঘটিত অপারেশন ব্লিটজ এর পরবর্তি অনুষঙ্গ । অপারেশনটির আসল উদ্দেশ্য ছিল ২৬শে মার্চ এর মধ্যে সব বড় বড় শহর দখল করে নেওয়া এবং রাজনৈতিক ও সামরিক বিরোধীদের এক মাসের ভেতর নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া । বাঙালিরা তখন পাল্টা প্রতিরোধ সৃষ্টি করেন যা পাকিস্তানী পরিকল্পনাকারীদের ধারণার বাইরে ছিল । ১৯৭১ সালের মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে সকল বড় বড় শহরের পতন ঘটার মধ্যে দিয়ে অপারেশন সার্চলাইটের প্রধান অংশ শেষ হয়েছিল । এই সামরিক আক্রমণ ১৯৭১ সালের গণহত্যাকে তরান্বিত করে । এই গণহত্যা বাঙালিদের ক্রুদ্ধ করে তোলে যে কারণে পাকিস্তান সেনবাহিনীর বাঙ্গালী সেনাপতি এবং সৈনিকেরা বিদ্রোহ ঘোষণা করেন । এ সময় বহু মানুষকে শরণার্থী রূপে ভারতে আশ্রয় নিতে হয়েছিল । এই ভয়াবহ গণহত্যা ১৯৭১ এর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সূত্রপাত ঘটায় এবং বাঙালিরা দখলদারী পাকিস্তানী বাহিনীকে বিতারিত করার সংগ্রামে লিপ্ত হন । পরিণতিতে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর ভারত এবং বাংলাদেশের যৌথ কমান্ড মিত্র বাহিনীর কাছে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর বিনাশর্তে আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ।

এইভাবে সেদিন গণ হত্যা করা হয়েছিল ।
১৯৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পর বাঙালিরা আশা করেছিল যে ক্ষমতার পালাবদল হবে এবং আওয়ামী লীগ ৬ দফা অনুসারে সরকার গঠন করবে। ২৮ ফেব্রুয়ারী ১৯৭০সালের তৎকালীণ রাষ্ট্রপতি এবং সেনা প্রধান ইয়াহিয়া খান পিপিপি পাকিস্তান পিপলস পার্টি এর জুলফিকার আলী ভুট্টোর প্ররোচনা এবং চাপে জাতীয় বিধানসভার কার্যাবলি মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন । পিপিপি এরই মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমানের জনপ্রিয়তা হ্রাস করার উদ্দেশ্যে তদবির চালিয়ে যাচ্ছিলো জুলফিকার আলি ভুট্টো তখন বলেন যে তিনি বাঙালিদের ক্ষমতা থেকে দূরে রাখতে চান । এই স্থগিতকরণের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ ৭ই মার্চ ১৯৭১ সালে একটি গণসমাবেশের আয়োজন করেন । সেই সমাবেশ এতই সফল ছিল যে পাকিস্তান সরকার সেনাছাউনি এবং পূর্বপাকিস্তানের সরকারি প্রতিষ্ঠান কার্যাবলী সীমিত করে দিতে বাধ্য হন । সধারন জনগণ ও সেনাবাহিনী এবং বাঙালি ও বিহারীদের মধ্যাকার সংঘর্ষ ছিল প্রতিদিনকার সাধারণ ব্যপার । জেনারেল ইয়াহিয়া শেখ মুজিবের সাথে বৈঠকের উদ্দেশ্যে মার্চের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা আসেন এবং তারপর ভূট্টো তার সাথে যোগ দেন । আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা না হস্তান্তরের উদ্দেশ্য পশ্চিম পাকিস্তানী শাষক গোষ্ঠীর ভয় ছিল যে ক্ষমতা পূর্বে হস্তান্তরিত হলে পশ্চিমে পাকিস্তান পিপলস পার্টির কর্তৃত্ব হ্রাস পাবে পাকিস্তানী জেনারেলরা যাদের মধ্যে গুল হাসান ছিলেন অগ্রগামী পিপিপি কে সমর্থন যোগাতে থাকে যার ফলাফল দাড়ায় সেনা আক্রমণ ।


অপারেশনের পরিকল্পনা এবং পরিকল্পনা পদ্ধতি
২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৭১ এ পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর এক বৈঠকে গৃহীত প্রস্তাবনার ভিত্তিতে মার্চের শুরুতে ১৪তম ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল খাদিম হুসাইন রাজা এবং মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলি অপারেশনের মূল পরিকল্পনা তৈরি করেন । বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পশ্চিম পাকিস্তানের কোয়েতা হতে ১৬তম ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশন এবং খরিয়ান থেকে ১৯তম ডিভিশনকে ফেব্রুয়ারীর মাঝামাঝি সময়ে পূর্ব পাকিস্তানে যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ার আদেশ দেওয়া হয় । পাকিস্তানের উর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা পূর্ব পাকিস্তানের জিওসি লে জেনারেল সাহেবজাদা ইয়াকুব খান এবং পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ভাইস অ্যাডমিরাল এস এম আহসান পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ জনগণের উপর সামরিক হামলার বিরোধী ছিলেন বলে অপারেশনের পূর্বেই তাদেরকে দায়িত্ব হতে অব্যাহতি দেয়া হয় । লে জেনারেল টিক্কা খানকে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর এবং জিওসি করে পাঠানো হয় । মার্চের ১৭ তারিখ পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর সিওএস জেনারেল হামিদ টেলিফোন করে জেনারেল রাজাকে অপারেশনের পরিকল্পনা করার দায়িত্ব প্রদান করেন ।

১৮ই মার্চ সকালে ঢাকা সেনানিবাসের জিওসি কার্যালয়ে বসে জেনারেল রাজা এবং মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলি অপারেশনের পরিকল্পনা তৈরি করেন । পরিকল্পনাটি জেনারেল ফরমান নিজ হাতে হালকা নীল রঙের একটি অফিস প্যাডের ৫ পাতা জুড়ে লিড পেন্সিল দিয়ে লিখে নেন । জেনারেল ফরমান অপারেশনের সিদ্ধান্ত এবং সাফ্যলের শর্ত ইত্যাদির সীমা তৈরি করেন এবং জেনারেল খাদিম সেনাদলের স্থান বিতরন বিভিন্ন ব্রিগেড ও ইউনিটের উপর সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব বন্টন ইত্যাদি কাজ তদারকি করেন । এটা ধারণা করা হয় যে বাঙালি সেনারা অপারেশনের শুরুর সময় বিদ্রোহ করবে তাই পরিকল্পনাকারীরা প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সাথে আলাপকালে বাঙালি সৈন্যদের অপারেশনের পূর্বেই নিরস্ত্র করার এবং বাঙালি রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতারের প্রস্তাব দিলেন । যাতে দ্রুত বাঙ্গালীদের দূর্বল করা যায় । অপারেশনের সব কিছুই নির্ধারিত হল । হাতে লিখিত পরিকল্পনাটি ২০শে মার্চে আবারো জেনারেল হামিদ এবং লে জেনারেল টিক্কা পর্যালোচনা করে দেখলেন । জেনারেল হামিদ তাৎক্ষনিকভাবে বাঙালি সেনা ইউনিটগুলোকে নিরস্ত্র করার সিদ্ধান্ত নিলেও শুধুমাত্র ই পি আর আর্মড পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনীদের নিরস্ত্র করার অনুমতি দিলেন । ইয়াহিয়া খান তার সাথে এক বৈঠকের সময় আওয়ামী লীগ নেতাদের গ্রেফতারের পরিকল্পনাকে প্রত্যখ্যান করেন । পুণঃনির্ধারিত পরিকল্পনা অনুমোদন করা হয় এবং বিভিন্ন এলাকার কমান্ডারদের কাছে বিতরন করে দেওয়া হয় । অপারেশন শুরু হয় ঢাকায় ২৫শে মার্চ রাতের শেষ প্রহরে এবং অন্যান্য গ্যারিসনকে ফোন কলের মাধ্যমে তাদের জিরো আওয়ারে অপারেশন শুরুর পূর্বনির্ধারিত সময় দেন এবং তাদের কার্যক্রম শুরু করার জন্য সতর্ক করে দেওয়া হয় । ঢাকার সৈন্যদের কমান্ডে ছিলেন রাও ফরমান আলি এবং অন্যান্য সব স্থানের সৈন্যদের কমান্ডে ছিলেন জেনারেল খাদেম । জেনারেল টিক্কা এবং তার কর্মকর্তারা ৩১তম কমান্ড সেন্টারের সব কিছু তদারক করা এবং ১৪তম ডিভিশনের কর্মকর্তাদের সহযোগীতা করার উদ্দেশ্যে উপস্থিত ছিলেন ।
তথ্যসূত্রঃ বাংলা পিডিয়া, উইকি পিডিয়া, দেশের বিভিন্ন সংবাদ পত্র এবং অন্যান্য ওয়েব সাইট ।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:২৯

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: এতো ছোট করে লিখলে ১০০০ পোস্টেও ইতিহাস শেষ করতে পারবেন না।
প্লাস

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৩৪

মামুন ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ রাখাল ভাই । আপনার কথা মাথায় রাখবো আগামী পোস্টগুলো একটু বড় করে দেওয়ার চেষ্টা করবো ।
আসল কথা হল এখন তেমন একটা সময় দিতে পারছি না ভাই ।একটু ঝামেলায় আছি তাই ।

২| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৩৭

আরজু পনি বলেছেন:
১৯৭০ সালের নভেম্বরে সংঘটিত অপারেশন ব্লিটজ
...এটা মাথায় ছিল না ।

খুব বেশি বড় লেখা হলে পুরোপুরি ঠিকঠাক মতো পড়তে কষ্ট হয় ।
আমার কাছে এই সাইজটা ঠিক মনে হচ্ছে ।
অনেকগুলো পর্ব যদি ধৈর্য্য ধরে দিয়ে শেষ করতে পারেন, তবে শেষে একটা বইই প্রকাশ করে ফেলতে পারবেন, যা অসাধারণ একটি কাজ হবে ।

চালিয়ে যান।
অশেষ শুভকামনা রইল ।

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪৭

মামুন ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ আপু আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যয়ই আমাদের লেখার আসল পেরনা ।
আপু পাশে থেকে এভাবে পেরনা দেওয়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ।

৩| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৫৭

নাজমুল হাসান মজুমদার বলেছেন: সিরিজ চলতে থাকুক

৪| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৪৪

রাতুল_শাহ বলেছেন: সামনের পোষ্টটা একটু দীর্ঘ করার জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।

পোষ্টটা পড়তে পড়তে শেষ হয়ে গেলো।

৫| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:২১

দেবজ্যোতিকাজল বলেছেন: Click This Link

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.