নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খেলতেপড়তেদেখতেশুনতেগুনতে ভালোবাসি

নাছির84

বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর সবার আমি ছাত্র

নাছির84 › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইউরোপের ফুটবল বাজারে ছুটছে মুদ্রাস্ফীতির পাগলা ঘোড়া

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯

ডাকাবুকো ফুটবলারদের তালিকায় আল্ফ কমনের জায়গা হবে না। কিন্তু ১৯০৫ সালে সান্ডারল্যান্ড থেকে মিডলসবরোতে যোগ দিয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন ইংল্যান্ডের এ সেন্টার ফরোয়ার্ড। তখনকার দিনে প্রথম ফুটবলার হিসেবে তার নামের পাশে ১ হাজার পাউন্ড ট্রান্সফার মূল্যের মাইলফলকটা এখনো জ্বলজ্বল করছে। হালফিলে এ অঙ্কটা দাঁড়াবে ১ লাখ ৬ হাজার ১৫২ পাউন্ড।



৭৯ বছর পরের কথা।



বার্সেলোনা থেকে ট্রান্সফার ফির বিশ্বরেকর্ড গড়ে ন্যাপোলিতে যোগ দেন দিয়েগো ম্যারাডোনা। টাকার অঙ্কটা রীতিমতো হাস্যকর— ৫০ লাখ পাউন্ড। কিন্তু এখনকার দিনে ম্যারাডোনার এ ট্রান্সফার ফিই বেড়ে দাঁড়াবে ১ কোটি ৫০ লাখ পাউন্ড। ট্রান্সফার ফির ইতিহাসে প্রথম ১ কোটির কোটা স্পর্শ করেছিল এসি মিলান। ১৯৯২ সালে জ্যঁ পিয়েরে পাপিনকে এ মূল্যে কিনে হইচই ফেলে দেয় ‘রোজেনেরি’রা। দুর্দান্ত ভলির জন্য ‘প্যাপিনাডেস’ তকমা পাওয়া ফ্রান্সের সাবেক এ স্ট্রাইকারের সেই ট্রান্সফার ফি এখনকার দিনের তুলনায় আরো ৮ কোটি ৭০ লাখ পাউন্ড বর্ধিত হবে।



ইউরোপিয়ান ট্রান্সফারে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলেছে মুদ্রাস্ফীতির পারদ। ২০০১ সালে জুভেন্টাস থেকে জিনেদিন জিদানের ৪ কোটি ৬৬ লাখ পাউন্ড ট্রান্সফার মূল্যে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেয়ার কথাই ধরুন, এখন সেই ট্রান্সফার ফিই বেড়ে দাঁড়াবে ৬ কোটি ৭৬ লাখ পাউন্ড। তার মাত্র আট বছর পর ৮ কোটি ইউরোর চোখ রগড়ানো মূল্যে ম্যানইউ থেকে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে কেনে রিয়াল। এখন এ অঙ্কেরই বাজারমূল্য ৯ কোটি ৩০ লাখ পাউন্ড। গত বছর গ্যারেথ বেল যে মূল্যে রিয়ালে যোগ দিয়েছেন, তার থেকেও ৮০ লাখ পাউন্ড বেশি! পাঠকের মনে খুব সঙ্গত কারণেই প্রশ্নটা উঁকি দিতে পারে— এবারের ট্রান্সফার মৌসুমে মুদ্রাস্ফীতির পাগলা ঘোড়াটি ঠিক কোথায় গিয়ে চড়েছে?



সুইজারল্যান্ডকেন্দ্রিক ফুটবল পর্যবেক্ষণ প্রতিষ্ঠান সিআইএসের হিসাব অনুযায়ী, পাঁচ বছর আগেও ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলো খেলোয়াড় কিনতে যে পরিমাণ অর্থ খরচ করত, এবার সে অঙ্কটা ১৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ‘আমাদের সর্বশেষ বিশ্লেষণ অনুযায়ী পাঁচ বছর আগে ট্রান্সফার মার্কেটে ক্লাবগুলো যে পরিমাণ অর্থ খরচ করেছে, এবার সেই একই মানের ফুটবলার কিনতে তাদের ১৬% অর্থ বেশি বিনিয়োগ করতে হয়েছে। ফুটবলে মুদ্রাস্ফীতি যে ধীরে ধীরে লাগাম ছাড়িয়ে যাচ্ছে, এটাই তার প্রমাণ’— বিবৃতিতে জানায় সিআইএস।



ইউরোপের ‘বিগ ফাইভ’ অর্থাৎ সেরা পাঁচটি লিগ বিচারে সিআইএসের চোখে সবচেয়ে বড় অর্থ অপচয়কারী ক্লাবটি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড! গত সপ্তাহে রিয়াল মাদ্রিদ থেকে অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়াকে ৫ কোটি ৯৭ লাখ পাউন্ড খরচায় ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে উড়িয়ে আনে ম্যানইউ। সিআইএসের মতে, ট্রান্সফার মার্কেটের হালফিল দর বিচারে ডি মারিয়ার জন্য ম্যানইউ ৩ কোটি ইউরো বেশি খরচ করেছে। সিআইএসের কাঠগড়া থেকে প্যারিস সেন্ট জার্মেইও পার পায়নি। ২০১৪ বিশ্বকাপ চলাকালীন চেলসি থেকে ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার ডেভিড লুইজকে উড়িয়ে আনতে ৬ কোটি ২০ লাখ ইউরো খরচ করে ফরাসি ক্লাবটি। সুইস প্রতিষ্ঠানটির মতে, বাজারদর অনুযায়ী লুইজের জন্য ২ কোটি ৯০ লাখ ইউরো বেশি খরচ করেছে পিএসজি।



ট্রান্সফার মার্কেটে মুদ্রাস্ফীতির পাগলা ঘোড়া টগবগিয়ে আগে বাড়ার নেপথ্যে রিয়াল মাদ্রিদের ভূমিকা থাকবে না, তা হয় কীভাবে? এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বকাঁপানো সব ট্রান্সফারের বেশির ভাগই তো রিয়ালের দখলে। এবারো সে ধারাবাহিকতা বজায় রেখে কলম্বিয়ান প্লে-মেকার জেমস রদ্রিগেজকে ৮ কোটি ইউরো খরচায় মোনাকো থেকে দলে ভেড়ায় রিয়াল। কিন্তু সিআইএস মনে করছে, ২০১৪ বিশ্বকাপের গোল্ডেন বুটজয়ী ফুটবলারটিকে কেনার জন্য পাক্কা ২ কোটি ৫০ লাখ ইউরো অহেতুক খরচ করেছে রিয়াল।



তবে মুদ্রার উল্টো পিঠটাও দেখিয়ে দিয়েছে সিআইএস। নামগুলো একবার দেখুন— লুই সুয়ারেজ, মারিও বালোতেল্লি, দিয়েগো কস্তা। লিভারপুল থেকে সুয়ারেজকে কিনতে বার্সেলোনাকে খরচ করতে হয়েছে ৯ কোটি ৪০ লাখ ইউরো। উরুগুয়ে স্ট্রাইকারটির শূন্যতা পূরণে এসি মিলান থেকে মারিও বালোতেল্লিকে উড়িয়ে আনে লিভারপুল। এজন্য তাদের খরচ হয়েছে ২ কোটি ২ লাখ ইউরো। অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ থেকে কস্তাকে কিনতে চেলসির খরচ হয়েছে ৪ কোটি ৫ লাখ ইউরো।



সিআইএসের হিসাব অনুযায়ী সুয়ারেজ, বালোতেল্লি এবং কস্তা—এ তিন ফুটবলারকে ক্লাবগুলো তুলনামূলক সস্তাতেই পেয়েছে! বাজারদর বিশ্লেষণ করে তাদের অভিমত, সুয়ারেজের প্রকৃত মূল্যে যোগ হবে আরো ১ কোটি ২০ লাখ ইউরো। একইভাবে বালোতেল্লি ১ কোটি ৬০ লাখ ইউরো কম মূল্যে লিভারপুলে এবং কস্তা ১ কোটি ইউরো ছেড়ে দিয়ে যোগ দিয়েছেন চেলসিতে।



ট্রান্সফার মার্কেটে মুদ্রাস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি বোঝাতে মাত্র একটা উদাহরণই যথেষ্ট— ২০০৮-০৯ মৌসুমের ট্রান্সফার মার্কেটে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সব ক্লাব মিলে খরচ করেছিল মোট ৬৭ কোটি পাউন্ড। মাত্র পাঁচ বছরের ব্যবধানে সে অঙ্কটা বেড়ে এবার দাঁড়িয়েছে ৮৩ কোটি ৫০ লাখ পাউন্ডে! অথচ ফুটবলারদের মান কিন্তু এতটুকু বাড়েনি কিংবা কমেনি; একই রকমই আছে। অর্থাৎ ডি মারিয়া এবং বালোতেল্লির ট্রান্সফার মূল্যের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করলে সেই বাংলা প্রবাদটাই সবার আগে মনে পড়বে— ‘কেউ মরে বিল সেঁচে, কেউ খায় কৈ’!





Click This Link

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:১৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: +++

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৬

নাছির84 বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ হাসান ভাই। ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.