নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খেলতেপড়তেদেখতেশুনতেগুনতে ভালোবাসি

নাছির84

বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর সবার আমি ছাত্র

নাছির84 › বিস্তারিত পোস্টঃ

নৈশক্লাবের মালিক থেকে ‌'সুপার এজেন্ট' !

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:১০



ইউসেবিওর মহানায়ক হয়ে ওঠার বছর লিসবনে তার জন্ম। প্রথম জীবনে ফুটবলার হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সুবিধা করে উঠতে পারেননি। বয়স কুড়ির কোটা ছোঁয়ার আগেই পর্তুগালের বেশ কিছু ক্লাবে ট্রায়াল দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হন। তার পর পেটের দায়ে ভিডিওর দোকান চালানো থেকে শুরু করে কিছু দিন ডিজের কাজও করেছেন। সেখান থেকে কিছু পয়সা জমিয়ে একটি নৈশক্লাবের মালিক হন। কিন্তু উচ্চাভিলাষী মনকে বশ মানাতে পারেননি। হোর্হে পউলো অগাস্তিনো মেন্ডেজ তাই এমন কিছুর সন্ধান করছিলেন, যেখান থেকে প্রচুর টাকা-কড়ি কামানোর পাশাপাশি ক্ষমতার ভোগ-দখলও করা যাবে। তাই আবারো ফুটবলেই ফিরে আসতে হয়। কিন্তু এবার আর খেলোয়াড় হিসেবে নয়, ফুটবলারদের এজেন্ট হিসেবে তিনি নেমে পড়েন ট্রান্সফার মার্কেটে। সেটা ১৯৯৬ সালের কথা। ১৮ বছর পর এ মানুষটিই এখন ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে ক্ষমতাবানদের একজন!

মক্কেলদের নামগুলো একবার দেখুন— হোসে মরিনহো, লুই ফেলিপে স্কলারি, কার্লোস কুইরোজ, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া, র্যাদামেল ফ্যালকাও, জেমস রদ্রিগেজ, ভিক্টর ভালদেজ, পেপে, কোয়েন্ত্রাও, ন্যানি ও উঠতি আরো অনেকে। ইউরোপিয়ান ফুটবলে গত এক যুগে যত রেকর্ড সৃষ্টিকারী ট্রান্সফার হয়েছে, তার বেশির ভাগেরই নেপথ্য নায়ক হোর্হে মেন্ডেজ। ক্লাবগুলোর কাছে তার আরেক নাম ‘সুপার এজেন্ট’। এ বছর ব্রিটিশ ট্রান্সফার ইতিহাসকে (৫৯ দশমিক ৭ মিলিয়ন পাউন্ড) নতুন করে ম্যান ইউতে যোগ দিয়েছেন ডি মারিয়া, ৩২ মিলিয়ন পাউন্ডে চেলসিতে নাম লিখিয়েছেন দিয়াগো কস্তা— এসব ট্রান্সফারের পেছনে হোর্হে মেন্ডেজই ছিলেন মূল হোতা।

নৈশক্লাব চালানোর সময় বেশ কিছু উঠতি ফুটবলারকে বন্ধু বানিয়ে নেন। পর্তুগালের সেরা তিনটি ক্লাব— বেনফিকা, পোর্তো ও স্পোর্টিং লিসবনে তাদের নাম লেখানোর মাধ্যমে ট্রান্সফার জগতে মেন্ডেজের পথচলার শুরু। ২০০৪ সালে পোর্তোকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জেতান তার প্রধান মক্কেল ও বন্ধু হোসে মরিনহো। এর পরই তার কপাল খুলে যায়। পর্তুগাল থেকে বেশ কিছু উঠতি ফুটবলারকে স্পেন ও ইংল্যান্ডে মাল্টিমিলিয়ন ডলারের চুক্তিতে সই করিয়ে ইউরোপে নিজের জায়গাটা পোক্ত করে নেন মেন্ডেজ। এ বছর ডি মারিয়া, ফ্যালকাও, কস্তার ট্রান্সফার ছাড়াও রিয়াল মাদ্রিদকে তিনি প্রলুব্ধ করেন জেমস রদ্রিগেজকে কেনার জন্য। শেষ পর্যন্ত ৭১ মিলিয়ন পাউন্ডে রিয়াল তাকে দলে ভেড়ায়। বলা হয়ে থাকে, ইউরোপের কোনো তারকা ফুটবলার যদি তার কাঙ্ক্ষিত ক্লাবটিতে যোগ দিতে চান এবং সে ক্লাবটি যদি তাকে কিনতে নাও চায়, তবে সেক্ষেত্রে শেষ ওষুধটি হলেন হোর্হে মেন্ডেজ!

এবার অন্য একটি গল্প—

ট্রান্সফার বাজারে ‘থার্ড পার্টি’ নামে একটি টার্ম চালু আছে। এদের কাজ হলো কোনো উঠতি ফুটবলারের ‘অর্থনৈতিক স্বত্ব’-এর মালিক হওয়া। ফুটবল এজেন্ট, স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি থেকে শুরু করে যে কোনো বিনিয়োগকারীই এ থার্ড পার্টির ভূমিকা নিতে পারেন। এরা আর্থিকভাবে অসমর্থ কোনো ক্লাবের তারকা ফুটবলারদের অনুশীলন থেকে শুরু করে থাকা-খাওয়াসহ প্রায় সব ধরনের খরচ নির্বাহ করে। বিনিময়ে ওই তারকা ফুটবলারের ভবিষ্যৎ ট্রান্সফার ফির একটা মোটা অংশ তারা পেয়ে থাকে। হাল আমলে ব্যাপারটা এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, থার্ড পার্টির ভাগের অর্থ পরিশোধ করতে গিয়ে অনেক ক্লাবই দেউলিয়া হওয়ার পথে কিংবা আইনি ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ছে। স্বয়ং ফিফাও এদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে ব্যর্থ! ইউরোপিয়ান ফুটবলের কর্ণধার প্রতিষ্ঠান উয়েফা তাই এগিয়ে এসেছে। খুব দ্রুতই তারা এমন একটি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে, যেখানে কোনো থার্ড পার্টিকে ট্রান্সফার আইন (ফিন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লে) ভঙ্গ করলে তাদের নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি নির্দিষ্ট ওই ফুটবলারকেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বহিষ্কার করা হবে। ২০১৫-১৬ মৌসুম থেকে পরবর্তী দুই মৌসুম পর্যন্ত নিয়মটি পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করবে উয়েফা। মজার ব্যাপার, উয়েফার এ পদক্ষেপ নেয়ার নেপথ্য প্রভাবকও হোর্হে মেন্ডেজ !

ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ান সম্প্রতি তাদের প্রকাশিত এক জরিপে জানায়, গত বছর ইউরোপে ফুটবলারের পেছনে ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করে বিভিন্ন থার্ড পার্টি, যার বেশির ভাগেরই যোগসূত্র হিসেবে কাজ করেছেন মেন্ডেজ। গত বছর রদ্রিগেজকে পোর্তো ৪৫ মিলিয়ন ইউরোয় মোনাকোর কাছে বিক্রি করে। এ ট্রান্সফারে মেন্ডেজ নিজেই ছিলেন থার্ড পার্টির ভূমিকায়। এখান থেকে তার পকেটে ঢুকেছে ৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ইউরো। পোর্তো থেকে ফ্যালকাওকে অ্যাতলেটিকোয় নিয়ে আসার লভ্যাংশ হিসেবে ৫ দশমিক ৭ মিলিয়ন ইউরো পেয়েছেন মেন্ডেজ। এছাড়া কস্তার মোট ট্রান্সফার ফির ৩০ শতাংশ অর্থ ঢুকেছে মেন্ডেজের অ্যাকাউন্টে। তবে রদ্রিগেজকে কেনার ‘লভ্যাংশ’ হিসেবে রিয়াল তাকে কত অর্থ প্রদান করেছে, তা কোনো পক্ষই প্রকাশ করেনি। প্রশ্নটা সভাবত এসেই যায়, ১৯৯৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত মেন্ডেজ যতগুলো ট্রান্সফারের পেছনে কলকাঠি নেড়েছেন, সেখান থেকে তার মোট আয় কত হতে পারে?

ফুটবলমোদীদের কাছে এর জবাব হতে পারে একটাই — অকল্পনীয়!





তথ্যসুত্র ঃ গার্ডিয়ান

ছবিঃ ইন্টারনেট

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: সুপার এজেন্ট!! দেখী আসলেই সুপার ডুপার কাহিনী ঘটাইছে!!!!!!!!!!!!!!

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৩

নাছির84 বলেছেন: স্টোরিটা ইনকমপ্লিট। সময়ের অভাবে উনার বাকি কর্মকান্ডের বিশদ বিবরন দিতে পারিনি। পড়ার জন্য ধন্যবাদ ভাই। ভাল থাকবেন।

২| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১০

সুমন জেবা বলেছেন: জ্বালানী ও ইনফ্লাইল খাবার না থাকা সহ নানা

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৮

নাছির84 বলেছেন: ভাই, কিছু বুঝি নাই। একটু বুঝিয়ে বলবেন ?

৩| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:১০

অন্ধবিন্দু বলেছেন:
নাছির,

লিখাটি পড়লুম।

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৪৯

নাছির84 বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.