নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খেলতেপড়তেদেখতেশুনতেগুনতে ভালোবাসি

নাছির84

বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর সবার আমি ছাত্র

নাছির84 › বিস্তারিত পোস্টঃ

পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়...

১৭ ই মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৭



(৬ জুন, ১৯৮৬।‌ ‌'ল্যাম্ব অ্যান্ড ফ্লাগ' দলের অধিনায়কের সঙ্গে টসে বাংলাদেশ অধিনায়ক গাজি আশরাফ হোসেন লিপু - টেলিগ্রাফ)





(৭৭ বছর বয়সি নেভিল সোয়ানসন - টেলিগ্রাফ)



সাতাত্তর বছর বয়স হলে কি হবে, প্রায় তিন দশক আগের সেই স্মৃতি এখনো নেভিল সোয়ানসনের নখদর্পনে । তখন অষ্টপ্রহর পড়ে থাকতেন ওরচেস্টারের ‘ল্যাম্ব অ্যান্ড ফ্লাগ’-পানশালায় । এসব জায়গায় কখনো স্যাঙাতের অভাব হয়না। নেভিল সোয়ানসোনের ক্ষেত্রেই তাই ঘটেছে। বন্ধুরা মিলে মদ গেলার পাশাপাশি সবার মধ্যে আরও একটি ব্যাপারে মিল ছিল-ক্রিকেট। হ্যাঁ, ক্রিকেট খেলাটা সবাই ভীষন পছন্দ করতো। ১৯৮৬ সালের সেই গ্রীষ্মে কয়েকবন্ধু মিলে সিদ্ধান্ত নেন, আইসিসি ট্রফিতে প্রতিদ্বন্দিদ্বতাকারি যে কোন একটি দেশের বিপক্ষে তারা একটি প্রীতি ম্যাচ খেলবেন। দুয়ে দুয়ে চার মিলে যায়, কারণ সে বছর আইসিসি ট্রফির আয়োজক দেশ ইংল্যান্ড। অথচ পেশাদারিত্বের প্রশ্নই ওঠেনা, তারা সবাই ছিলেন নিরেট শখের ক্রিকেটার। কিন্তু আইসিসির কাছে ঠিকই আবেদন করে বসেন সোয়ানসন,‘এক নোটিশে জানানো হয় বাইরের দলগুলো স্থানীয়দের সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ খেলতে আগ্রহী। ল্যাম্ব অ্যান্ড ফ্লাগ দল ঠিক এরকম কিছুই চাচ্ছিল। যদিও এটা ছিল স্রেফ কৌতুক, কিংবা কিছুটা ধৃষ্টতাও বলতে পারেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে আইসিসির সাড়া পাওয়ায়, আমরা সবাই ভীষন অবাক হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, মাল্টা কিংবা তার থেকেও নিম্নসারির কোন দলের মুখোমুখি হতে হবে । কিন্তু প্রতিপক্ষ ছিল বাংলাদেশ’ !



পানশালায় বসে বানানো দলের নামটা তো দোকানের নামেই হওয়া উচিত ! কিন্তু মাঠ কোথায় পাওয়া যাবে ? পানশালায় সঙ্গীত-সুরা-সাকি সব থাকে, এর মধ্যে কোন আহাম্মক ক্রিকেট মাঠ টেনে নিয়ে আসবে ? কিন্তু, স্বাগতিক দল হয়ে মাঠের ব্যবস্থা করতে না পারলে ইজ্জত থাকেনা, অগ্যতা পাশের ইন্ডিপেন্ডেন্ট কিংস স্কুলের মাঠটা যোগাড় করে ফেলে সোয়ানসন অ্যান্ড কোং।



টস জিতে ‘ল্যাম্ব অ্যান্ড ফ্লাগ’কে ব্যাটিংয়ে পাঠান লাল-সবুজ অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। ৬০ ওভারের ম্যাচ হলেও ১০ ওভার আগেই ২৩৪ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিক দল। জবাবে ৫ উইকেটের জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।



২৯ বছর পরের কথা।



৯ মার্চ, ২০১৫। অ্যাডিলেড ওভালে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে ইংল্যান্ড। ম্যাচের সারাটা সময় টিভিতে চোখ সেঁটে ছিলেন নেভিল সোয়ানসন। বয়সের ক্ষয়রোগ দৃষ্টিশক্তি শুষে নিচ্ছে ক্রমশ। চশমা ছাড়া চলেনা। নেভিল তার চোখকে বিশ্বাস করতে পারেননি-বাংলাদেশের কাছে ১৫ রানে হেরে গেল ইংল্যান্ড ! পানশালার কোন দল নয়, জাতীয় দল ! তাও এমন এক ম্যাচে, যেখানে হার মানে বিদায়। ডেইলি টেলিগ্রাফকে তাই টাটকা ইংরেজ ক্ষোভ উগড়ে দেন নেভিল সোয়ানসন,‘বেচারা ইংল্যান্ড ! বাংলাদেশের বিপক্ষে আমরা বেশ ভাল খেলেছিলাম। আমাদের প্রস্তুতি বলতে ছিল পানশালা কিংবা গ্রাম্য দলগুলোর বিপক্ষে খেলা। কিন্তু আমাদের জাতীয় দল সে মানের পারফরম্যান্সটুকু দেখাতেও ব্যর্থ ! সোয়ানসনের স্মৃতিচারণার এখানেই শেষ নয়,‘সেটা ছিল দারুন একটা দিন। প্রচুর দর্শকের সমাগম হয়েছিল। বাংলাদেশও খুশী ছিল, কারণ ওদের প্রীতি ম্যাচ খেলার ইচ্ছেটা পূরণ হয়। আমরা কখনো বাংলাদেশে গিয়েছি কিনা- দলটির ম্যানেজার আমাকে এ প্রশ্ন করেছিল। তারপর থেকে পরবর্তি সপ্তাহ পর্যন্ত গাঁটের পয়সা খরচ করতে হয়নি। কিন্তু এখন আমাকে বলতেই হচ্ছে, ইংল্যান্ড এবার সে পর্যন্ত পৌঁছাতেও পুরোপুরি ব্যর্থ।’



ব্যর্থতার অপর পিঠেই সফলতা। এই মূহুর্তে ইংলিশ পেনির এক পিঠে ব্যর্থতার নাম যদি হয় ইংল্যান্ড, তবে নিঃসন্দেহে অপর পিঠটি বাংলাদেশের। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলছে টাইগাররা। কেভিন পিটারসেনের পেনিতে তাই বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের মিশ্রন,‘ হায় ! ঈশ্বর ! আমি এটা কোনভাবেই বিশ্বাস করতে পারছিনা। কোনভাবেই না ! তবে বাংলাদেশকে অভিনন্দন। তারা যোগ্যতর দল হিসেবেই জিতেছে।’ জিওফ্রে বয়কটকে সবাই ঠোঁটকাটা নাকউঁচু ইংরেজ হিসেবেই চেনে। পাঁচ আগেও লর্ডস টেস্টে বাংলাদেশের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বয়কট। কি বিধিলিপি ! ‘অ্যাডিলেড এলিজি’র শিকার হওয়ার পর সেই বয়কটই মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ সম্পর্কে বলতে বাধ্য হন,‘মুশফিককে সঙ্গে নিয়ে সেঞ্চুরি করা ছেলেটা দারুন খেলেছে। ইংল্যান্ড নিজেকে যতটা ভাল মনে করে, বাস্তবে তারা ততোটা ভাল নয়। আমরা তাদের সমর্থন করতে চাই। কিন্তু সেজন্য ভাল খেলতে হয়।’



ড্র অনুষ্ঠিত হওয়ার খুব বেশি পরে না হলেও, কিন্তু বিশ্বকাপ শুরুর বহুদিন আগে থেকেই এ লগ্নটার প্রতীক্ষায় ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট। কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ ! ক্রিকেটের কুলীন এ আসরে বাংলাদেশও সঙ্গী সেরা আট দলের লড়াইয়ে। টাইগারদের শরীর থেকে তাই ‘মিনোজ’ গন্ধটা আর টের পাচ্ছেনা ক্রিকেটকুল। ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও স্টারস্পোর্টসের বিশ্লেষক আকাশ চোপড়ার মন্তব্যটা এরকম,‘দয়া করে কেউ একে (ইংল্যান্ডের হার) আপসেট বলবেন না। কারণ ব্যাপারটা সেরকম নয়। এই জয় বাংলাদেশের সেইসব সমর্থকদের প্রতি উত্সর্গীকৃত, যারা সুখে-দুঃখে সবসময় দলটির পাশে থেকেছে।’ মজার ব্যাপার, হারের পর কেভিন পিটারসেনও ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের প্রতি সহমর্মিতার ‘শূল’ পাঠিয়ে বলেন,‘দয়া করে কেউ বলবেন না, আমরা ওয়ানডে ক্রিকেটকে প্রাধান্য দেইনি। বিশ্বকাপের ছয়মাস আগে আমরা ব্যাক-টু-ব্যাক অ্যাশেজ খেলেছি’ ! হার্শা ভোগলে বেশ রসিক মানুষ। তার কাছে ইংলিশদের হার টাইগারদের আনন্দকে আরও একধাপ বাড়িয়ে দেয়ার উপলক্ষ্য,‘অসাধারন বাংলাদেশ ! তোমরা যোগ্যতর দল হিসেবেই জিতেছো। তাই আনন্দে ভেসে যাও। ইংল্যান্ড নিজেদেরকে বন্দী রেখেছে একটি অন্ধকার কক্ষে, যেখানে আলো-বাতাস কিছুই নেই। দুনিয়াটা যে অনেক পাল্টে গেছে, সেটা তাদের অজানা’! ইংলিশদের প্রতি এতসব সমবেদনার ডালিতে সবচেয়ে মজার কথা বলেছেন ভারতীয় সাংবাদিক আয়াজ মেনন,‘যে দেশটা বিশ্বকে ওয়ানডে ক্রিকেট উপহার দিল, তারাই শেষ পর্যন্ত খেলতে ভুলে গেল ! ইংল্যান্ডের জন্য দুই মিনিট নীরবতা।’



কিন্তু ইতিহাস তো নীরব রইবে না ? বর্তমানের প্রাসঙ্গিকতায় অতীতই তার সঙ্গী। প্রবাদপ্রতিম ক্রিকেট লিখিয়ে স্যার নেভিল কার্ডাসও তাই বলেছিলেন,‘স্কোরবোর্ড কিংবা রানকে কেউ মনে রাখেনা। বছরের পর বছর ধরে সবার মনে টিকে থাকে শুধু খেলোয়াড়। স্কোরবোর্ডকে সবাই ভুলে যায়।’ এই যে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে রুবেলের বীরত্বে ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশ ; তাতে পুড়ে ছাড়খাড় এক ইংলিশ ক্রিকেট ভক্ত টুইটারে দাবী করেন,‘বাংলাদেশী মুদ্রার নতুন নামকরণ করা হোক-রুবেল’ !



সত্যি বলতে, ক্রিকেট ও সাহিত্য-এ দুটি ক্ষেত্রই বীরপ্রসবা সৃজনভূমিক্ষেত্র। ইংলিশদের উপনৈবেশিক শাসনক্রম খেয়াল করলে দেখা যায়, ‘ক্রিকেট’ ইংরেজদের জাতীয় খেলা থেকে ক্রমাণ্বয়ে পরিণত হয়েছে উপনিবেশিক দেশগুলোর প্রধান খেলায়। অতীতের ভারতবর্ষ পানে তাকিয়ে দেখুন, তখন ক্রিকেটকে শ্রেণী বিভাজনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে ইংরেজরা। কেতাবি পোশাকে সাহেবরা করতেন ‘ব্যাটিং’, আর এদেশী ‘নেটিভ’দের কাজ ছিল দুটি-বল করা ও বল কুড়োনো। উপনিবেশিক শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে ক্রিকেটকে ধর্মের সঙ্গে মিশ্রিত করে এক ধরণের ‘ককটেল’ও প্রস্তুত করেছে ইংরেজরা। ১৮৫১ সালে প্রকাশিত রেভারেন্ড জেমস পাইক্রফট তার ‘দ্য ক্রিকেট ফিল্ড’ বইয়ে বলেন, প্রকৃত খ্রিষ্টানধর্ম হলো শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যন্ত্য দৃঢ় একটি ধর্ম, যার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলো একজন ক্রিকেটারের মধ্যে পরিলক্ষিত হয়। মিশনারীরা এদেশীয় বাঙালীদের খ্রিষ্টানধর্মে দীক্ষিত করতে ব্যর্থ হওয়ার পর ক্রিকেটকে জুড়ে দেয়া হয় নৈতিকতার সঙ্গে। অর্থাত্, খেলাটিকে নৈতিকতা বিধানের পন্থা হিসেবে চিহূিত করে চালু করা হয় একটি ফ্রেইজ-‘নট ক্রিকেট’। ইংরেজ সাহেবরা তাদের শ্রেষ্ঠত্ব নিশ্চিত করতে নেটিভদের আদর্শগত কোন বিচ্যূতি দেখলেই বলতো-‘নট ক্রিকেট।’



বহু বছর আগে, উপমহাদেশে ক্রিকেট নিয়ে ইংরেজদের রাজনীতি কপচানোর কারণ একটাই- একসময়ের শাসকের কাছ থেকে শেখা খেলাটিই এখন পরিণত হয়েছে গুরুমারা বিদ্যায় ! যে কারণে ইংল্যান্ডের ফুটবল কিংবদন্তি গ্যারী লিনেকার পর্যন্ত বলতে বাধ্য হয়েছেন,‘ দারুন খেলেছে বাংলাদেশ ! তবে ভাল খবর হলো, ইংল্যান্ডের জন্য এর থেকে বাজে পারফরম্যান্স আর হতে পারেনা।’



কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশের জন্য বাধা হিমশৈলের মতো ভারতের বিখ্যাত ব্যাটিং লাইন আপ। তাতে বুঁদ হয়ে কিউই কিংবদন্তি স্যার রিচার্ড হ্যাডলি থেকে শুরু করে সৌরভ গাঙ্গুলী পর্যন্ত ধোনির দলকেই ফেভারিট বলেই মানছেন। কাগজে-কলমে ভারতই ফেভারিট। যেমনটা ইংল্যান্ডও ছিল। কিংবদন্তি বলে, বাকিরা যেখানে জীবনটাকে ‘খেলা’ বলে মনে করে, সেখানে ইংলিশদের চোখে খেলার অপর নামই-ক্রিকেট। ১৭৭৭ সালে তাদের মুলকেরই তৃতীয় ডিউক অব ডরচেষ্টার বলে গেছেন-‘মানুষের জীবনটা ক্রিকেট ছাড়া ছাড়া আর কি’ ? সত্যি বলতে, খেলাটির স্বভাব যেমন নিয়ত পরিবর্তনশীল, সেই একই ছাঁচে গড়া মানুষের জীবনটাও। বিশেষ করে ক্রিকেটারদের জীবন। প্রমান চাই ? তাহলে একটা গল্প শুনুন-



২১ বছর আগের কথা।



সেবার কেনিয়ায় অনুষ্ঠেয় আইসিসি ট্রফিকে ঘিরে অনেক স্বপ্ন ছিল দলটির। ’৯৬ বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন লালন করছিল তারা। এর আগে ’৮২ ও ’৯০-আইসিসি ট্রফির সেমিতে খেলেও বিশ্বকাপে জায়গা হয়নি তাদের। ক্রিকেট নিয়ে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মকে পুঁজি করে ’৯৪-এর আসরকে তাই চোখের মণি করে নেমেছিল দলটি। কিন্তু গ্রুপপর্বে কেনিয়ার কাছে ১৩ রানের হারে স্বপ্নভঙ্গ হয় দলটির। ২৫ ফেব্রুয়ারী, ১৯৯৪- সেই হারের এই দিনটা এখনো অনেকের চোখে দেশটির ক্রিকেটের ‘কালোদিন’। কারণ ওই হারের পর ভেঙ্গে পড়েছিলেন ক্রিকেটাররা। ক্রিকেটের ঘরোয়া অবকাঠামো নির্মানে ওই জয়টা ভীষন প্রয়োজনীয় ছিল। সঙ্গে ছিল ফুটবলের হু হু করে বেড়ে ওঠা জনপ্রিয়তার চোখ রাঙানী। এতসব বন্ধুর পরিবেশের মধ্যে বারবার ভেঙ্গে পড়া স্বপ্নের চারগাছকে নতুন করে কতবারই বা জীবন দান করা যায় ? ক্রিকেটারদের ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলা তাই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু তিনবছর পরই ইতিহাস ! সেবারের আইসিসি ট্রফির কল্যাণে পূরণ হয় বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন। তারপর হাঁটি হাঁটি পা পা করে খেলা হয়েছে আরও চারটি বিশ্বকাপ। মাঝের এ ২৬ বছরে জয়-পরাজয়ের পরিসংখ্যান অতটা স্বাস্থ্যকর না হলেও প্রতিপক্ষের সমীহ ছিল। কিন্তু পাশের বাড়ির নাক উঁচু প্রতিবেশি যেমন কখনো ফিরেও তাকায় না, তেমনি করে খেলাটির কুলীন দেশগুলো তাদেরকে সবসময় ‘মিনোজ’ হিসেবেই বিবেচনা করেছে। হঠাত্ এক গ্রীষ্মে বিপ্লব ঘটে গেল ! ‘গুরুমারা বিদ্যা’-কথাটি প্রমান করে ছাড়ে দলটি। যেখানে এ কান্ড ঘটলো, সেই হ্যামিল্টনে ম্যাচ শেষে দলটি অভূতপূর্ব সংবর্ধনা পায় স্থানীয়দের কাছ থেকে। তাদের এই জয়ে ভীষন অহলাদিত হয় খেলাটির আরও এক ‘মোড়ল’ দেশ। ক্রিকেটের জনকদের সঙ্গে ঐতিহ্যগতভাবে শত্রুতার ইতিহাস থাকায় তথাকথিত সেই ‘মিনোজ’ দলটির এ জয়কে গণমাধ্যমে তারা গুরুত্ব সহকারে ছাপে এভাবে-‘Woeful poms heading home'. অর্থাত্, প্রচন্ড দুর্দশাগ্রস্থ ‘মাতৃভূতি ইংল্যান্ডের বন্দী’রা (অস্ট্রেলিয়রা ঠাট্টাচ্ছলে ইংরেজদের Pom বলে ডেকে থাকে, যার অর্থ prisoner of mother england ) বাড়ি ফিরে যাচ্ছে !



ক্রিকেটিয় দুনিয়ার চোখে তথাকথিত সেই ‘মিনোজ’ দেশটি যে বাংলাদেশ, তা খোলাসা করে না বললেও চলে। আকরাম খান-বুলবুল-নান্নু-আতাহার-পাইলটরা যে ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়ে দিয়ে গেছেন, এখন সেখানে দাড়িয়ে নিজ যোগ্যতাবলেই তার ফল খাচ্ছেন মাশরাফিরা। ক্রিকেটকুলের পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিন, ঈশান-নৈর্ঋত থেকে বাহবা এসে আছড়ে পড়ছে তাদের উপর। খেলোয়াড়দের জীবনটা ঠিক এভাবেই পাল্টে যায়। সেই ধারবাহিকতায় পাল্টায় দেশের ভাবমূর্তি। যেমন ধরুন আকাশ চোপড়ার উক্তি,‘এটা আপসেট নয়। যোগ্যতর দল হিসেবেই জিতেছে বাংলাদেশ।’ কিন্তু আসল মজাটা এরমধ্যে নেই। তা খুঁজে পাবেন ডেইলি টেলিগ্রাফের সিডনি সংষ্করণে,‘অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট সমর্থকদের তর সইছে না। আগামি অ্যাশেজে তাদের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড-ক্রিকেটের মিনোজ !



















মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৬

আধখানা চাঁদ বলেছেন: প্রথম প্লাস।

খুবই তথ্যবহুল, সাবলীল একটা লেখা। অনেক ধন্যবাদ।

১৭ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:০০

নাছির84 বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ ভাই। ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।

২| ১৭ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:০৯

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: অনেক ভালো লিখেছেন নাছির। পড়ে যেমন মুগ্ধ হলাম, তেমনি আশাবাদী হলাম ১৯ তারিখের কোয়ার্টার ফাইনাল নিয়ে। তবে ঐ দিনের খেলায় কী করবে জানি না, তবে যাই করুক আমার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে। কারণ বাংলাদেশ যোগ্যতা বলেই কোয়ার্টার ফাইনালে গিয়েছে। আর নক আউট পর্বের খেলায় যেকোনো রেজাল্টই হতে পারে। বাংলাদেশ নিজেদের সেরাটা দিয়ে খেলুক, তাতে জয় পরাজয় যাই হোক, তাতেই আমরা খুশি।

১৭ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:১৫

নাছির84 বলেছেন: হারি-জিতি নাহি বিকার,
টাইগার ব্হিনে-
এ জীবন বওয়া ভার !

শুভ কামনা বাংলাদেশের জন্য।

৩| ১৭ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:৫৭

আজকের বাকের ভাই বলেছেন: ধন্যবাদ এমন তথ্যমুলক পোস্টের জন্য

১৮ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৫

নাছির84 বলেছেন: পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।

৪| ১৮ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৬

শ্রাবণধারা বলেছেন: চমৎকার একটা লেখা । ক্রিকেট নিয়ে এই কয়দিনের লেখাগুলো থেকে বেশ ভিন্ন ধরনের । শুভকামনা রইলো ।

১৮ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৬

নাছির84 বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ। শুভ কামনা..

৫| ১৮ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:৪৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: চমৎকার একটা লেখা। লিপুদের সেই ম্যাচের কথা জানা ছিলো না। এটার স্কোরকার্ড কি সংরক্ষিত আছে কোথাও?

১৮ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৭

নাছির84 বলেছেন: আমারও জানা ছিলনা। টেলিগ্রাফের কল্যাণে জেনেছি। তবে স্কোরবোর্ড পাইনি। ক্রিকইনফো কিংবা অন্যকোথাও খুঁজে পাইনি। শুভ কামনা..

৬| ২২ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:০৫

আছিফুর রহমান বলেছেন: দারুন পোস্ট,

২২ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৩:০৪

নাছির84 বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।

৭| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:৩৪

শায়মা বলেছেন: নতুন বছরের শুভেচ্ছা ভাইয়া!:)

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৪

নাছির84 বলেছেন:
জীবন পাতায় এক বছরের কাটতি,
তবুও শুভেচ্ছারও নেই কমতি !

মানুষের বুড়ো হওয়ার পথে বাকিদের মুখে হাসির খৈ ফোটে ! সবাই হাঁটছে একই পথে। এটাই আসল পরিতৃপ্তি, যা সৌজন্যতা হয়ে ঝরে পড়ে শুভেচ্ছার মোড়কে লুকোনো শব্দে।

এতকিছুর পরেও বাংলা নববর্ষ ভালভাসি। তাই শুভেচ্ছার জবাবে শুভেচ্ছার বুনট--আসুন, সবাই মিলে ভাল থাকি। :P :P

৮| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১২

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: অসাধারণ একটা পোস্ট পড়তে লেট হয়ে গেছে।


+++

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:৫১

নাছির84 বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ ভাই। ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.