নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খেলতেপড়তেদেখতেশুনতেগুনতে ভালোবাসি

নাছির84

বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর সবার আমি ছাত্র

নাছির84 › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনেক 'প্রথম'-এর রুপকথা

০৩ রা মে, ২০১৫ বিকাল ৩:১৯

দুই ওপেনারের সেঞ্চুরি নতুন কিছু নয়। আগের টেস্টেই তা দেখা হয়েছে। চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এ তামিম-ইমরুলই। কিন্তু ম্যাচের পরিস্থিতি ও তাৎপর্য বিচারে খুলনা টেস্টের সঙ্গে তার কোনো তুলনাই চলে না।



জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সেবার বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে উদ্বোধনী জুটিতে রেকর্ড ২২৪ রানের পার্টনারশিপ গড়েছিলেন তামিম-ইমরুল। রেকর্ডটা যিনি মনে রেখেছিলেন, তিনি বেশকিছু দিন ধরেই একের পর এক সমালোচনায় বিদ্ধ। টেস্ট দলে জায়গা পাওয়া নিয়ে কত প্রশ্ন! তার ওপর মাথায় ছিল প্রথম ইনিংসে ২৯৬ রানের পাহাড়সম ঘাটতির চাপ। চোখ রাঙানি দিচ্ছিল, চতুর্থ ও পঞ্চম দিনের ভঙ্গুর উইকেট। পাঁচ সেশনেরও বেশি সময় ধরে উইকেটে পড়ে থাকতে হবে! টাইগারদের সবচেয়ে দুঁদে ভক্তটিও পর্যন্ত ভাবতে বাধ্য হবেন— ম্যাচ বাঁচাতে উইকেট আঁকড়ে পড়ে থাকার মতো ব্যাটসম্যান কোথায় বাংলাদেশে?



উদ্বোধনী জুটিতে ১৫০ রান চলে আসার পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে রেকর্ডটা মনে পড়ে যায় ইমরুলের। সতীর্থ তামিমকে বলেন, ‘জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে উদ্বোধনী জুটিতেই তোর আর আমার সর্বোচ্চ রানের জুটি আছে। চল, আজ ওটা টপকাই।’



১৯৬০ সালে ওভাল টেস্টে জিওফ পুলারকে সঙ্গে নিয়ে ২৯০ রানের জুটি গড়েছিলেন কলিন কাউড্রে। টেস্টে তৃতীয় কিংবা চতুর্থ ইনিংসে উদ্বোধনী জুটিতে এতদিন এটাই ছিল সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। কাউড্রে ১৫ বছর আগেই পাড়ি জমিয়েছেন না ফেরার দেশে। সেখানে পুলার তার সঙ্গী হন গত বছর বড়দিনের ঠিক পরদিন। তারা বেঁচে থাকলে নিশ্চয়ই শিহরিত হতেন এই ভেবে— টেস্ট ক্রিকেটের ১৩৮ বছরের ইতিহাসে কুলীন দেশগুলোর বাঘা-বাঘা ওপেনাররা তৃতীয় কিংবা চতুর্থ ইনিংসে যা কখনো করে দেখাতে পারেননি, সেই মঞ্চেই উদ্বোধনী জুটিতে কীভাবে ৩১২ রান যোগ করলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার!



সময় গড়িয়ে চলার সঙ্গে ক্রিকেট ইতিহাসে ‘নায়কে’র বদল হয়। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে তৃতীয় কিংবা চতুর্থ ইনিংসের উদ্বোধনী জুটিতে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহের রাজপাটটি এখন তাই বাংলাদেশের দখলে। ৫৫ বছর আগে কাউড্রে-পুলারের সেই কীর্তিকে পেছনে ঠেলে নতুন ইতিহাস রচনা করলেন তামিম-ইমরুল জুটি। এই প্রথম তৃতীয় ইনিংসের উদ্বোধনী জুটিতে ৩০০ রান দেখল টেস্ট ক্রিকেট। দলের দ্বিতীয় ইনিংসের উদ্বোধনী জুটিতেও ৩০০ রান এই প্রথম! কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা ওপেনিং জুটির খেরোখাতায় এ ‘মানিকজোড়’ ১২তম। শীর্ষে রয়েছেন নেইল ম্যাকেঞ্জি-গ্রায়েম স্মিথ জুটি। ৭ বছর আগে চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বিপক্ষেই ৪১৫ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটসম্যান।



দ্বিতীয় ইনিংসে যে কোনো উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রান করার তালিকায় এখন তামিম-ইমরুল জুটির অবস্থান দশম। তবে শুধু রেকর্ডে নয়, খুলনা টেস্টে তামিম-ইমরুল জুটির মাহাত্ম্য অন্য জায়গায়। পাকিস্তানের খুলনা টেস্ট জয়ের আশার সমাধি রচিত হয়েছে তামিম-ইমরুলের উদ্বোধনী জুটিতে— এটা কি বোঝাতে পারবে পরিসংখ্যান?



তার পরও পরিসংখ্যান অনেক কিছু বোঝাতে সক্ষম। সাদা পোশাকে পরিণত বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবিটা তো এসব সংখ্যারাজির দেহ-পল্লবেই লোকায়িত! বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টানা তিন টেস্টে সেঞ্চুরি করলেন তামিম ইকবাল। এর মধ্যে তার সর্বশেষ ইনিংসটি বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসের ব্যাটিং অধ্যায়কে লিখিয়েছে নতুন করে— মুশফিককে (২০০) টপকে সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি যে এখন তামিমের (২০৬) দখলে! ইমরুল ডাবল সেঞ্চুরি না পেলেও খেলেছেন তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। তার তিন টেস্ট সেঞ্চুরির মধ্যে ‘খুলনার মহাকাব্য’ই যে সেরা— সে তো বলাই বাহুল্য।



প্রথম ইনিংসে ২৯৬ রানের ঘাটতি নিয়ে মাঠে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৫৫৫! এটা কি পরিণত বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি নয়? এর আগে তো আর কখনই দ্বিতীয় ইনিংসে পাঁচ শতাধিক রানের চূড়ায় পৌঁছতে পারেনি বাংলাদেশ। এর আগে গত ৭ বছরের মধ্যে তামিম ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যানই তো টেস্টের দুই ইনিংসেই পঞ্চাশোর্ধ রানের ইনিংস খেলতে পারেননি। খুলনায় সেটাই করে দেখালেন ইমরুল! এর আগে তো গোটা টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসেই পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে উদ্বোধনী জুটিতে দ্বিশতক রান করতে পারেনি কোনো দল। শুধু উদ্বোধনী জুটি বললে ভুল হবে— পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে যে কোনো উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রান তোলার কীর্তি গড়েছেন তামিম-ইমরুল। পাশাপাশি তাদের নামের পাশে লেখা হয়েছে, যে কোনো উইকেট জুটিতে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রান তোলার রেকর্ড। কিন্তু এতকিছু বলেও আসলে কিছুই বলা হয় না! টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২৯৬ রানে পিছিয়ে থেকে, দুই দিন পর প্রতিপক্ষকে দ্বিতীয়বার ব্যাট করতে না দিয়ে সেই ম্যাচের ললাটে ড্রয়ের কাব্য লেখা— এ নজিরটাও তো বাংলাদেশের ক্রিকেটে প্রথম! সাদা পোশাকে পাকিস্তানের বিপক্ষে ড্রও এই প্রথম!

অনেক ‘প্রথম’-এর প্রসবা বলেই হয়তো আজ থেকে শত বছর পরেও টাইগারভক্তদের পরম্পরায় তোলা থাকবে খুলনা টেস্টের গল্পগাথা।

দুঃখিত, রূপকথা!

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা মে, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৭

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: প্লাস

০৩ রা মে, ২০১৫ বিকাল ৪:৫১

নাছির84 বলেছেন: কাকে ? আমাকে ? নাকি তামিম-ইমরুলকে ? :P
পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।

২| ০৩ রা মে, ২০১৫ বিকাল ৫:০৮

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: তিন জনকেই। ;)

০৩ রা মে, ২০১৫ রাত ৮:১৯

নাছির84 বলেছেন: ওরা খারাপ খেললে মাইনাস দিবেন না তো ? ভয় লাগে !

৩| ০৪ ঠা মে, ২০১৫ দুপুর ১:৪৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: খালি রেকর্ড আর রেকর্ড! এই টেস্টের স্কোরকার্ড আমার মনে থাকবে সারাজীবন, আশা করি :-B

০৫ ই মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৪

নাছির84 বলেছেন: কোনকিছুই কি মনে থাকে সারাজীবন ? নাকি মনে রাখা যায় ? নিত্য যোগ হয় মণি-মাণিক্য স্মৃতির ধূলায় !

কিন্তু আমরা মনে রাখবো। আরেকটি রেকর্ডভূখ পারফরম্যান্সের দেখা না পাওয়া পর্যন্ত।

ভাল থাকবেন ভাইয়া। নিয়ত শুভ কামনা।

৪| ০৫ ই মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৫

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: এককথায় সোনার হরফে লেখা পারফরমেন্স । বাংলাদেশ ক্রিকেটটিমের ফ্যানরা গর্ব ভরে রেকর্ডগুলো স্মরণ করবে । আর খেলোয়াড়রা প্রেরণা খুঁজে পাবে ভাল খেলার ।সত্যি এরকম সাফল্য নতুন নতুন সাফল্য আনে উৎসাহ যোগায় ।

০৫ ই মে, ২০১৫ রাত ৮:০৮

নাছির84 বলেছেন: ঢাকা টেস্টেও নতুন সাফল্যের দেখা মিলবে--এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস। কেননা, এই মুহুর্তে টাইগারদের বৃহষ্পতি তুঙ্গে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.