নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খেলতেপড়তেদেখতেশুনতেগুনতে ভালোবাসি

নাছির84

বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর সবার আমি ছাত্র

নাছির84 › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঘরের ছেলেতে সর্বনাশ রিয়ালের

১৫ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৮

যুব প্রকল্প থেকে তুলে আনলেও রিয়াল তাকে রোনালদো-বেল-রদ্রিগেজদের পাশে খেলার মতো যোগ্য বলে মনে করেনি। এ কারণে গত জুলাইয়ে আলভারো মোরাতাকে জুভেন্টাসের কাছে বেচে দেয় স্প্যানিশ জায়ান্টরা। কিন্তু মোরাতা কি ভুলতে পেরেছেন রিয়ালকে? সেমিফাইনালের প্রথম লেগে গোল করেও উদযাপন করেননি। ফিরতি লেগেও সেই একই দৃশ্য! ম্যাচের ৫৭ মিনিটে রিয়ালের বক্সে জটলার ভেতর থেকে বাঁ পায়ের চকিত শটে গোল করেন মোরাতা। এর পর আনন্দে পাগলপ্রায় সতীর্থদের বুকে টেনে নেন বিরস বদনে! মোরাতা কি জানতেন, তার ওই গোলটাই শেষ পর্যন্ত কাল হয়ে দাঁড়াবে রিয়ালের জন্য?

তুরিনের প্রথম লেগে ২-১ গোলের হার। বুধবার সান্টিয়াগো বার্নাব্যুর ফিরতি লেগে রিয়ালের সামনে সমীকরণটা দাঁড়ায় এ রকম— ন্যূনতম ১-০ ব্যবধানে জিততে হবে। কোনোভাবেই গোল হজম করা চলবে না। ম্যাচের ২২ মিনিট পর্যন্ত এ লক্ষেই অবিচল ছিল রিয়াল। হামেস রদ্রিগেজকে পেছন থেকে অবৈধভাবে ট্যাকল করেন গিওর্গি কিয়েলিনি। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। আগের ম্যাচে পেনাল্টি মিস করে রিয়ালের লিগ শিরোপা জয়ের স্বপ্ন বিসর্জন দিয়েছিলেন রোনালদো। কিন্তু এবার জুভেন্টাসের জিয়ানলুইজি বুফনের মতো অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ গোলরক্ষককেও সোজাসুজি শটে ফাঁকি দিতে রোনালদোর কোনো অসুবিধা হয়নি। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। দুই লেগ মিলিয়ে ২-২ ব্যবধানে সমতায় ফেরে দুই দল। ফলাফলটা শেষ পর্যন্ত এমন থাকলে ‘অ্যাওয়ে গোলে’র সুবিধা নিয়ে রিয়ালই উঠত ফাইনালে। কিন্তু মোরাতার ওই গোলটাই স্প্যানিশ জায়ান্টদের সর্বনাশ ডেকে আনে। রিয়ালেরই ঘর থেকে ১-১ গোলের ড্র ছিনিয়ে নেয় জুভেন্টাস। দুই লেগ মিলিয়ে ৩-২ ব্যবধানের জয়ে দীর্ঘ এক যুগ পর ‘তুরিনের ওল্ড লেডি’রা নাম লেখাল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে। কিন্তু মোরাতার ইতিহাস লেখার এখানেই শেষ নয়। ফাইনালে এর আগে কখনই বার্সেলোনা-জুভেন্টাস দ্বৈরথ দেখেনি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। নিজের প্রাণের ক্লাবকে আসরটি থেকে ছিটকে ফেলে মোরাতা শুধু নির্মম পেশাদারিত্বের স্বাক্ষরই রাখেননি, পাশাপাশি সম্পূর্ণ নতুন এক যুযুধান দেখার সুযোগ করে দিলেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগকেও!

মোরাতাকে ২ কোটি ইউরোয় ‘জুভ’দের কাছে বেচে দেয়ায় এখন নিশ্চয়ই খুব আক্ষেপ হচ্ছে কার্লো অ্যানচেলত্তির? ১২ বছর আগের ফাইনালে এসি মিলানের কোচ ছিলেন তিনি। সেবার জুভেন্টাসের বিপক্ষে শেষ হাসিটা হেসেছিলেন অ্যানচেলত্তি। এবার সে হাসি ফিরিয়ে দেয়ার পাশাপাশি রিয়ালে অ্যানচেলত্তির চাকরিকেও শঙ্কার মুখে ঠেলে দিল জুভেন্টাস। ম্যাচ শেষে রিয়াল কোচের উক্তি, ‘ক্লাব সুখী থাকলে আমি চালিয়ে যাব। কিন্তু সে রকম না হলে ক্লাবকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গত মৌসুমের ফাইনালে রিয়ালের হয়ে মাঠে নেমেছিলেন মোরাতা। সেবার শিরোপার দেখা পেয়েছিলেন। এবার জুভেন্টাসের হয়ে জিততে পারবেন কিনা— প্রশ্নটার জবাব দেয়ার বদলে মোরাতার কণ্ঠে ঝরে পড়ে রিয়ালের বিপক্ষে গোল করার অনুশোচনা, ‘আমি গোল উদযাপন করিনি। ব্যাপারটা আমার জন্য একই সঙ্গে তিক্ত ও মধুর অভিজ্ঞতা।’

ম্যাচের ৫৪ শতাংশ সময় বল দখলে রেখেছিল রিয়াল। প্রতিপক্ষের গোলপোস্ট তাক করে ২৩টি শট নিয়েছে তারা। কিন্তু তার জবাবে মাত্র সাতবার আক্রমণ করেই আসল কাজটি সেরে নিয়েছে অ্যালেগ্রির দল। এর মধ্যে মরণঘাতী ওই গোলটির জন্য মোরাতাকে অভিশাপ দিতেই পারেন রিয়াল সমর্থকরা। কিন্তু সেটা হবে স্রেফ অবিচার। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়ালের জালে জুভেন্টাসের করা সর্বশেষ ছয় গোলের চারটিই যে করেছেন স্প্যানিশ স্ট্রাইকাররা!

অথচ বার্নাব্যুতে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে লড়াইয়ে অতিথি দলটির চেয়ে বেশি সুযোগ পেয়েছে রিয়াল। এর মধ্যে প্রথমার্ধে দুটি সুযোগ পেয়েছিলেন গ্যারেথ বেল। তার একটি প্রচেষ্টা রুখে দেন বুফন। পরবর্তীতে মার্সেলোর ক্রস থেকে হেড করতে ব্যর্থ হন বেল। রোনালদো ও বেনজেমা মিলে আরো তিনটি সুযোগ নষ্ট করেন। এর মধ্যে বুফন একাই বেনজেমার দুটি প্রচেষ্টা রুখে দেন। ১২ বছর আগের ফাইনালে খেলা জুভেন্টাসের সে দলটির একমাত্র সদস্য হিসেবে ৬ জুন বার্লিনের ফাইনালে বার্সার মুখোমুখি হবেন বুফন। বার্লিনে লড়াইয়ের প্রতিজ্ঞা ঝরে পড়ে তার কণ্ঠে, ‘বার্লিনে আমরা ভ্রমণ করতে যাচ্ছি না। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল খেলার সুযোগ পেলে ট্রফি জয়ের সুযোগটা কে ছাড়ে!’

রিয়াল যেমন ছেড়ে দিল, নাকি সুযোগ ছাড়তে বাধ্য হলো! চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে ট্রফি ধরে রাখার রেকর্ডটা হাতছানি দিয়ে ডাকছিল তাদের। কিন্তু সেখান থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে থাকতে স্প্যানিশ জায়ান্টরা ছিটকে পড়ল স্পেনেরই এক স্ট্রাইকারের আঘাতে! তাদের ইতালিয়ান কোচও হার মানলেন ইতালির একটা দলের কাছেই। শুধু একজন ফুটবলার রেকর্ড গড়েও মাঠ ছেড়েছেন বিষণ্ন বদনে। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। পেনাল্টি থেকে ওই গোলটি করে রিয়ালের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় আলফ্রেড ডি স্টেফানোকে ধরে ফেলেন রোনালদো। এ আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা মেসিকেও ছুঁয়ে ফেললেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডটা নিয়ে গেলেন দেশে। কিন্তু দল না জিতলে পরিসংখ্যান তো স্রেফ কিছু নিরেট সংখ্যা! আবার, এ সবকিছুই ফুটবলের পেশাদারী জগতের নির্মম বাস্তবতা। নির্মম রসিকতাও!

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই মে, ২০১৫ ভোর ৫:০৬

হাসান মাহবুব বলেছেন: +++

২| ১৬ ই মে, ২০১৫ সকাল ৯:১৪

এন জে শাওন বলেছেন: ওজিলরে বেইচ্যাও একই তিক্ত সমস্যায় পড়েছে রিয়াল।

৩| ১৬ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৩:২০

তৌফিক মাসুদ বলেছেন: রিয়াল সমর্থকদের ক্ষোভ হল,বার্সাকে নিয়ে। আসলে কোন দলই টানা দুবার ফাইনাল জেতেনি। আর রিয়াল তো দশ বছর পর পর জেতে।

৪| ১৭ ই মে, ২০১৫ সকাল ১০:৩৭

পাজল্‌ড ডক বলেছেন: পোস্ট ম্যাচ রিভিউ চমৎকার হইছে।

মোরাতা কে যখন বিক্রি করে দিচ্ছে রিয়াল,আমার মনে হচ্ছিল কি করতেছে এইটা,আমি ভেবেছিলাম বেনজেমাকে ছেড়ে দিবে, বাট হলো উল্টাটা।
তবে বেনজেমা আর মোরাতা এর মধ্যে বেনজেমার বল পাজেশন রাখার ক্ষমতা ভালো,ওয়ান টু ওয়ান এ বেনেজেমা বেটার,ওদিকে মোরাতার ফিনিশিং বেটার।সবকিছু মিলিয়ে রিয়াল ভেবেছিলো বেল-রোনাল্দোই বেশি স্কোর করবে এই কারণে অপেক্ষাকৃত অনভিঞ্গ মোরাতাকে বেচে দেয়।

মোরাতা যদি ওর ফুল পটেনশিয়াল অনুযায়ি ইন ফিউচারে ফ্লারিস করে দেখবেন এই রিয়াল ই ৫০ মিলিয়ন বেশি দামে ওকে কিনে আনবে,জানেন ই তো রিয়ালে এমেচারের জায়গা নাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.