নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খেলতেপড়তেদেখতেশুনতেগুনতে ভালোবাসি

নাছির84

বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর সবার আমি ছাত্র

নাছির84 › বিস্তারিত পোস্টঃ

এসো বৃস্টি নামাই

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৫২


শ্রাবণ গত হয়ে চলছে ভাদ্রের কেরামতি। এই ভ্যাপসা গরমে মনটা্ও যেন চাতক পাখি, দে জল! জল দে!

আকাশে প্রতিদিনই মেঘ জমছে। কিন্তু বৃস্টির নাম নেই। আমাদের জীবনের আশাগুলো্ও পেঁজা তুলোর মেঘের মতো। ভেসে ভেসে স্বপ্ন দেখায়, একদিন জলের ফোঁটা হয়ে নামবে জীবনের ডাঙায়। কিছু নামাই, কিছু নামে না, তাই বৃস্টির প্রতীক্ষা।

এখানে বৃষ্টি এলে ‘ওখানে’ বৃষ্টি পড়ে, বুকের ভেতরে। বুক মানে একটা ছয় তারের গিটার—ফোঁটা ফোঁটা বৃস্টিতে বাজে টুং টাং শব্দে। ভেজা ভেজা সব গান। মনের মেঘপিয়ন এসে সেই গানকে কোথায় যেন নিয়ে যায়! আমরা খুঁজে খুঁজে হয়রান হয়ে বলি—দূর ছাই! এসবই নস্টালজিক স্মৃতি!

স্মৃতি মাত্রই অতীতবিধুর। ফেলে আসা সময়ের জমা-খরচ পাতা। বৃষ্টি নামলে এসব দিস্তা দিস্তা পাতা কী এক গোপন প্রণয়বলে জেগে ্ওঠে! একেকটি ফোঁটায় একেকটি ফ্রেম, ধরা যায় না ছোঁয়া যায় না, আবার দমিয়ে রাখা্ও অসম্ভব। মনের গোপন কুুঠুরি চুঁইয়ে পড়ে সেই যে আমার নানান রংয়ের দিনগুলি!

হ‌ুমায়ূন আহমেদের বৃষ্টি এমন, ‘মাঝে মাঝে বৃষ্টি নামে, একঘেয়ে কান্নার সুরের মতো সে-শব্দ। আমি কান পেতে শুনি। বাতাসে জামগাছের পাতায় সরসর শব্দ হয়। সব মিলিয়ে হৃদয় হা-হা করে ওঠে। আদিগন্ত বিস্তৃত শূন্যতায় কী বিপুল বিষণ্নতাই না অনুভব করি। জানালার ওপাশের অন্ধকার থেকে আমার সঙ্গীরা আমায় ডাকে। একদিন যাদের সঙ্গ পেয়ে আজ নিঃসঙ্গতায় ডুবেছি।’

বৃষ্টির সঙ্গে মানুষের নিঃসঙ্গতা আর বিষণ্নতার কী যেন এক সম্পর্ক আছে।

আমরা শৈশব ভালোবাসি। ছেলেবেলায় সকালে বৃষ্টি মানেই স্কুলে না যাওয়ার ফন্দি। মা-বাবা যতক্ষণ পর্যন্ত বলবেন না, আজ স্কুলে যেতে হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত বিছানাও ছাড়া হতো না। একটু বড় হওয়ার পর সেই বৃস্টি-ই এসেছে আশীর্বাদ হয়ে। দুপুরে আকাশে কালো মেঘ মানেই আজ টিফিন একটু আগেই। দপ্তরির কাছ থেকে বল নিয়ে দে ছুট মাঠে!

বড় হয়ে সে সুযোগ আর নেই। জীবন-ঘানির যাঁতাকলে সেই হারানো সময় উধাও।কিন্তু সব মানুষই মনে মনে কোথায় যেন বড় নিঃসঙ্গ, বিষণ্ন। অবুঝ মন তাই ফিরে পেতে চায় সেই সময়। জানে পাবে না, তাই অপেক্ষা বৃষ্টির। ্ওটা নামলেই যে জাগে! আর সে সময় বলতে তো শুধু ওটুকুই টিকে আছে! তাই গায়ে মেখে হাঁটতে হয় পেছনে ফেলে আসা পথে। তিরি তিরি বৃষ্টির বুনটে বাঁধানো পথ বেয়ে ফিরে আসে শৈশব, হারানো মানুষ, আর তাঁদের ঘিরে অগণিত স্মৃতির নির্যাস।

বৃষ্টিতে মানুষের স্মৃতিমেদুর হয়ে ওঠার নেপথ্যে সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ আছে কি? পুরো ব্যাপারটাই তো মনজাগতিক। বৃষ্টির প্রতি মানুষের আসক্তি চিরকালীন। এই কর্মব্যস্ত সময়ে তো কথাই নেই। বৃষ্টি এলে মানুষের ব্যস্ততায় ভাটা পড়ে। সব মিলিয়ে মস্তিষ্কের খানিক বিশ্রামে মনটা হয়ে ওঠে আর্দ্র। বৃষ্টির ছাঁট পেয়ে তখন মনের ভেজা মাটিতে পুরোনো সব সুখ-দুঃখ আপনাই জেগে ওঠে। আমরা তাই নিয়ে বাঁচি, তাই বৃষ্টিতে ভিজি।

অনেক দিন পর বৃষ্টি হলে মাটির সোঁদা গন্ধ এসে নাকে ঘাই মারে। যুক্তরাষ্ট্রের লেখক জো হ্যানসনের দাবি, এই সোঁদা গন্ধের সঙ্গে মানুষের ‘নস্টালজিক’ হওয়ার গোপন সম্পর্ক আছে। এ গন্ধটা আমাদের ফিরিয়ে নেয় শৈশবে কিংবা ফেলে আসা সময়ে। বিশেষ করে গ্রাম থেকে যাঁরা শহরে উঠে এসেছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এ সোঁদা গন্ধ স্মৃতির নেশা ধরাবেই। সে নেশায় বৃষ্টি কেবলই রূপক, আর তার স্পর্শ পেলেই মনে পড়ে, ‘একদিন বৃষ্টিতে বিকেলে...।’

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: গতকাল রাতে হুট করে বেশ ভালো বৃষ্টি হলো। অথচ গরম কমে নি।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:০৬

নাছির84 বলেছেন: গরম কমে না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.