নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
পবিত্র শবে বরাতঃ ফজিলত এবং করণীয়-বর্জনীয় আমল
শবে বরাত কোনটি?
হাদিসের পরিভাষায় 'নিছফে শাবান' তথা শাবানের মধ্যবর্তী রাতকে বলা হয় শবে বরাত। আর 'শাবানের মধ্যবর্তী রাত' বলতে শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতকে বুঝানো হয়। শবে বরাত কথাটি এসেছে ফারসি ভাষা থেকে। 'শব' মানে 'রাত', আর 'বরাত' মানে 'ভাগ্য' বা 'মুক্তি'। সেই হিসেবে 'শবে বরাত' অর্থ 'মুক্তির রাত' বা 'ভাগ্য রজনী'। ‘শবে বরাত’ -এর আরবি ‘লাইলাতুল বারাকাত’। তবে হাদিস শরিফে এই ধরনের কোনো শব্দ ব্যবহৃত হয়নি। হাদিসে বলা হয়েছে ‘নিসফ শাবান’ বা শাবান মাসের মধ্য রজনী। আমাদের এতদাঞ্চল বিশেষতঃ ভারতীয় উপমহাদেশ, পার্শ্ববর্তী ইরানসহ পৃথিবীর অনেক দেশে এই দিনটি শবে বরাত নামেই সমধিক পরিচিত।
ইসলামি শরিয়ত বছরের যে পাঁচটি রাতকে মর্যাদাপূর্ণ এবং বিশেষ সাওয়াবের রাত হিসেবে নির্ধারণ করেছে শবে বরাত তার ভেতরে 'লাইলাতুম মিন নিছফে শাবান' বা 'শবে বরাত' অন্যতম। আর বিশেষ ৫ টি রাত হচ্ছে: ১। ঈদুল ফিতরের রাত ২। ঈদুল আজহার রাত ৩। শবে মিরাজ বা মিরাজের রাত ৪। শবে বরাত বা বরাতের রাত এবং ৫। শবে কদর বা কদরের রাত।
এই রাতের কথা কি কুরআনে আলোচিত হয়েছে?
হযরত ইকরামা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুসহ কিছু সংখ্যক সাহাবির মতে সূরাহ আদ দুখান -এর প্রথমাংশে ‘লাইলাতুল মুবারাকা’ বা বরকতময় রজনী বলে শাবানের মধ্যবর্তী রাত তথা শবে বরাতকেই বুঝানো হয়েছে। (তাফসিরে মাআরিফুল কোরআন)।
একই অভিমত ব্যক্ত করেছেন বিখ্যাত অনেক মুফাসসিরিনে কেরাম। তাদের বক্তব্য, এখানে ‘লাইলাতুল মুবারাকা’ বা বরকতময় রজনী বলে শাবান মাসে পূর্ণিমা রাতকেই বোঝানো হয়েছে। (তাফসিরে মাজহারি, রুহুল মাআনি ও রুহুল বায়ান)।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলা বলেন,
حم
وَالْكِتَابِ الْمُبِينِ
إِنَّا أَنزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةٍ مُّبَارَكَةٍ إِنَّا كُنَّا مُنذِرِينَ
فِيهَا يُفْرَقُ كُلُّ أَمْرٍ حَكِيمٍ
أَمْرًا مِّنْ عِندِنَا إِنَّا كُنَّا مُرْسِلِينَ
رَحْمَةً مِّن رَّبِّكَ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
رَبِّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا إِن كُنتُم مُّوقِنِينَ
لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ يُحْيِي وَيُمِيتُ رَبُّكُمْ وَرَبُّ آبَائِكُمُ الْأَوَّلِينَ
بَلْ هُمْ فِي شَكٍّ يَلْعَبُونَ
فَارْتَقِبْ يَوْمَ تَأْتِي السَّمَاء بِدُخَانٍ مُّبِينٍ
‘হা-মিম! শপথ! উজ্জ্বল কিতাবের, নিশ্চয় আমি তা নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে; নিশ্চয় আমি ছিলাম সতর্ককারী। যাতে সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়। এ নির্দেশ আমার তরফ থেকে, নিশ্চয় আমিই দূত পাঠিয়ে থাকি। এ হলো আপনার প্রভুর দয়া, নিশ্চয় তিনি সব শোনেন ও সব জানেন। তিনি নভোমণ্ডল, ভূমণ্ডল ও এই উভয়ের মাঝে যা আছে সেসবের রব। যদি তোমরা নিশ্চিত বিশ্বাস করো, তিনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, তিনি জীবন ও মৃত্যু দেন, তিনিই তোমাদের পরওয়ারদিগার আর তোমাদের পূর্বপুরুষদেরও। তবু তারা সংশয়ে রঙ্গ করে। তবে অপেক্ষা করো সেদিনের, যেদিন আকাশ সুস্পষ্টভাবে ধূম্রাচ্ছন্ন হবে। (সুরাহ- আদদুখান, আয়াত: ১-১০)
হাদিসে বর্ণিত শবে বরাতের ফজিলত
এই রাতের ফজিলত বর্ণনায় অনেক হাদিস প্রচলিত রয়েছে। এর সবগুলো সহিহ বা বিশুদ্ধ নয়। আমরা শুধু বিশুদ্ধ হাদিসগুলো থেকে আমল করার চেষ্টা করবো। আল্লাহ পাক আমাদের আমলের তাওফিক দান করুন।
হজরত মুআজ ইবনে জাবাল রাদিআল্লাহু তাআলা অানহু থেকে বর্ণিত, নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 'আল্লাহ তাআলা শাবানের মধ্যবর্তী রাতে মাখলুকাতের দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া আর সবাইকে ক্ষমা করে দেন।' (সহিহ্ ইবনে হিব্বান: ৫৬৬৫)। হজরত আওফ ইবনে মালিক রাদিআল্লাহু তাআলা অানহু থেকে ইবনে খুজাইমা হজরত আবু বকর রাদিআল্লাহু তাআলা অানহু থেকে এবং আবু মুসা আশআরী রাদিআল্লাহু তাআলা অানহু থেকে এ রকম বর্ণনা করেছেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৩৯০, রাজীন: ২০৪৮; সহিহ্ ইবনে খুজাইমা, কিতাবুত তাওহিদ, পৃষ্ঠা: ১৩৬)।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রাদিআল্লাহু তাআলা অানহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: 'আল্লাহ তাআলা এ রাতে বিদ্বেষ পোষণকারী ও নিরপরাধ মানুষকে হত্যাকারী ছাড়া বাকি সব বান্দাকে ক্ষমা করে দেন।' (মুসনাদে আহমদ, খণ্ড: ৪, পৃষ্ঠা: ১৭৬)।
হজরত উসমান ইবনুল আস রাদিআল্লাহু তাআলা অানহু থেকে বর্ণিত, 'এ রাতে আল্লাহ তাআলা মুশরিক ও ব্যভিচারিণী ছাড়া সবার ইচ্ছা পূরণ করে থাকেন।' (বাইহাকি, শুআবুল ইমান, খণ্ড: ৩, পৃষ্ঠা: ৩৮৩)।
হজরত আবু সালাবা রাদিআল্লাহু তাআলা অানহু থেকে বর্ণিত, 'যখন শাবানের মধ্যরাত আসে, তখন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মাখলুকাতের প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে তাকান; মুমিনদিগকে ক্ষমা করে দেন, কাফিরদের ফিরে আসার সুযোগ দেন এবং হিংসুকদের হিংসা পরিত্যাগ ছাড়া ক্ষমা করেন না।' (কিতাবুস সুন্নাহ, খণ্ড: ৩, পৃষ্ঠা: ৩৮২)।
হজরত আয়িশা রাদিআল্লাহু তাআলা অানহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, 'নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ রাতে মদিনার কবরস্থান ‘জান্নাতুল বাকি’তে এসে মৃতদের জন্য দুআ ও ইস্তিগফার করতেন। তিনি আরও বলেন, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বলেছেন, এ রাতে বনি কালবের ভেড়া বকরির পশমের (সংখ্যার পরিমাণের) চেয়েও বেশিসংখ্যক গুণাহগারকে আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করে দেন।' (তিরমিজি শরিফ, হাদিস: ৭৩৯)।
আরেক হাদিসে বর্নিত। হজরত আয়িশা সিদ্দিকা রাদিআল্লাহু তাআলা অানহা বলেন, 'একবার রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাজে দাঁড়ালেন এবং এত দীর্ঘ সিজদাহ করলেন যে আমার ধারণা হলো, তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন; আমি তখন উঠে তাঁর পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম, তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল; তিনি সিজদাহ থেকে উঠলেন এবং নামাজ শেষ করে আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে আয়িশা! তোমার কি এ আশঙ্কা হয়েছে? আমি উত্তরে বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আপনার দীর্ঘ সিজদাহ থেকে আমার আশঙ্কা হয়েছিল আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কি না? নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি কি জানো এটা কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলই ভালো জানেন। তখন নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এটা হলো অর্ধশাবানের রাত; এ রাতে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের প্রতি মনোযোগ দেন; ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করে দেন, অনুগ্রহ প্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন। আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের তাদের অবস্থাতেই ছেড়ে দেন।' (বাইহাকি, শুআবুল ইমান, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৮২)।
শবে বরাতে পালনীয় নফল নামাজ ও ইবাদত
ইবনে মাজাহ বর্ণিত এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, 'যখন শাবানের মধ্য দিবস আসবে, তখন তোমরা রাতে নফল ইবাদত করবে ও দিনে রোজা পালন করবে।' (ইবনে মাজাহ)
হজরত আলী রাদিআল্লাহু তাআলা অানহু থেকে বর্ণিত, নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, '১৪ শাবান দিবাগত রাত যখন আসে, তখন তোমরা এ রাতটি ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাও এবং দিনের বেলায় রোজা রাখো; কেননা, এদিন সূর্যাস্তের পর আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার আসমানে নেমে আসেন এবং আহ্বান করেন; কোনো ক্ষমাপ্রার্থী আছো কি? আমি ক্ষমা করব; কোনো রিজিকপ্রার্থী আছো কি? আমি রিজিক দেব; আছো কি কোনো বিপদগ্রস্ত? আমি উদ্ধার করবো। এভাবে ভোর পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে আহ্বান করতে থাকেন।' (ইবনে মাজাহ, হাদিস নং: ১৩৮৪)।
মধ্য শাবানের নফল রোজা
রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, 'যখন শাবানের মধ্য দিবস আসে, তখন তোমরা রাতে নফল ইবাদত করো ও দিনে রোজা পালন করো।' (সুনানে ইবনে মাজাহ)।
এছাড়া প্রতি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ আইয়ামে বিজ -এর নফল রোজা তো রয়েছেই। যা আদি পিতা হজরত আদম আলাইহিসসালাম পালন করেছিলেন এবং আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও এ রোজাগুলো পালন করতেন; যা মূলত সুন্নত। সুতরাং তিনটি রোজা রাখলেও শবে বরাতের রোজা এর অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। বিখ্যাত মুহাদ্দিস ফকিহ হাফিজ ইবনে রজব রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, এ দিনের রোজা আইয়ামে বিজ, অর্থাৎ চান্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের রোজার অন্তর্ভুক্ত। (লাতায়িফুল মাআরিফ, পৃষ্ঠা ১৫১)।
এতদ্ব্যতিত মাসের প্রথম তারিখ, মধ্য তারিখ ও শেষ তারিখ নফল রোজা গুরুত্বপূর্ণ; শবে কদরের রোজা এর আওতায়ও পড়ে। সওমে দাউদি বা হজরত দাউদ আলাইহিস সালাম -এর পদ্ধতিতে এক দিন পর এক দিন রোজা পালন করলেও সর্বোপরি প্রতিটি বিজোড় তারিখে রোজা পালন করা হয়ে যায়; এবং শবে কদরের রোজাও স্বাভাবিকভাবেই এর ভেতরে শামিল হয়ে যায়। সর্বোপরি রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাস ছাড়া রজব ও শাবান মাসে সবচে' বেশি নফল নামাজ ও নফল রোজা পালন করতেন; শাবান মাসে কখনো ১০ টি, কখনো ১৫ টি, কখনো ২০ টি নফল রোজা রাখতেন। কখনওবা আরও বেশি রাখতেন। এমনকি উম্মুহাতুল মুমিনিনগণ এমনও বর্ণনা করেছেন যে, 'রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনভাবে বেশি পরিমানে এবং ধারাবাহিকভাবে নফল রোজা রাখা শুরু করতেন মনে হতো তিনি আর কখনো রোজা ছাড়বেন না।' (মুসলিম)।
শবে বরাতের অপরিহার্য্য অনুসঙ্গ হালুয়া রুটির মাহাত্ম্য
হালুয়া রুটির সাথে শবে বরাতের অলিখিত একটি সম্পর্ক কায়েম হয়েছে আমাদের সমাজে। অনেকের নিকট এই দিবসে হালুয়া রুটির গুরুত্ব নফল ইবাদাত এবং অন্যান্য নেক আমলের চেয়েও বেশি। দিনভর রুটি বানিয়ে, গোস্ত ইত্যাদির আয়োজনে ব্যস্ত সময় কাটিয়ে ক্লান্ত শ্রান্ত শরিরে রাতের ইবাদাত আর করা সম্ভব হয় না অনেকের। এমনটা নিতান্ত দু:খজনক। হালুয়া রুটির সাথে শবে বরাতের বিশেষ সম্পর্ক কায়েম করা নিরর্থক। হালুয়া রুটি গোস্ত ইত্যাদি উপাদেয় খাবার আয়োজনের ব্যবস্থা থাকলে আপনি এগুলো তৈরি করতে পারেন। নিজেরা খান এবং অন্যদের খাওয়ান। অভাবী গরিব দু:খীদের পানাহার করান। এগুলো সাওয়াবের কারণ হবে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এই যে খাওয়া দাওয়ার আয়োজন, এগুলোকে এই দিবসের সাথে আবশ্যিক করে নেয়া কোনোভাবেই উচিত নয়। বরং শবে বরাত হলো ইবাদতের রাত। দান-খয়রাত করা ও মানুষকে খাওয়ানো এগুলোও উত্তম ইবাদত। তবে এই দিন ও রাতকে হালুয়া-রুটির আমলের দিবসে পরিণত করে ইবাদত থেকে গাফেল হওয়া যেমন বুদ্ধিমানের কাজ নয়, তেমনি হালুয়া রুটি নিষিদ্ধের জন্য ফতোয়া প্রদান করে প্রকারান্তরে এই পূণ্যময় রাতটিকেই বিতর্কিত করা কিংবা 'শবে বরাতের কোনো আমল নেই' ইত্যাকার বানোয়াট কথা ছড়িয়ে দিয়ে এই বরকতপূর্ণ রাতের সাওয়াবলাভ থেকে বঞ্চিত রাখার প্রচেষ্টাও কোনো ক্রমেই প্রজ্ঞাপ্রসূত নয়।
শবে বরাতে করণীয় আমল
শবে বরাতে যেসব আমল করা উচিত তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে:
এক. নফল নামাজ। নফল নামাজের ভেতরে তাহিয়্যাতুল অজু, দুখুলিল মাসজিদ, আউওয়াবিন, তাহাজ্জুদ, ছলাতুত তাসবিহ, তাওবার নামাজ, ছলাতুল হাজাত, ছলাতুশ শোকরসহ অন্যান্য নফল নামাজ পড়া যেতে পারে।
দুই. নামাজে কিরাআত ও রুকু সিজদাহ দীর্ঘ করা।
তিন. পরের দিন নফল রোজা রাখা।
চার. বেশি পরিমানে কুরআন শরিফ তিলাওয়াত করা।
পাঁচ. সাইয়্যিদুল মুরছালীন রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর বেশি বেশি দরূদ ও সালাম প্রেরণ করা।
ছয়. অধিক পরিমানে তাওবা-ইস্তিগফার করা। আল্লাহ পাকের নিকট রোনাজারি করা।
সাত. তাসবিহ তাহলিল, জিকির আজকার এবং দুআর আমল অধিক পরিমানে করা।
আট. কবরবাসী মাতা পিতা এবং মৃত আত্মীয়-স্বজনের কবর জিয়ারত করা। কোনো কারণে সম্ভব না হলে দূরে থেকে কবর জিয়ারতের নিয়্যাতে তাদের রূহের উদ্দেশ্যে ঈসালে সাওয়াব তথা সাওয়াব রেছানী করা।
নয়. নিজের জন্য, পিতা-মাতার জন্য, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও সকল মুমিন মুসলমানের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করা এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করে দুআ করা। বিশ্ববাসী সকল মানুষের শান্তি-সমৃদ্ধি, কল্যান কামনা করে তাদের হেদায়েতের জন্য, সুপথপ্রাপ্তির জন্য বিনীত অন্তরে আল্লাহ পাকের নিকট কায়োমনোবাক্যে প্রার্থনা করা।
শবে বরাতে বর্জনীয় আমল
পবিত্র শবে বরাতের প্রচলিত আমলে আমাদের সমাজে কিছু অনর্থক কাজ যুক্ত হয়েছে, যেগুলো করা উচিত নয়। যেগুলো থেকে প্রত্যেকের বিরত থাকা একান্তই উচিত। যেমন:
এক. আতশবাজি, পটকা ফোটানো।
দুই. অপ্রয়োজনে রাতের অধিক সময় ধরে মাইক বাজিয়ে অন্য কারও ইবাদত কিংবা ঘুমের বিঘ্ন ঘটানো।
তিন. ইবাদত আমল বাদ দিয়ে অনর্থক ঘোরাফেরা করে এই রাতের মূল্যবান সময় অতিবাহিত করা।
চার. অনাকাঙ্ক্ষিত আনন্দ উল্লাসে লিপ্ত হওয়া।
পাঁচ. অযথা কথাবার্তা ও বেপরোয়া আচরণ করা।
ছয়. হালুয়া রুটি বা খাওয়া দাওয়ার পেছনে অনেক বেশি সময় নষ্ট করে ইবাদত থেকে গাফিল থাকা।
সকল প্রকার কট্টরপন্থা ক্ষতিকর: ইবাদাতে কঠোরতা কাম্য নয়
একদল মানুষ বেরিয়েছেন হাল আমলে। দু:খজনকভাবে তারা নিজেদের মতো করে ইসলামি শরিয়তের বিধি বিধানকে নতুন করে ব্যাখ্যা করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছেন। দ্বীনের অধিকাংশ বিষয়ে তারা কট্টরপন্থা অবলম্বন করতে চান। তারা নিজেদের বিশ্বাস ও আমল ছাড়া বাদবাকিদের বিদআতী বলে প্রশান্তিলাভ করেন। প্রায় দেড় হাজার বছর ধরে বিশ্বব্যাপী প্রচলিত ইসলামের অনেক সুপ্রতিষ্ঠিত আমলকেই তারা 'বেহুদা', 'অনর্থক' কিংবা 'বিদআত' বলে উড়িয়ে দিতে চান। তারা বলে থাকেন, নামাজের পরে দুআ মুনাজাত বিদআত। তাদের মতে- নফল আমল, জিকির আজকার ইত্যাদি অপ্রয়োজনীয়। দরূদ ও সালাম পাঠ বিদআত। জুমুআহর নামাজের আগে পরে আমরা যে হাদিস এবং সুন্নাহর আলোকে সুপ্রতিষ্ঠিত ৪ রাকাআত ক্কাবলাল জুমুআহ এবং ৪ রাকাআত বা'দাল জুমুআহ পড়ি- তাদের নিকট এগুলোর ভিত্তি নেই। তাদের কেউ কেউ মনে করেন, পবিত্র হজ কিংবা উমরার উদ্দেশ্যে মক্কাতুল মুকাররমাহ গেলেই হয়ে যায়। এসব সফরে মাদিনাতুল মুনাওয়ারাহ জিয়ারতে যাওয়ার কি দরকার? সাইয়্যিদুল মুরছালীন সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা যিয়ারতে মাদিনাতুল মুনাওওয়ারাহ যাওয়ার প্রতিও তাদের অনিহা। তারা যেতে নারাজ। অন্যদেরও যাতায়াত তাদের মর্মপীড়ার কারণ। এই মহান আমলটি থেকেও তাদের নিকট না কি বিদআত বিদআত গন্ধ আসে। তাদের যুক্তি বুঝতে কষ্ট হয় না। একটু চিন্তা করলেই সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যায়, এই শ্রেনির নব্য আমলওয়ালা অতি সহিহ, অতি বিশুদ্ধ, অতি উতসাহীগনের দূরভিসন্ধি যে, মুসলিমদের আমল থেকে দূরে রাখা তা বলারই অপেক্ষা রাখে না। এরা হাদিসের দোহাই দিলেও প্রকৃতপক্ষে হাস্যকর বিষয় হচ্ছে- অধিকাংশ ক্ষেত্রে হাদিস নিজেরাই মানেন না।
আফসোস! তাদের জন্য। তবে আমাদের পক্ষ থেকে বিন্দুমাত্র বিদ্বেষ তাদের জন্য নয়, বরং তাদের জন্য সঠিক পথপ্রাপ্তির দুআ সবসময়। দ্বীনের প্রায় প্রতিটি আমলের ক্ষেত্রেই তারা সাধারণ মানুষদের বিভ্রান্তিতে ফেলেছেন। এই পবিত্র শবে বরাতের ব্যাপারেও তাদের অপবাদের অন্ত নেই। 'শবে বরাত বলতে কিছু নেই', 'হাদিসে এর উল্লেখ নেই', 'শবে বরাত বিদআত' ইত্যাদি নানান অপপ্রচারে মানুষদের এই পূন্যময় রজনীর বরকত হাসিল থেকে নিবৃত্ত করতে তারা সদা সচেষ্ট। তবে সচেতন মুসলমানগন মিথ্যা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না ইনশাআল্লাহ। তারা এই রাতে ইবাদাত করে এবং পরের দিন রোজা রেখে, বিদ্বেষমুক্ত অন্তর আর শিরকমুক্ত আমলের মাধ্যমে এদের অপপ্রচারের জবাব দিয়ে দিবেন। আল্লাহ পাক আমাদের সকল প্রকার কট্টরপন্থা থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে রেখে কুরআন সুন্নাহ অনুসারে সঠিক পন্থায় সকল আমল করার তাওফিক দান করুন।
ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।
২০ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ১০:৫৭
নতুন নকিব বলেছেন:
বিনীতভাবে জানাচ্ছি, পোস্টের শেষের দিকে তাদের কথা বলেছি। বিভিন্ন দেশ ও জনপদে এই শ্রেনির লোক কম বেশি রয়েছেন। এরা এদের কাজ করবেন। আর আমরা আমাদের কাজ করে যাব ইনশাআল্লাহ। হাদিস দ্বারা স্পষ্টভাবে শবে বরাত প্রমানিত থাকার পরেও যারা শবে বরাতের নামে মিথ্যাচার করে থাকেন, শবে বরাতকে যাচাই বাছাই ছাড়াই বিদআত বলে থাকেন- তাদেরকে কি অভিধায় ভূষিত করা যায়?
তবে আমরা মধ্যমপন্থী হতে চাই। অতি বাড়াবাড়ি যারা করেন, যারা মানুষের মাঝে বিভ্রান্তির দেয়াল রচনা করেন, যারা হাদিস মানার নামে বড় বড় গলা করেন ঠিকই কিন্তু নিজেদের আমলের ক্ষেত্রে হাদিসকে পাশ কাটিয়ে যেতে চান, তাদের আসল উদ্দেশ্য আমাদের কাছে যেটা অনুমিত হয়, আমলে ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করছেন তারা। সজ্ঞানে বুঝে শুনে নিজেরা এই কাজ করছেন, অন্যদেরও সেই কাজে উতসাহ দিয়ে নিজেদের দল ভারী করার স্বপ্নে বিভোর হচ্ছেন।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। এত সুন্দর মন্তব্য রেখে যাওয়ায় অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা। ভালো থাকবেন সবসময়।
২| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ১০:৫২
রাজীব নুর বলেছেন: এত সুন্দর করে লিখেছেন যে পোষ্ট টি দুইবার পড়লাম।
২০ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ১০:৫৯
নতুন নকিব বলেছেন:
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। দু'বার পড়েছে! বাহ, আপনার হৃদ্যতায় মুগ্ধতা।
ভালো থাকুন নিরন্তর।
৩| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ১১:০৬
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ভায়া
পবিত্র রজনীর মাহাত্ম্ তাৎপর্য এবং করণিয় বর্জনীয় নিয়ে দারুন তথ্যপূর্ন সূখপাট্য এক প্রবন্ধ উপহার দেয়ায়।
মহান আল্লাহ আপনাকে এর প্রতিদান দান করুন। আমাদের দোয়া এবং শুভকামনাও রইল।
পবিত্র রজনীর ফয়েজ ও বরকত আমাদের নসীব হোক।
+++++++
২০ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ১১:৪৩
নতুন নকিব বলেছেন:
আগমনে মুগ্ধতা, প্রিয় কবি।
নানান অপপ্রচার আর মিথ্যাচারের ফলে পূন্যময় এই রজনীটি আজ জর্জরিত, উপেক্ষিত। নিতান্ত দায়বোধ থেকে দু'কলম লেখার প্রচেষ্টা। আল্লাহ পাক আমাদের প্রতিটি কাজ কুরআন সুন্নাহ অনুসারে করার তাওফিক দান করুন।
আপনার আন্তরিক দুআ আমাদের সকলের জন্য আল্লাহ পাক কবুল করে নিন।
মন্তব্যেও +++
৪| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ১১:১৮
হাবিব বলেছেন: ধন্যবাদ সুন্দর পোস্টের জন্য। কিন্তু লাইলাতুম মুবারাকা বলে যদি শবে বরাত বুঝানো হয় তাহলে সূরা কদর সম্পর্কে কি বলবেন?
সাবধানে থাকুন, যেন কেউ আবার ফ্লাডিং করতে না পারে।
২০ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ১১:৪৯
নতুন নকিব বলেছেন:
পোস্টে অবশ্যই লক্ষ্য করে থাকবেন, উল্লেখ করা হয়েছে, এটা ইকরামা রাদিআল্লাহু তাআলাসহ কিছু সংখ্যক সাহাবির অভিমত মাত্র। এর পাশাপাশি এই আয়াতের ব্যাখ্যায় অন্যান্য সাহাবিদের এর বিপরীত মত কিন্তু রয়েছে। মূলত: এই রাতটির বিশেষ মর্যাদা না থাকলে এ ব্যাপারে ইকরামা রাদিআল্লাহু তাআলাসহ কিছু সংখ্যক সাহাবি কোনো কথাই হয়তো বলতেন না। আয়াতের ব্যাখ্যায় এই রাতটির কথা বলার প্রশ্ন আসতো না।
সতর্ক করে যাওয়ায় ধন্যবাদ।
লাইকসহ আন্তরিক মন্তব্যে অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা। অনেক ভালো থাকবেন। শুভকামনা সবসময়।
৫| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১২:১৯
আমি মুক্তা বলেছেন: বিষয়গুলো আগে জানা থাকলেও এখন আপনার পোষ্টে নতুন করে ঝালিয়ে নেওয়া গেলো। ধন্যবাদ সময়োপযোগী পোষ্টের জন্য।
২০ শে এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ২:৪৯
নতুন নকিব বলেছেন:
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকেও। মূল্যবান মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা। বিষয়টিতে আপনার পূর্বাবিজ্ঞতা রয়েছে জেনে আনন্দিত।
ভালো থাকুন। শুভকামনা সবসময়।
৬| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১২:৫২
নীল আকাশ বলেছেন: ভাই,
সালাম, সময়োপযোগী চমৎকার একটা পোষ্টের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
খুব আগ্রহ নিয়েই পড়লাম। আপনার এই ধরনের পোস্টগুলি দারুন হয়।
অনেক কিছু জানা গেল।
নব্য সালাফী আর নব্য ওহাবীদের জ্বালায় সবাই প্রায় অতিষ্ঠ এখন।
শুভ কামনা রইল!!
২০ শে এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৩:০৪
নতুন নকিব বলেছেন:
অসাধারণ আন্তরিকতা নিয়ে মন্তব্যে আসায় মোবারকবাদ আপনাকে। পোস্টটি আগ্রহ নিয়ে পড়েছেন জেনে কৃতজ্ঞতা।
কিছু লোকের কারণে সমাজে প্রতিষ্ঠিত দলিল নির্ভর আমলগুলোও আজ প্রশ্নবিদ্ধ। তাদের অপচেষ্টার মুখোশ খুলে দিতে আমাদের সচেতনতা সদাকাম্য।
অনেক ভালো থাকবেন। শুভকামনা সবসময়।
৭| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ২:০৪
ল বলেছেন: মাশাল্লাহ
বিশ্লেষণমূলক লেখায় মুগ্ধতা।।।
২০ শে এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৩:০৫
নতুন নকিব বলেছেন:
জাজাকুমুল্লাহু তাআলা আহসানাল জাজা।
কৃতজ্ঞতা এবং শুভকামনা সবসময়।
৮| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ২:৫৬
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আপনার সাথে এবং সনেট কবির সাথে এ বিষয়ে আমার দ্বিমত আছে। শবে বারাত, লাইলাতুল বারাআত বলে কিছু নেই - নিজের লেখাতেই লেখার পরও সেটাকে 'বলা হয়েছে', 'বোঝানো হয়েছে' বলে প্রতিষ্ঠিত করার কোন কারণ দেখি না।
আর সচেতন মুসলমানের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে বলেই এখন মিলাদের পরিমাণ কমে যাচ্ছে, আরবী নিয়তের ব্যবহার কমছে, মঙ্গল শোভাযাত্রা পালন কমছে, শবে বারাত পালনও কমছে...
২০ শে এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৩:১৮
নতুন নকিব বলেছেন:
পোস্টটি দয়া করে আদ্যোপান্ত পড়ুন। 'বলা হয়েছে', 'বোঝানো হয়েছে' - বলে শবে বরাতকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা এই পোস্টের কোথায় কোথায় পেলেন? একাধিক হাদিসের উদ্ধৃতি রয়েছে এই পোস্টে। সুতরাং, কিসের সাথে কি মেলাচ্ছেন? আর আরবি নিয়্যাতের ব্যাপারে তো আমরাও বলি, এটি মোটেই জরুরী কোনো আমল নয়। নিয়্যাত অর্থই 'ইচ্ছে' বা 'সংকল্প'। নামাজের জন্য নিয়্যাত আদৌ মুখে না বললেও সমস্যা নেই। নিজের জানা থাকতে হবে যে, আমি এখন কোন নামাজ পড়ছি।
আপনি পোস্টে উল্লেখিত নিচের বিষয়গুলোকে 'বিদআত' বা 'অপ্রয়োজনীয়' প্রমানে আপনার নিকট গ্রহনীয় কোনো যুক্তি থাকলে তুলে ধরতে পারেন-
১। নামাজের পরে দুআ মুনাজাত বিদআত।
২। নফল আমল, জিকির আজকার ইত্যাদি অপ্রয়োজনীয়।
৩। দরূদ ও সালাম পাঠ বিদআত।
৪। জুমুআহর নামাজের আগে ও পরে আমরা যে হাদিস এবং সুন্নাহর আলোকে সুপ্রতিষ্ঠিত ৪ রাকাআত ক্কাবলাল জুমুআহ এবং ৪ রাকাআত বা'দাল জুমুআহ পড়ি- এগুলোর ভিত্তি নেই।
৫। পবিত্র হজ কিংবা উমরার উদ্দেশ্যে মক্কাতুল মুকাররমাহ গেলেই হয়ে যায়। এসব সফরে মাদিনাতুল মুনাওয়ারাহ জিয়ারতে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
মঙ্গল শোভাযাত্রা, পহেলা বৈশাখ আর শবে বরাতকে একাকার করে ফেলাটা নিতান্ত দু:খজনক।
দ্বিমত থাকলেও আপনার প্রতি অনেক ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা সবসময়। এই পোস্টে আসায় কৃতজ্ঞতা। আল্লাহ পাক আপনার মঙ্গল করুন।
৯| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৪:৩৪
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আপনার লেখার প্রথম প্যারাতেই আপনি লিখেছেন,হাদীসে এই ধরনের কোন শব্দ নেই। ভারতীয় উপমহাদেশ, ইরান সহ অনেক দেশে এই দিনটি শবে বরাত নামে সমধিক পরিচিত।
ইসলামি শরীয়তে বছরের পাঁচটি রাতের মধ্যে মধ্য শাবানের রজনী একটা , এটার রেফারেন্স দিলে ভাল হত।
লাইলাতুম মিন নিছফে শাবান-কে আমি শবে বরাত বলতে নারাজ। আপনিও লিখেছেন শবে বরাতকেই বোঝানো হয়েছে। যদিও বিপক্ষ মতরা বলেন, এটা লাইলাতুল কদরকে বোঝানো হয়েছে।
আপনার লেখার হাদীসগুলোকে শবে বরাত বিরোধীরা দুর্বল, জয়ীফ বলে থাকেন। এ ব্যপারে আমি এখন তর্ক করতে যাব না। আমি ক্ষুদ্র মস্তিস্কে যা বুঝি উপমহাদেশ ছাড়া আর কোথাও এটা নিয়ে মাতামাতি নেই।
আর বিদআ’ত নিয়ে একটাই গ্রহণীয় কথা হল - যদি এটা আমাদের মহানবী (সাঃ), সাহাবীদের দ্বারা করা না হয়ে থাকে তাহলে সেটা বিদআ’তই।
* ফরজ নামাজের পর দোয়া মুনাজাত করার উদাহরণ নেই
* নফল আমল(বিদআ'ত না হলে) করা যেতে পারে, জিকির তো বিদআ'তই
* দুরুদ ও সালাম পাঠ বিদআ'ত কিনা এ নিয়ে কোন লেখা আমার চোখে পড়েনি
* জুমার আগে পরে নির্দিষ্ট কোন সুন্নত নেই। ইমাম আসার আগ পর্যন্ত যত খুশী সুন্নত পড়া যাবে।খুৎবা শুরু হয়ে গেলে শুধু দাখলুল মসজিদ দুই রাকাত নামাজ ছাড়া আর কোন নামাজ পড়া যাবে না। আমাদের দেশে সুন্নত পড়ার জন্য সময় দেয়া হয় যা বিদআ'ত। কারণ, ঐ সুন্নত(কাবলাল জুমা) বাদ গেলে জুমার ক্ষতি হবে না। বাদআ'ল জুমা মানে ফরজ নামাজের পর) ঘরে গিয়ে পড়লে ২ রাকাত আর মসজিদে পড়লে ৪ রাকাত।
২১ শে এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ২:৫৮
নতুন নকিব বলেছেন:
দুআ মুনাজাতের প্রামান্যতার পক্ষে এই পোস্টগুলো দেখা যেতে পারে-
ফরজ নামাযের পর সম্মিলিত মুনাজাতের হুকুম কী? এটি কি আসলেই বিদআত? পর্ব-০১
ফরজ নামাযের পর সম্মিলিত মুনাজাতের হুকুম কী? এটি কি আসলেই বিদআত? পর্ব-০২
দুআ মুনাজাত: মুমিনের শ্রেষ্ঠতম হাতিয়ার
কিছু যদি মনে না করেন, বাদবাকি বিষয়গুলোতে আপনার সাথে পর্যায়ক্রমে আলোচনায় আসি।
ধন্যবাদ।
১০| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৩
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: হজ্জ্ব, উমরাহ’র আনুষ্ঠানিকতাতে মদীনা জিয়ারত না থাকলে সেখানে না যাওয়ার কথা বললে অপরাধ হবে না। মঙ্গল শোভাযাত্রাতে অনৈসলামিক উপাদান থাকাতে সেখানে এখন অংশগ্রহণ কমছে তাই উদাহরণ টেনেছি। মূল কথা, ভাল আমল হলেই সেটাকে কল্যাণকর বিদআ’ত বলে গ্রহণের সুযোগ নেই।
২১ শে এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৩:৩১
নতুন নকিব বলেছেন:
পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ ধর্মপ্রাণ মানুষ হজ্ব এবং উমরাহর সফরে আসেন। হজ্ব কিংবা উমরাহর সফরে গিয়ে কোনো একজন হাজি সাহেব মদিনাতুল মুনাওওয়ারাহ না গিয়ে মক্কাতুল মুকাররমাহ থেকে ফিরে এসেছেন, এরকমটা দেখাতে পারবেন?
আচ্ছা, হজ্ব অথবা উমরাহ আমরা কেন করি? এগুলো করার পেছনে কারণ কি? সহজভাবে এককথায় উত্তর হচ্ছে- আল্লাহ তাআ'লার সন্তুষ্টি অর্জনই এসব আমলের একমাত্র উদ্দেশ্য। আল্লাহ পাক খুশি হন কোন কাজে? রাসূলে পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি যার অন্তরে মুহাব্বত থাকে না, সে কি সত্যি সত্যি আল্লাহ পাককে ভালোবাসে? রাসূলে পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি যার অন্তরে মুহাব্বত থাকে না, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলার ভালোবাসা লাভ করা কি তার জন্য সম্ভব?
আপনি আশা করি, সূরাহ আলে ইমরানের নিচে উল্লেখিত আয়াতে কারিমাগুলো সম্মন্ধে ওয়াকিবহাল। তবু মনে করিয়ে দেয়ার জন্য-
قُلْ إِن كُنتُمْ تُحِبُّونَ اللّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَاللّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
'বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস, তাহলে আমাকে অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহ ও তোমাদিগকে ভালবাসেন এবং তোমাদিগকে তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাকারী দয়ালু।'
Say: "If ye do love Allah, Follow me: Allah will love you and forgive you your sins: For Allah is Oft-Forgiving, Most Merciful."
قُلْ أَطِيعُواْ اللّهَ وَالرَّسُولَ فإِن تَوَلَّوْاْ فَإِنَّ اللّهَ لاَ يُحِبُّ الْكَافِرِينَ
'বলুন, আল্লাহ ও রসূলের আনুগত্য প্রকাশ কর। বস্তুতঃ যদি তারা বিমুখতা অবলম্বন করে, তাহলে আল্লাহ অবিশ্বাসীদেরকে ভালবাসেন না।'
Say: "Obey Allah and His Messenger.: But if they turn back, Allah loveth not those who reject Faith.
إِنَّ اللّهَ اصْطَفَى آدَمَ وَنُوحًا وَآلَ إِبْرَاهِيمَ وَآلَ عِمْرَانَ عَلَى الْعَالَمِينَ
'নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলা আদম আলাইহিসসালাম নূহ আলাইহিসসালাম ও ইব্রাহীম আলাইহিসসালাম এর বংশধর এবং ইমরানের খান্দানকে নির্বাচিত করেছেন।'
Allah did choose Adam and Noah, the family of Abraham, and the family of 'Imran above all people,-
আর হাদিসের সেই বানী তো আপনি নিশ্চয়ই অবগত, যে হাদিসে বলা হয়েছে- 'তোমাদের কেউ ততক্ষন পর্যন্ত পরিপূর্ণ মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষন পর্যন্ত আমি (রাসূল) তার নিকট তার পিতা, তার সন্তান এমনকি মানবকুলের সকলের চেয়ে অধিক প্রিয় না হই।'
সুতরাং, রাসূলের প্রতি মুহাব্বতের নমুনা বুঝি এই যে, আপনি সুদূর বাংলাদেশ থেকে, সুদূর জাপান, আমেরিকা, ইউরোপ কিংবা বিশ্বের অন্য যে কোনো জনপদ থেকে হজ্ব কিংবা উমরাহর উদ্দেশ্যে মক্কাতুল মুকাররমাহয় যাবেন, আর যেহেতু হজ্ব কিংবা উমরাহর আবশ্যিক কোনো কাজের জন্য মদিনাতে যেতে হয় না; তাই সেখান থেকেই আবার ফিরে আসবেন স্বদেশে!
এরই নাম তাহলে হুব্বে রাসূল!
এই ধৃষ্টতাপূর্ণ বিষয় আমাদের মাথায় আসে কি করে!
আফসোস! আফসোস! শুধুই আফসোস!
ভালো থাকবেন সবসময়।
১১| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৫:১৫
অজ্ঞ বালক বলেছেন: আমার কথা হইলো ধর্ম জিনিসটা যত সহজ হয় ততই ভালা, তাই না? যারা শবে বরাত পালন করার, করবে। বাড়তি নামাজ রোজা তো খারাপ কিছু না। না চাইলে না করবে। যার যার বিশ্বাস, তার তার কাছে থাকা উচিত।
২৩ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৯:০৫
নতুন নকিব বলেছেন:
অনেক সুন্দর বলেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
সেটাই। কিন্তু এক শ্রেনির মানুষ ভালো কাজ নিজে তো করবেনই না, অন্যদেরও করতে দিবেন না। ইবাদত বলতেই তারা খালি বিদআতের গন্ধ পান। তাদের জন্য শুভকামনা।
ভালো থাকবেন অনুক্ষন।
১২| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ৯:৫৯
রাজীব নুর বলেছেন: আমার জন্য দোয়া করবেন, আমি নিয়ত করেছি এবছর সব ক'টা রোজা রাখব।
২৩ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৯:০৬
নতুন নকিব বলেছেন:
আল্লাহ পাক আপনাকে সবগুলো রোজা সুন্দরভাবে রাখার তাওফিক দান করুন।
১৩| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১০:১৯
মনিরা সুলতানা বলেছেন: লেখায় ভালোলাগা ভাইয়া; কয়েকটা নফল নামাজের নাম জানতাম ই না।
আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান প্রদান করুন।
২৩ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৯:১০
নতুন নকিব বলেছেন:
এক শ্রেনির শায়েখ বেরিয়েছে, তারা বক্তব্য হচ্ছে, কিসের নফল? কিসের সুন্নাত? কিসের মুস্তাহাব? তাদের কথাবার্তা বিভ্রান্তিপূর্ণ। এরা এমনই লোক, ভালো কাজ নিজেরা তো করবেনই না, অন্যদেরও করতে দিবেন না। ইবাদত করতে গেলেই তারা খালি বিদআতের গন্ধ পান। তবু তাদের জন্য শুভকামনা।
কয়েকটি নতুন নফল নামাজের ব্যাপারে জানতে পেরেছেন এটাতে খুশি লাগছে।
অনেক অনেক অভিনন্দন। ভালো থাকবেন সবসময়।
১৪| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১২:০৮
পথ হতে পথে বলেছেন: উত্তম আলোচনা , অনেক কিছু জানা হলো।
২৩ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৯:১২
নতুন নকিব বলেছেন:
মাশাআল্লাহ। জাজাকুমুল্লাহ।
আপনার নিকটি খুবই সুন্দর।
অনেক অনেক অভিনন্দন। ভালো থাকবেন সবসময়।
১৫| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ২:০০
দীপংকর চক্রবর্ত্তী বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকার ভাবে তথ্যগুলো তোলে ধরার জন্য। মুগ্ধ হয়ে পড়লাম।
২৩ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৯:১৩
নতুন নকিব বলেছেন:
মাশাআল্লাহ। জাজাকুমুল্লাহ।
বরাবরই আপনার প্রেরণাদায়ক কথাগুলো মনযোগ কাড়ে। সত্যিই আপনি আলোর পথের পথিক।
আপনার জন্য অফুরান কল্যান কামনা।
১৬| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৯ ভোর ৬:৪২
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: শবে বরাতের বাস্তবতা ও প্রয়োজনীয়তা কোরআন শরিফ ও হাদিসের আলোকে যে প্রমানিত তা সুন্দরভাবে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ । আল্লা তা্ঁর বান্দার ত্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষমা করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট দিন ও রাত দান করেছেন। এর মধ্যে সবে বরাতের রজনী অন্যতম । আল্লার দান এই মর্যাদাবান রাতকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে গুনাহ থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহর নৈকট্য হাসিলের সৌভাগ্য অর্জন করা আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত, এতে কারো বিন্দুমাত্র ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণ নেই বরং এ রাতে নামাজ আদায়, কোরান তেলাওয়াত , জিকির , মিলাদ ও দুরুদ পাঠে কেবল উপকার আর উপকার । কারন শবে বরাত: শব অর্থ রাত, বরাত অর্থ ভাগ্য—অতএব এর সমষ্টিগত অর্থ হলো ভাগ্যের রাত বা ভাগ্য নির্ধারণের রাত। এ রাতে সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহ দুনিয়ার নিকটবর্তী আসমান থেকে বলতে থাকেন কেউ কী আছে ক্ষমাপ্রার্থী, যাকে আমি ক্ষমা করব? রিজিক প্রার্থী কেউ আছে কী, যাকে আমি রিজিক দেব? বিপদগ্রস্ত কেউ আছে কী? যাকে আমি সুস্থতা দান করব। এমনিভাবে সুবেহ সাদিক পর্যন্ত আল্লাহর তরফ থেকে বান্দাদের উদ্দেশ্য ঘোষণা হতে থাকে।
এ রাতে যাবতীয় গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা, কোরআন তিলাওয়াত করা ও রিজিকের জন্য দোয়া চাওয়া কল্যানকর। এ কল্যান লাভের জন্য তওবা করতে হবে , নীজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হতে হবে , পাপ কর্ম সম্পূর্ণভাবে পরিহার করতে হবে এবং ভবিষ্যতে পাপ না-করার অঙ্গীকার করতে হবে। এ রাতের বরকত লাভের আশায় নিজেদের সংশোধন করে নিতে হবে । অন্যথায় দোয়া কবুলের এই রাতে কোনো আবদারই আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে কিংবা কবুল হলেও হতে পারে কারণ আল্লা বড়ই মেহেরবান্। তবে দোয়া কবুল হয়েছে কিনা তা নীজেই বুঝতে পারা যাবে কেননা দোয়া কবুল হলে কেও কোন মতেই তার বাকী জিন্দেগীতে আর কোন প্রকার পাপ কাজে ব্রতি হবেনা, সে পরিনত হবে এক পরিশুদ্ধ আত্মায়, নীজেকে নিয়োজিত করবে জাগতিক ও পারলৌকিক সকল প্রকার মঙ্গলময় কাজে ।
তাইতো বলা হয়, সবে ররাতে রয়েছে অনেক সামাজিক গুরুত্ব; মহিমান্বিত এ রাত মুসলমানদের মধ্যে দ্বীনি প্রেরণা ও দ্বীনি মানসিকতা সৃষ্টিতে সহায়তা করে। এমনো দখো গেছে যে সচরাচর কিংবা নিয়মিত যারা মসজিদে নামাজ পড়তে যাননা তাদের অসেকেই কিন্তু এ রাতে ভালো পোশাক পরে মসজিদে নামাজ পড়তে যান । তারা এসে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে আলেম ওলামা ও বিশিস্ট ইসলামী ব্যাক্তিত্বদের মুল্যান ওয়াজ শোনেন। কোরআনের তাফসির ও হাদিস শোনেন। সবার সঙ্গে দুহাত তুলে মোনাজাত করার ফলে পরস্পরের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব-সৌহার্দ্য গড়ে ওঠে। মাতা-পিতার কবরের পাশে গিয়ে কাঁদেন। হতে পারে এতে করে অনেকের জীবনের মোড় ঘুরে যায়। অতএব এ সুস্থ মানসিকতাকে কারো পক্ষেই খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। তবে সবে বরাতের রাতে এ পোষ্টে উল্লেখিত বর্জনীয় বিষয়গুলির সাথে দ্বিমিত পোষনেরও অবকাশ নাই ।
সর্বোপরি এ রাতে ইবাদত কবুল হবে, যদি আমরা সারা বছর ইবাদত করি। বোনাস তো তারাই পায় যাদের চাকরি আছে। সারা বছর যে চাকরি করেনি, সে কী করে বোনাস পাবে? তাই খালেছ তওবা করে এ রাত থেকে ধন্য হওয়াই অতি উত্তম কাজ । এ পোষ্টে উল্লেখিত নামাজ সমুহ সহ কোরান তেলাওয়াত, মিলাদ ও নবীজীর উপরে দুরুদ ও সালাম প্রেরণ করা খুবই উত্তম কাজ হবে ।
মুল্যবান পোষ্টটির জন্য অভিনন্দন রইল । এটা প্রিয়তে গেল ।
শুভেচ্ছা রইল
২৩ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৯:১৬
নতুন নকিব বলেছেন:
মাশাআল্লাহ। জাজাকুমুল্লাহ।
এত ব্যাখ্যামূলক অসাধারণ একটি মন্তব্য এই পোস্টটির সম্মান বৃদ্ধি করেছে মনে হচ্ছে। অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা, প্রিয় আলী ভাই।
আপনার সুস্থতার জন্য দুআ থাকলো। আল্লাহ পাক আপনাকে দীর্ঘ হায়াত দান করুন।
অনেক অনেক অভিনন্দন। ভালো থাকবেন সবসময়।
১৭| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৯:০৬
রাজীব নুর বলেছেন: আজ সেই মহামানিত্ব রাত।
২৩ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৯:১৮
নতুন নকিব বলেছেন:
জ্বি, তাই।
আল্লাহ পাক অপপ্রচারের বিভ্রান্তির বেড়াজাল ছিন্ন করে এই রাতের বরকত আমাদের নসিব করুন।
১৮| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১২:০৫
বাংলার মেলা বলেছেন: শুরুতেই সূরা দুখানের যে আয়াত উল্লেখ করেছেন, সেটা নিয়েই বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। ইন্না আনযালনাহু - মানে নিশ্চয়ই আমি একে (মানে যে কিতাবে এই আয়াতের উল্লেখ আছে অর্থাৎ কুরআনকে) নাযিল করেছি। ফি লাইলাতিম মুবারকাতিন - মানে মহিমান্বিত রজনীতে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে - কুরআন কি শবে বরাতের রাতে নাযিল হয়েছিল? তাই যদি হয়, তাহলে সূরা ক্বদরের প্রথম আয়াতের ব্যাখ্যা কি হবে?
যেসব হুজুর শবে ক্বদরের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে মসজিদের মাইক ফাটিয়ে ফেলেন - তারা এই আয়াতের রেফারেন্স দেন - কারণ এই আয়াত মানুষকে শবে বরাত বানিয়ে খাওয়াতে পারলে শবে বরাতের কোন ফযিলত আর সারা কুরআন খুঁজে কোথাও পাওয়া যাবেনা। অথচ পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে যে এই আয়াতে লাইলাতুল ক্বদরের কথা বলা হয়েছে - শবে বরাতের কথা নয়।
মানুষের ভাগ্য শবে বরাতে নির্ধারিত হয় - এই কথা মাইক্রোস্কোপ দিয়ে খুঁজলেও কোন হাদীসে পাওয়া যাবেনা। যেসব হাদীস এখানে ওখানে পাওয়া যায় - সেগুলোতে খুব অর্ডিনারি টাইপের ইবাদত করতে বলা হয়েছে - কোন মাতামাতি করতে বলা হয়নি। অথচ এই দিন এশার নামাজ পড়তে গেলে বিরক্তিতে মাথা ধরে যায় শবে বরাতের ফযিলত শুনতে শুনতে। সাড়ে আটটায় নামাজ পড়ানোর কথা থাকলেও জামায়াত দাঁড়াতে দাঁড়াতে ১০ টা বাজিয়ে দেয়। ননসেন্স আর ইডিয়ট টাইপ আলেম ওলামা দিয়ে দেশটা ভরে গেছে। ইসলামের বারোটা বাজানোর জন্য নাস্তিকেরা নয় - এরাই যথেষ্ট।
২৩ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৯:৩৫
নতুন নকিব বলেছেন:
শুরুতেই সূরা দুখানের যে আয়াত উল্লেখ করেছেন, সেটা নিয়েই বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। ইন্না আনযালনাহু - মানে নিশ্চয়ই আমি একে (মানে যে কিতাবে এই আয়াতের উল্লেখ আছে অর্থাৎ কুরআনকে) নাযিল করেছি। ফি লাইলাতিম মুবারকাতিন - মানে মহিমান্বিত রজনীতে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে - কুরআন কি শবে বরাতের রাতে নাযিল হয়েছিল? তাই যদি হয়, তাহলে সূরা ক্বদরের প্রথম আয়াতের ব্যাখ্যা কি হবে?
যেসব হুজুর শবে ক্বদরের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে মসজিদের মাইক ফাটিয়ে ফেলেন - তারা এই আয়াতের রেফারেন্স দেন - কারণ এই আয়াত মানুষকে শবে বরাত বানিয়ে খাওয়াতে পারলে শবে বরাতের কোন ফযিলত আর সারা কুরআন খুঁজে কোথাও পাওয়া যাবেনা। অথচ পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে যে এই আয়াতে লাইলাতুল ক্বদরের কথা বলা হয়েছে - শবে বরাতের কথা নয়।
মানুষের ভাগ্য শবে বরাতে নির্ধারিত হয় - এই কথা মাইক্রোস্কোপ দিয়ে খুঁজলেও কোন হাদীসে পাওয়া যাবেনা। যেসব হাদীস এখানে ওখানে পাওয়া যায় - সেগুলোতে খুব অর্ডিনারি টাইপের ইবাদত করতে বলা হয়েছে - কোন মাতামাতি করতে বলা হয়নি। অথচ এই দিন এশার নামাজ পড়তে গেলে বিরক্তিতে মাথা ধরে যায় শবে বরাতের ফযিলত শুনতে শুনতে। সাড়ে আটটায় নামাজ পড়ানোর কথা থাকলেও জামায়াত দাঁড়াতে দাঁড়াতে ১০ টা বাজিয়ে দেয়। ননসেন্স আর ইডিয়ট টাইপ আলেম ওলামা দিয়ে দেশটা ভরে গেছে। ইসলামের বারোটা বাজানোর জন্য নাস্তিকেরা নয় - এরাই যথেষ্ট।
ভাই, দয়া করে শান্ত হোন। কাউকে 'ননসেন্স' আর 'ইডিয়ট' বলার আগে মেহেরবানি করে আরেকটু ভেবে নিন। আপনার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই দু'টি কথা বলতে চাই।
বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ার আগে দেখে নেয়া দরকার- উপরোক্ত আয়াতের এই তাফসির আমি করেছি না কি, সাহাবি ইকরামা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুসহ একদল সাহাবায়ে কেরাম করেছেন। পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে- উল্লেখিত আয়াতে কারিমাসমূহের এই একই তাফসির করা হয়েছে তাফসীরে রুহুল বয়ান, তাফসীরে রুহুল মাআনী, তাফসীরে মাযহারি, তাফসীরে মারেফুল কুরআনসহ একাধিক নির্ভরযোগ্য এবং জগত বিখ্যাত তাফসীরের কিতাবে। সুতরাং, এত অস্থিরতার কিছু নেই। আপনার আমার মত ব্যক্তি তাফসীরকারদের ভুল ধরতে যাওয়ার পূর্বে কিছুটা ভেবে নেয়া উচিত। অার শুধু তাফসীরকারই নয়, এই ব্যাখ্যা তো স্বয়ং সাহাবায়ে কেরামও করেছেন। তো সাহাবায়ে কেরামের ভুল ধরার দু:সাহস একমাত্র নব্য গজিয়ে ওঠা বিশেষ শ্রেনির ব্যক্তিবর্গের ভেতরেই পরিলক্ষিত হয়। আশা করি, আপনি তাদের কেউ হবেন না। আপনার জন্য শুভকামনা। আপনার জন্য সউদি আরব সরকার কর্তৃক ছাপানো তাফসীরে মারেফুল কুরআনের সংশ্লিষ্ট পৃষ্ঠাটির ফটোকপি যুক্ত করে দিলাম-
অনেক ভালো থাকুন।
২৩ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৯:৫১
নতুন নকিব বলেছেন:
তাফসিরে মারিফুল কুরআন এর ১২৩৫ পৃষ্ঠার আলোচনা দেখতে পারেন নিচের লিঙ্ক থেকে পুরো তাফসীরের কিতাবখানা ডাউনলোড করে-
তাফসিরে মারিফুল কুরআন
১৯| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ৮:০৪
ঢাকার লোক বলেছেন: শবে বরাত পালনের বা বিশেষ নামাজ রোজার কোনো সহী দলিল নাই , দেখুন
https://www.youtube.com/watch?v=vFfCsP6reic
২৩ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৯:৫৪
নতুন নকিব বলেছেন:
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। এই রাতের বিশেষ নামাজ নেই এটা ঠিক। কিন্তু যারা রাতটিকেই বিদআত বলতে চান? তাদের ব্যাপারে কি বলবেন? হাদিসের এত এত বর্ণনা থাকা সত্বেও অন্ধের মত যারা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে, তাদের আলোচনা না শোনাই ভালো।
২০| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ৮:০৫
ঢাকার লোক বলেছেন: https://www.youtube.com/watch?v=vFfCsP6reic
২৩ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৯:৫৪
নতুন নকিব বলেছেন:
আবারও ধন্যবাদ আপনাকে।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ১০:৪২
পবিত্র হোসাইন বলেছেন: আপনার লেখা বরাবরের মতই সুন্দর কিন্তু শবে বরাত নিয়ে বিভিন্ন দেশ, মানুষের কাছে বিভিন্ন মতামত রয়েছে।