নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তানজীনা

আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম। জাপানে গবেষনায় আছি। জাপানে আমার চাকরী গবেষনা সবই জাপানী উন্নত প্রযুক্তি উন্নয়নশীল দেশের সাধারণ মানুষের কাছে সুলভে কিভাবে পৌঁছে দেয়া যায় তাই নিয়ে। এ কাজ করতে করতে দেখেছি আমার দেশের অনেক অনেক ক্ষেত্রে অনেক কাজ বাকী রয়ে গেছে এবং আমার দেশের এই গরীব মানুষগুলির ট্যাক্সের পয়সায় আমি পড়াশোনা করে এ পর্যায়ে এসেছি। তাই, আমি জানি এই দেশের প্রতি, এই মানুষগুলির প্রতি “আমার অনেক ঋণ আছে”। তারই একটা ধাপ এই ব্লগে লেখা।

তানজীনা › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুসলিম বিয়ে কিভাবে পড়ায়?

০৭ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:৩১

রাতের খাবার টেবিলে ছেলেদের সাথে দিনের হাল নাগাদ করছি “ জানিস, জাপানীজ যে মেয়েটা গত শনিবারের মসজিদের প্রোগ্রামে মুসলিম হলো, এই শনিবার তার বিয়ে এক আলজেরীয়ান ছেলের সাথে। মসজিদে বিয়েটা হবে। ”

সাথে সাথে বড় ছেলের প্রশ্ন, “মসজিদে কিভাবে বিয়ে হবে?”

- “কিভাবে হবে মানে? বিয়ে পড়ানো হবে! খানা- দানা হবে না আর কি -কমিউনিটি সেন্টারের মত!”

-“ কিন্তু মুসলিম বিয়ে পড়ানো হয় কিভাবে - I mean to say how that part really takes place?”

- “ এইসব কি বলিস? দেশে ডজন ডজন বিয়ে খেয়ে আসছিস না?”

- “Exactly, “বিয়ে খেয়ে আসছি” – গেছি, খাইছি, গায়ে হলুদে তাদের গায়ে হলুদও দিছি, নাচছি- কিন্তু সবখানেই বর বউ স্টেইজে পুতুলের মত বসেই তো ছিল। বিয়ের ঠিক কোন মুহুর্তে তাহলে তারা couple হয়ে যায়?”



তব্দা খেয়ে থাকলাম কিছুক্ষন- কারণ, কথা সত্য, খানা-দানা’র পর বেশীক্ষন আর বিয়ে বাড়ীতে থাকা হয়না (After All, আমার বাড়ি নোয়াখালী বলেও কথা)। আর আজকাল বিয়ে পড়ানো আকদ নামক আরেক অনুষ্ঠানে বা বিয়ের দিন সকালে বর-কনের বাড়ীতে হয়ে যায়। কাজেই আসলেই এই অংশটা তাদের গোচরীভূত হয়নাই।



তো কোনমতে বুঝালাম কিভাবে বিয়ে পড়ানো হয়।

কিন্তু কিছুতেই পোস্টমর্টেম শেষ হয়না!



শেষে বিরক্ত হয়ে বললাম “ আরে জীবনেও এইসব কোত্থাও দেখিস নাই কেম্নে?”



- “কেম্নে দেখবো? হিন্দী মুভিতে হিন্দু বিয়ে পড়ানো দেখছি, ইংরেজী মুভীতে খ্রীষ্টান বিয়ে পড়ানো দেখছি। তো এমন কোন বাংলা নাটক টেলিফিল্ম তো দেখলাম না যেখানে মুসলিম বিয়ে পড়ানো এভাবে দেখানো হয়”



- “ কই দেখা তো দেখি অইসব বিয়ে কি দেখছিস?”



ছোটটা জন্মগত কার্টুন - কিছুতেই বিব্রত বোধ করেনা। তড়াক করে লাফ দিয়ে live performance দেখানো শুরু করলো হিন্দু বিয়ে কেম্নে হয়- মুখে ধারাভাষ্যও চলতে থাকলো “ বরের কাঁধে একটা কাপড়ের সাথে বউয়ের আচল বাধা হয়- এভাবে তারা সাতপাক দেয় - মাঝাখানে একটা বড় কিছুতে আগুন জ্বলতে থাকে- পুরুত্ আগুনে কিছু ছুড়তে ছুড়তে মন্ত্র পরতে থাকে “ ওঁ –ম মঙ্গালাম ভগবান বিষ্ণু ...” এরপর একসময় কনে বরের সামনে এসে হাটে- এভাবে ৭ পাক শেষে বসে পড়ে মঙ্গলসূত্র পড়ে, সিঁদুর দেয় সিঁথিতে—এরপর কনে পা দিয়ে লাথি দিয়ে চাল ভর্তি কলস ফেলে দেয়- কূলা থেকে পিছন দিকে খই মুড়ি ছিটিয়ে বাবা- মা’র সব শোধ বোধ করে দেয়। ব্যাস বিয়ে হয়ে চলে যায়!”

(বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ বাসায় দেশীয় পদ্ধতির ডিশের কানেকশন নাই- কাজেই এই জাতীয় হিন্দী সিরিয়াল সাড়ে ৪ বছর আগে শেষ দেখেছে, তাও সে ইচ্চাকৃতভাবে না- আমরা দেখছি- সে আসা যাওয়ার ফাকে দেখছে টাইপ আর কি।তারপরেও কি কঠিন জাগ্রত সেই স্মৃতি!!! ......মাবুদে এলাহী!! )



এবার আতেল বড়টার পালাঃ খ্রীষ্টান বিয়ে কেম্নে হয়?

"কনে বাবার হাত ধরে সাদা গাউন পরে আসে। চার্চের ফাদার বলেন “ Here comes the beautiful lady......... I Mr. ….._, take you, to be my lawfully wedded wife, ……, from this day forward, for better, for worse, for richer, for poorer, in sickness and in health, until death do us part.”

বর বলে “I do” একিভাবে বউটাও বলে “ I do”

তখন প্রিস্ট ঘোষণা দেয় "You have declared your consent before the Church.” ব্যাস!



সেই সঙ্গে ফোঁড়ন কেটে এটাও বলল “ কেন? তোমার প্রিয় “All 4 One” এর গানটা যে রান্না করতে করতে প্রায়ই গাও “ I swear” সেটাই তো অই Christian wedding vows থেকেই বানানো!”



আমি বজ্রাহতাহত! একি আলামত!! অপসাংস্কৃতির বানের জল ঠেকাতে ডেমরা বাধের ফুটো ঠেকাচ্ছি – এদিকে বানের জলে আমার ঘর ভেসে একাকার!!!

আর একটা কঠিন সত্যই আরেক দৃষ্টিকোণ থেকে উপলব্ধি করলাম- আমাদের দেশে ধর্মের আচারটা এতো বেশী উৎসবে focus করা যে তার সবটাই নতুন জামা পড়া আর ব্যাপক ভুড়ি ভোজ মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে গেছে। আত্মিক ও আধ্যাত্মিক অংশটা এতোটাই বাহুল্য ও অনাকর্ষনীয় ভাবে উপস্থাপিত, যে , একটা শিশুমন, যেখানে অন্য ধর্মের রীতিও এতো নিখুঁতভাবে দাগ কেটে আছে- মাদ্রাসার জালী বেতের আঘাতে সেটা পুরোপুরি অসম্ভব!! আমাদের শিশুরা ধর্মের একটাই আধ্যাত্মিক আচার চেনে- তা হল মিলাদ মাহফিল- যেটার প্রচলিত রূপটা সর্বৈব বিদ’আ ( reprehensible innovation) ! --------------------------------------------------

আমার এই পোস্ট যারা পড়ছেন, তাদের জন্য কুইজঃ আপনার বাচ্চা পাচোর্ধ্ব হলে তাকে জিগেস করুন তো মুসলিম বিয়ে পড়ানো দেখার কোন অভিজ্ঞতা আছে কিনা ( মালা বদল ছাড়া)? ২য় প্রশ্ন হবে “ অন্য কোন বিয়ে পড়ানো দেখেছে কিনা”।

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:৪২

কাজের কথা বলেছেন: এত ভাল বিষয় হওয়ার পরও মন্তব্য নাই। কষ্ট পাইলাম।

আপু, ফেবুতে আপনার রেসপন্স ভাল ছিল।



০৭ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৮

তানজীনা বলেছেন: হা হা হা-- আপনি আমার ফেইসবুক ফ্রেন্ড বুঝি? কি নামে আছেন? কষ্টিত হবার জন্য ধন্যবাদ। সন্মানিত বোধ করলাম।

২| ০৭ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:৪২

মোহাম্মদ রিয়াদুজ্জামান রিয়াদ বলেছেন: বুঝলাম আপনি মুসলিম।কিছু মনে করবেন না।পর্দা করেন?

০৭ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৯

তানজীনা বলেছেন: আমার ছবি দিয়েছি প্রোফাইলে – দেখে নিন।

৩| ০৭ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৬

নবীউল করিম বলেছেন: +++++++++++++++++++++++

৪| ০৭ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:৫১

ভারসাম্য বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন। তবে মুসলিম বিবাহ নিয়ে সুন্নাহ ভিত্তিক কিছু উদাহরণ ও নিয়মকানুন জানানো গেলে আরো ভাল লাগত। আশাকরি কমেন্টে পাব। এখন না হলেও সময় করে পরে কখনো।

+++

৫| ০৭ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৫:১৪

নীল জোসনা বলেছেন: ভালো লিখেছেন ......। আজকাল কার বিয়ে গুলোর হলুদ লগন চলন বৌভাত এর নামে যা চলছে এটা ব্যাক্তিগত ভাবে আমি অপছন্দ করি ।

৬| ০৭ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৫:৪১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মুসলিম বিয়েতে কাজী সাহেব আসেন।

বরকে তার সমস্ত তথ্য বিবরণি;) অর্থাৎ আপনি অমুকের পুত্র অমুক, .. টাকা মোহরানায় অমুকের কন্যা অমুককে বিবাহ করতে রাজি?
বলুন কবুল। পাত্র পর পর ৩ বার বলেন কবুল্।

এইবার কাজী সাহেব তিনার বাহিনী সমেত কন্যার কাছে উপস্থিত হন। কন্যার প্রতিও থাকে সেইম প্রশ্ন?
আপনি অমুকের কন্য অমুক, .. টাকা মোহরানায় অমুকের পুত্র অমুককে বিবাহ করতে রাজি?
বলুন কবুল। পাত্রী পর পর ৩ বার বলেন কবুল্।

উপস্থিত স্বাক্ষী এবং আত্মীয় স্বজন সকলে আলহামদুলিল্লাহ বলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তারপর তাদের দাম্পত্য জীবেনর শুভকামনায় দোয়া করা হয়।

ব্যাস তারা , আনুষ্ঠানিক স্বামী-স্ত্রী হয়ে যান।

বাকী খাওয়া দাওয়া আনুষ্ঠানিকতা .......

০৭ ই জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৮

তানজীনা বলেছেন: আমিও এতটুকুই জানি- তাই বলেছি ছেলেদের! তবে শরীয়া মতে বা 100% accurately আল কোরআনে কি আছে জানিনা। ঐদিনের জাপানীজ মুসলিম মেয়েটার আর আলজেরীয়ান ছেলেটার বিয়েটাতে “বিয়ে পড়ানো”র রুমে মেয়েদের “প্রবেশ নিষেধ” করা ছিল। আমি মসজিদে “সাইথ এশিয়ান সিস্টার লীডার” বলে ইমাম সাহেব আমাকে ডেকে রুমে ঢুকিয়ে শুধু বলেছেন, মেয়ের মা আর নানী শুধু থাকতে পারবেন ( উল্লেখ্য;মা- নানী ,কেউই এখনো মুসলিম হয়নি)। রুমে মসজিদ কমিটির হর্তা কর্তারা ছিলেন যারা সবাই আরব- তাই আমি আর কথা বাড়াইনি। তবে, সত্যি বিয়ে পড়ানোটা দেখার ভীষণ ইচ্ছা ছিল , যে, কোন ব্যাতিক্রম পাই কিনা। কারণ, ইমাম সাহেব সত্যি ই ইসলাম অসম্ভব ভাল জানেন- এবং মাশাল্লাহ খুব যত্ন ও ধৈর্য্য নিয়ে নিখুঁত তাফসীর করেন- যে কোন বিষয়েই যাই প্রশ্ন করি ।

৭| ০৭ ই জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০১

ফোর টোয়েনটি বলেছেন:


শিরক অথবা গুনাহের কিছু না থাকলে সব বিয়েই মুসলিম বিয়ে।

তবে ইসলাম সবাইকে সবার সংস্কৃতি অনুযায়ী অনুষ্ঠান করার পক্ষে। তাই কোন ধরাবাঁধা নিয়ম কানুন বেধে দেয় নাই।



তবে আমাদের বাংলাদেশের বিয়ে অনুষ্ঠান আসলেই সুন্দর এবং মজার...।

৮| ০৭ ই জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৪

নাহিদ ইসলাম ৩৫০ বলেছেন: ভালো লিখেছেন। ধন্যবাদ।



প্রযুক্তি বিষয়ক বাংলা ব্লগঃ আইডিয়া বাজ

৯| ০৭ ই জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আপনি ১০০% আলকোরআন খুজলে দেখবেন সবচে সহজ তম পদ্ধতিই সেখানে বলা।

দু'জন বালেগ/বালেগা (পূর্ন বষয়স্ক/বয়স্কা )হওয়া
২-৪ জন স্বাক্ষী থাকা।
উভয়ে সম্মত থাকা।
মোহরানা নির্ধারন । (সাধ্যমতে অবশ্যই। যাতে দু'জনেই সম্মত।)
অভিভাবক প্রতিনিধিদের সম্মুখে উভয়ের সম্মতি বা কবুল বলা।

(লিখিত কাবিনের বিষয়টা আসে ভবিষ্যতের নিরাপত্তা এবং ওয়াদা খিলাফের/উত্তারধিকারের প্রশ্নে প্রমানের হিসাবেই মাত্র।)

তারা স্বামী-স্ত্রী হয়ে যায়।

আসরে আমাদাের ইসলামী সংস্কৃতির বিকাশ হয় নি কারণ আমরা সংস্কৃতির সংজ্ঞায়ন এবং একে সহজভাবে গ্রহন করতে একনো শিখি নাই।
এইতো ১০/১৫ বছর আগেই মাইকে আজান হবে কি হবেনা টাইপের আবেগী কু-যুক্তিতে কত মাথা ফাটাফাটি হয়েছে।

আজো টিভি দেখা না-জায়েজের পর্দা ছিড়তে পারে নাই। যদিও আমাদের শিশুদের কলিজা পর্যন্ত ছিড়ে গেছে টিভির অত্যাচারে!!!

ধর্মের সহজ, সরল বোধের, অনুভবের স্তরকে ছেড়ে আক্ষরিক আচার সর্বস্বতাকে আকড়ে ধরে রাখাতেই এক বিশাল শূণ্যতা গ্রাস করছে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে।

অনেকেই মূখে স্বীকার করছে না। কিন্তু এইরকম আরোপিত বিশ্বাসের জন্য তারা মনে মনে ইসলামকেই ব্যকডেটেড বলে বিশ্বাস করে বসে আছে।!!!!

আমাদের ইসলামের কথিত বরকন্দাজরা কোন এক ঘোরে আবদ্ধ!!

মুক্তির জন্য যে ডিটেইলড কাজ করা দরকার- তা নিয়ে এখনো বসতেই তো দেখছিনা, শুনছিনা!!!!

চলচ্চিত্রর বিশাল সম্ভাবনা নিয়ে কোরআনের আলোকেই লিখেছীলাম ১৯৯৮ সালের দিকে!!! কই আজো তো দেখি বিশাল অন্ধকারই!!!
মেসেজ ছবি দেখে যতটা আপ্লুত হই- সেটা বানানোর সিদ্ধান্ত নিতে জ্যামিতিক হারে ততগুন পিছিয়ে যাই!!!!! নয় কি??????

সরি অনেক লম্বা হয়ে গেল।




১০| ০৯ ই জুন, ২০১৪ সকাল ১০:১৯

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.