নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তানজীনা

আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম। জাপানে গবেষনায় আছি। জাপানে আমার চাকরী গবেষনা সবই জাপানী উন্নত প্রযুক্তি উন্নয়নশীল দেশের সাধারণ মানুষের কাছে সুলভে কিভাবে পৌঁছে দেয়া যায় তাই নিয়ে। এ কাজ করতে করতে দেখেছি আমার দেশের অনেক অনেক ক্ষেত্রে অনেক কাজ বাকী রয়ে গেছে এবং আমার দেশের এই গরীব মানুষগুলির ট্যাক্সের পয়সায় আমি পড়াশোনা করে এ পর্যায়ে এসেছি। তাই, আমি জানি এই দেশের প্রতি, এই মানুষগুলির প্রতি “আমার অনেক ঋণ আছে”। তারই একটা ধাপ এই ব্লগে লেখা।

তানজীনা › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলায় ভাষায় আল কোরআন নাজিল হলে এর অলঙ্করণ কেমন হতো? ( একেবারেই আমার নিজস্ব ক্ষুদ্র ধারণা)

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:১১

ঘটনাঃ১। বছরখানেক আগের কথা। ছোট ছেলে নামাজ শেষ করছে। এক্সপ্রেস গতিতে নামাজ, সুপারসনিক গতিতে মোনাজাত।

আচ্ছা, বাচ্চা মানুষ- নামাজ দ্রুত পড়ছে - আমলে নাই নিলাম। কিন্তু মোনাজাত এতো দ্রুত শেষ হবে কেন? চাওয়াপাওয়া তো কম হওয়া যাবে না!

ধরলাম "কিরে, এতো দ্রুত মোনাজাতে কি বললি?

- বললাম " অ্যাই আল্লাহ, কালকে যা বলছিলাম সেইরকমই সব করে দিও!"

-মানে? সাড়ে সাত বিলিয়ন মানুষ দুনিয়ায়! ১.৭ বিলিয়ন মুসলমান- তোর একার কালকের মোনাজাত আল্লাহ পাক মনে করে বসে আছে? কোন রিস্ক নিবিনা। প্রত্যেকদিন ডিটেইল চাওয়ার লিস্ট দিবি আর তমিজের সাথে চাইবি! " অ্যাই আল্লাহ" ক্যামন ডাক? আল্লাহ পাক কি তোর ক্লাস মেট?

পরদিন একটু সময় বাড়লো।

- আজকে কি বলছিস?

- হুম্ম, সব চাইছি ঠিক মতো--এই এই এই--

- আচ্ছা, তো আগে পিছে তেল টেল মারিস নাই?

- কিসের তেল?

-আরে, হুজুর কি বলছে? প্রথমে ইয়া আল্লাহ, ইয়া পাক পারোয়ার দিগার, ইয়া রাহমানুর রাহীম, রাব্বুল আলামীন -- এইসব বলতে হবে না? এরপর মাফ চাবি প্রথম, থাংক্যূ দিবি যা আছে তোর তার জন্য। তার পর চাওয়া----

ছেলে চিরতার রস খাওয়া কঠিন তিতা চোখে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো।



ঘটনাঃ২। আমাদের সমগ্র কিউশু রিজিয়নের একমাত্র মসজিদ ( এখন তিনমাত্র, কারণ, আরো গেল বছর থেকে এখন পর্যন্ত আরো দূটো হয়ে গেছে) - ফুকুওকা মসজিদের ইমাম সাহেব আমাদের নন আরবদের আগ্রহে ছুটির দিন ছোটদের পাশাপাশি বড়দের জন্য আরবী শিক্ষার ক্লাসের আয়োজন করলেন। তবে আরবী পড়তে লিখতে জানা লাগবে। কথোপকোথন ও অর্থ শেখানো হবে যাতে আমরা আল কোরান বুঝে পড়তে পারি। ভাষান্তর বা তাফসীর পড়ে বিভ্রান্তির সুযোগ না থাকে।



প্রথম ক্লাসে Basic Introductory কথাবার্তার পর্বে এলো বাসার অতিথি এলে কিভাবে তাকে স্বাগত জানিয়ে ভেতরে বসাবেন।

ইমাম নূরুদ্দীন ( কোন মাওলানা নন। ইলেক্ট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ার, কিউশু ইউনিভার্সিটি থেকে PhD সম্পন্ন করেছেন) বোর্ডে লিখে যাচ্চেন সাপের লেজের মত দীর্ঘতর বাক্যালাপ।

আমাদের চোখ "The Mask" ম্যুভির চরিত্রের মত ঠিকড়ে বেড়িয়েই আসছে! একি তামশা- মেহমান ভেতরে ঢোকার আগেই এতো লম্বা বাক্যালাপ!

অবশেষে উনি উচ্চারন করে অর্থসহ বুঝিয়ে দিলেন।

যা দাড়ালো তা হলো- দরজার বেল টিপলে দরজা খুলে "আসসালামু আলাইকুম, ওয়ালাইকুম আসসালাম Wr WB, আহলান ওয়া সাহলান, মারহাবা--- ইত্যাদি ইত্যাদি" বলতে বলতে ১০ মিনিট মেহমানকে পুরা ডুবো তেলে ভেজে চপচপা করে আপনাকে ভেতরে ঢুকাতে হবে। আর কথায় কথায় কসম তো আছেই ।

- আল্লাহর ওয়াস্তে মিষ্টিটা খান।

- আল্লাহর কসম মিষ্টিটা খাবই।

উল্লেখ্য সুরা আততীনের বঙ্গানুবাদ যারা পড়েছেন তারা জানেন সেখানে তীন, জইতুন ফল, তূরে সিনিন ( সিনাই পর্বত, মিশর,মুসা আঃ এর সাথে আল্লাহ পাকের মিলনস্থল) এবং পবিত্র মক্কা নগরীর (বালাদুল আমিন) নামে শপথ উচ্চারন করে এরপর বক্তব্য পেশ করা হয়েছে।



যাক, সেই একদিনের ক্লাসেই আমি বুঝে গেলাম, পাক কোরান আরবী ভাষায় নাজিল হয়েছিল, তাই তাদের সাংস্কৃতির ধারাতেই আমাদের সুরা , মোনাজাত সহ সব আচারেই প্রশংসা বানী আর শপথের এতো ব্যাপক অলঙ্করণ।

বাংলায় হলে, আমার তীব্র আশঙ্কা, আমার ছোট ছেলের মোনাজাতই সহি হয়ে যেত। (আমার ছেলেটার দুর্ভাগ্যিস :P )

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৩৫

নিজাম বলেছেন: ভাই, ধর্মীয় বিষয়ে মনগড়া মন্তব্য যত কম করে পারা যায়। বলা যায় না, যদি মনের অজান্তে কোন বেফাঁস মন্তব্য করা হয়ে যায় তাহলে আল্লাহ নারাজ হবেন।

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:০৭

তানজীনা বলেছেন: আপনার উপদেশ শিরোধার্য ভাইয়া। কোন কথাটা মনগড়া মনে হয়েছে জানাবেন কি? "বাংলায় হলে ওমন হতো--" ও্টা কি? আচ্ছা আল্লাহ পাক তো আমার মন জানেন- তাও একটু মজা করার জন্য তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। কেমন ?

২| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৬

আহলান বলেছেন: :-* :-*

৩| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:১৬

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: নাহ এটা বরং আফসোস। আমার মতে বাংলা ভাষায় যদি আল্লাহতালা পবিত্র কোরান নাজিল করলে ভালোই হইত, অন্তত এই দেশের মানুষ আরও বেশি উপকৃত হইত।
ধর্ম বিষয়ে অতি অল্প জ্ঞান সম্পন্ন কাঠমোল্লারা মানুষকে উল্টাপ্লাটা বুঝিয়ে, বিভিন্ন প্রকার সহি জাল হাদিস চাপি দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারত না। ধর্ম ব্যবসার মুল কাঁচামাল সাধারন মানুষের ধর্ম বিষয়ক অজ্ঞতা একেবারেই হ্রাস পাইত।

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৪১

তানজীনা বলেছেন: জ্বী ভাই, আমি এ ব্যপারটা জাপানে ত্রিশোর্ধ দেশের মুসলিমদের দেখে শিখেছি এবং আগেও লিখেছি। ইসলাম কি এটা আমি জেনেছি জাপানের মত একটা ধর্মহীনদের দেশে বসে। আমাদের দেশে সাধারণত অস্বচ্ছল পরিবারের কিংবা নিম্ন মধ্যবিত্তের সবচেয়ে কম মেধাবী ছেলেটাকেই মাদ্রাসা শিক্ষায় পাঠানো হয় এবং এদের তাফসীরকৃত -অনুবাদিত কোরান আর ইসলামী বই আমাদের দেশে ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করে। আর দক্ষিনার জোরে শাস্ত্র পালাটানো তো সব ধর্মেই আছে- অভাবীদের মধ্যে এটা আরো প্রলুব্ধকর বটেই তো। কাজেই এর অন্ধত্ত্ব ও অজ্ঞতা মাত্রাহীন আমাদের উপমহাদেশে। কিন্তু আমার আজকের পয়েন্টটা ছিল, বাংলায় আল কোরান নাজিল হলে এতে অলঙ্করণের মাত্রা অনেকটাই অন্যরকম হতো। আচারও তাই।

৪| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৩৪

রিফাত হোসেন বলেছেন: বাংলা হলে অনেক অনেক ভাল হত। সত্যি বলতে কি মাতৃ ভাষা থেকে আরাম নাই, আমি জার্মান আর ইংরেজি পারি, আর টুক টাক মাল্টি ভাষা পারি কাজের কারনে কিন্তু বাংলা বাংলাই।

এক্সপ্রেস নামাজ আমিও পড়ি তবে আপনার ছেলের মোনাজাত আমার মনে ধরছে :)

৫| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:২৬

 বলেছেন: #:-S 8-|

৬| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:০২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আল্লাহ নিজেও মাতৃভাষার উপর জোর দিয়েছেন।

ঐ যে একস্থানে বলেছেন- আমি আরবীতে কোরআন নাজিল করেছি যাতে তা বুঝতে সহজবোধ্য হয়।

প্রত্যেক জাতিতে তাদের ভাষায় নবী-রাসূল পাঠানো হতো।

তাই এই বক্তব্যে মন:পীড়া ভোগার কোন কারণ নাই।

আপনার পুচকির মোনাজাতের ষ্টাইল মজারু। তবে এই ষ্টাইলেই শবে বরাতের বরাদ্ধ নিয়া কাহিনী চলমান আছে- গরীবের ভঅগ্য কেন বদলায় না টপিকে।

শবে বরাতের রাতে ফেরেশতারা ভাগ্য লিখা শুরু করেন- প্রথমেই বড় বড় লোকদের লম্বা লম্বা হিসাব লিখতে লিখতে রাত প্রায় শেষ হয়ে আসে!!
তখন গরীবদের খাতা খুলে ঐকিক নিয়েমর ডট ডট দিয়ে আগের বছর যা পরের বছর তা.. টাইপে লিখে দেয়। :P
তাই গরীব আরো গরীব হয়। কারণ তারাতো আর দ্রব্যমূল্যের ক্রম উদ্ধগতির দিকে খেয়াল করে নাইক্যা ;) আগের বছরের বাজেটে পরের বছর তাই চলতে আরো কষ্ট হয়!!! :( :(( X(

আহা বাংলায় কি মধূর হতো। যবুরের মতো গীতিকাব্য যদি নাজেল হতো..

কিংবা কোরআনের মতো দারুন এক মহাগ্রন্থ;

সেখানে উপমা উৎপ্রেক্ষা শপথে থাকতো নদীমাতৃকতার স্বাদ, ঋতু বৈচিত্রের সমাহার, সুজলা সুফলা শস্য শ্যমলা মাটির কথা, সহজিয়া মনের বাউলীয়ানার উপমা, আরও কত কত কি.......

তবে একটা আহবান- যেহেতু ভাবুক মন আপনার- একটু গভীরে গিয়ে ডুব দিন- দেখবেন ভাষার পার্থক্য কোন সমস্যাই না। কি মহা সৌন্দর্যময় এই কোরআন। এভং সবচে মজা হল আপনি বুঝতে বা অনুভব করতে একটুও ঠেকবেন না।
নজরুলের ভাষায় বলা যায়- জরিন হরফে লেখা, সোনালী হরফে লেখা আসমানী কোরআন ....অথবা রবি ঠাকুরের ভাষায়- আলো আমার আলৌ শুধূ আলোয় ভূবন ভরা-- নূরে জগত ভরা আমার নূরের সকল খেলা :)

+++

৭| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৭

তানজীনা বলেছেন: খুব সুন্দর করে লিখেছেন। মর্মস্পর্শী আপনার ভাষার গাথুনী। মন্তব্য পড়ে সত্যি বেশ ভাল লাগলো।

৮| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০৮

কাজী রিদয় বলেছেন: ধর্মটা আসলে বিশ্বাস। আপনার ছেলে সৃষ্টিকর্তাকে যেভাবে্ই ডাকুক না কেন তার জন্য সেটাই সহি। অনেক সময় আমরা নিজেরা্ এমন সব কথা বলে সৃষ্টিকর্তাকেই খাটো করি..ইবাদত শুধু নামাজ না..একজন মানুষ তার সৃষ্টির কৃতজ্ঞতার জন্য যেকোনভাবে সৃষ্টিকর্তাকে স্মরন করতে পারে। আসল কথা হচ্ছে নিয়ত। আপনার ছেলে নিশ্চয় অনেক ছোট। তার তো এখনও ভালো মন্দ বুঝার সময় হয়নি। তাকে তার মতোই ডাকতে দিন। সবকিছু করতে দিন সেটা আস্তে হোক বা দ্রুত। একদিন সে নিজেই বুঝে নিবে ধর্ম, সৃষ্টিকর্তা কি...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.