নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তানজীনা

আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম। জাপানে গবেষনায় আছি। জাপানে আমার চাকরী গবেষনা সবই জাপানী উন্নত প্রযুক্তি উন্নয়নশীল দেশের সাধারণ মানুষের কাছে সুলভে কিভাবে পৌঁছে দেয়া যায় তাই নিয়ে। এ কাজ করতে করতে দেখেছি আমার দেশের অনেক অনেক ক্ষেত্রে অনেক কাজ বাকী রয়ে গেছে এবং আমার দেশের এই গরীব মানুষগুলির ট্যাক্সের পয়সায় আমি পড়াশোনা করে এ পর্যায়ে এসেছি। তাই, আমি জানি এই দেশের প্রতি, এই মানুষগুলির প্রতি “আমার অনেক ঋণ আছে”। তারই একটা ধাপ এই ব্লগে লেখা।

তানজীনা › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রায়োরিটি , প্রাধান্য – দিচ্ছি কি?

২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:১২

স্কুলে আমাদের সবচেয়ে ত্রাসের রাজত্ত্ব কায়েম করা স্যারের নাম জিগেস করলেই সমসাময়িক সবাই কোন রকম চিন্তা ছাড়াই উত্তর দেবেন “বাবু যোগেন্দ্র চন্দ্র পোদ্দার স্যার’। তাঁর ক্লাস চলাকালীন পাশের কাস থেকে শিলা বৃষ্টির মত বেত্রাঘাতের আওয়াজ পাওয়া যেন। ছাত্র পিটানোয় তাঁর চেয়ে ৩-০ গোলে পিছিয়ে থাকা অনেক শ্রদ্ধেয় শিক্ষকেরাই মাঝে মাঝে উকি দিয়ে দেখতেন আজকের ঘটনা কি একটু বেশী খারাপ নাকি! ( অথবা হয়তো মারের টেকনিক শিখতেন ;) )

যাই হোক, আমরা স্যারকে শ্রদ্ধাবনত মস্তকেই স্বরণ করি , কারণ, স্যারই আমার দেখা একজন মানুষ যিনি “মাইরের উপর ওষুধ নাই” বাক্যটা প্রমান করে আমাদের সমসাময়িক প্রথম সারীর অনেককে সনাতন যুগে ( অব্জেক্টিভ যুগের আগে) ভূগোলের মতো কাঠ –খোট্টা বিষয়ে লেটার মার্ক্স পেতে সক্ষম করেছিলেন। চোখ বন্ধ করে আমরা বাংলাদেশের ম্যাপ, আফ্রিকার ভৌগলিক বিবরণ লিখে ফেলতে পারতাম।

মেয়ে হয়ে জন্মানোর প্রথম সুবিধা স্যারের কাছেই পাওয়া – তিনি স্ত্রী জাতীর গায়ে হাত তুলতেন না।
কিন্তু পড়া না করে আসলে অনেক কষ্টে রাগ সামলাতে ভ্রু কুচকে অত্যন্ত বিরক্ত হয়ে বলতেন , “ ভাত খাইছিস?”
- জী স্যর।
- কেন? এখন জী স্যার কেন? এখন তো বলিস না – ভাত খাই নাই স্যার। তাইলে পড়া করতে পারিস নাই কেন?
আমরা বেকুব হয়ে ভাবতাম, এইটা কি প্রশ্ন? ভাত খাওয়ার সাথে পড়ার সম্পর্ক কি?
-------------------------------
আজকে অনেক পরিণত বয়সে বুঝি, সম্পর্কটা "priority - প্রাধান্য" দেয়া।

জীবনের সব ক্ষেত্রেই তাই - সে যত ব্যস্ত বা বেকারই কেউ হোক , তাঁর কাছে যেটা প্রাধান্য পায় সেটাই সে করে।
এবং এই priiority কোন কাজের ক্ষেত্রে দিতে হবে সেটা যে বাস্তবতার নীরিখে হিসেব কষে সেইমতো কাজ করতে পারেন তারাই ‘আপাতদৃষ্টিতে’ সফল হোন।
কেউ বাস্তবতার দাবীকে প্রাধান্য দেয়- কেউ দেয় স্বপ্নের দাবী, ভাললাগার দাবী !
যেমন ধরুন, আপনার ইনবক্সে হাজারও মেসেজ পড়ে আছে, ব্যাক্তিগত এমনকি অফিসের মেইলেও জমে আছে অসংখ্য ইমেইল।
উত্তর আপনি তার টাই দেবেন যাকে আপনি প্রধান্য দিচ্ছেন। যার মেইল, মেসেজের আপনি অপেক্ষায় আছেন।

বাকীদের “ অসম্ভব ব্যাস্ত ছিলাম রে ভাই” বলাটা আসলে একটি মধুর মিথ্যা!

না, ব্যাস্ত আপনি অবশ্যই ছিলেন বা আছেন হয়তো, কিন্তু নির্জলা সত্যটা হলো “ তোমার মেইল/ মেসেজ/ মিস কল রিপ্লাই আমার প্রায়োটির মধ্যে ছিল না” । অথবা থাকলেও নীচের দিকে ছিল।

ব্যাক্তিগত ভাবে আমাকেও এই কথাটি কেউ বললে আমিও নির্ভেজাল কষ্টই পাব- কিন্তু সত্য এটাই।
সত্য বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই অসুন্দর এবং তেঁতো। অসুন্দরকে ভালবেসে আলিঙ্গন করা খুব কঠিন।

তাই অনেকেই সত্যটা মনে মনে টের পেয়েও নিজেকেই নিজে বুঝ দিতে চায় “হয়তো মানুষটা সত্যিই খুব ব্যাস্ত ছিল” , কারণ নিজেকে অবহেলিত কেউ ভাবতে চায়না, অবহেলা কোন মানব সন্তানের কাম্য হতেই পারেনা। কারন, মানুষ নিজেকে সবচেয়ে বেশী ভালবাসে।

কিন্তু কোন বিশেষ কারোর অবহেলার ইঙ্গিতটা বুঝে যত কষ্টই হোক সরে আসতে পারাটাই সবচেয়ে সর্বোত্তম যুদ্ধজয়!

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৪:১৯

হানিফঢাকা বলেছেন: আমিও ভূগোলে লেটার মার্কস পাইছিলাম, ৫০০ অবজেক্টিভ না, এর পরের ব্যাচ। আমরাই প্রথম ব্যাচ যারা সম্পূর্ণ বই পড়ে পরীক্ষা দিয়েছিলাম, অবজেক্টিভ ছিল, কিন্তু আমাদের সময় থেকই প্রথম প্রশ্নব্যাঙ্ক ছাড়া পরীক্ষা হয়। ভূগোল কাকে বলে উহা কত প্রকারও কি কি তা তখনই বুঝছিলাম। আপনার লেখা পড়ে মনে পড়ে গেল।

২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৬

তানজীনা বলেছেন: দারুন! কোন ব্যাচে এস এস সি?

২| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:০১

গেম চেঞ্জার বলেছেন: যাই হোক, আমরা স্যারকে শ্রদ্ধাবনত মস্তকেই স্বরণ করি , কারণ, স্যারই আমার দেখা একজন মানুষ যিনি “মাইরের উপর ওষুধ নাই” বাক্যটা প্রমান করে আমাদের সমকাময়িক প্রথম সারীর অনেককে সনাতন যুগে ( অব্জেক্টিভ যুগের আগে) ভূগোলের মতো কাঠ –খোট্টা বিষয়ে লেটার মার্ক্স পেতে সক্ষম করেছিলেন। চোখ বন্ধ করে আমরা বাংলাদেশের ম্যাপ, আফ্রিকার ভৌগলিক বিবরণ লিখে ফেলতে পারতাম।

:-P :-P :-P



আফটার অল লেখাটা ভাল লেগেছে

২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৪

তানজীনা বলেছেন: টাইপিং ভুলের জন্য লজ্জিত। শুধরে দিয়েছি। ধন্যবাদ ধরিয়ে দেবার জন্য! :)

৩| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:০৪

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:
আমাদের ছাত্রজীবনের সবাই এরকম শিক্ষকের সানিধ্য পেয়েছি।


স্মৃতিচারণ খুব ভাল লাগল।

২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৮

তানজীনা বলেছেন: স্মৃতি সতত সুখের!! অনেক ধন্যবাদ!

৪| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:১৫

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: এরকম বেশ কয়জন মানুষের জন্যই শিক্ষক হইতে ইচ্ছা করতো। পোষ্ট ভাল্লাগছে। ++

৫| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৯

সুমন কর বলেছেন: সত্য বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই অসুন্দর এবং তেঁতো। অসুন্দরকে ভালবেসে আলিঙ্গন করা খুব কঠিন।

ভালো বলেছেন।

৬| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:২৮

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: "মেয়ে হয়ে জন্মানোর প্রথম সুবিধা স্যারের কাছেই পাওয়া – তিনি স্ত্রী জাতীর গায়ে হাত তুলতেন না ।" স্যার তো তাহলে লিঙ্গ বৈষম্য করেছেন! এটা কিন্তু ঠিক করেননি । কারণ, নর-নারী সমান অধিকার!
-অাপনার স্মৃতিচারণ ভালো লাগলো । কথাগুলো বাস্তবসম্মতও বটে ।

৭| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:২৪

শামছুল ইসলাম বলেছেন: চমৎকার,অতুলনীয়, ছোট্ট কিন্তু কার্যকরী পোস্ট!
Priority বিবেচনায় আপনার লেখাটা ১ নম্বরে !!!

বাকীদের “ অসম্ভব ব্যাস্ত ছিলাম রে ভাই” বলাটা আসলে একটি মধুর মিথ্যা!
--মধুর মিথ্যায় জীবনটা ভরে উঠছে --হা..হা...হা... ।

+++ ভাল লাগা ( এটা কিন্তু মধুর মিথ্যা নয়) !

২৮ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৯:৩০

তানজীনা বলেছেন: ভাল লেগেছে জেনে আমারো ভাল লাগলো - এবং এটাও নির্ভেজাল সত্য!

৮| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:৩৫

হানিফঢাকা বলেছেন: ৯৬ ব্যাচ। আপনার টা কবে?

২৮ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৭:৪৮

তানজীনা বলেছেন: ৯১ ব্যাচ। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.